নিজের অনুপ্রেরণা নিজের মাঝেই খুজুন
ছবি সংগৃহিত
অমুক খুব ভালো মোটিভেশনাল কথা বলে, তোমার এতো হতাশা যখন, তার কথাগুলো শুনে দেখো কাজে লাগবে। নিশ্চয়ই অনুপ্রেরণা পাবে। এই কথা আমরা প্রায়ই শুনি। মানুষের মোটিভেশনাল কথা, লেকচার শুনে আমরা মোটিভেট হই ঠিকই, কিন্তু তার স্থায়ীত্ব খুব অল্প সময়ের জন্য থাকে। যখন শুনি তখন হয়তো উজ্জীবিত হই, চোখ জ্বলজ্বল করে ওঠে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই আবার সেই আগের মত বিষন্নতা ছেয়ে ধরে।
জীবনে সবচেয়ে যে জিনিসটা বেশি দরকার তা হল সেল্ফ মোটিভেশন ও আত্মনিয়ন্ত্রণ। নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকলে কোনো মোটিভেশনই আপনার কাজে লাগবে না। নিজের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছেই।
সহজ কথায়, মোটিভেশন হচ্ছে এমন এক উৎস যা আপনার মন-মানসিকতাকে আপনার লহ্ম্য অর্জনে প্রস্তুত করবে। সঠিক মোটিভেশন আপনাকে এমন একটি অবস্থানে নিয়ে যেতে পারে যা আপনি কল্পনাও করেননি ।
তাই প্রতিনিয়ত নিজেকে মোটিভেট রাখতে কিছু উপায় আমাদের অবশ্যই জানা প্রয়োজন । তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক সেই উপায়গুলো।
লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
ছোটবেলা থেকে কেউ যখন জানতে চাইতো বা পরীক্ষার খাতায় লিখতে বলা হতো যে তোমার জীবনের লক্ষ্য কি, তাহলে অকপটে বলে ফেলতাম ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট হতে চাই। কিন্তু এগুলোই তো শুধু জীবনের লক্ষ্য হতে পারে না। মন ভালো পথে যেটাই চাইবে সেটাকেই গুরুত্ব দিতে হবে। মনে রাখতে হবে আমরা সবাই বিজয়ী। তাই কেন হেরে যাবো? আপনি যদি হার না মানেন, আপনাকে হারানোর হ্মমতা কারো নেই।
জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। বাস্তবের চেয়ে বড় স্বপ্ন দেখুন।
সঞ্চয়ী হোন
ধরুন আপনি একটি ব্যবসা শুরু করলেন, কিছুদিন পর দেখা যাবে ব্যবসার জন্য যে টাকাটা আপনার দরকার সেটা আর জোগাড় করতে পারছেন না। এমন অবস্থায় আপনি কাজ করার অনুপ্রেরণা হারাবেন আর কাজ করতেও ইচ্ছা করবে না। তাই অবশ্যই প্রতিমাসে আপনার উপার্জন থেকে কিছু টাকা সঞ্চয় করুন। সঞ্চয় থাকতে আপনি আত্নবিশ্বাস হারাবেন না কখনোই। নিজেকে সবসময় মোটিভেট রাখতে সঞ্চয়ী হওয়া জরুরি।
ঋণ এড়িয়ে চলুন
নিঃসন্দেহে যেসব মানুষ অনেক বেশি ঋণ নিয়ে থাকেন তারা হতাশায় ভোগেন বেশি। কারণ তাদের উপার্জনের সিংহ ভাগই চলে যায় ঋণ পরিশোধ করতে। তাই খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কখনোই ঋণ নেবেন না।
ইতিবাচক মানুষের সঙ্গে থাকুন
আপনাকে দিয়ে কিছু হবে না, আপনি জীবনে কিছু অর্জন করতে পারবেন না- এই ধরনের কথা বলা মানুষগুলো থেকে সর্বদা দূরে থাকবেন। এরা আপনার মনোবল একেবারে ভেঙে দেবে। এই ধরনের নেতিবাচক কথা বলা মানুষের থেকে সব সময় দূরত্ব বজায় রাখুন। ইতিবাচক চিন্তার মানুষ বেস্ট মোটিভেটর হয়।যখনই আপনার মনে কোন নেতিবাচক চিন্তা আসবে, এমন একজন ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনার মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন যে আপনার আত্নবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলবে । তাই সবসময় চেষ্টা করুন ইতিবাচক মানুষের সঙ্গে থাকতে।
