বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১

নেই দেশের নাগরিক

‘কক’ করে উঠলেন! ছেড়া-ফাটা কাঁথা-কাপড়ের পোঁটলা-পুঁটুলির ভেতর থেকে শব্দটা কুঁকিয়ে বেরোল! সে শব্দ শুনে ডুকরে উঠলেন হালেমা, ‘ও আল্লাহ!’ ধড়মড় করে বৈঠাটাকে বাঁশের বাতিতে ঠেসে কোমর ঠেলে ঠেলে পুঁটুলির দিকে এগোল নুহু। সে ঘষটানির ঘষ ঘষ শব্দ অন্ধকার ফুঁড়ে কাতরাচ্ছে।

দুরুদুরু কণ্ঠে নুহু বলল, ‘আল্লাহর উপর ভরসা রাখ, আল্লাহ রহমানের রহিম’। ‘আর কী বা বাকি আছে, যে ভরসা রাখতে হবে! ভিটেমাটি, জমিজিরেত, আবাদপানি সবই তো চলে গেল! খবিশরা আমার ডুগডুগে বৌটাকে চোখের সামনে নেকড়ের মতো ছিড়ে খেল আর ভরসা… ।’

ভিজে গলা অভিমানি হয়ে ওঠে হালেমার। তার ভেতরের নাড়ি দুমড়ে মুচড়ে উঠছে। যেন আস্ত নাফ নদীটা তার চোখে এসে উথলে পড়ছে। এ কি জলের নদী, না যন্ত্রণার? মানুষের শরীরেও নদী থাকে। সে নদী যেমন ঝর্ণার মতো কুলকুল করে বয়, আবার ফোয়াত নদীর মতো কষ্টের ক্ষিরও হয়ে ওঠে। আল্লাহর প্রতি ভরসা একটু একটু করে মরতে বসেছে হালেমার। তার ক্ষোভ, ‘মাটি দিতে পারবেন না তো জন্ম দেওয়ার কী দরকার ছিল?’ পাথরের মতো নিশ্চল হয়ে বসে থাকেন হালেমা। কাঁথাটা ধুকপুক ধুকপুক করে নড়ছে। ভাবেন, মানুষটা এবার সত্যি সত্যি কাঁথা হয়ে যাবে! মানুষটার ঘাড়ের কাছে ছো মেরে বসে আছে মরণের ফেরেশতা আজরাইল! কখন খপ করে কলজে থেকে জানটা ছিনিয়ে নিল বলে! তাহলে কি মানুষটার শেষ ইচ্ছে পূরণ হবে না? চারপাশ ঘুলঘুল করে দেখলেন হালেমা। শুধু জল আর জল! কোত্থাও মাটির চিহ্ন নেই! জলের ওপর ঠেস মেরে বসে আছে ঘুটঘুটে আঁধার। হালেমা ভাবেন, এ আঁধার নয়, এ হল আজরাইলের ছায়া। সব্বাইকে একসঙ্গে গিলে খাওয়ার জন্যে ঘাপটি মেরে আছে। হাতের চুড়ি এবার ভাঙতে হবেই।

‘ধড়ফড় ধড়ফড় করছে, শ্বাসকষ্টটা মনে হয় বেড়ে গেছে!’ কাঁথার ভেতরে হাত পুরে বাপের নাড়ি টিপল নুহু। হাতে গরম ভাপ খেয়ে বলল, ‘গা’টা একেবারে পুড়ে যাচ্ছে গ!’
‘ওর সময় হয়ে এসেছে।’

