রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

জেলা পরিষদকে কার্যকর করতে সবার অর্থবহ ভূমিকা প্রত্যাশিত

জেলা পরিষদ আইন-২০০০ এ জেলা পরিষদকে আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনায় অন্যান্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিদের সাথে পরামর্শ করে বার্ষিক ও পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পাদনের ম্যান্ডেট দিয়েছে। বিকেন্দ্রীকরণ প্রায়ই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বৃদ্ধির প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্রিয় অংশগ্রহণের সাথে যুক্ত। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০১৭ সালে জেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা পুনরায় জনগণের সেবাদানের সুযোগ লাভ করেন। মূলত, প্রকৃত বিবেচনায় ক্ষমতাসম্পন্ন স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি বিকেন্দ্রীকরণের ভিত্তি যা স্থানীয় দক্ষতা, সমতা এবং উন্নয়নের দিকে পরিচালিত করতে পারে। কার্যকর স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো নাগরিকদের আকাঙ্ক্ষার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতিসমূহের বিকাশ ও বাস্তবায়ন করতে পারে, এবং এর ফলে সরকারি পরিষেবার মান উন্নত হয় এবং স্থানীয় উন্নয়ন প্রচার পায়। 

জেলা পরিষদের রাজস্ব সংগ্রহের ইচ্ছাধীনতা সীমিত, এবং এখানে জাতীয় সরকার থেকে আর্থিক স্থানান্তর করা হয়। বর্তমান স্থানীয় সরকার কাঠামোর অধীনে জেলা পরিষদগুলোর সীমিত রাজস্ব ক্ষমতা রয়েছে। আইন অনুযায়ী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান কেবল জাতীয় সরকার নির্ধারিত নির্দিষ্ট উৎস থেকে রাজস্ব সংগ্রহ করতে পারে। বিকল্প রাজস্ব আদায়ের সুযোগ লাভের ক্ষেত্রে এটা অনুমোদিত নয়। এমনকি রাজস্ব আদায়ের সীমিত পরিসরের মধ্যেও জেলা পরিষদ বর্তমানে তার নির্ধারিত উৎস থেকে কার্যকরভাবে রাজস্ব আদায় করতে পারে না। উপরন্তু, জেলা পরিষদ বর্তমান আন্তঃসরকার আর্থিক স্থানান্তর ব্যবস্থার অধীনে তার প্রকৃত চাহিদার তুলনায় সীমিত তহবিল পেয়ে থাকে। এই অপর্যাপ্ত তহবিল জেলা পরিষদকে তার বাধ্যতামূলক কাজকর্ম সম্পাদনের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হিসেবে কাজ করে। পরিষেবা বিতরণে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাকে আরও নিরুৎসাহিত করে। বর্তমানে জেলা পরিষদ স্থানীয় সেবা প্রদানে কিছু ভূমিকা পালন করে এবং স্থানীয় প্রশাসনিক দপ্তরগুলোও এই পরিষেবা প্রদান করে।

জেলা পরিষদ এবং জেলা প্রশাসন অফিসের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব কার্যকর স্থানীয় সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত। কার্যকর সমন্বয়ের প্রধান অন্তরায় ফ্রন্টলাইন সার্ভিস ডেলিভারি ইউনিটের মধ্যেকার দূরত্ব যার মাধ্যমে নাগরিকদের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হয় এবং যেসব কর্মকর্তা স্থানীয় পরিষেবা প্রদানে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা রাখেন তারা প্রায়ই জাতীয় সরকারে বসে থাকেন। অতএব, জেলা পরিষদ স্তরে পরিষেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করার প্রয়োজন রয়েছে এবং এর মাধ্যমে সমন্বয়ের ব্যর্থতা হ্রাস ও স্থানীয় পরিষেবার উন্নতি করা সম্ভব।


