ঢাকায় এফএও'র আঞ্চলিক সম্মেলন শুরু কাল
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এর ৩৬তম এশিয়া ও প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন আগামীকাল থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে। কৃষি মন্ত্রণালয় এবং এফএও-এর যৌথ উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এই সম্মেলন হচ্ছে। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত সম্মেলন আগামীকাল মঙ্গলবার (৮ মার্চ) শুরু হয়ে চলবে আগামী শুক্রবার (১১মার্চ) পর্যন্ত।
এবারের সম্মেলনে এশিয়া এবং প্যাসিফিকভুক্ত ৪৬টি দেশের কৃষিমন্ত্রী, কৃষি সচিব, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, এফএও’র মহাপরিচালক, জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী, এনজিও ও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ৯০০ প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করবেন।
এবারের সম্মেলনে মূল আলোচনা তুলে আনা হবে কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলে খাদ্য ও কৃষির বর্তমান অবস্থা, এ অঞ্চলে জলবায়ু সহনশীল কৃষি ও খাদ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে করণীয়, অ্যাগ্রিকালচার ভ্যালু চেইন ডিজিটালাইজেশন ত্বরান্বিতকরণ, ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচে গড়ে তুলতে অগ্রাধিকার চিহ্নিতকরণ।
প্রাণিবাহিত রোগের প্রকোপ দিনদিন বেড়ে চলেছে। চলমান কোভিড এর অন্যতম উদাহরণ। এ অবস্থায় ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচ গড়ে তুলতে করণীয় নির্ধারণ করা। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সম্মিলিত বিনিয়োগ বিষয় বেশি গুরুত্ব পাবে এবারের সম্মেলনে।
এবারের সম্মেলনে শেষ দুই দিন মন্ত্রিপর্যায়ের (কৃষিমন্ত্রী) মিটিং হবে। মন্ত্রিপর্যায়ে সম্মেলনের উদ্বোধন হবে বৃহস্পতিবার (১০মার্চ)। ওইদিন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
সম্মেলনের মূল অধিবেশনের (প্ল্যানারি সেশন) ভেন্যু হচ্ছে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল।
উল্লেখ্য, এফএওর ৩৫তম এশিয়া ও প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন ২০২০ সালে ভুটানের থিম্পুতে অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে ২০২২ সালে অনুষ্ঠেয় ৩৬তম এশিয়া ও প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন (APRC) বাংলাদেশে অনুষ্ঠানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল।
কৃষি মন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন
এদিকে এফএও এর ৩৬ তম সম্মেলন উপলক্ষে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক সোমবার (৭ মার্চ) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সম্মেলনের তুলে ধরেছেন। তিনি জানান, সম্মেলনে ৪৬ টি দেশের ৯০০প্রতিনিধি অংশ নেবেন। তিনি জানান, মূল অধিবেশন ছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং কান্ট্রি শোকেসিং এর ভেন্যু হিসেবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রকে (বিআইসিসি) নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, এই সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও দপ্তর/সংস্থার প্রতিনিধিগণের সমন্বয়ে ১ টি স্টিয়ারিং কমিটি এবং ১৪ টি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি জানান, বিশ্বব্যাপী কোভিড পরিস্থিতির কারণে সম্মেলনটি হাইব্রিড (সরাসরি ও ভার্চুয়াল) ফরমেটে আয়োজন করা হয়েছে। সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে ৪৩টি সদস্য রাষ্ট্র, এফএও’র মহাপরিচালক, জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী, এনজিও ও সিভিল সোসাইটির প্রায় ৯০০ জন প্রতিনিধি রেজিস্ট্রেশন করেছেন। সম্মেলনে সদস্য দেশের প্রধানমন্ত্রী/মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী পর্যায়ের ৪২ জন সম্মানিত সদস্য অংশগ্রহণ করবেন।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) একটি বিশেষায়িত সংস্থা; যা বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা নিরসনের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ এফএও- এর সদস্যভুক্ত হয়। এফএও-এর একটি আনুষ্ঠানিক ফোরাম হিসেবে প্রতি দুই বছর পর পর আঞ্চলিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে সংশ্লিষ্ট দেশের মন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা খাদ্য ও কৃষির চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান সম্পর্কে আলোচনা করে থাকেন।
এফএও-এর প্রথম আঞ্চলিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৫৩ সালে ভারতের বেঙ্গালুরুতে ।
এনএইচবি/