শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৮

নেই দেশের নাগরিক

একবার ‘দুম’ করে বিকট শব্দ হলো! বিজিবি কামান দাগল, ভয় দেখাল, নৌকোর ওপর থাকা নিঃস্ব মানুষদেরকে। মাইকে গলা ফাটিয়ে বলছে, ‘আপনাদের অনুরোধ করা হচ্ছে, আপনারা নিজেদের দেশে ফিরে যান, বাংলাদেশে ঢোকার কোনো পারমিশন আপনাদের দেওয়া হয়নি।’

‘কী করবেন মাস্টার?’ ইয়াসিন মাস্টারকে উদ্দেশ্য করে কাতর স্বরে জিজ্ঞেস করল মতি। যেন গলার স্বরের পেটে বহুতদিন দানাপানি পড়েনি। বড় অসহায় দেখাচ্ছে মতিকে। ইয়াসিন মাস্টারের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে বাকি সবাই।

‘অপেক্ষা।’ মুখ থেকে আলতো করে বেরিয়ে এল কথাটা। ঠোঁট প্রায় নড়লই না। হুল ফোটা ঠোঁটের মতো ঠোঁট দুটো যন্ত্রণায় একটা আরেকটাকে কামড়ে লেগে থাকল।

‘অপেক্ষা!’ কীসের অপেক্ষা? শরীর থেকে একটু একটু করে মাংসগুলো শুকিয়ে শুকিয়ে হাড় হওয়ার জন্যে অপেক্ষা? কলিজা থেকে একটু একটু করে জান নিংড়ে বের হয়ে যাওয়ার জন্যে অপেক্ষা? জীবনের শেষ শ্বাসটুকুকে গলা টিপে খুঁচে খুঁচে মারার জন্যে অপেক্ষা?

শিরদাঁড়া ঝিনঝিন করে ওঠে মতির। তা ছাড়া কী বা আর করার আছে? আমরা তো আর মানুষ নই, জলের পোকা। তাড়া খেকো কুকুর শেয়াল। এ সব ভাবতে ভাবতে ছইয়ের খুঁটিটাকে ধরে মতি বিড়বিড় করে বলল, ‘অপেক্ষাই করি, দেখি মাটি পাই না চাটি পাই।’

‘নৌকোটাকে ঠিক করে ভিড়াই?’ জিজ্ঞেস করল নুহু। ‘হ্যাঁ, তাইই কর।’ ঘোর কাটিয়ে বলল মতি। মতি ছইয়ের খুঁটিটাতে এবার ঠাসা দিয়ে দাঁড়াল। সকালের কুঁড়ি-সূর্য তার কাঁধের আড়ালে। তার ছায়ার থেকে খুঁটির ছায়া কিঞ্চিত বড়। খুঁটির ছায়ায় তার এক খাবলা ছায়া মিশে পেট ফুলে যাচ্ছে। আকাশে পাখির আনাগোনাও বেড়েছে অনেকটা। নীল আকাশের গায়ে চরছে একঝাঁক সাদা মেঘ। সে মেঘ ফুঁড়ে নেমে আসছে পদ্মপাতার মতো উঠোন উঠোন ছায়া। টেঙ্গার চরের লবণাম্বু গাছগুলো থেকে ভেসে আসছে নতুন দেশের গন্ধ। ত্রিপলের চালা দুহাত বাড়িয়ে বলছে, এই তো আমি দেশ, আমার কোলে আয়। বুভুক্ষু মানুষের চোখের সামনে যেমন কোনো খাবারের প্লেট এলে, টপ করে জিভ থেকে লালা ঝরে পড়ে, অনাহারের পেট মহানন্দে ধেই করে নেচে ওঠে, ঠিক তেমনি দেশহীন মানুষের কাছে এক টুকরো দেশের টিকি দেখা মানেই আনন্দে ‘ধিন’ করে নেচে ওঠা। হাতের নাগালের মধ্যে নয়াপাড়া দেখে মতিদের এখন সেই ধিতাং ধিতাং অবস্থা। কিন্তু বিজিবি তাদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কাঁটা খড়গ হয়েও উঠতে পারে!

