মন্ত্রিসভা বৈঠক
আদালতে ভিকটিমের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না
আদালতে ভিকটিমের চরিত্র নিয়ে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। চারিত্রিক কোনো প্রশ্ন করতে হলে আদালত থেকে অনুমতি নিতে হবে। এমন বিধান রেখে এভিডেন্স অ্যাক্ট-২০২২ এর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি সভায় যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন।
অপরদিকে মন্ত্রিসভার সদস্যরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষ থেকে বৈঠকে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এভিডেন্স অ্যাক্ট এর আগে গত ১৪ মার্চ মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হয়েছিল। তখন এটি নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। আজ সেটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখানে বিশেষ কয়েকটা অ্যামেন্টমেন্ট আনা হয়েছে। এর মধ্যে একটা হলো- সেকশন ১৪৬ এর ৩ অনুযায়ী একটা বিধান ছিল, যে ভিকটিম থাকে তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। এটা রেস্টিকটেড করে দেওয়া হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, কারো চারিত্রিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলতে হলে আগে আদালত থেকে অনুমতি নিতে হবে। আদালত বিবেচনা করবেন কারো চারিত্রিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে কিনা।
তিনি বলেন, ডিজিটাল কোর্ট, ডিজিটাল এভিডেন্স, ডিজিটাল সাক্ষ্য এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলো এভিডেন্স অ্যাক্টে ছিল না। একই সঙ্গে আইটির ক্ষেত্রে ডাটা বা ইনফরমেশন এগুলো ব্যবহার করা যাবে। যেসব ইনফরমেশন এবং ডাটাকেও সাক্ষ্য হিসেবে নেওয়া যাবে।
এই আইনের আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। আইনের ৪৫ নম্বর সেকশনে ডিজিটাল রেকর্ডের বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। এটাকে এভিডেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, এই আইনটি দ্রুত বাংলায় করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আনোয়ারুল ইসলাম জানান, মন্ত্রিসভা বাংলাদেশ শিল্প-নকশা আইন ২০২২ এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটিকে আধুনিক করা হয়েছে। মূলত মেধা সম্পদ সংরক্ষণের জন্য এই আইন। আমাদের একটা আইন ছিল ১৯১১ সালের। এটা অনেক পুরোনো। এটাকে আধুনিক করা হয়েছে। এই আইনের অধীনে কতিপয় শিল্প-নকশা সুরক্ষা পাবে। আবার কিছু কিছু পাবে না। প্রযুক্তিগত বা ব্যবহারিক দিক শুধু বিবেচনা করা হয়েছে- এরকম কোনো শিল্প-নকশা সুরক্ষা পাবে না। যার বাণিজ্যিক ব্যবহার, জনশৃঙ্খলা পরিবেশ ও নৈতিকতার পরিপন্থী সেগুলো সুরক্ষা পাবে না।
তিনি আরও জানান, আবার নিজের মতো করে কোনো শিল্প-নকশা করলেন কিন্তু রেজিস্ট্রেশন করলেন না। নিজের মতো করে শিল্প চালাচ্ছেন, প্রফিট করছেন। তখন যদি এটা অন্য কেউ করে আর তখন দরখাস্ত দেয় তাহলে হবে না। জাতীয় প্রতীকের সমন্বয় গঠিত কোনো শিল্প-নকশা, যেমন- শাপলা, বাঘ, কাঁঠাল দিয়ে কেউ শিল্প নকশা করলে সেটা হবে না।
তিনি জানান, কোনো স্বত্ত্বাধিকারীর নিবন্ধিত শিল্প-নকশা অন্য কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে ব্যবহৃত হলে সেটা থেকে নিবৃত্ত থাকবে।
গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন ২০২২ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী পাস হলে শিশুকে গ্রাম আদালতে আনা যাবে না। আগে ছিল এটি নাবালক। এখন শব্দ পরিবর্তন করে করা হয়েছে শিশু। শিশু আইনে শিশুর যে সংজ্ঞা আছে সে অনুযায়ী শিশুকে সংজ্ঞায়িত করা হবে।
তিনি জানান, এই আইনের আরেকটি সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। সেটি হলো- বিচারের সময়সীমা ৩০ দিন থেকে কমিয়ে ১৫ দিন করা হয়েছে। ২০১৩ সালে যখন আইনটি করা হয় তখন ছিল ৩০ দিন। এই আইনে আরেকটি সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০১৩ সালের আইনে ছিল ক্ষতিপূরণ আদায়ের ক্ষেত্রে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। এখন সেটি সংশোধন করে তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এনএইচবি/এমএমএ/