নিজেকে সম্মান করতে শিখুন
আমাদের সবারই একটা সমস্যা আছে- নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করি। অমুকের রেজাল্ট আমার থেকে ভালো, ও তাহলে ভালো চাকরি পাবে, বাসা থেকেও বলে সবার সবটা ভালো হচ্ছে তাহলে আপনার কেন হচ্ছে না। এই কথাগুলো আমরা শুনি প্রতিনিয়ত। তখন নিজেই অন্যের সঙ্গে তুলনায় বসি। এটা কখনোই করা উচিত না। এই ধরনের চিন্তা-ভাবনা আপনার আত্নবিশ্বাস কমিয়ে দিবে । যখনই মনে করবেন আপনার আত্নবিশ্বাস কমে যাচ্ছে আপনার আগের অর্জনগুলোর কথা ভাবুন, ভাবুন সেগুলো অর্জন করতে কতটা কষ্ট আপনি করেছেন। কতগুলো রাত আপনি জেগেছেন। এতে হারানো আত্নবিশ্বাস আবার ফিরে পাবেন।
ভুল থেকে শিক্ষা নিন
ভুল আমাদের জীবনের খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। জেনে বা না জেনে কমবেশি ভুল আমরা সবাই করি। এটা খারাপ কিছু নয়, স্বাভাবিক। কিন্তু সমস্যাটি তখনই হয় যখন আমরা ওই ভুল থেকে শিক্ষা না নিই। পৃথিবীতে যত সফল মানুষ আছেন বা ছিলেন সবার মধ্যে একটা মিল আছে। সেটা হচ্ছে ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া। পৃথিবীতে কোনো মানুষই পুরোপুরি সঠিক না। ভুল মানুষ করবেই। যারা সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে তারাই সফলতার দিকে এগোবে।
নিজের উদ্দেশ্য ঠিক রাখুন
যখন কোনো কাজ করছেন সেটার উদ্দেশ্য ঠিক আছে কিনা তা অবশ্যই যাচাই করে দেখবেন। ভুল ব্যক্তির মোটিভেশন আপনাকে অনেক বড় বিপদেও ফেলতে পারে। তাই আপনি ঠিক পথে এগোচ্ছেন নাকি ভুল হচ্ছে কোথাও তা যাচাই করুন। আপনার কাজের উদ্দেশ্য আপনাকে সবসময় মোটিভেট থাকতে সাহায্য করবে।
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা আর নয়
সবসময় অতিরিক্ত চিন্তা করলে নেতিবাচক দিকগুলোই সামনে আসবে। আমরা সবাই জানি যে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত কিন্তু এর মানে শুধু এই না যে আমরা যা চাচ্ছি ভবিষ্যতে তার চেয়ে খারাপ কিছুই অপেক্ষা করছে। আগামীকাল কি হবে সেটা ভেবে আজকের দিনটা নষ্ট করবেন না।
সুখী থাকতে শিখুন
সমস্যা সবার জীবনেই থাকে কিন্তু তার মানে এই না সেই সমস্যার কথা ভেবে হতাশ হতে হবে। হতাশা, দুশ্চিন্তা কখনোই সমস্যার সমাধান নয়। যত বেশি সমস্যা নিয়ে ভাববেন, নিরাশ হবেন। একবার ব্যর্থ হলেই জীবন কিন্তু শেষ হয়ে যায়নি। এই চিন্তাটাই আমরা করি না। তাই যা হয়েছে সেটা কে মেনে নিন।
প্রতিদিনের পরিকল্পনা করুন
আপনার মোটিভেশন কে ধরে রাখতে প্রতিদিনের পরিকল্পনা করুন। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার পাশাপাশি প্রতিদিনের পরিকল্পনা আপনার লক্ষ্য অর্জনে বেশি সহায়ক হবে। রাতে ঘুমানোর