ডেঙ্গু প্রতিরোধে কেরোসিন-নোভালিউরন ব্যবহারের পরামর্শ
গত কয়েক দিনে ডেঙ্গুর উদ্বেগজনক বিস্তার ঘটেছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে এবং ডেঙ্গুর লার্ভা বহনকারী এডিস মশা ধ্বংসে কেরোসিন ও ‘নোভালিউরন’ ট্যাবলেট ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি ‘নোভালিউরন’ ট্যাবলেট বদ্ধ পানিতে ছেড়ে দিলে এডিসের লার্ভা জন্মাবে না। একইভাবে কেরোসিনও প্রয়োগ করা যেতে পারে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নোভালিউরন ট্যাবলেটও এখন সহজে পাওয়া যাচ্ছে। ফার্মেসির পাশাপাশি ঢাকার প্রায় সব নার্সারিতে এটি পাওয়া যাচ্ছে। কেরোসিনও সহজলভ্য।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ইতোমধ্যে এই ট্যাবলেটের ব্যবহার শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বদ্ধ জলাশয়ে এই ট্যাবলেট ব্যবহার করছে। পাশাপাশি নগরবাসীও যাতে ডেঙ্গু থেকে মুক্ত থাকতে পারে সেজন্য এই ট্যাবলেট ব্যবহার করতে পরামর্শ দিচ্ছে সিটি করপোরেশন।
ডিএনসিসির অঞ্চল-৩ এর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আজিজুন নেসা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, জমে থাকা পানিতে কেরোসিন বা নোভালিউরন প্রয়োগ করলে এডিসের লার্ভা জমে না। নোভালিউরন ট্যাবলেটটা এখন প্রতিটি নার্সারিতে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।
এডিস মশার লার্ভা নির্মাণাধীন ভবনে জমে থাকা পানিতে জন্মায়। একারণে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছে যাতে রিহ্যাব সদস্যদের সাংগঠনিকভাবে সতর্ক করা হয়।
জানা যায়, রিহ্যাবের সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল) এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে সদস্যদের ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তিনি সদস্যদের প্রতি কনস্ট্রাকশন সাইটের চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, জমানো পানি তিনদিন পরপর ফেলে দেওয়া এবং জমানো পানি ফেলে দেওয়া সম্ভব না হলে ০.১২পি নোভালিউরন’ ট্যাবলেট ব্যবহার করতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ০.১২পি নোভালিউরন ট্যাবলেট বা কেরোসিন শুধু জলাশয়ে প্রয়োগ করতে হবে যেটি সরাসরি নালার সঙ্গে সংযুক্ত নয়। এ ছাড়া চাষাবাদ অযোগ্য কৃষি ও অকৃষিজাত অঞ্চল, নালা-নর্দমার জায়গা, সেচ ও ড্রেজিং করা জায়গা, ডেইরি ও পোল্ট্রি নালা, অন্যান্য পশুর বর্জ্য নিষ্কাশনের নালা, জলাশয়, পশুপালনের নালা, কারখানার বর্জ্য নিষ্কাশন নালা, জলাশয়, পরিত্যক্ত পুকুর, পয়োনিষ্কাশন নালা, নর্দমায় এগুলো প্রয়োগ করা যায়।
গাছের গুঁড়ি বা গর্ত, পাখির গোসলের জায়গা, কারখানার পরিত্যক্ত জলাশয়, নালা, বৃষ্টিতে ছাদে জমে থাকা পানি, পরিত্যক্ত সুইমিংপুল, জলাশয়, পরিত্যক্ত যানবাহন, পানি জমে থাকার জায়গা (যেমন, টায়ার, টবের পাত্র, ক্যান, ও অন্যান্য কন্টেইনার), বহনযোগ্য পানির পাত্র বা কন্টেইনার এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক এবং মনুষ্যসৃষ্ট জলাধারের জায়গায় কেরোসিন বা নোভালিউরন প্রয়োগ করলে মশার লার্ভা আর জন্মাবে না।
এনএইচবি/এসএন