অন্ধকারে নগরী, হাসপাতালে ভোগান্তিতে রোগী
জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে দুপুর ২টা ৫ মিনিট থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় অংশ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলেও রাজধানীর প্রায় পুরোটাই গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত।
সন্ধ্যার পর বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ফোন করে জানিয়েছেন, অনেক এলাকাতেই মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। লোকজন চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় পার করছেন। কখন বিদ্যুৎতের আলোয় নগরী আলোকিত হবে সেই অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন।
মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্ধা মুনতাছিরুল হক জানিয়েছেন, ওই এলাকা পুরোটাই অন্ধকারে নিমজ্জিত। অধিকাংশ বাসা বাড়িতে জেনারেটর ব্যাকআপ শেষ হয়ে যাওয়ায় এলাকাগুলো অন্ধাকারে ডুবে গেছে। যেসব বাসায় আইপিএস আছে সেগুলোও বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষমতা হারিয়েছে।
তবে নগরীর কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ এসেছে বলে জানিয়েছে কেউ কেউ। শেখেরটেক ৬ নম্বর এলাকার বাসিন্ধা তানভীর রাব্বি জানান, কিছুক্ষণ আগে বিদ্যুৎ এসেছিল। কিন্তু স্বল্প সময়ের মধ্যে আবার চলে যায়।
দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা এখন পর্যন্ত পুরো এলাকা বিদ্যুৎহীন জানিয়ে তিনি বলেন, সন্ধ্যার পর অন্ধকারে একটা থমথমে অবস্থা তৈরি হয়েছে।
একদিকে বিদ্যুৎ নেই, তার উপর আবার ভ্যাপসা গরম। নগরীর মানুষ হাঁপিয়ে উঠেছেন। সন্ধ্যার পর অনেক এলাকায় লোকজন পাড়া-মহল্লার সড়কে নেমে এসছেন।
এদিকে দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ না থাকা, বাসা-বাড়ির জেনারেটর বন্ধ হয়ে যাওয়ায পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে হঠাৎ করেই মোমবাতির বিক্রি বেড়ে গেছে। এই সুযোগে কিছু কিছু ব্যবসায়ী মোমবাতি চড়া দামে বিক্রি করছেন।
বিদ্যুৎ সংকটের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে।
সোহরাওয়াদী হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে রোগীরা মোমবাতি জ্বালিয়ে অন্ধকার পরিবেশ থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এই হাসপাতালে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা বন্ধ প্রায়। জেনারেটর চালিয়ে অপারেশন থিয়েটারে জরুরি অপরাশেন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু আলো কম থাকায় অপারেশন কাজ বন্ধ রয়েছে। একই অবস্থা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে।
এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, ইতিমধ্যে মিরপুর, এয়ারপোর্ট, গুলশান, বারিধারা কূটনৈতিক এলাকা ও টঙ্গী এলাকায় আংশিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা গেছে। এখন পর্যন্ত ২০৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া গেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ চেষ্টা করছে, হাসপতালগুলোকে অগ্রাধিক দিতে। একই কেপিআইভুক্ত এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহের চেষ্টা চলছে।
এনএইচবি/এমএমএ/