বাংলাদেশেও বড় ভূমিকম্পের শঙ্কা, ফায়ার সার্ভিসের বিশেষ সতর্কবার্তা

ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে শক্তিশালী দুটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, যার প্রভাব বাংলাদেশেও অনুভূত হয়েছে। গত ২৮ মার্চ ২০২৫, রিখটার স্কেলে ৭.৭ ও ৬.৪ মাত্রার এই ভূমিকম্পগুলোর ফলে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভূতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশও একই মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে, বিশেষ করে চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও ঢাকা অঞ্চলকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ভূমিকম্প মোকাবিলায় জনগণের পূর্বপ্রস্তুতি ও সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর বিশেষ কিছু নির্দেশনা জারি করেছে। এতে নাগরিকদের ভূমিকম্প মোকাবিলায় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের সতর্কতামূলক নির্দেশনা:
১. ভবন নির্মাণে সতর্কতা: বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০ অনুযায়ী ভূমিকম্প প্রতিরোধী ভবন নির্মাণ করতে হবে।
২. ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংস্কার: পুরোনো ও দুর্বল ভবনগুলো সংস্কার ও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিতে হবে।
৩. অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা: বহুতল ভবন ও বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলোতে পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ: ইউটিলিটি সার্ভিসগুলো নিয়মিত পরীক্ষা করে নিরাপদ রাখা জরুরি।
৫. ভূমিকম্প প্রস্তুতি মহড়া: ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পর্যায়ে নিয়মিত ভূমিকম্প মহড়া আয়োজন ও প্রচার করতে হবে।
৬. জরুরি নম্বর সংরক্ষণ: ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, হাসপাতাল ও অন্যান্য জরুরি সেবার ফোন নম্বর সহজে দৃশ্যমান স্থানে রাখতে হবে।
৭. ভলান্টিয়ার প্রশিক্ষণ: দুর্যোগকালীন সময়ে জনগণের সহায়তার জন্য স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
৮. জরুরি সরঞ্জাম সংরক্ষণ: বাসাবাড়িতে টর্চলাইট, ব্যাটারি, বাঁশি, হেলমেট, শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, প্রয়োজনীয় ওষুধ, ফার্স্ট এইড বক্স, শিশু যত্ন সামগ্রী ইত্যাদি সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে ভূমিকম্প পরবর্তী সংকট মোকাবিলা সহজ হয়।
৯. তদারকি সংস্থার সহায়তা: দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রমে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা করতে হবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স আরও জানিয়েছে, যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে ০১৭২২৮৫৬৮৬৭ নম্বরে কিংবা ১০২ হটলাইনে যোগাযোগ করা যাবে।
ভূমিকম্পের ঝুঁকি কমাতে এবং সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে সবাইকে এখনই সতর্কতা ও পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