বর্তমান স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় একটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে স্থানীয় নাগরিকদের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সীমিত সুযোগ এবং দুর্বল জবাবদিহিতা। উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করা যায়, জেলা পরিষদের স্থায়ী কমিটিগুলো সচল নয়। স্থায়ী কমিটিগুলো প্রায় অকার্যকর, কারণ নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং অন্যান্য সদস্যরা এগুলোর কার্যকারিতা ও এখতিয়ার সম্পর্কে সঠিকভাবে সচেতন ও আগ্রহী নন।


আমি এখানে জেলা পরিষদকে কার্যকর করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ তুলে ধরার চেষ্টা করছি। সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজন চিহ্নিতকরণ এবং উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় তাদেরকে যুক্তকরণ; আলোচনা এবং সংলাপের মাধ্যমে স্থানীয়দের চাহিদা স্পষ্টকরণ এবং পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা তৈরির লক্ষে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ জেলা পরিষদের বার্ষিক পরিকল্পনা প্রস্তুত করা। জেলা পরিষদের বিশেষ সভা আয়োজন এবং জেলা পরিষদ আইন ২০০০ অনুসারে প্রকল্প তালিকা অনুমোদন করা; ডেডলাইন অনুযায়ী ডিডিএলজি এবং এলজিডি বরাবর বার্ষিক পরিকল্পনা জমা দেয়া বার্ষিক পরিকল্পনায় স্থায়ী কমিটির পরামর্শ অন্তর্ভুক্ত করা। 


জেলা পরিষদকে কার্যকর করার জন্য স্থায়ী কমিটিগুলোকে সক্রিয় করা কমিটিগুলো সদস্যদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনার সুযোগ তৈরি করা যা বিভিন্ন রাজনৈতিক মতামতের সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক সৃষ্টির পূর্বশর্ত নাগরিক পরিষেবায় সহযোগিতা ও সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে মীমাংসায় পৌঁছতে কমিটিগুলোর সভা ফোরামের মতো ভূমিকা রাখে। জেলা পরিষদকে কার্যকর করার জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা চিহ্নিত করে প্রাথমিক বেসলাইন মূল্যায়ন পরিচালনা করা জ্ঞান এবং দক্ষতার ইতিবাচক রুপান্তরের লক্ষে NILG এর মতো প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করা; নাগরিক সনদ প্রস্তুত ও উপস্থাপন; জেলা পরিষদের ওয়েবসাইট তৈরি করা এবং সমস্ত উন্নয়ন ও আর্থিক নথি প্রকাশ করা।  


জেলা পরিষদ স্তরে পরিষেবা বিতরণে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা ও এর মাধ্যমে সমন্বয়ের ব্যর্থতা হ্রাস এবং স্থানীয় পরিষেবাসমূহকে উন্নত করা প্রয়োজন। এই স্তরে স্থানীয় জবাবদিহিতা এবং উন্নত কর্মক্ষমতা উভয়ের অগ্রগতিকে উৎসাহ দেয়া দরকার। দারিদ্র্যমুক্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষে একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার গড়ে তোলা আবশ্যক।  যেমন, স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে সংস্কার করা এখন সময়ের দাবি। 


স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে সংস্কার সাধনের লক্ষে মৌলিক নীতিমালার ক্ষেত্রে সম্মতিসুলভ বুঝাপড়া দরকার। এই নীতিমালা নাগরিকদের পছন্দসই পরিষেবা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সরকারকে কর্তব্যপরায়ণ থাকতে উৎসাহিত করে। উপরন্তু, সরকারকে তার আর্থিক সংস্থান সাবধানতার সাথে পরিচালনা করা উচিত। কম অর্থ ব্যয়ে ভালো কর্মদক্ষতা এবং সেই সাথে স্থানীয় সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ঝুঁকিগুলোর সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নাগরিকদের আস্থা অর্জন করা উচিত। 