‘এখানেই গেড়ে বসে থাকা ভালো। একটা বিহিত কিছু হবেই।’ মাথা থেকে হাত নামালেন ইয়াসিন মাস্টার।
‘তাই! কীরকম?’ আগ্রহে আটখানা হয়ে উঠল মতি। হেলান ছেড়ে দুধাপ এগিয়ে গেল। ইয়াসিন মাস্টার বললেন, ‘এক তো এখানে থাকলে বার্মা সেনার আক্রমণের ভয় নেই, দুই, বাংলাদেশ সরকার তার সিদ্ধান্ত বদল করলেই আমরা চট করে শরণার্থী শিবিরে চলে যেতে পারব। তখন ঠিক একটা হিল্লে হয়ে যাবে।’
‘খাবারেরও অভাব হবে না। বিজিবি ওদের দেশে ঢুকতে না দিক, খাবার তো দেবে।’ যন্ত্রণার দেওয়াল ফুঁড়ে এক চিলতে আনন্দ ঠিকরে বের হয়ে এল নুহুর।
‘হ্যাঁ হ্যাঁ, আমাদের বাপ হয় তো, যে খাবার দেবে। ও ভরসায় থাকেন না। ওদেরকে তো চেনেন না? খাবার না দিয়ে পেটে গুলি দেবে, তখন বুঝবেন ঠেলা।’ দ্বিতীয় নৌকোয় বৈঠা নিয়ে বসে থাকা গাট্টাগোট্টা চেহারার আবুল ফোড়ন কাটল। সে বৈঠাটাকে ঠক করে রেখে বিড়বিড় করল, ‘যতক্ষণ এই শরীরটায় বৈঠা ঠেলার মুরোদ থাকবে, ততক্ষণ জানটুকুন থাকবে, গায়ের জোরটুকুন ফুরিয়ে গেলেই, এ রুহু ঠিক ফুড়ুৎ করে উড়ে গিয়ে আল্লাহর খাতায় জমা হয়ে যাবে। দেশের ভরসা আর করেন না, আমাদের কপালে আল্লাহ আর দেশ লিখে রাখেনি।’
‘অত বকর বকর করিসনে তো?’ ধমকে ওঠেন ইয়াসিন মাস্টার।
‘বকর বকর! আমি ঠিকই বলছি, আমার কথা মিলিয়ে নেবেন।’ কথার ওপর কথা বলল আবুল। তার পটল পেটটা ফুলে ফুলে উঠছে। ডাহুক চোখে জীবনের হাল ছেড়ে দেওয়ার বেবাগি ভাব। চোখটাকে নামিয়ে মনে মনে বিড়বিড় করতে লাগল, আর বারুদ ঠোকার খোল খুঁজে কী হবে? জীবনের বারুদ তো সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ছাই আর বারুদে কি আর আগুন জ্বলে ওঠে? বারুদ ঠোকাই হয়, আগুন আর জ্বলে না।

‘হ্যাঁ হ্যাঁ, তুই তো আল্লাহর পীর ওলি হয়ে গেছিস, যে তোর কথা মিলে যাবে?’ চটে ওঠেন ইয়াসিন মাস্টার। আবুল ওসবে কান করে না। সে মনের সঙ্গে মনের কথা বলতে থাকে, হাওয়া ভরে আর কতদিন বেঁচে থাকা যায়? একসময় হাওয়াও বলবে, আমাকে ভাত দাও। আমাকে জল দাও। তখন জল-ভাত না পেলে হাওয়াও বলবে ‘টা’ ‘টা’ ‘বাই’ ‘বাই’। রুহু তখন শরীরকে ঠেলা মারবে, যা পালা, পালা।

