রোজা ও নামাজ আদায় করে বিপাকে থালাপতি বিজয়, হচ্ছে মামলা

রোজা ও নামাজ আদায় করে বিপাকে থালাপতি বিজয়। ছবি: সংগৃহীত
থালাপতি বিজয় খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী হলেও অন্যান্য ধর্মের প্রতি রয়েছে তাঁর সমান শ্রদ্ধা। তিনি প্রতি রমজানে ইফতার পার্টির আয়োজন করেন। মুসলমানদের সঙ্গে বসে করেন ইফতার। এবার আরও বড় পরিসরে ইফতার পার্টির আয়োজন করেছিলেন বিজয়। সেখানে ইফতারের পাশাপাশি মোনাজাত ও নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে তাঁকে।
দক্ষিণি সিনেমায় থালাপতি বিজয় ব্যাপক জনপ্রিয় নাম। সেই জনপ্রিয়তা এবার রাজনীতির ময়দানে প্রমাণের পালা। অভিনয় ছেড়ে এখন তিনি পুরোপুরি রাজনীতিবিদ। এরই মধ্যে তৈরি করেছেন নিজের রাজনৈতিক দল তামিঝাগা ভেটরি কাজাগাম বা তামিলনাড়ু বিজয় পার্টি। ২০২৬ সালের তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেবে দলটি।
এ দলের পক্ষ থেকে রয়াপেট্টার ওয়াইএমসিএ গ্রাউন্ডে ৭ মার্চ এক বিশাল ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফ্রি প্রেস জার্নাল জানিয়েছে, থালাপতি বিজয় এদিন রোজা রেখে সবার সঙ্গে মোনাজাত ও ইফতারে অংশ নেন। ইফতারের পর মুসলমানদের সঙ্গে একই কাতারে দাঁড়িয়ে মাগরিবের নামাজ আদায় করতেও দেখা যায় বিজয়কে।
জানা গেছে, এদিন বিজয়ের সঙ্গে প্রায় তিন হাজার লোক অংশ নেয় ইফতারে। এ ছাড়া এসেছিলেন চেন্নাইয়ের বিভিন্ন শহরের ১৫টি মসজিদের ইমামরা।
বিজয়ের এই ইফতার পার্টির একাধিক ছবি ও ভিডিও ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। থালাপতি বিজয়ের এই ভিডিও ভক্তদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকে তার এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রয়াসের প্রশংসা করেছেন। ভক্তরা সামাজিক মাধ্যমে তার এই কাজকে সাহসী এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু একই সঙ্গে, কিছু নেটিজেনরা তাকে ট্রোল করতেও ছাড়েননি।
এবার ভারতীয় গণমাধ্যমে নতুন খবর, এই ইফাতারে অংশ নেওয়ায় মুসলিম সম্প্রদায়কে অপমান করার অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণী তারকার বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই তামিলনাড়ু সুন্নত জামাত চলচ্চিত্র তারকা বিজয়ের বিরুদ্ধে চেন্নাই পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
তামিলনাড়ু সুন্নত জামাত এর কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ কওস আইনি পদক্ষেপ করছেন। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, “বিজয় আয়োজিত ইফতারে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে অপমান করা হয়েছে। রোজা বা ইফতারের সঙ্গে মদ্যপ ও গুন্ডাদের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা মনে করি, ওই অনুষ্ঠানে এদের উপস্থিতি মুসলিমদের পক্ষে অপমানজনক।”
সৈয়দ কওস দাবি করেছেন, গোটা অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল ‘খারাপ’ ভাবে। তাঁদের কাছে বিজয় একবারও দুঃখপ্রকাশ করেননি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁদের অভিযোগ, বিজয়ের ‘বিজাতীয় রক্ষী’র সকলেই তাঁদের অপমান করেছেন। আমন্ত্রিতদের সঙ্গে ‘গরুর মতো ব্যবহার’ করা হয়েছে বলেও তাঁর দাবি। কওস বলেন, “এ ধরনের ঘটনা যাতে আগামী দিনে ফের না ঘটে সে জন্য বিজয়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আমরা কিন্তু প্রচারের আলোয় আসার জন্য অভিযোগ দায়ের করিনি।” ওই ইফতারে কিছু মানুষের মদ্যপান করে উপস্থিত হওয়াতেই আপত্তি তুলেছেন আমন্ত্রিতদের একাংশ।
