বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৮

নেই দেশের নাগরিক

একবার ‘দুম’ করে বিকট শব্দ হলো! বিজিবি কামান দাগল, ভয় দেখাল, নৌকোর ওপর থাকা নিঃস্ব মানুষদেরকে। মাইকে গলা ফাটিয়ে বলছে, ‘আপনাদের অনুরোধ করা হচ্ছে, আপনারা নিজেদের দেশে ফিরে যান, বাংলাদেশে ঢোকার কোনো পারমিশন আপনাদের দেওয়া হয়নি।’

‘কী করবেন মাস্টার?’ ইয়াসিন মাস্টারকে উদ্দেশ্য করে কাতর স্বরে জিজ্ঞেস করল মতি। যেন গলার স্বরের পেটে বহুতদিন দানাপানি পড়েনি। বড় অসহায় দেখাচ্ছে মতিকে। ইয়াসিন মাস্টারের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে বাকি সবাই।

‘অপেক্ষা।’ মুখ থেকে আলতো করে বেরিয়ে এল কথাটা। ঠোঁট প্রায় নড়লই না। হুল ফোটা ঠোঁটের মতো ঠোঁট দুটো যন্ত্রণায় একটা আরেকটাকে কামড়ে লেগে থাকল।

‘অপেক্ষা!’ কীসের অপেক্ষা? শরীর থেকে একটু একটু করে মাংসগুলো শুকিয়ে শুকিয়ে হাড় হওয়ার জন্যে অপেক্ষা? কলিজা থেকে একটু একটু করে জান নিংড়ে বের হয়ে যাওয়ার জন্যে অপেক্ষা? জীবনের শেষ শ্বাসটুকুকে গলা টিপে খুঁচে খুঁচে মারার জন্যে অপেক্ষা?

শিরদাঁড়া ঝিনঝিন করে ওঠে মতির। তা ছাড়া কী বা আর করার আছে? আমরা তো আর মানুষ নই, জলের পোকা। তাড়া খেকো কুকুর শেয়াল। এ সব ভাবতে ভাবতে ছইয়ের খুঁটিটাকে ধরে মতি বিড়বিড় করে বলল, ‘অপেক্ষাই করি, দেখি মাটি পাই না চাটি পাই।’

‘নৌকোটাকে ঠিক করে ভিড়াই?’ জিজ্ঞেস করল নুহু। ‘হ্যাঁ, তাইই কর।’ ঘোর কাটিয়ে বলল মতি। মতি ছইয়ের খুঁটিটাতে এবার ঠাসা দিয়ে দাঁড়াল। সকালের কুঁড়ি-সূর্য তার কাঁধের আড়ালে। তার ছায়ার থেকে খুঁটির ছায়া কিঞ্চিত বড়। খুঁটির ছায়ায় তার এক খাবলা ছায়া মিশে পেট ফুলে যাচ্ছে। আকাশে পাখির আনাগোনাও বেড়েছে অনেকটা। নীল আকাশের গায়ে চরছে একঝাঁক সাদা মেঘ। সে মেঘ ফুঁড়ে নেমে আসছে পদ্মপাতার মতো উঠোন উঠোন ছায়া। টেঙ্গার চরের লবণাম্বু গাছগুলো থেকে ভেসে আসছে নতুন দেশের গন্ধ। ত্রিপলের চালা দুহাত বাড়িয়ে বলছে, এই তো আমি দেশ, আমার কোলে আয়। বুভুক্ষু মানুষের চোখের সামনে যেমন কোনো খাবারের প্লেট এলে, টপ করে জিভ থেকে লালা ঝরে পড়ে, অনাহারের পেট মহানন্দে ধেই করে নেচে ওঠে, ঠিক তেমনি দেশহীন মানুষের কাছে এক টুকরো দেশের টিকি দেখা মানেই আনন্দে ‘ধিন’ করে নেচে ওঠা। হাতের নাগালের মধ্যে নয়াপাড়া দেখে মতিদের এখন সেই ধিতাং ধিতাং অবস্থা। কিন্তু বিজিবি তাদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কাঁটা খড়গ হয়েও উঠতে পারে!