জনসেবার পরিমাণগত ও গুণগত উন্নতির পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যাতে কোনও বিড়ম্বনা ছাড়াই সেসব সেবা-সুবিধা গ্রহণ করতে পারে সে ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া উচিত। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো কর্মদক্ষতা দেখানো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে মানদণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। স্থানীয় সরকার অবশ্যই তার নাগরিকের প্রতি দায়বদ্ধ। তাদেরকে সততার সাথে জনস্বার্থ সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেওয়া উচিত। নির্বাচনী সংস্কারের মধ্যে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় সরকারে সিটিজেন চার্টার/ নাগরিক সনদ ও সরকারি কর্মচারীদের প্রত্যাহারের ব্যবস্থার মতো আইনী ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের প্রয়োজন হতে পারে। 


উন্নয়ন কর্মসূচিকে আরও দরিদ্রবান্ধব করে তুলতে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে জনগণের অংশগ্রহণের সুযোগ আরও প্রসারিত করতে এবং প্রয়োজন মাফিক সম্পদ কাজে লাগানোর লক্ষে আরও বিবর্তিত এবং কার্যকর স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যার ফলে বরাদ্দ সংক্রান্ত দক্ষতা বৃদ্ধি করা যায়। বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে জনসাধারণের উন্নয়ন নিশ্চিত করার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এবং এ সত্ত্বেও উন্নয়ন কর্মকান্ডে জনসাধারণের অংশগ্রহণ রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের কার্যকর হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারেনি। মানুষের মতামত শোনা এবং তাদের অংশগ্রহণের অধিকারকে সম্মান করার মাধ্যমে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা যায়। স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোকে শক্তিশালী না করলে এবং তাদেরকে সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে না দিলে তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাবে না। দারিদ্র্যমুক্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার গঠন অপরিহার্য। ফলস্বরূপ, স্থানীয় সরকারে সংস্কার আনা এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি। 


লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভিজিটিং স্কলার (অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ)।

ই-মেইল: t.islam@juniv.edu 

Header Ad
Header Ad

সুরের জাদুতে ঢাকার মঞ্চ মাতালেন রাহাত ফতেহ আলী খান

ঢাকার মঞ্চ মাতালেন রাহাত ফতেহ আলী খান। ছবি: সংগৃহীত

সুফি সংগীতের ইতিহাসে ফতেহ আলী খান পরিবার দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে উপমহাদেশের সুরপ্রেমীদের মুগ্ধ করে আসছে তাদের অতুলনীয় সুরের মাধুর্যে। এই পরিবারের অন্যতম প্রতিভাবান শিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খানের বাংলাদেশে আগমন এবং তাঁর মঞ্চে গাওয়া নিঃসন্দেহে দেশীয় সংগীতপ্রেমীদের জন্য একটি স্বপ্নপূরণের মুহূর্ত ছিল।

রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে ‘ইকোস অব রেভল্যুশন’ কনসার্টে মঞ্চ মাতিয়েছেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খান। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের সাহায্যার্থে আয়োজিত এ কনসার্টে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে মঞ্চে ওঠেন তিনি।

শনিবার বিকেল চারটার দিকে ব্যান্ড সিলসিলার কাওয়ালি গানের মাধ্যমে কনসার্টটি শুরু হয়। এরপর ম‌ঞ্চে আসেন ‘আওয়াজ উডা’ গা‌নের জন্য প‌রি‌চিত র‍্যাপার হান্নান। শুরু‌তে র‍্যাপ গান‌টি প‌রি‌বেশন ক‌রেন তি‌নি, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থা‌নে গান‌টি গাওয়ার জন্য জেল খে‌টে‌ছেন হান্নান। হান্না‌নের প‌রি‌বেশনার পর ম‌ঞ্চে আসেন আরেক আলো‌চিত র‍্যাপার সেজান। ‘কথা ক’ গান দি‌য়ে সাধারণ শ্রোতা‌দের মা‌ঝে প‌রি‌চিতি পে‌য়ে‌ছেন সেজান। ম‌ঞ্চে গানটি ধর‌লে শ্রোতা‌দের ম‌ধ্যে সাড়া ফে‌লে।