‘মা, সবুর করো, আল্লাহ ঠিকই হেদায়েত করবেন।’ কান্নার দলা গলায় চেপে দুহাত আসমানের দিকে তুলল মতি। সে টাপার(ছৈ) মটকায় ওঠে, আরিফার শুকনো কাপড়টাকে টাপার পশ্চিমদিকের হলহলে মুখটাতে এঁটে বাঁধছে। হাওয়া একেবারে বেহুদ্দের মতো হুহু করে ঢুকে পড়ছে। খিলখিল করে দাঁত কেলাচ্ছে। মাঝেমধ্যে ক্ষ্যাপা ষাঁড়ের মতো এমন ঝাঁকুনি দিচ্ছে যেন নৌকোটা ঠোঙার মতো পাক সাপ্টে উল্টে যাবে! বাঁশের একটা চাটাইকে টাপার মাথায় বেঁধে, কাপড়টাকে গিঁট মারছে মতি। পুয়ালের মতো তার দুবলা-পাতলা শরীরটাও হলহল করে নড়ছে। চামটা পেটটা পিঠের হাড়ের সঙ্গে যেন পোস্টার সাটা সেটে গেছে। পেট আর পিঠ যেন এক। হাড়ে হাড় পুঁতে আছে। অভাব আর অনাহার মানুষের শরীরের হাড়-মাংসে লাগলে সে মানুষের শরীর এমনই চাঁছি হয়ে ওঠে। মতির তামাটে রঙের পাকানো দেহটা হাওয়ার সঙ্গে যেন এঁটে উঠতে পারছে না। দমকা হাওয়ায় মাঝে মধ্যে ধনুকের মতো বেঁকে যাচ্ছে। তখন যেন মনে হচ্ছে, বাঁশের বাতার চেয়ে তার শরীরটাকেই যদি টাপার মাথায় বেঁধে দেওয়া হয়, তো টাপাটা আরও পোক্ত হয়। অনাহারের হাড়গিলে গতরটা যেন শুধু হাড়ের খোল! ভাত-রুটির অভাবে যেন আর কোনো রসকষ বাকি নেই! ফুঁ দিলেই যেন উড়ে যাবে।

‘পেটে বুকে খিল দিয়েই তো বেঁচে আছি রে ব্যাটা। খিলটা ভেঙে পড়লেই তো আর কিচ্ছু নেই। যেভাবে খালি হাতে এসেছি, সেভাবেই খালি হাতে চলে যাব। এ খিল আর ভর নিতে পারছে না। মানুষের শরীর তো আর লোহার কলকব্জা নয় যে বোঝার পর বোঝা ধরে রাখবে? এ যে রক্ত-মাংসের একটা খোল। কষ্ট সহ্য করতে না পেরে একসময় রুহুটা ফুঁড়ুৎ করে উড়ে চলে গেলেই, ব্যস, এ দেহের সব হিসেবনিকেশ শেষ, তখন দেহটা শুধু একটা খোল, কখন পচবে তার অপেক্ষায় থাকবে। মাটির শরীর মাটি হয়ে যাবে।’ বিড়বিড় করে ওঠেন হালেমা। চোখের জল মুখের জল এক হয়ে যায়। হাতের তসবিহর দানাটায় আঙুলের জোর চাপ দিয়ে ‘লা-ইলাহা’ বলে ওঠেন। যেন এক দোয়া-কলেমা তেলওয়াতেই আল্লাহর দরবারে কান্নার সোর পড়ে যায়। হাই হাই করে ওঠে তামাম ফেরেস্তাকূল। আচানক টাপার উত্তরকোণা থেকে দমকা হাওয়ার মতো ভেসে এল, ‘কত দূর এলাম?’
‘চিন্তা নেই, জান কবজ করা আজরাইল ফেরেশতার নখের কাছে চলে এসেছি।’ ঠেস মেরে ওঠেন হালেমা।
‘মা, তুমি থামবে?’ ধমকে ওঠে নুহু।