‘এখানেই গেড়ে বসে থাকা ভালো। একটা বিহিত কিছু হবেই।’ মাথা থেকে হাত নামালেন ইয়াসিন মাস্টার।
‘তাই! কীরকম?’ আগ্রহে আটখানা হয়ে উঠল মতি। হেলান ছেড়ে দুধাপ এগিয়ে গেল। ইয়াসিন মাস্টার বললেন, ‘এক তো এখানে থাকলে বার্মা সেনার আক্রমণের ভয় নেই, দুই, বাংলাদেশ সরকার তার সিদ্ধান্ত বদল করলেই আমরা চট করে শরণার্থী শিবিরে চলে যেতে পারব। তখন ঠিক একটা হিল্লে হয়ে যাবে।’
‘খাবারেরও অভাব হবে না। বিজিবি ওদের দেশে ঢুকতে না দিক, খাবার তো দেবে।’ যন্ত্রণার দেওয়াল ফুঁড়ে এক চিলতে আনন্দ ঠিকরে বের হয়ে এল নুহুর।
‘হ্যাঁ হ্যাঁ, আমাদের বাপ হয় তো, যে খাবার দেবে। ও ভরসায় থাকেন না। ওদেরকে তো চেনেন না? খাবার না দিয়ে পেটে গুলি দেবে, তখন বুঝবেন ঠেলা।’ দ্বিতীয় নৌকোয় বৈঠা নিয়ে বসে থাকা গাট্টাগোট্টা চেহারার আবুল ফোড়ন কাটল। সে বৈঠাটাকে ঠক করে রেখে বিড়বিড় করল, ‘যতক্ষণ এই শরীরটায় বৈঠা ঠেলার মুরোদ থাকবে, ততক্ষণ জানটুকুন থাকবে, গায়ের জোরটুকুন ফুরিয়ে গেলেই, এ রুহু ঠিক ফুড়ুৎ করে উড়ে গিয়ে আল্লাহর খাতায় জমা হয়ে যাবে। দেশের ভরসা আর করেন না, আমাদের কপালে আল্লাহ আর দেশ লিখে রাখেনি।’
‘অত বকর বকর করিসনে তো?’ ধমকে ওঠেন ইয়াসিন মাস্টার।
‘বকর বকর! আমি ঠিকই বলছি, আমার কথা মিলিয়ে নেবেন।’ কথার ওপর কথা বলল আবুল। তার পটল পেটটা ফুলে ফুলে উঠছে। ডাহুক চোখে জীবনের হাল ছেড়ে দেওয়ার বেবাগি ভাব। চোখটাকে নামিয়ে মনে মনে বিড়বিড় করতে লাগল, আর বারুদ ঠোকার খোল খুঁজে কী হবে? জীবনের বারুদ তো সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ছাই আর বারুদে কি আর আগুন জ্বলে ওঠে? বারুদ ঠোকাই হয়, আগুন আর জ্বলে না।

‘হ্যাঁ হ্যাঁ, তুই তো আল্লাহর পীর ওলি হয়ে গেছিস, যে তোর কথা মিলে যাবে?’ চটে ওঠেন ইয়াসিন মাস্টার। আবুল ওসবে কান করে না। সে মনের সঙ্গে মনের কথা বলতে থাকে, হাওয়া ভরে আর কতদিন বেঁচে থাকা যায়? একসময় হাওয়াও বলবে, আমাকে ভাত দাও। আমাকে জল দাও। তখন জল-ভাত না পেলে হাওয়াও বলবে ‘টা’ ‘টা’ ‘বাই’ ‘বাই’। রুহু তখন শরীরকে ঠেলা মারবে, যা পালা, পালা।

সূর্য ঘাড় থেকে কানে উঠে গেল। রোদ ডাগর হয়ে উঠছে। রোদের সে ডাগর ঝাঁঝ মাথার টিকিতে এসে পড়ছে। নৌকো যাত্রার শেষ কোথায় বোঝা যাচ্ছে না! চোখে যতটুকু সুজছে তাতে মনে হচ্ছে, পশ্চিমে নয়াপাড়ার লেজ ছুঁয়ে পূর্বে নাফ নদীর ওপর আন্তর্জাতিক ‘জিরো পয়েন্ট’ পর্যন্ত জলহস্তির মতো পিঠ তুলে সারি সারি দাঁড়িয়ে রয়েছে রোহিঙ্গা নৌকো। সুন্দরী রমণীর বুকের ওপর হৃদয় এঁকে শুইয়ে আছে নয়াপাড়া শরণার্থী শিবির। রোদ তেতে উঠতেই আরিফা বলল, ‘পেটে কিছু দিয়ে নাও তোমরা। খাবারদাবার যা যতটুকু আছে ততক্ষণ তো খাও।’ কাঁসার বাটিতে আধ-বাটি মুড়ি নিয়ে আরিফা সাকিবকে খাওয়াচ্ছে। সাকিব সে মুড়ি কচমচ করে চিবোচ্ছে। আধ-বাটি মুড়ি দু-গালেই গব গব করে খেয়ে নিল সাকিব। ‘মা, আরও খাব, পেট ভরল না।’ অভাগা চোখ কাতর দৃষ্টিতে মায়ের দিকে তাকাল। ‘আবার পরে খাবি।’ ভোগানোর চেষ্টা করল আরিফা। আদর ঢেলে বলল, ‘রোদটা একটু পড়লেই ভাত ফুটিয়ে দেব বাবু, এখন এই খেয়েই পানি খা।’
‘না, আমি এখুনি খাব।’ বায়না ধরে সাকিব।
‘এখন খাবি তো পাবি কতি?’ চোখ গরম করে ওঠে আরিফা। ‘দেখতে পাচ্ছিস ন্যা, নৌকোতে করে পালিয়ে বেড়াচ্ছি? এখানে কি খাবারের গুদাম আছে? এটা বাড়ি না খাবারের হোটেল, যে যা চাইবি তাই পাবি?’
‘ভ্যা’ করে কেঁদে ওঠে সাকিব। ‘ওকে কাঁদাচ্ছ ক্যানে? ওর কি ওসব বোঝার বুদ্ধি হয়েছে?’ ধমকে ওঠে মতি। বলে, ‘আমার টুকুও ওকে দিয়ে দাও, আমি খাব না।’
‘আমারটাও দিয়ে দাও, ভাবি, আমিও খাব না।’ ভাইয়ের সুরে সুর মেলায় নুহু।
‘তোমরা খাবে না, ব্যস, ভালো কথা, কিন্তু এমনি করে ক-দিন চলবে? কাল-পরশুর মধ্যে তো চালকটাও ফুরিয়ে যাবে!’ আঁচল দিয়ে চোখ মোছে আরিফা। সুড়ুৎ করে নাক টেনে বলে, ‘তার চেয়ে চলো, সবাই মিলে নদীতে ডুব দিয়ে মরি। সব ক্যাচাল মিটে যাক।’
‘এই শুরু হল নাকে কাঁদা! মেয়েদের কাজই হল, একটু কিছু হলেই ফ্যাচফ্যাচ করা! যত্তসব নাকোসরি!’ বিরক্ত হয়ে ওঠে মতি। ঠেস মেরে বলে, ‘শোনো, ওসব কেঁদে টেদে কোনো সমস্যার সমাধান হবে না। চোখের পানি কবেই বা সমস্যার সমাধান করেছে? রুজির মালিক আল্লাহ, কপালে যদি রুজি লেখা থাকে, তাহলে সে রুজি মানুষ পাবেই পাবে। দুনিয়ার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।’

