রাজশাহীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় তিন নেতাকে সতর্কবার্তা

(বাম থেকে) মিজানুর রহমান মিনু, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এবং শফিকুল হক মিলন। ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহী মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে দলের কেন্দ্রীয় তিন নেতাকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। এই নেতারা হলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, এবং বিএনপির ত্রাণ ও পূনর্বাসন সহ-সম্পাদক শফিকুল হক মিলন।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড এরশাদ আলী এশা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা ও সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত তিনটি পৃথক চিঠি গত সোমবার পাঠানো হয়। এই চিঠিতে বলা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা ও ঐক্য বজায় রাখতে নেতাদের সতর্ক থাকতে হবে, কারণ তাদের কিছু কার্যক্রম মহানগর বিএনপির শৃঙ্খলা এবং সংগঠনের ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
শফিকুল হক মিলনের বিরুদ্ধে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি রাজশাহী মহানগর বিএনপির অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডে দলের নাম ব্যবহার করে বিতর্কিত কর্মসূচি চালাচ্ছেন এবং গঠনতন্ত্রের বিপক্ষে সাংগঠনিক পদ ব্যবহার করছেন। এতে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে, যা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নজরে এসেছে। এই পরিস্থিতি থেকে বিরত থাকতে তাকে সতর্ক করা হয়েছে।
এছাড়া মিজানুর রহমান মিনু ও মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, তারা দায়িত্বশীল পদে থেকেও মহানগর কমিটিকে অমান্য করে বিতর্কিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন, যার ফলে দলের ঐক্য ও শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। তাদেরকে এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ জানিয়েছেন, গত বছরের আগস্ট মাসে, মিজানুর রহমান মিনু দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে একটি জমি দখলের অভিযোগ করেছিলেন, যা পরে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এই বিষয়ে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছিল, তবে এর পরও একই ধরনের আচরণ লক্ষ্য করা গেছে। ফলে দলের হাই কমান্ডের নির্দেশে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এই সতর্কবার্তার প্রতিক্রিয়ায় মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল মন্তব্য করেছেন, তিনি মনে করেন, ইউনিট কমিটির এই চিঠি দেওয়ার এখতিয়ার নেই এবং তাদের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন। মিজানুর রহমান মিনু এ বিষয়ে বলেন, তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছেন এবং মহানগর কমিটির এই ধরনের কার্যক্রম দলের শৃঙ্খলা বিনষ্ট করছে।
এদিকে, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড এরশাদ আলী এশা জানান, ২০২১ সালে মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর থেকে মিনু, বুলবুল এবং মিলনের সঙ্গে তাদের অসহযোগিতার কারণে বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। এই বিভাজন দলের শৃঙ্খলা ও ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তিনি জানান, কেন্দ্রের নির্দেশেই তারা এসব নেতাদের সতর্ক করেছেন এবং ভবিষ্যতে যদি তারা শৃঙ্খলা না মানেন, তবে বিষয়টি কেন্দ্রকে জানানো হবে।