‘মা’কে অমন করে বকছ ক্যানে? মা’র মাথা কি ঠিক আছে?’ ঝেঁঝিয়ে উঠল আরিফা। জ্বরে জুবুথুবু হয়ে বসে আছে সে। গতকালের পুরো বৃষ্টিটা তার গায়ের ওপর দিয়েই গেছে। সে বৃষ্টি জ্বর এনে তার গায়ে কামড় বসিয়েছে। গায়ে তাওয়া তাতা তাপ। হলহল করে হেলে উঠছে শরীর। একেবারে হাড়ে সেঁধিয়ে ঠকঠক করে ঠুকাচ্ছে কনকনানি।
‘উ!’ গোঙানিটা এবার কাঁথার সেলাই ফুঁড়ে নদীর জলে আছড়ে পড়ল। টাপার বাঁধনিতেও ঠক্কর মারল। নৌকোর তক্তায় গেঁথে নৌকোটাকেও খানিক হেলিয়ে দিল। ‘আব্বা!’ মুষড়ে উঠল নুহু। টাপার মটকা থেকে ধপাস করে ঝাঁপ মারল মতি। পা হড়কে মুখ খুঁচে পড়ল নৌকোর পাটাতনে। নৌকোটা ডান দিকে আলতো করে কাত হয়ে হেলে গেল। আর একটু হলে ডুবে যেত।

‘মুখে পানি দাও।’ কেঁদে উঠল নুহু। চোখের কোণে গোল হয়ে থাকা চিকচিকে অশ্রুটা গালে গড়িয়ে পড়ল। শিথেনের কাছে রাখা পিতলের ঘড়া থেকে কাঁসার গেলাসটায় জল ঢেলে, গেলাসটা বাপের মুখের ছমুতে ধরল মতি। নুহু থুত্থুরে ঠোঁটদুটো আলতো করে খুলে ধরল। দাঁতহীন ন্যাড়া মাড়িটা মিহি করে হাঁ করে উঠল। দাঁতপাটির চামটি মাংসগুলো গাবের আঠার মতো এঁটে লেগে আছে। গেলাসের কাণাটা বাঁকিয়ে কয়েকফোটা জল ঢেলে দিল মতি। বিছানাগত মানুষটা ঢোক গিললেন না। জলের ফোটাকটা জিভ চুইয়ে নলিতে গড়ে গেল। গেলার ক্ষমতাই নেই, তো গিলবেন কী করে। চুরাশি বছরের শতাব্দী প্রাচীন মানুষ জাফর আলি। বয়স তার শরীরে জেঁকে বসেছে। জড়ানো চামড়ার হাড়গিলে খুটোলে ঘোলা ডিমের মতো ঘুলঘুল করছে ছানিপড়া চোখ। বাপের কালেও ভাবেননি আল্লাহর ফেরেশতা আজরাইলের সঙ্গে দেখাটা হবে এই নাফ নদীর বুকে। আল্লাহর শেষ হুকুমটা হবে এই ভিটেমাটিহীন অথৈ সমুদ্রে। সারাজীবন আল্লাহর ইবাদত করে নসিবে এই ছিল? জীবনভর আমলনামার এই ফল? মরার পর এই রক্ত-মাংসের দেহটা এক মুঠো মাটি পাবে কি না তারও কোনো ঠিক নেই! জাফরের দুই চোখের কোণ দিয়ে ঝরঝর করে ঝরে পড়ছে অশ্রু।

মানুষটার আছেই বা আর কি? চোখের এই জলটুকু ছাড়া? আল্লাহর এত বড় দুনিয়ায় আজ যে তার একটুখানি মাথা গোঁজার ঠাঁইও নেই! সাদা ফেকাসে জিভটাকে সিরসির করে নড়তে দেখে, মতি জলের আরও দু ঢোক বাপটার মুখে ঢেলে দিল। আর কিছু না পাক, পানের জলটুকু তো পেল? যে মানুষ মরার সময় মুখে জল পায় না, তার মতো হতভাগা এই দুনিয়ায় কেউ নেই। কিন্তু মুখের জল না হয় দেওয়া গেল, আব্বার শেষ ইচ্ছেটা কি পূরণ করা সম্ভব হবে? আল্লাহ কি আব্বার মরা শরীরটার জন্যে সাড়ে তিন হাত মাটি লিখে রেখেছেন? কথাটা মনের কোটরে থক করে বাজতেই, মতি নৌকোর পেছন পানে চোখ ফেলল, ‘আমাদের মংডুর ঢিবিটা কি আর দেখা যাচ্ছে?’
‘কই, না তো। একটু আগেই সেনার লালবাতির সিগন্যালটা পিটপিট করে ভেসে আসছিল, এখন সেটাও চোখে সুজছে না!’ মিনমিন করল নুহু।

চলবে...