সূর্য ঘাড় থেকে কানে উঠে গেল। রোদ ডাগর হয়ে উঠছে। রোদের সে ডাগর ঝাঁঝ মাথার টিকিতে এসে পড়ছে। নৌকো যাত্রার শেষ কোথায় বোঝা যাচ্ছে না! চোখে যতটুকু সুজছে তাতে মনে হচ্ছে, পশ্চিমে নয়াপাড়ার লেজ ছুঁয়ে পূর্বে নাফ নদীর ওপর আন্তর্জাতিক ‘জিরো পয়েন্ট’ পর্যন্ত জলহস্তির মতো পিঠ তুলে সারি সারি দাঁড়িয়ে রয়েছে রোহিঙ্গা নৌকো। সুন্দরী রমণীর বুকের ওপর হৃদয় এঁকে শুইয়ে আছে নয়াপাড়া শরণার্থী শিবির। রোদ তেতে উঠতেই আরিফা বলল, ‘পেটে কিছু দিয়ে নাও তোমরা। খাবারদাবার যা যতটুকু আছে ততক্ষণ তো খাও।’ কাঁসার বাটিতে আধ-বাটি মুড়ি নিয়ে আরিফা সাকিবকে খাওয়াচ্ছে। সাকিব সে মুড়ি কচমচ করে চিবোচ্ছে। আধ-বাটি মুড়ি দু-গালেই গব গব করে খেয়ে নিল সাকিব। ‘মা, আরও খাব, পেট ভরল না।’ অভাগা চোখ কাতর দৃষ্টিতে মায়ের দিকে তাকাল। ‘আবার পরে খাবি।’ ভোগানোর চেষ্টা করল আরিফা। আদর ঢেলে বলল, ‘রোদটা একটু পড়লেই ভাত ফুটিয়ে দেব বাবু, এখন এই খেয়েই পানি খা।’
‘না, আমি এখুনি খাব।’ বায়না ধরে সাকিব।
‘এখন খাবি তো পাবি কতি?’ চোখ গরম করে ওঠে আরিফা। ‘দেখতে পাচ্ছিস ন্যা, নৌকোতে করে পালিয়ে বেড়াচ্ছি? এখানে কি খাবারের গুদাম আছে? এটা বাড়ি না খাবারের হোটেল, যে যা চাইবি তাই পাবি?’
‘ভ্যা’ করে কেঁদে ওঠে সাকিব। ‘ওকে কাঁদাচ্ছ ক্যানে? ওর কি ওসব বোঝার বুদ্ধি হয়েছে?’ ধমকে ওঠে মতি। বলে, ‘আমার টুকুও ওকে দিয়ে দাও, আমি খাব না।’
‘আমারটাও দিয়ে দাও, ভাবি, আমিও খাব না।’ ভাইয়ের সুরে সুর মেলায় নুহু।
‘তোমরা খাবে না, ব্যস, ভালো কথা, কিন্তু এমনি করে ক-দিন চলবে? কাল-পরশুর মধ্যে তো চালকটাও ফুরিয়ে যাবে!’ আঁচল দিয়ে চোখ মোছে আরিফা। সুড়ুৎ করে নাক টেনে বলে, ‘তার চেয়ে চলো, সবাই মিলে নদীতে ডুব দিয়ে মরি। সব ক্যাচাল মিটে যাক।’
‘এই শুরু হল নাকে কাঁদা! মেয়েদের কাজই হল, একটু কিছু হলেই ফ্যাচফ্যাচ করা! যত্তসব নাকোসরি!’ বিরক্ত হয়ে ওঠে মতি। ঠেস মেরে বলে, ‘শোনো, ওসব কেঁদে টেদে কোনো সমস্যার সমাধান হবে না। চোখের পানি কবেই বা সমস্যার সমাধান করেছে? রুজির মালিক আল্লাহ, কপালে যদি রুজি লেখা থাকে, তাহলে সে রুজি মানুষ পাবেই পাবে। দুনিয়ার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।’

‘থাক থাক, অত বাতলিং ঝারতে হবে না। দয়া করে মুখ বন্ধ করো।’ ঝেঝিয়ে উঠল আরিফা। মুড়ির ডামটা বগলে পুরে নিচ সোজা কাত করে সড়সড় করে বাটিটায় মুড়ি ঢালতে লাগল। মুড়িতে উপচে পড়ল কাঁসার বাটিটা। বাটিটাকে সাকিবের মুখের সম্মুখে ঠক করে রেখে চোখ ফেড়ে বলল, ‘খা, পেট ভরে খা, খাইকোস কোথাকার!’ সাকিব মায়ের বকুনিতে ভয় পেয়ে আরও জোরে ‘ভ্যা’ করে উঠল।

‘এ তো ভারী ক্যাচাল দেখছি!’ খিচখিচ করে উঠল মতি। সে বেটার কাছে এসে আদুরে গলায় বলল, ‘খাও বাপ, খাও, যত ইচ্ছে খাও, আমি তোমার মাকে বকে দিচ্ছি।’ বলে আরিফাকে ‘এই তুমি আমার ছেলেকে মেরেছ কেন’ বলেই একটু মিহি করে চোখ টিপে, দাঁত কিষে শক্ত করে ঘুষি পাকিয়ে আরিফার পিঠ আলতো করে স্পর্শ করল।

