যে যেভাবে পারছে ঢাকা ছাড়ছে
রাজধানী ছেড়ে গ্রামের দিকে ছুটছে নগরবাসী। যে যেভাবে পারছে গাড়িতে চেপে বসছে। বাস টার্মিনালে বাড়তি লোকের চাপ নেই। অনেকটা আয়েশি ভঙ্গিতে প্রতিটি কাউন্টারে যাত্রীদের অপেক্ষায় রয়েছেন টিকিট বিক্রেতারা। যে যখন যাচ্ছে মিলছে কাঙ্ক্ষিত টিকিট।
যাত্রীদেরও তাড়া নেই বাস ছেড়ে যেতেও তাড়া নেই। তবে রয়েছে বাড়তি ভাড়ার প্যারা। লোকাল বাসগুলোতে ১০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। অন্য সময় গাবতলী থেকে হেমায়েতপুর পর্যন্ত লোকাল বাসের ভাড়া ১০ টাকা কিন্তু শনিবার (০৯ জুলাই) সেই একই দূরত্বের ভাড়া নিচ্ছে ৫০ টাকা।
গাবতলী বাস টার্মিনালের পাশ দিয়ে ছেড়ে যাওয়া একটি বাসের কান্ডাক্টর আর যাত্রীর কথপোকথন শুনে জানা যায় বাড়তি ভাড়ার এই বিড়ম্বনা। লোকমান হোসেন নামের এক যাত্রী হাতে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে ফুটপাত দিয়ে হাটছিলেন। আর তখনই একটি বাস এসে সামনে দাড়াল। লোকমান হোসেন ও আরও তিনজন দৌঁড়ে বাসের কাছে গিয়ে আবার ফিরে এলেন।
ওই যাত্রীর কাছে ভাড়ার বিষয় জানতে চাইলে অভিযোগের বস্তা খুলে দিলেন। তিনি বলেন, সব সময় হেমায়েতপুরের ভাড়া ১০ টাকা আজকে ৫০ টাকা চাচ্ছে। এটা তো ডাকাতি, এগুলো দেখার কেউ নাই। বাসের কন্ডাক্টরকেও দেখা যায় হাতের ৫ আঙুল দেখিয়ে ভাড়ার কথা জানিয়ে দিতে।
এ রকম লোকাল যাত্রীদের কাছ থেকে ঈদ উপলক্ষে বাড়তি ভাড়া আদায়ের একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। শুধু লোকাল বাস নয়, দূরপাল্লার বাসেও বাড়তি ভাড়া আদায় করতে দেখা যায়। রাজশাহীগামী একটি লোকাল বাসে যাত্রী প্রতি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকা। একই দূরত্বের এই বাসের ভাড়া অন্য সময় ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা।
শেষ মুহূর্তে যারা ঢাকা ছাড়ছেন তাদের বাস প্রাপ্তিতেও বাড়তি চাপ নেই। আবার টিকিট কাউন্টারেও ভিড় নেই। তবে রাজধানী থেকে যারা আমিন বাজার হয়ে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাট দিয়ে যাচ্ছেন তাদের জন্য ঢাকা থেকে বের হওয়াই বড় চ্যালেঞ্জ। একইভাবে যারা রাজশাহী রংপুর যাচ্ছেন তাদেরও বড় চ্যালেঞ্জ ঢাকা থেকে বের হওয়া।
গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে গাড়ি ছাড়ার পর পশুর হাট পার হতেও লেগে যাচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট। ধীর গতিতে চলছে প্রতিটি যানবাহন। এই ধীর গতি আমিনাবাজার, সাভার পর্যন্ত। ফলে সাভার পার হতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে যাত্রীদের। তবে অন্য বছরের মতো এবার ফেরিঘাটে বাড়তি ঝামেলা নাই। ঘাটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মিলছে ফেরি।
শুধুমাত্র বাস না, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, বাসের ছাঁদ সব খানেই যাত্রীদের ভিড়। অনেকে বাড়তি ভাড়ার ভয়ে পায়ে হেঁটে রওয়ানা দিয়েছে। তীব্র রোদের মধ্যে মাথায় ব্যাগ বস্তা নিয়ে হাটতে দেখা গেছে। এভাবেই শেষ মুহূর্তের যাত্রা চলছে।
এসএম/এসআইএইচ