দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া
ঘাট বন্ধ রেখে কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে দৌলতদিয়া অংশে মোট ঘাট ৭টি, তার ৩টি বিকল। যে চারটি চলতো সেগুলোর দুইটি বন্ধ রেখে বাকি দুটিতে গাড়ি পারাপারে ব্যবহার হচ্ছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দেশের এই নৌপথে গাড়ির চাপ কমেছে অনেকটা তবে যানজট দূর হয়নি।
বুধবার (১৩ জুলাই) ঢাকা থেকে পাটুরিয়া ঘাটে আসার পর যখন ৫০ মিনিট অপেক্ষা করে ফেরি পেতে হলো তখন মনে হয়েছিল এটি স্বাভাবিক জ্যাম। কারণ এই ঘাটে ১ থেকে দেড় ঘণ্টা নিত্যদিনের জট।
কিন্তু রাজবাড়ী থেকে সোহার্দ্য পরিবহনে যখন দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গাড়ি পৌঁছায় তখন বোঝা গেলো জ্যাম কি আর দুর্ভোগ কি। একে তো তীব্র তাপদাহ তারউপর তীব্র যানজট ওষ্ঠাগত জীবন। ছোট শিশু, নারী, বয়স্ক যারা বাসে ছিলেন অধিকাংশ কাহিল অবস্থা। কেউ কেউ ক্লান্ত হয়ে পড়ে আছেন।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এতোটা জ্যাম হবে কেউ ধারণা করেনি। যাত্রীদের ধারণা ছিল ২০ মিনিট বা ৩০ মিনিট জ্যাম হতে পারে এটা গায়ে শওয়া জ্যাম। কিন্তু রাজবাড়ী বড়পুল থেকে ৪ টায় বাস ছাড়ার পর ঘাটে আসতে সময় লাগে মাত্র ৩০ মিনিট। অর্থাৎ সাড়ে ৪ টায় দৌলতদিয়া পৌছায় সোহার্দ্য পরিবহনের বাসটি। নরমাল সিরিয়াল ধরে যদি ফেরি পেতে হতো তাতে রাত ৮ টা বাজতো। গাড়ির চালক এবং সুপারভাইজার কারো সঙ্গে আলাপ করে অন্তত ৩০টি বাসকে পেছনে ফেলে সামনে এসে যখন দাঁড়ালো যাত্রীদের মুখে স্বস্তির নি:শ্বাস। কিন্তু যখন গাড়ি ফেরিতে ওঠে তখন ঘড়ির কাটায় ৬ টা ২৬ মিনিট। অর্থাৎ ২ ঘণ্টা কেটে গেছে রাস্তায় বসে থাকতে।
এতো যানজটের কারণে জানতে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা হয়। শফিকুল ইসলাম নামের একজন ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, এটা কৃত্রিম জট। ঘাটে ফেরি আছে ২২টি, চালানো হচ্ছে ১০টি। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বিআইডব্লিউটিএ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি শিফটিং ডিউটি করে দিয়েছে। আজ ১০ টা চালু থাকবে কালকে সেগুলো বন্ধ। ঈদের সময় ট্রাক বন্ধ থাকায় যাত্রীরা দুর্ভোগটা তেমন বুঝতে পারেনি। আজ বুধবার দুপুর থেকে ট্রাক চলাচল শুরু হয়েছে এখন তীব্র যানজট।
তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিএ এর বোঝা উচিত ছিল আজ দুপুর থেকে ট্রাক চলবে গাড়িও বাড়বে তাই আগে থেকে সবগুলো ফেরি চালুর ব্যবস্থা করলে এই দুর্ভোগ হতো না। ৭টি ঘাটের মাত্র ৪টি সচল তাও এখন বন্ধ রাখা হয়েছে ৩টি। মাত্র ১টি ঘাট দিয়ে গাড়ি পার হচ্ছে যানজট হওয়াটা স্বাভাবিক।
যানজটের বিষয়ে গোল্ডেন লাইনের চালক মানিক ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, এটা বিআইডব্লিউটিসি এর গাফিলতিতে হচ্ছে। ফেরি ঘাট ৭টা চালু আছে একটা। একটা ঘাটে কত গাড়ি পার হতে পারে?
এতো যানজটের কারণ জানতে আরিচা বন্দরের উপ পরিচালক শাহ খালেদ নেওয়াজকে ফোন করা হয়। তিনি ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ঘাট তো ফাঁকা। খালি ফেরি ফিরে যাচ্ছে, আজ হঠাৎ করে গাড়ি বেশি বেড়ে যাওয়ায় দুপুরের পর একটু দুর্ভোগ হয়েছে।
ফেরি সবগুলো চালু কি না এমন প্রশ্ন এড়িয়ে তিনি বলেন, আমি আসলে অসুস্থ খোঁজ নিয়ে দেখি।
ঘাটের এই অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। তাদের অনেকে বলেছেন সংশ্লিষ্টরা একটু দায়িত্বশীল হলে মানুষকে এতো দুর্ভোগে পড়তে হতো না।
এসএম/