আরএ/

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ভারতের ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের

টিপরা মোথার প্রতিষ্ঠাতা প্রদ্যোৎ মাণিক্য। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, ত্রিপুরার এক রাজনীতিবিদ ‘বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার’ আহ্বান জানিয়েছেন। এই বিতর্কিত মন্তব্যটি করেছেন ত্রিপুরার দ্বিতীয় বৃহত্তম দল টিপরা মোথার প্রতিষ্ঠাতা প্রদ্যোৎ মাণিক্য।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মাণিক্য পরামর্শ দিয়েছেন, দিল্লি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ স্থাপন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘শত শত কোটি টাকা খরচ’ না করে বরং বাংলাদেশের সেই অংশগুলো দখল করে নিক, যা ‘সব সময়ই ভারতের অংশ হতে চেয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের জাতীয় স্বার্থ এবং তাদের মঙ্গলের জন্য এটি ব্যবহার করা উচিত।’ পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা যদি বাংলাদেশকে ভেঙে নিজেদের জন্য সমুদ্রপথ তৈরি করি, তাহলে সেটা হয়তো আরও সুবিধাজনক হবে। কারণ, এ ধরনের চ্যালেঞ্জিং এবং ব্যয়বহুল প্রকৌশল পরিকল্পনায় বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা খরচের প্রয়োজন পড়বে না।’

ত্রিপুরার এই নেতা দাবি করেন, চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চল আদিকাল থেকেই আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাসের স্থান ছিল এবং ১৯৪৭ সাল থেকেই তারা ভারতের অংশ হতে চেয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে লাখ লাখ ত্রিপুরি, গারো, খাসি ও চাকমা জনগোষ্ঠী রয়েছে, যারা তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী ভূমিতে অত্যন্ত দুরবস্থার মধ্যে জীবনযাপন করছে। তাদের স্বার্থ রক্ষা করেই ভারতের জাতীয় স্বার্থ নিশ্চিত করা উচিত।

প্রদ্যোৎ মাণিক্যের এই মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিলেও তিনি নিজের অবস্থানে অবিচল রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কখনোই আমাদের বন্ধু ছিল না... তাই আসুন আমরা বোকা না হই।’ তার মতে, ভারতে বাংলাদেশের একমাত্র ‘বন্ধু’ ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বাস করি এবং প্রতিদিন স্পষ্ট ও উপস্থিত বিপদ দেখতে পাই। আমি বুঝতে পারছি, আপনার বামপন্থী ঝোঁক এটিকে কঠিন করে তোলে... তবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিও উপলব্ধি করুন।’

প্রদ্যোৎ মাণিক্যের এই মন্তব্য মূলত আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বক্তব্যের সম্প্রসারণ। বিশ্বশর্মা ড. ইউনূসের মন্তব্যকে ‘আপত্তিজনক’ ও ‘তীব্র নিন্দনীয়’ বলে অভিহিত করেছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রেল ও সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।

এর আগে, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছিলেন, ‘ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত সাতটি রাজ্য সম্পূর্ণরূপে ল্যান্ডলকড (স্থলবেষ্টিত)। সমুদ্রের সঙ্গে তাদের যোগাযোগের কোনো উপায় নেই। আমরাই এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক।’

এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, ‘এই মন্তব্যটি ভারতের কৌশলগত চিকেনস নেক করিডরের সঙ্গে জড়িত দীর্ঘস্থায়ী দুর্বলতার ন্যারেটিভটিকেই তুলে ধরে।’ তিনি বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ নিশ্চিত করতে বিকল্প সড়ক ও রেলপথ তৈরির কাজ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

চট্টগ্রাম বন্দরের কৌশলগত গুরুত্ব সম্পর্কে বিশ্বশর্মা বলেন, এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম বন্দরই নয়, বরং দিল্লি এটিকে ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় পণ্য পরিবহনের জন্য একটি ট্রান্সশিপমেন্ট হাব হিসেবে বিবেচনা করছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতা বন্দর থেকে আগরতলায় পরিবহনের খরচ প্রতি টনে ৬,৩০০ থেকে ৭,০০০ টাকা। তবে চট্টগ্রাম থেকে ত্রিপুরায় পণ্য পরিবহন খরচ অনেক কম।