‘থাক থাক, অত বাতলিং ঝারতে হবে না। দয়া করে মুখ বন্ধ করো।’ ঝেঝিয়ে উঠল আরিফা। মুড়ির ডামটা বগলে পুরে নিচ সোজা কাত করে সড়সড় করে বাটিটায় মুড়ি ঢালতে লাগল। মুড়িতে উপচে পড়ল কাঁসার বাটিটা। বাটিটাকে সাকিবের মুখের সম্মুখে ঠক করে রেখে চোখ ফেড়ে বলল, ‘খা, পেট ভরে খা, খাইকোস কোথাকার!’ সাকিব মায়ের বকুনিতে ভয় পেয়ে আরও জোরে ‘ভ্যা’ করে উঠল।

‘এ তো ভারী ক্যাচাল দেখছি!’ খিচখিচ করে উঠল মতি। সে বেটার কাছে এসে আদুরে গলায় বলল, ‘খাও বাপ, খাও, যত ইচ্ছে খাও, আমি তোমার মাকে বকে দিচ্ছি।’ বলে আরিফাকে ‘এই তুমি আমার ছেলেকে মেরেছ কেন’ বলেই একটু মিহি করে চোখ টিপে, দাঁত কিষে শক্ত করে ঘুষি পাকিয়ে আরিফার পিঠ আলতো করে স্পর্শ করল।

মতির মশকরা দেখে, আরিফার অশ্রু ভেজা চোখ ফিক করে উঠল। মৃত্যুমুখে পড়েও ক্ষুধার নৌকোয় দুজন স্বামী-স্ত্রীর রসিকতা দেখে মেঘের আড়াল থেকে স্বয়ং ঈশ্বরও যেন ‘ফিক’ করে হাসলেন। এ যে জ্বালা-যন্ত্রণার ভেতরে লুকিয়ে থাকা এক টুকরো গোলাপ ফুল। পাথর ফুঁড়ে বের হয়ে আসা কুলকুল ঝর্ণা। জীবনের এখানেই জয়। এখানেই স্বর্গ এখানেই বেহেশত। ‘না’ বলা সত্যেও আরিফার জিরাজিরিতে মতি নুহু সবাই দু-গাল করে মুড়ি চিবোল। গলায় দিল জল। ছায়াটা উল্টোবাজি মারতেই নুহু ছলাৎ করে নদীতে মারল লাফ। তারপর ভূষ করে মাথা তুলল। তার টাক মাথার আধমাথা চুল লবণজলে জুবুথুবু হয়ে গেছে। লবণাক্ত জলে তার চামটা শরীর ছলছল করে উঠল। বুকে ঝোপ বেঁধে থাকা লোমে শিশিরের মতো লেগে আছে কণা কণা সাদা লবণ। বুকটা যেন লবণবুক। গা চোঁয়া জল নাক চুঁইয়ে যখন ঠোঁট গলে ঢুকে গেল, তখন নুহু টের পেল তার শরীরে এখনো স্বাদ আছে। নুহু জানে, শরীর থেকে রুহু যখন বেরিয়ে এসে গলায় ছটফট করে, তখন সে শরীরের আর কোনো স্বাদ থাকে না। নুহু এও জানে, ক্ষুধা যখন পেট থেকে হেঁটে এসে গলা পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়, তখন সে দেহের আর কোনো রস-কষ থাকে না। কিন্তু তার পাংশে জিভ লবণের স্বাদ পায়ে জানান দিচ্ছে, পাংশুটে হলেও এখনো এই দেহের মধ্যে রুহুটা লুকিয়ে রয়েছে। সে প্রাণে এখনো রয়েছে রক্ত-মাংস। সোজা বাঁকা হাড়। সে হাড়ে এখনো বাড়ি মারলে, গান গেয়ে ওঠে। বেজে ওঠে বাঁশির সুর।

‘আবুলভাই আসেন, গোসুল করে নিই। মৃত্যুর পর মুর্দা হয়ে গেলে তো আর গোসুল করার ফুরসত থাকবে না। তখন না থাকবে গোসুল করানোর লোক, না থাকবে দাফন করার লোক!’ জলের নীচ থেকে গলা তুলল নুহু।
‘এই পানিতে কি আর গোসুল করা হয়? এ তো নামেই নদী, নদীর মতো তো আর মিস্টি পানি নয়? লবণাক্ত পানি। এই পানিতে গোসুল করলে গা-হাত-পা চ্যাটপ্যাট করবে। খসখস করবে। এ পানি না পানের না গোসুলের।’ বৈঠা হাতে ফদফদ করে বকল আবুল।
‘আপনি বলছেন কি, পানি না পানের না গোসুলের? আপনি কি জানেন না, এখন পানিই মানি?’
‘সে জানি, একদিন পানির জন্যেই বিশ্বযুদ্ধ লেগে যাবে। যে দেশে যত পানি মজুত থাকবে, সে দেশ তত ধনী হবে। ‘পানির মতো সস্তা’ কথাটা বললে লোকে হাসবে।’
‘এতই যখন বোঝেন তখন গোসুল করতে কেন নামছেন না?’
‘এ যে পানি নয়, লবণ। গায়ে লবণ মেখে গোসুল করলে, শরীর কি আর ঠাণ্ডা হবে?’
‘কেন হবে না? আলবাত হবে। আরে আমাদের শরীরে কি লবণ নেই? শরীর ঘামলে কি শরীর থেকে লবণ বের হয় না? শরীরেরও লবণ দরকার হয়। আর কটা দিনই বা বাঁচবেন? পানি-লবণ, রোদ-কাদা, যা পাবেন মেখে নিন। সবই তো পচে ভূত হয়ে যাবে।’
‘আপনি তাড়াতাড়ি উঠে পড়ুন। ঠাণ্ডা লেগে যাবে। জোয়ারের পানি, নতুন পানি।’
‘আর ঠাণ্ডা! এ শরীর কি সেই শরীর গ? এ শরীরের সব ধকল সহ্য করার ক্ষমতা আছে। এ শরীর রোদেও পুড়তে পারে আবার বৃষ্টিতেও ভিজতে পারে। গরিব মানুষের শরীর কি আর মোম দিয়ে তৈরি? যে একটুতেই গলে যাবে। এ শরীর আল্লাহ ইট-কাঠ-পাথর দিয়ে তৈরি করেছেন। ভেতরে রক্ত-মাংস থাকলেও, বাইরে একটা প্রকৃতি আছে। যে প্রকৃতিতে রোদ-ঝড়-বৃষ্টি সবই হয়। মোষের মতো যেমন মেঘ ওঠে, ঠিক তেমনি কালবৈশাখীর মতো ঝড়ও ওঠে। আবার চাঁদি ফাটা সূর্যও ওঠে। এ শরীরে হাওয়াঘরও আছে। সে হাওয়া কখনো নাচে কখনো ভাঙে।’
‘তুই আবার ঐ বাউলগিরি শুরু করলি?’ বিরক্ত হয়ে ওঠে মতি।
‘বড়ভাই তুমি আর জীবনের কি স্বাদ বুঝলে! তেল-নুনের হিসেব কষতে কষতেই তো জীবনটা ফুরিয়ে দিলে! শরীরের যেমন সংসার আছে, মনেরও একটা সংসার আছে। সে সংসারে আর ক-দিনই বা আগুনের ফুঁ দিলে! সলতেই দিলে কেরোসিনের তেল! সে সংসার চিনতেই পারলে না। শরীরের আকাশেই তো সারাজীবন ঘুড়ি উড়িয়ে গেলে। মনের আকাশে একদিন ঘুড়ির সুতো ছাড়লে বুঝতে, জীবনের রঙ কত রঙিন হয়।’

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব ১৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৯

 

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

আরএ/

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া