সরকারি সিদ্ধান্তের আগেই যাত্রীদের পকেট কাটছে বাস কোম্পানিগুলো
বাস ভাড়া নিয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার আগেই বাস ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের কাছ থেকে। এছাড়া বাসের সংখ্যাও কমানো হয়েছে। দূরপাল্লার এবং ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী উভয় ধরনেরই বাসেই যাত্রীদের পকেট কাটা হচ্ছে।
শনিবার (৬ আগস্ট) দুপুর একটায় রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, বাস ভাড়া মূলত বেশি নিচ্ছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দোকার এনায়েত উল্লাহর মালিকানাধীন এনা পরিবহন। এমন অভিযোগই করলেন যাত্রীরা।
কথা হলো রংপুরের যাত্রী কলিমউল্লাহর সঙ্গে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবারও (৫ আগস্ট) ভাড়া দিয়েছি ৯০০ টাকা। কিন্তু আজ ভাড়া নিলো এক হাজার টাকা। কাউন্টার থেকে বলা হলো, ডিজেলের দাম বেড়েছে। তাই ভাড়া বেশি।
কথা হয় মহাখালী বাস টার্মিনালের এনা পরিবহনের উত্তর বঙ্গ কাউন্টারের ম্যানেজারের সঙ্গে। তিনি নাম বলতে চান না এবং অনরেকর্ড কথাও বলতে চাননি। শুধু বললেন, আমাদের কাছে নির্দেশনা দেওয়া আছে ভাড়া বেশি নিতে। কত বেশি নিবো সেটিও বলে দেওয়া হয়েছে। চাকরি করি তাই এর চেয়ে বেশি বলতে পারব না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ময়মনসিংহগামী বাসের ভাড়াও এনা পবিরহন বাড়াবে। আপনি গিয়ে দেখেন কোনো বাস ছাড়ছে না।
এদিকে, এনা পরিবহনেরই চট্টগ্রামগামী যাত্রী অভিযোগ করেন, চট্টগ্রামের ভাড়া ছিল ৪৮০ টাকা। সেটি আজ নিলো ৫৬০ টাকা। অভিযোগকারী যাত্রী সরকারি চাকরিজীবী হওয়ায় নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।
কথা হয় রাজশাহীগামী একতা পরিবহনের লাইনম্যান মোহাম্মদ হানিফের সঙ্গে। তিনি বলছেন, গাড়ি ছাড়ছে কম। আজ যাত্রীও কম। কিন্তু সব পরিবহন কোম্পানিই বাসের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে।
এনা পরিবহন ভাড়া বেশি নিলেও বেশির ভাগ বাস কোম্পানিই সরকারি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে। সিদ্ধান্ত না হওয় পর্যন্ত আগের ভাড়াই নেওয়া হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জগামী অনন্যা ক্লাসিকের ম্যানেজার মনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা ভাড়া বেশি নিচ্ছি না। এমন কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি।
অনন্যার কাউন্টারের সামনেই দাঁড়ানো এক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা মিলল। আবদুর রহিম নামের ওই যাত্রী টিকিট দেখিয়ে বললেন, আগেও ২০০ টাকা ভাড়া ছিল আজও তাই নিলো।
অভিযোগ সম্পর্কে কথা হয় এনা পরিবহনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার এস এম খালেদের সঙ্গে। ঢাকাপ্রকাশ'র কাছে তিনি ভাড়া বেশি নেওয়া এবং বাসের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা নিয়ম মেনে গাড়ি চালাই। ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে না। বাসের সংখ্যাও কমানো হয়নি। বিআরটিএ এর সঙ্গে মালিক সমিতির বৈঠকের পর যে সিদ্ধান্ত আসে সে অনুযায়ী ভাড়া নেওয়া হবে।
এদিকে, ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী বাসের সংখ্যাও সারাদিনই কম ছিল। শত শত যাত্রীকে বিভিন্ন পয়েন্টে বাসের অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়।
মগবাজার মোড়ে কথা জ্যামে দাঁড়িয়ে থাকা গুলিস্তান গাজীপুর পরিবহনের যাত্রী লিটনের সঙ্গে। তিনি জানালেন, গুলিস্তান থেকে মহাখালী যাচ্ছেন। এই পথের ভাড়া ছিল ২৫ টাকা। আজ নেওয়া হলো ৩০ টাকা।
আরইউ/এএস