বির‌তির পর সা‌ড়ে পাঁচটার দি‌কে ম‌ঞ্চে আসে রক ব্যান্ড ‘আফটারম্যাথ’। মাইক্রোফোন হা‌তে ব্যা‌ন্ডের ভোকা‌লিস্ট না‌ভিদ ইফ‌তেখার চৌধুরী শ্রোতা‌দের বল‌লেন, ‘এর আগে কখ‌নোই আর্মি স্টেডিয়া‌মে আফটারম্যাথ কনসার্ট ক‌রে‌নি। প্রথমবা‌রের ম‌তো আর্মি স্টে‌ডিয়া‌মে গাইছি। এবার স্বপ্ন পূরণ হ‌লো।’

কনসার্টে শুরু‌তেই ব্যান্ড‌টি গে‌য়ে‌ছে তরুণ‌দের মধ্যে আলোচিত গান ‘অধিকার’। এরপর ‘উৎসর্গ’, ‘মা‌টির রোদ’সহ আরও ক‌য়েক‌টি গান প‌রি‌বেশন ক‌রে‌ছে আফটারম্যাথ।

সন্ধ্যায় মঞ্চে আসে ব্যান্ডদল চিরকুট। শুরুতে বাদ্যযন্ত্রীরা জাতীয় সংগীতের সুর তোলেন। স্টেডিয়ামে দর্শকের আসনে বসে থাকা শ্রোতারা জাতীয় সংগীতের প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। এরপর দেশাত্মবোধক গান ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’ দিয়ে পরিবেশনা শুরু করে ব্যান্ডের ভোকা‌লিস্ট সু‌মি। এরপর ‘ম‌রে যাব’, ‘জাদুর শহর’, ‘আহা‌রে জীবন’-এর ম‌তো গান দিয়ে ঘোরলাগা ছড়িয়ে দেয় ব্যান্ড‌টি। মোলায়েম সু‌রের এসব গানে যাতনা খুঁজে খুঁজে ফিরেছেন শ্রোতারা।

এরপর হাজারো দর্শকের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মঞ্চে আসেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খান। পর পর তিনি তার জনপ্রিয় চারটি গান পরিবেশন করেন। এরপর সংগীত পরিবেশন করেন বরেণ্য এই শিল্পীর ছেলে শাজমান খান। সর্বশেষ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মঞ্চে তার পরিবেশনা চলছিল।

বিকেল পর্যন্ত বনানীর আর্মি স্টেডিয়ামে ততটা দর্শক দেখা যায়নি। যদিও স্টেডিয়ামের বাইরে লক্ষ্য করা গেছে অস্বাভাবিক যানজট। সন্ধ্যা নামতেই অবশ্য বদলে যায় দৃশ্য। আসতে শুরু করেন দর্শনার্থীরা। যেন তরুণদের দখলে চলে যায় বনানীর আর্মি স্টেডিয়াম।

শনিবার বেলা দুইটা থেকে দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হয় আর্মি স্টেডিয়ামের গেট। তার আগে থে‌কেই আর্মি স্টে‌ডিয়া‌মের বাইরে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ সা‌রি দেখা যায়। সময় বাড়ার স‌ঙ্গে স‌ঙ্গে শ্রোতা‌দের উপ‌স্থি‌তি বাড়তে থাকে। তবে স্টেডিয়ামের বাইরে রাস্তায় ভীষণ যানজটে নাকাল অবস্থায় পড়তে হয় মানুষকে। কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ ও স্কাউটরা জানান, বনানীগামী রাস্তা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়, এই তথ্য অনেকে জানতেন না। এ কারণে তাদের যানজটের মুখোমুখি হতে হয়। ওই রাস্তায় চলাচলরত গাড়িগুলো এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে তারা জানিয়েছেন, এক্সপ্রেসওয়েতে আজ টোল নেওয়া হয়নি।