মতির মশকরা দেখে, আরিফার অশ্রু ভেজা চোখ ফিক করে উঠল। মৃত্যুমুখে পড়েও ক্ষুধার নৌকোয় দুজন স্বামী-স্ত্রীর রসিকতা দেখে মেঘের আড়াল থেকে স্বয়ং ঈশ্বরও যেন ‘ফিক’ করে হাসলেন। এ যে জ্বালা-যন্ত্রণার ভেতরে লুকিয়ে থাকা এক টুকরো গোলাপ ফুল। পাথর ফুঁড়ে বের হয়ে আসা কুলকুল ঝর্ণা। জীবনের এখানেই জয়। এখানেই স্বর্গ এখানেই বেহেশত। ‘না’ বলা সত্যেও আরিফার জিরাজিরিতে মতি নুহু সবাই দু-গাল করে মুড়ি চিবোল। গলায় দিল জল। ছায়াটা উল্টোবাজি মারতেই নুহু ছলাৎ করে নদীতে মারল লাফ। তারপর ভূষ করে মাথা তুলল। তার টাক মাথার আধমাথা চুল লবণজলে জুবুথুবু হয়ে গেছে। লবণাক্ত জলে তার চামটা শরীর ছলছল করে উঠল। বুকে ঝোপ বেঁধে থাকা লোমে শিশিরের মতো লেগে আছে কণা কণা সাদা লবণ। বুকটা যেন লবণবুক। গা চোঁয়া জল নাক চুঁইয়ে যখন ঠোঁট গলে ঢুকে গেল, তখন নুহু টের পেল তার শরীরে এখনো স্বাদ আছে। নুহু জানে, শরীর থেকে রুহু যখন বেরিয়ে এসে গলায় ছটফট করে, তখন সে শরীরের আর কোনো স্বাদ থাকে না। নুহু এও জানে, ক্ষুধা যখন পেট থেকে হেঁটে এসে গলা পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়, তখন সে দেহের আর কোনো রস-কষ থাকে না। কিন্তু তার পাংশে জিভ লবণের স্বাদ পায়ে জানান দিচ্ছে, পাংশুটে হলেও এখনো এই দেহের মধ্যে রুহুটা লুকিয়ে রয়েছে। সে প্রাণে এখনো রয়েছে রক্ত-মাংস। সোজা বাঁকা হাড়। সে হাড়ে এখনো বাড়ি মারলে, গান গেয়ে ওঠে। বেজে ওঠে বাঁশির সুর।

‘আবুলভাই আসেন, গোসুল করে নিই। মৃত্যুর পর মুর্দা হয়ে গেলে তো আর গোসুল করার ফুরসত থাকবে না। তখন না থাকবে গোসুল করানোর লোক, না থাকবে দাফন করার লোক!’ জলের নীচ থেকে গলা তুলল নুহু।
‘এই পানিতে কি আর গোসুল করা হয়? এ তো নামেই নদী, নদীর মতো তো আর মিস্টি পানি নয়? লবণাক্ত পানি। এই পানিতে গোসুল করলে গা-হাত-পা চ্যাটপ্যাট করবে। খসখস করবে। এ পানি না পানের না গোসুলের।’ বৈঠা হাতে ফদফদ করে বকল আবুল।
‘আপনি বলছেন কি, পানি না পানের না গোসুলের? আপনি কি জানেন না, এখন পানিই মানি?’
‘সে জানি, একদিন পানির জন্যেই বিশ্বযুদ্ধ লেগে যাবে। যে দেশে যত পানি মজুত থাকবে, সে দেশ তত ধনী হবে। ‘পানির মতো সস্তা’ কথাটা বললে লোকে হাসবে।’
‘এতই যখন বোঝেন তখন গোসুল করতে কেন নামছেন না?’
‘এ যে পানি নয়, লবণ। গায়ে লবণ মেখে গোসুল করলে, শরীর কি আর ঠাণ্ডা হবে?’
‘কেন হবে না? আলবাত হবে। আরে আমাদের শরীরে কি লবণ নেই? শরীর ঘামলে কি শরীর থেকে লবণ বের হয় না? শরীরেরও লবণ দরকার হয়। আর কটা দিনই বা বাঁচবেন? পানি-লবণ, রোদ-কাদা, যা পাবেন মেখে নিন। সবই তো পচে ভূত হয়ে যাবে।’
‘আপনি তাড়াতাড়ি উঠে পড়ুন। ঠাণ্ডা লেগে যাবে। জোয়ারের পানি, নতুন পানি।’
‘আর ঠাণ্ডা! এ শরীর কি সেই শরীর গ? এ শরীরের সব ধকল সহ্য করার ক্ষমতা আছে। এ শরীর রোদেও পুড়তে পারে আবার বৃষ্টিতেও ভিজতে পারে। গরিব মানুষের শরীর কি আর মোম দিয়ে তৈরি? যে একটুতেই গলে যাবে। এ শরীর আল্লাহ ইট-কাঠ-পাথর দিয়ে তৈরি করেছেন। ভেতরে রক্ত-মাংস থাকলেও, বাইরে একটা প্রকৃতি আছে। যে প্রকৃতিতে রোদ-ঝড়-বৃষ্টি সবই হয়। মোষের মতো যেমন মেঘ ওঠে, ঠিক তেমনি কালবৈশাখীর মতো ঝড়ও ওঠে। আবার চাঁদি ফাটা সূর্যও ওঠে। এ শরীরে হাওয়াঘরও আছে। সে হাওয়া কখনো নাচে কখনো ভাঙে।’
‘তুই আবার ঐ বাউলগিরি শুরু করলি?’ বিরক্ত হয়ে ওঠে মতি।
‘বড়ভাই তুমি আর জীবনের কি স্বাদ বুঝলে! তেল-নুনের হিসেব কষতে কষতেই তো জীবনটা ফুরিয়ে দিলে! শরীরের যেমন সংসার আছে, মনেরও একটা সংসার আছে। সে সংসারে আর ক-দিনই বা আগুনের ফুঁ দিলে! সলতেই দিলে কেরোসিনের তেল! সে সংসার চিনতেই পারলে না। শরীরের আকাশেই তো সারাজীবন ঘুড়ি উড়িয়ে গেলে। মনের আকাশে একদিন ঘুড়ির সুতো ছাড়লে বুঝতে, জীবনের রঙ কত রঙিন হয়।’

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব ১৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৯

 

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী

ছবিঃ সংগৃহীত

যানজটে আটকে থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের গাড়ি বহরকে সাইড করে দিতে গিয়ে বাস চাপায় নিহত হয়েছেন জসিম উদ্দিন (৫৩) নামে জামায়াতের একজন কর্মী।

নিহত জসিম উদ্দিন উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। তার স্ত্রী ও শিশুসহ তিন ছেলে সন্তান রয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার ওয়ালটন শো-রুমের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মারুপ সিরাজী বলেন, লক্ষীপুর যাওয়ার পথে জামায়াত আমিরের বহরের ৪টি গাড়ি বাগমারা উত্তরবাজারে যানজটে আটকা পড়লে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস ধাক্কা দিলে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীনের মাথা থেতলে যায়। রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম মুন্না বলেন, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলেও বাগমারা বাজার অংশে অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে দুই লেন করা হয়েছে।সে কারণে ২৪ ঘণ্টাই সড়কের এই অংশে যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলে আজ হয়তো এমন মৃত্যু হতো না।

লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমিরে জামায়াত লক্ষীপুর যাওয়ার পথে বাগমারা উত্তর বাজার বালুর মাঠে পথসভা করেন। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তাঁর গাড়ি বহর যানজটে আটকা পড়ে।

তখন আমিসহ সংগঠনের ১৫/২০ জন কর্মী ট্রাফিকের দায়িত্ব শুরু করি। আমরা আমিরে জামায়াতকে নিয়ে পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দিন বাস চাপায় মারা যান।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, বাগমারা উত্তরবাজারে বাস চাপায় জসিম উদ্দিন নামের একজন মারা গেছেন। মরদেহ নিহতের বাড়িতে রয়েছে। খবর পেয়েই নিহতের বাড়িতে গিয়েছি।

 

Header Ad
Header Ad

সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  

ছবিঃ সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর বাজারে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। পুলিশের আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং দলীয় অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল রায়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম মজনু এবং যুবদল নেতা শহিদ মিয়ার লোকজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপি ও যুবদলের অস্থায়ী অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে মধ্যনগর বাজার এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনার আশঙ্কা এবং সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়ার আগে পর্যন্ত বাজার এবং আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ করা হয়।

মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সজীব রহমান বলেন, ‘মধ্যনগর যুবদল নেতা শহিদ মিয়া ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাঈযুম মজনুর লোকজনের মধ্যে পুলিশের আসামি ধরা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে উভয় পক্ষের লোকজন বিএনপি ও যুবদলের অফিস ভাঙচুর করে। এতে বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাজার ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। বিশৃঙ্খল অবস্থা এড়াতে বাজারে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাজার ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম
ইসরায়েলের তেল আবিবে তিনটি বাসে বিস্ফোরণ
বিয়ের ছবি ভাইরাল, বললেন শুভকামনা জানানোর জন্য ধন্যবাদ