তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই: ইফতেখারুজ্জামান
ফাইল ফটো
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই, সাংবিধানিকভাবে এটি সম্ভব নয়। আমরা কোনো অবস্থায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলছি না। এটির প্রয়োজন নেই, আমরা মনে করি এটি সাংবিধানিকভাবেও সম্ভব নয়। সেটা বিতর্কের ঊর্ধ্বে। যে জিনিসটা দরকার ও সম্ভব সেটি হচ্ছে অন্য দেশেও ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনের সময় কেন্দ্রীয় ভূমিকায় দায়িত্ব পালন করে, সরকারে থাকে। কিন্তু তাদের মূলত দায়িত্ব থাকে নির্বাচন কেন্দ্রিক ভূমিকা পালন করা। সরকারের অন্য ভূমিকা থেকে তারা ঊর্ধ্বে থাকে।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টম্বর) আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক দিবস উপলক্ষে ভার্চ্যুয়ালি এক আলোচনা সভায় এ সব কথা বলেন ইফতেখারুজ্জামান।
‘অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন: গণতান্ত্রিক সুশাসনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক সভায় ড. ইফতেখারুজ্জামান এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভোটে সরকার ইসিকে সহায়তা করবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে পেয়েছিলাম। এখন যদি আমরা আবার পেয়ে যাই, সেটা হয়তোবা স্বাগত হতে পারে। কিন্তু সাংবিধানিকভাবে সেটি কোনো অবস্থায় সম্ভব নয়। আমাদের প্রত্যাশা হবে আদর্শ গণতান্ত্রিক চর্চায় যাওয়া। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আদর্শিক গণতান্ত্রিক চর্চার মধ্যে পড়ে না। এটি একসময় ইতিবাচক ফল দিয়েছিল, কিন্তু এতে বিতর্কও আছে।
সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেটি করার ক্ষেত্রে দুটি মূল প্রতিবন্ধকতা আছে। একটি হচ্ছে, ভোটের সময়ে সরকারের ভূমিকা কতটা নিরেপেক্ষ হবে, স্বার্থের দ্বন্দ্ব কতটা হবে— সেটি নিশ্চিত করার জন্য আইন সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। ইসি এমনটা উপলব্ধি করে বলে আমরা মনে করি। তার উপর ভিত্তি করে ইসি সরকারকে পরামর্শ দিতে পারে। কীভাবে আইনি রূপরেখা তৈরি করা যায় সেটা ভাবতে হবে। নির্বাচনকালীন সরকার তার ভূমিকা এমনভাবে পালন করবে যেন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা যায়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালকের মতে, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য থেকে যখন ভোটে অংশ নেওয়া হয় তখন অটোমেটিক ফিল্ড নষ্ট হয়। স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে চাপ থাকে। এ বিষয়ে ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনের সংস্কার দরকার।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যে ভূমিকা ভোটের সময় কীভাবে নিরপেক্ষ করা যায়— সেটা ইসির ভেবে দেখতে হবে। গণমাধ্যম, পর্যবেক্ষকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করা। এটি ইসি চায় বলে আমরা মনে করি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে যেহেতু ইসি নিজেই অংশীজন বলে স্বীকৃতি দিয়েছে, সেহেতু ভোটের সময় ইন্টারনেটের গতি কমানো বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করা হয় সেই বিষয়ে তারা সচেষ্ট থাকবে।
ইভিএমের ক্ষেত্রে বিতর্ক আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইসির উচিত হবে এর রাজনৈতিক, কারিগরি ও অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করে দেখা।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মো. রফিকুল হাসান।
তিনি বলেন, টিআইবি মনে করে যদি সব দলের আস্থা সৃষ্টির মাধ্যমে তাদেরকে নির্বাচনে নিয়ে আসতে আইনগত পরিবর্তন-সংস্কার প্রয়োজন হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশনকে সেকথা স্পষ্টভাবে সরকারকে জানিয়ে দিতে হবে।
এনএইচবি/আরএ/