আগের ভাড়ায় চলছে দূরপাল্লার বাস
দূরপাল্লা বাসের বর্ধিত ভাড়ার তালিকা এখনো বাস কাউন্টারগুলোতে পৌঁছায়নি। তাই পূর্ব নির্ধারিত হারেই ভাড়া আদায় করছে কাউন্টারগুলো। কিলোমিটার প্রতি ১ টাকা ৮০ পয়সা ধরে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। তবে কোন কোন বাস মালিক কাউন্টারগুলোতে জানিয়ে দিয়েছেন— যাত্রী প্রতি পঞ্চাশ টাকা বাড়তি ভাড়া আদায় করার জন্য।
এদিকে জ্বালানির তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে দূরপাল্লা বাসের সংখ্যা অনেক কম দেখা গেছে।
রবিবার (০৭ আগস্ট) সকালে গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া যায়। টিকিট বিক্রেতা, কাউন্টার মাস্টার ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়।
কমফোর্ট লাইন বাসের কাউন্টার ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশ’কে বলেন, আমাদের কাছে এখনো নতুন ভাড়ার তালিকা পৌঁছেনি। বিকালের মধ্যেই সেই তালিকা চলে আসবে বলে জানতে পেরেছি। তবে আমাদের বলে দেওয়া হয়েছে যাত্রী প্রতি গড়ে ৫০ টাকা বেশি ভাড়া রাখতে। যদিও নতুন তালিকা অনুযায়ী যাত্রী প্রতি বাড়তি ভাড়া হবে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। যেহেতু নতুন তালিকা নেই তাই যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিতে পারছি না। নতুন তালিকা এলে তালিকা দেখিয়ে বাড়ার কথা বলা যাবে।
অন্যদিকে, গোল্ডেন লাইনের টিকিট বিক্রেতা বাবু ঢাকাপ্রকাশ’কে বলেন, আগের ভাড়ায় যাত্রী পাচ্ছি না। ব্যবসা নেই। আজ বাস কাউন্টারগুলোতে দেখছেন অর্ধেক বাসও নেই। প্রত্যেকটি পরিবহন তাদের নির্ধারিত ট্রিপ কমিয়ে দিয়েছে। যে হারে তেলের দাম বেড়েছে তাতে বাস চালানো কষ্টকর। যাত্রি প্রতি হয়ত ১০০ থেকে ১১০ টাকা বেশি আদায় করা হবে। তবে এখন প্রতিটি বাসে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে যেতে হচ্ছে। তাই বাড়তি ভাড়া নিয়েও লোকশনে পড়তে হচ্ছে।
বাস কাউন্টার ম্যানেজার, বাসের চালক ও টিকিট বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা থেকে যশোর ঝিকরগাছা যাওয়া আসায় ১৫০ লিটারের মতো জ্বালানি প্রয়োজন হয়। গুগল ম্যাপ অনুযায়ী ঢাকা থেকে ঝিকরগাছা দূরত্ব ২২০ কিলোমিটার। নতুন ভাড়া অনুযায়ী এই ২২০ কিলোমিটারের যাত্রী প্রতি (প্রতি কিলোমিটার দুই টাকা ২০ পয়সা ধরে) ভাড়া হয় ৪৯৫ টাকা। এর সঙ্গে ফেরি ভাড়া যুক্ত হয় যাত্রী প্রতি। তাতে ভাড়া বেড়ে যায়।
নতুন মূল্য অনুযায়ী ১৫০ লিটার ডিজেলের দাম পড়ে ১৭ হাজার ১০০ টাকা। পূর্বের মূল্য অনুযায়ী একই দূরত্বের জ্বালানি খরচ হতো (প্রতি লিটার ৮০ টাকা ধরে) ১২ হাজার টাকা। অর্থাৎ শুধু জ্বালানি বাবদ বাড়তি খরচ হচ্ছে ৫১০০ টাকা।
অন্যদিকে, ৫০ আসন বিশিষ্ট একটি বাস যদি পূর্ণ যাত্রী নিয়ে যেতে পারে, সে ক্ষেত্রে একটি ট্রিপ থেকে বাস মালিক পাবে ৪৪০০ টাকা।
সূর্যমুখী বাসের যাত্রী রহিমা বেগম ঢাকাপ্রকাশ’কে বলেন, আমার কাছ থেকে বরিশালে ভাড়া নিয়েছে ৬০০ টাকা। পদ্মা সেতু দিয়ে গেলে ৩০০-৩৫০ টাকায় চলে যাওয়া যায়। আজ গাবতলী আসার পর কাউন্টার থেকে বলা হয়, তেলের দাম বাড়ছে তাই ভাড়া বেশি। পাশেই আরেক যাত্রী জানান তার কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছে ৫০০ টাকা। অর্থাৎ যার কাছ থেকে যেভাবে পারছে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
তবে সার্বিক চিত্র দেখে মনে হয়েছে গাবতলীতে বাসের সংখ্যা কিছুটা কমেছে। রবিবার বিকালে নতুন ভাড়ার তালিকা আসার পর বাস কাউন্টারগুলোতে সেগুলো টাঙিয়ে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
এসএম/আরএ/