যৌথভাবে এ কনসার্টের আয়োজন করেছে ‘স্পিরিটস অব জুলাই’ প্ল্যাটফর্ম ও স্কাইট্র্যাকার লিমিটেড। কনসার্টে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত পরিবারের শতাধিক সদস্য উপস্থিত রয়েছেন বলে আয়োজকেরা জানান।

জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে সহায়তার জন্য এ কনসার্টের আয়োজন করা হয়। এই কনসার্ট থেকে আয় হওয়া সব অর্থ শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবার নিয়ে কাজ করা কল্যাণমূলক সংস্থা ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এ দেওয়া হবে।

কনসা‌র্টে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের’ সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলমসহ অনেকে উপ‌স্থিত ছিলেন। আ‌য়োজন‌টি উপস্থাপনা করেছেন জুলহাজ জুবা‌য়ের ও দীপ্তি চৌধুরী।

Header Ad
Header Ad

আনিসুল হকের তিন ব্যাংকে ২১ কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে দুদক

সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক। ছবিঃ সংগৃহীত

সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হকের ৩ ব্যাংকে মোট ১৬টি ব্যাংক হিসাবের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব হিসাবগুলোতে প্রায় ২১ কোটি টাকা জমা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। যা ইতোমধ্যে ফ্রিজ করা হয়েছে।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুদক সূত্রে জানা যায়।

আনিসুল হকের হিসাবগুলোর মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক বনানী শাখার ৬টি হিসাবের মধ্যে ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে ৫ কোটি টাকা এবং অন্য এক হিসাবে এসসি গোল্ডেন বেনিফিটস নামে ৫০ লাখ ৮১ হাজার টাকা জমা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া, সিটিজেন ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের ৯টি হিসাব থেকে মোট ১৫ কোটি ১১ লাখ ৮৩ হাজার টাকা পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বর্তমানে নথিপত্র সংগ্রহ এবং যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। অনুসন্ধান টিম প্রতিবেদন দাখিল করলে কমিশন আইন অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবে।

এ বিষয়ে দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ও পাচারের অভিযোগ থাকলেও দুদক দালিলিক প্রমাণ ছাড়া আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে না। আমাদের তথ্য ও সংগ্রহ এবং যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলমান রয়েছে। যা অংশ হিসাবে তিন ব্যাংকে প্রায় ২১ কোটি টাকা জমা থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং ফ্রিজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই টাকা তার আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বলেই আপাতত মনে হয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।

আনিসুল হক ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গত ৭ অক্টোবর থেকে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। যার মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমের বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া অপর এক সহযোগী ফারহানা ফেরদৌস নামে অপর এক নারীর বিরুদ্ধে আসা পৃথক আর একটি অভিযোগও আমলে নিয়ে অনুসন্ধান করছে দুদকের অনুসন্ধান টিম।

Header Ad
Header Ad

নরসিংদীতে ছাত্রদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা

হুমায়ুনের মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক। ছবি: সংগৃহীত

রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, আধিপত্য বিস্তার ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নরসিংদীর মেহেরপাড়ায় এক ছাত্রদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ১২টার দিকে নরসিংদীর পাঁচদোনা মেহেরপাড়া বাড়ি আগিণার খেলার মাঠ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

নিহত হুমায়ুন কবির (২৬) মেহেরপাড়া ইউনিয়নের নাগরারহাট এলাকার একরামুল হকের ছেলে। তিনি মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য।

নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, আধিপত্য বিস্তার ও জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একই এলাকার বাদল মিয়া, শাহআলম ও আতাউর মেম্বারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল হুমায়ুন কবিরের। দ্বন্দ্বের জেরে ইতোমধ্যে দুই পক্ষ একাধিক মামলা করেছে। গতকাল শনিবার দিনগত রাতে নিহত হুমায়ুন বাড়ির পাশের আঙ্গিনায় ব্যাডমিন্টন খেলছিল। রাত ১২টার দিকে দুটি মোটরসাইকেল যোগে শাহ আলম ও টিপুসহ চারজন হুমায়ুনের বাড়ির সামনে আসে। ওই সময় তারা হুমায়ুনকে ব্যাডমিন্টন খেলা থেকে ডেকে পাঁচদোনা বাজার মাছের আড়ৎ মসজিদের দিকে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে সন্ত্রাসীরা তার বুকে, পিঠে ও ঘারে পরপর তিনটি গুলি করে। এ সময় সে মাটিতে লুটিয়ে পরে। গুলির শব্দ শুনে খেলার মাঠ থেকে লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে তারা মটোরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় হুমায়ুনকে হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, হুমায়ুন হত্যার বিচার দাবিতে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এলাকাবাসী।

নিহত হুমায়ুনের বন্ধু ও মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক সুজন ভূইয়া বলেন, ‘স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা ছিল নিহত হুমায়ুনের। তার নেতৃত্বেই পাঁচদোনা মেহেরপাড়া ও মাধবদী আন্দোলন হয়েছিল। এসব ঘটনা নিয়ে সে এলাকার অনেকের রোষানলে পড়ে। এসবের জেরে তার বাড়ি ঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। প্রাণ বাঁচাতে সে পালিয়ে থাকে। ৫ তারিখের পর এলাকায় আসে। এর মধ্যেই গতকাল তাকে বাড়ির আঙ্গিনা থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হলো।’

নিহতের বড় ভাই আল মামুন বলেন, ‘আমাদের ১৭ শতাংশ একটি জমি দখল করে নেয় বাদল মিয়ারা। পরে মামলার রায় পাওয়ার পর আমরা জমিটি দখলে নিই। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তীব্র হয়। এরই জের ধরে তারা আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে। এ ছাড়া স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। এসব নিয়ে অনেকে তাকে দমানোর চেষ্টা করছিল।’

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাডমিন্টন খেলা শেষে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব শত্রুতার জেরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার প্রকৃত কারণ উদঘাটনসহ হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সুরের জাদুতে ঢাকার মঞ্চ মাতালেন রাহাত ফতেহ আলী খান
আনিসুল হকের তিন ব্যাংকে ২১ কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে দুদক
নরসিংদীতে ছাত্রদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশের বিষয়ে নিশ্চিত নয় ট্রাইব্যুনাল
ভারতের কাছে হেরে বাংলাদেশের স্বপ্নভঙ্গ
এক দশক পর ফিরলো ‘আমার দেশ’ পত্রিকা
৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচার: হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু দুদকের
ইয়েমেনে হুথিদের লক্ষ্যবস্তুতে মার্কিন বিমান হামলা
লোকসানের মিথ্যা গল্প শোনাচ্ছে ব্রিডার ফার্মগুলো
একজন ঢাকা অন্যজন কলকাতায় সংসার ভাঙছে মিথিলার
আইনজীবী আলিফ হত্যা: তদন্ত কমিটির সব সদস্যের পদত্যাগ
যে কোন সময় বাংলাদেশের পাশে নতুন দেশ
গাজীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রীর মৃত্যু
বাংলাদেশে ইসলামি চরমপন্থা আসবে না: ড. ইউনূস
  সংকট কাটছে, মেট্রোর যাত্রীদের সুখবর দিল ডিএমটিসিএল
ভারতের বিপক্ষে ১১৮ রান করলেই এশিয়া কাপ ঘরে ‍তুলবে বাংলাদেশ
বিরামপুরে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম আটক
শেখ হাসিনা নিজ হাতে তার বাবাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করেছে: গয়েশ্বর
চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা