র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞায় ঘাবড়ানোর কিছু নেই: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, র্যাবের উপর একটি দেশ যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি। আমাদের দেশে কারা কী কাজ করে না করে, সেটা আমরা জানি; বিচারটা আমরাই করব।
রবিবার (১৯ মার্চ) সকালে এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দরবারে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দপ্তরে এ দরবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কিছু দিন আগে একটা দেশ র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এজন্য অনেকেই প্রথমে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু এখানে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। কারণ এটা আমাদের দেশ। আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি। আমাদের দেশে কারা কী কাজ করে না করে, সেটা আমরা জানি; বিচারটা আমরাই করব। সেই আত্মবিশ্বাস রেখে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশের কোনো ভালো কাজই দেশবিরোধী কিছু শক্তির চোখে পড়ে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরেকটা শ্রেণির অভ্যাসটাই হলো বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের বদনাম করা। এ বদনাম করে হয়ত তারা কিছু আর্থিক বা অন্য কোনো সুবিধা পায়। আমাদের যারা বিভিন্ন দক্ষতা ও সফলতার সঙ্গে কাজ করেন, তাদের বিরুদ্ধেই আগে বদনাম করা হয়। বাংলাদেশের কোনো উন্নতি তাদের চোখেই পড়ে না। তবে আমি বলব, এক্ষেত্রে কারো মনে কষ্ট নেওয়া উচিত না।’
তিনি বলেন, ‘যারা এ ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের বদনাম করে, দেশের একেকটা প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তারা কেন, কোন উদ্দেশ্যে এ সব করছে, সেটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। আমি যেহেতু সরকারে আছি, তাই আমি বলতে পারি, কে ভালো করল, কে মন্দ করল, সেটার বিচার তো আমরাই করতে পারি। আমরা আমাদের ভালো-মন্দ অপরাধের বিচার করি; অনেক উন্নত দেশই যেটা করে না। এখানে অপরাধের বিচার হয়। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে আমরা চলব।’
র্যাবকে ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, র্যাব বর্তমানে জল, স্থল ও আকাশ পথে নজরদারি ও অভিযান পরিচালনা করছে। ৪টি ব্যাটালিয়ন নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও এখন ১৫টি ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এ দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ’৭৫-এর পর যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা মানুষকে কী দিতে পেরেছে? কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে; দেশের সার্বিক উন্নয়ন চলছে। বাংলাদেশকে আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র ৩ বছর ৭ মাস সময় পেয়েছিলেন। যেখানে এক টাকা রিজার্ভ মানি ছিল না, কারেন্সি নোট ছিল না, খাবার ছিল না। অনেক অবকাঠামো ধ্বংসাত্মক অবস্থায় ছিল। এটা একটা প্রদেশ ছিল। যুদ্ধবিধ্বস্ত এমন একটা প্রদেশকে রাষ্ট্রে উন্নীত করে মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেছিলেন জাতির পিতা। আমাদের প্রবৃদ্ধি ৯ ভাগে উঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। তারপরই তো ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের ঘটনা ঘটল। জাতির পিতাকে হত্যা করে এ অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করে দেয়া হয়। এর ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারে আসে। প্রথম ৫ বছর আমরা যথেষ্ট উন্নয়ন করে গিয়েছিলাম। তারপর আর সরকারে আসতে পারিনি। কিন্তু ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।’
আরএ/