যেভাবে বুয়েট থেকে টেসলায় যোগ দিলেন রিফাত
হাসান এম রিফাত। ছবি: সংগৃহীত
প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী হিসেবে পরিচিত ইলন মাস্ক, যিনি বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করে জনপ্রিয় হওয়া টেসলা মোটরসের প্রতিষ্ঠাতা। কয়েকবছর আগেও গুগল, মাইক্রোসফট, ইন্টেল, ফেসবুক, অ্যামাজন বা টেসলার মতো প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের তরুণদের কাছে অকল্পনীয় ছিল। তবে সেই দূরত্ব ঘুচে গেছে।
এখন প্রতিবছরই অনেক তরুণ যোগ দিচ্ছেন এসব প্রতিষ্ঠানে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান টেসলায় গিগাফ্যাক্টরি-১-এ ‘সিনিয়র ফ্যাসিলিটিজ ওয়াটার ইঞ্জিনিয়ার’ হিসেবে যোগ দিয়েছেন বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান এম রিফাত।
রিফাতের বেড়ে উঠা ময়মনসিংহ শহরে। বাবা সরকারি চাকরিজীবী, মায়ের কাছেই পড়াশোনার হাতেখড়ি। শহরের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ২০০৮ সালে ভর্তি হন বুয়েটে। একাডেমিক পড়াশোনায় ল্যাবের এক্সপেরিমেন্ট ক্লাস ও কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে দারুণ আগ্রহ পেতেন রিফাত। তখন থেকেই স্বপ্ন দেখেন উচ্চশিক্ষায় মার্কিন মুলুকে পাড়ি জমানোর।
বুয়েট থেকে গ্র্যাজুয়েশনের পর চাকরি শুরু করেন বেক্সিমকো গ্রুপে। এর কিছুদিন পর পিডিবির অধীন খুলনার খালিশপুর পাওয়ার প্লান্টে যোগদান করেন রিফাত। এর মাঝেই কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং মাস্টার্স প্রগ্রামে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও ইউনিভার্সিটিতে স্কলারশিপ পেলেন। যাত্রা শুরু হলো নতুন দিগন্তে। ওহাইও ইউনিভার্সিটিতে পড়াকালীন সময়ে তিনি বিশ্ববিখ্যাত ইভি ম্যানুফ্যাকচারিং প্রতিষ্ঠান টেসলা গিগাফ্যাক্টরি-১-এ ‘সিনিয়র ফ্যাসিলিটিজ ওয়াটার ইঞ্জিনিয়ার’ পদে আবেদন করেন।
আবেদনের কিছুদিন পর নিয়োগকারীর সঙ্গে ফোনে ইন্টারভিউর জন্য ই-মেইল আসে। দুই ধাপে ইন্টারভিউর পর প্রতিষ্ঠান জানায়, রিফাত প্যানেল ইন্টারভিউর জন্য নির্বাচিত হয়েছে। রিফাতের প্যানেল ইন্টারভিউয়ে ছয়-সাতজন ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার ও সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। শুরু হয় একটি টেকনিক্যাল সমস্যার ওপর প্রেজেন্টেশন দিয়ে। এরপর সব প্যানেল ইন্টারভিউয়ারের সঙ্গে ওয়ান অন ওয়ান ইন্টারভিউ হয়। সেখানে মূলত টেকনিক্যাল প্রশ্ন করা হয়। এতে তার অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং সমস্যা যেমন– সমস্যা সমাধানের মূল কারণ, বিশ্লেষণসহ টেকনিক্যাল সমস্যা দেখিয়ে প্রশ্ন করা হয়।
এরপর রিফাতকে টেসলা গিগাফ্যাক্টরি-১-এর ইনফ্রাস্ট্রাকচার টিমের ডিরেক্টরের সঙ্গে ৩০ মিনিটের একটি ব্রিফ ফোনকলে অ্যাটেন্ড করতে হয়। এর সপ্তাহখানেক পর প্রতিষ্ঠান থেকে ফোনে জানানো হয়– ‘অভিনন্দন’। এরপর ইলন মাস্ক স্বাক্ষরিত অফার লেটার আসে রিফাতের হাতে।
দেশের তরুণদেরকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন রিফাত। দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে চাওয়া তরুণদের জন্য কাজ করতে চান তিনি।