এই বিতর্কিত মন্তব্যের পর ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে।

Header Ad
Header Ad

বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি নির্বাচন আগে না সংস্কার—এমন বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালিয়ে জনগণের মধ্যে ভুল ধারণা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি।

বুধবার (২ এপ্রিল) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিচারব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে হবে। তবে জনগণের মতামত উপেক্ষা করে কোনো সংস্কার হলে বিএনপি তা মেনে নেবে না।

তিনি আরও বলেন, দেশে কোনো সংঘাতের শঙ্কা নেই। প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের মতামত প্রকাশ করবে এবং জনগণের সামনে নিজেদের নীতিমালা উপস্থাপন করবে। পরে জনগণ তাদের উপযুক্ত নেতৃত্ব বেছে নেবে—এটাই গণতন্ত্রের প্রকৃত রূপ। তাই নির্বাচন জরুরি।

সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের সঙ্গে বর্তমান সরকারের সংস্কার প্রস্তাবের মিল রয়েছে। তবে সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে বিএনপি তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, একটি দল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধরে রাখলে স্বৈরাচারী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কম থাকে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ডানপন্থি রাজনীতির উত্থান হচ্ছে এবং তারা বলছেন যে গণতন্ত্র এখন হুমকির মুখে। যদি কোনো দল স্বৈরাচারী হয়ে ওঠে, তাহলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে। তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সবচেয়ে কার্যকর সমাধান।

বিএনপির ভেতরে কিছু ব্যক্তি অনাকাঙ্ক্ষিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বহিষ্কারসহ কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে এসব ঘটনা অনেকটাই কমে এসেছে।

Header Ad
Header Ad

বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। চাঁদা না পেয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও ফলের গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমতাজুল হক। জানা গেছে, উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর (চায়না অফিস) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন— ৭নং পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. সানোয়ার হোসেন (২৬), মো. শাহ আলম (৩৬), মো. আবু বক্কর সিদ্দিক (২৯), মো. মোস্তাফিজুর রহমান (২৬) ও মো. রতন রানা (২৫)। গত ৩০ মার্চ যৌথ বাহিনীর অভিযানে তাদের আটক করা হয়।

মামলার তথ্য অনুযায়ী, বিরামপুর পৌরশহরের ঘাটপাড় এলাকার অধ্যাপক ডা. মোখলেছুর রহমানের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা সানোয়ার হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ডা. মোখলেছুর রহমান তার জমির দেখাশোনার জন্য ফারুক হোসেন নামে একজনকে নিয়োগ দেন। ফারুক সেখানে একটি দোকান নির্মাণের পাশাপাশি বিভিন্ন ফলের গাছ লাগান। গাছগুলোতে পর্যাপ্ত ফল ধরার পর আসামিরা জমি দখলের পরিকল্পনা করে এবং চাঁদা দাবি করে।

গত রবিবার (৩০ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে সানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাগানে হামলা চালায়। তারা ১৫৭টি বড়ই গাছ, ৮৪টি কমলা গাছ ও ২৩টি আম গাছ কেটে ফেলে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

ফারুক হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। মারধরের একপর্যায়ে লোহার শাবল দিয়ে দেলোয়ার হোসেনকে গুরুতর জখম করা হয়। ফারুক হোসেন অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা তার বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে, প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি করে এবং ব্যবসার নগদ ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা লুট করে নেয়।

হামলার পর ফারুক হোসেন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করলে প্রশাসন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ, সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের সহায়তায় পাঁচজনকে আটক করা হয়।

বিরামপুর থানার ওসি মমতাজুল হক জানান, ফারুক হোসেনের দায়ের করা মামলায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ভারতের ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের
বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল
বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই
ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত