ভারত থেকে অনেককিছু পেয়েছে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
ভারত থেকে শূন্য হাতে ফিরেননি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারত থেকে শূন্য হাতে নয়, বরং বাংলাদেশ অনেক কিছু পেয়েছে। দু’দেশের একসঙ্গে নতুনভাবে এগিয়ে চলার গতি সঞ্চার হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কি পেলাম সেটা নির্ভর করে বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন। বাংলাদেশের ভৌগলিক যে অবস্থান সেখানে চারিদিকে কিন্তু ভারত। একপাশে অল্প একটুখানি মায়ানমার। সেই বন্ধুপ্রতীম দেশ থেকে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য, আমাদের কৃষি যোগাযোগ। আমাদের সব বিষয়ে যে সহযোগিতা টা..এমনকি আমাদের তেল..আমরা পাইপ লাইনের মাধ্যমে কিন্তু তেল নিয়ে আসছি। পাইপ লাইন ভারত তৈরি করে দিচ্ছে। পার্বতীপুর আমাদের যে ডিপো, সেই ডিপোতে থাকবে। সেই চট্টগ্রাম থেকে বাঘাবাড়ি..এতদূর আর যেতে হবে না। রিফাইন করা তেল ওখানেই পাবে। উত্তরাঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য আরও বৃদ্ধি পাবে। মানুষের আর্থিক অবস্থা উন্নত হবে। এভাবে যদি আপনি একটা একটা করে চিন্তা করেন..অনেক পণ্য আমাদের আমদানি করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে হয়তো সমস্যা দেখা দেয়। সেগুলো যাতে আমরা ঠিকমত পাই।
সাম্প্রতিক ভারত সফর নিয়ে বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এলএনজি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ভারত যে এলএনজি নিয়ে আসছে সেখান থেকে যাতে আমরা পাই। খুলনার ওই অংশটা যাতে আমরা আনতে পারি। ওই দিকে যাতে গ্যাসের সমস্যা.. এরকমভাবে যদি চিন্তা করেন, অনেক কিছু পেয়েছি। শূন্য হাতে ফিরে আসিনি। যেমন বাংলাদেশের এত কাজ করার পরও বিএনপি বলে কিছুই করিনি। তাহলে এখানে আমার তো কিছু বলার থাকে না। এটা হচ্ছে মানুষের আত্মবিশ্বাসের ব্যাপার।
গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভারত সফরে সহযোগিতার যেসব ক্ষেত্র চিহ্নিত হয়েছে তা এবং বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে তা বাস্তবায়ন করলে উভয় দেশের জনগণ উপকৃত হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী যে চুক্তিগুলো করেছিলেন, সেগুলো যদি একে একে বাস্তবায়িত হতো; তাহলে আমাদের দেশের জন্য অনেক কল্যাণ বয়ে আনতো। সেগুলো অনেকগুলোই আমরা ইতোমধ্যে কার্যকর করেছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়েছে সমস্ত জলাভূমিগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার এবং জলাধার সংরক্ষণ করা। সেচের খালগুলো বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেগুলো আবার নতুন করে মেরামত করা হয়েছে। কতগুলো খাল আবার এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন পানি নষ্ট না হয়। ইতোমধ্যে যৌথ নদী কমিশনের মিটিং হয়ে গেছে। কুশিয়ারার পানিটা যেহেতু পাব, আমরা এটা দ্রুত করবো।
তিনি বলেন, ‘ভারতের আন্তরিকতা সবসময়ই ছিল। বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতের সব দলমত এক থাকে। একাত্তরে যেমন এক হয়ে সমর্থন দিয়েছিল। আবার ছিটমহল যখন বিনিময় করি ভারতের সংসদে যখন এটা পাস হয় তখন দেশটির সব দল কিন্তু সমর্থন দিয়েছিল।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা দেশের সঙ্গে নানা সমস্যা থাকতে পারে। কিন্তু আমি মনে করি সেসব আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যায়। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি অন্তত পরিষ্কার- কারও সাথে বৈরিতা নয়, সকলের সাথে বন্ধুত্ব। ’৯৬ সালের পর আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা নিয়ে কেউ কথা-ই বলেনি। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে ভারত ও মিয়ানমারের সাথে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। তবে এতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনও ফাটল ধরেনি’।
এনএইচবি/এএস