রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

কারুন সংরক্ষিত এলাকা পার হবার মিনিট দশেক পরেই আবার একটা বিশাল পাথরে তৈরি তোরণের সামনে এসে দাঁড়াতে হলো। তোরণের বাঁ পাশে আরবিতে লেখা পরিচিতি ফলক পড়তে না পারলেও নিচে লেখা ‘প্রটেকটেড এরিয়া’ দেখে বোঝা গেল আমরা এখন মরুভূমির গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষিত অঞ্চলের ভেতরে ঢুকতে যাচ্ছি। এবারেও গেটে দ্বিগুণ অর্থাৎ দশ ঈজিপ্টশিয়ান পাউন্ড প্রবেশমূল্য পরিশোধ করতে হলো। এরপর তোরণ পেরিয়ে ভেতরে ঢুকে যাবার পরেই চোখে পড়ে একটি বিশাল প্রস্তর খণ্ডে লেখা ‘ওয়াদি এল রায়ান ন্যাশনাল পার্ক।’ মরুভূমিতে জাতীয় উদ্যান! তাহলে তো মরু অঞ্চলে বৃক্ষলতার যথাযথ সংরক্ষণের জন্য পর্যটকদের মূল্য পরিশোধ করাই কর্তব্য। কিন্তু মাইলের পর মাইল চলার পথে কোথাও উদ্যান তো দূরে থাক সবুজের ছিটেফোঁটাও নেই। 

দুপাশে এবং সামনে যতো দূর চোখ যায় কেবলই নিঃসীম বালির বিস্তৃত প্রান্তর। এতো দিন ধু ধু মরুভূমি বলে যা শুনে এসেছি এবারে মাঝখানে এক চিলতে পথ বাদ দিলে সেই ধু ধু মরুভূমি পাড়ি দিচ্ছি। বাসুনি সিডি প্লেয়ারে আরবি মিউজিক চালিয়ে দিয়েছে। প্রধানত ব্যাগ-পাইপে বাজানো সুরের সঙ্গে সিলভার ফ্লুট এবং পার্কাশন মিলিয়ে আমার মনে হচ্ছে খুব পরিচিত একটা মউিজিকের কাছাকাছি। কিছুক্ষণ পরেই বুঝতে পারলাম এটি হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি নাগিনের মিউজিকের মতো। সাপ খেলানোর মিউজিক বাজিয়ে বাসুনি সাপের মতো ডাইনে বাঁয়ে আচমকা টান দিয়ে এঁকে বেঁকে গাড়ি চালাচ্ছে। সোজা রাস্তা থাকতে বাসুনি কেন ডাইনে বাঁয়ে স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে হঠাৎ হঠাৎ বালিতে উঠে পড়ছে বুঝতে পারছিলাম না। এরপর সে যখন রাস্তা ছেড়ে ছোট বড় বালির পাহাড় ডিঙ্গিয়ে তার ল্যান্ডক্রুজারকে একবার উপরে উঠিয়ে আবার পর মুহূর্তেই নিচে আছড়ে ফেলতে লাগলো তখন আর না বলেই পারলাম না, ‘হেই বাসুনি! হোয়াট আর ইউ ডুয়িং?’

          ওয়াদি এল রায়ান জাতীয় উদ্যান

বাসুনির ইংরেজি জ্ঞান আমার আরবি জ্ঞানের চেয়ে বেশি নয়। তবে সে একটা বিজয়ের হাসি দিয়ে বালির সমুদ্র থেকে গাড়ি রাস্তায় ফিরিয়ে অনলে রানা ভাই বললেন, ‘এটাই হচ্ছে ডেজার্স্ট অ্যাডভেঞ্চার।’ ভাবলাম, ‘আমাদের বেশি অ্যাডভেঞ্চারের দরকার নেই। মরুভূমি দর্শন শেষে হাড়-হাড্ডি সমেত প্রাণ নিয়ে ঘরে ফিরতে পারলেই বাঁচি।’
মোহামেদ সাদেক বলল, ‘বাসুনির আসল খেলা দেখতে এখনো দেরি আছে।’ কায়রো থেকে প্রায় দেড়শ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ওয়াদি আল হিতামের পথে প্রায় ঘণ্টাখানেক চলার পরে মরুভূমির ধু ধু প্রান্তরের বালিয়াড়ি ক্রমেই সংকুচিত হয়ে দুপাশে বালির পাহাড়ের রূপ নিতে শুরু করে। কোথা কোথাও এই সব বালির স্তূপের স্তরগুলো এমনভাবে সাজানো, মনে হয় কোনো স্থপতি নিপুন হাতে সৃষ্টি করেছেন এক একটি বালির ভাস্কর্য। পর পর সাজানো এইসব বালি পাহাড়ের ভেতর দিয়ে আরও অনেক দূর এগোবার পরে গাড়ির গতি কমিয়ে দেয় বাসুনি। চোখে পড়ে দুপাশের হলদে বাদামি পাহাড়ের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে গড়ে তোলা ছোট ছোট কুটির।

          মরুর বুকে মাটির কুটির

দেখে মনে হয় আমাদের দেশের উত্তরাঞ্চলের কাদা-মাটির তৈরি বাড়ি, কিন্তু এখানে সেই এঁটেল মাটি তো নেই। ঘরগুলো সম্ভবত তৈরি করা হয়েছে সিমেন্ট বালির আস্তর দিয়ে। ঘরের জানালা দরজাগুলোও সাধারণ আয়তকার বা বর্গাকার নয়, সেখানেও রয়েছে শিল্পীর হাতের ছোঁয়া। মরু প্রান্তরের পাহাড় ও বালির স্তূপের সঙ্গে রঙ ও ডিজাইন মিলিয়ে অসাধারণ এক স্থাপত্য নৈপুন্যের উদাহরণ এই কুটিরগুলো দেখে দীর্ঘ সময় মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকা যায়।একটি আমাদের ল্যান্ডক্রুজার থেমে যাবার পরেই কুটিরের ভেতর থেকে একজন বেরিয়ে এসে দু হাত বাড়িয়ে মোহামেদ সাদেককে স্বাগত জানায়। এই বিরান প্রান্তরে সাদেকের যে নিত্য আসা যাওয়া তাতে আর কোনো সন্দেহ থাকে না। আমরা গাড়ি থেকে নেমে আসার পরে আমাদেরও সাদর আমন্ত্রণ জানিয়ে ভেতরে বসতে বলে জোব্বা-পাগড়িধারীদের একজন। এখানে ঢুকেই বুঝতে পারি এটি একটি রেস্তোরাঁ! কয়েকটি লম্বা টেবিলে সামনে চায়ের কাপ রেখে আড্ডা দিচ্ছে বেশ কয়েকজন। জনবিরল বালিয়াড়িতেও মিশরীয়দের আড্ডায় কোনো কমতি নেই। বাইরে রোদ থাকলেও অসহনীয় কোনো গরম নেই, কিন্তু ভেতরটা বেশ ঠাণ্ডা। রানাভাই বসেই পড়েছিলেন। আমরা কিছুক্ষণ বসবো কিনা ভাবছিলাম, এ সময় সাদেক বলল, ‘আমরা বরং মিউজিয়াম ঘুরে, কিছুটা ট্রেকিং শেষ করে এসে বসতে পারি।’ 

          বালির স্থাপত্য

মাঝখানে কাঁকর বিছানো রাস্তার ওপারেই আরও একটি ‘কাদা-মাটির ঘর’। বড় আকারের বৃত্তাকার ঘরের মাঝখানে মসজিদের মতো গোলাকার ‘ডোম’ দেখে ভেবেছিলাম এটি হয়ত মসজিদ। কিন্তু না, এটিই মিশরের বহুল আলোচিত ‘ফসিল অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ মিউজিয়াম।’ মিউজিয়াম ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে পেছনে ফিরে দেখলাম, শুধু একটি রেস্তোরাঁ নয় ওপারে সামনে পেছনে বেশ কয়েকটি বিভিন্ন আকার আকৃতির সুদৃশ্য কুটির দাঁড়িয়ে আছে। এগুলোর কোনোটা পর্যটন বিভাগের দপ্তর আর কোনোটা নিরাপত্তারক্ষীদের আস্তানা। 

ওয়াদি আল হিতাম এলাকায় প্রবেশের আগে আরও একবার টিকেট কিনতে হয়েছিল এবং সেটিই মিউজিয়ামের প্রবেশপত্র। অতএব নতুন করে কোনো টিকেট না কিনেই সাদেককে অনুসরণ করে ভেতরে ঢুকে গেলাম। মূল ভবনের ঠিক পাশে আরও একটি বৃত্তকার কক্ষে গোটা পনের কুড়ি চেয়ার পাতা। আমরা বসতেই জাদুঘরের একমাত্র কর্মকর্তা একটি ভিডিও চালিয়ে দিলেন, সামনের পর্দায় ভেসে উঠলো ‘ফসিল অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ মিউজিয়ামের ইতিবৃত্ত। ২০১৬ সালে ইওনেস্কোর সহযোগিতায় যাত্রা শুরু করেছে এই জাদুঘর। স্থানীয় আবহাওয়া, পরিবেশ এবং প্রকৃতির সঙ্গে মিল রেখেই এর ডিজাইন করা হয়েছে। শুধু মিশরে নয় প্রাগৈতিহাসিক কালের কঙ্কাল এবং ফসিলের এই সংগ্রহশালা বিশ্বের অন্যতম বিশেষায়িত জাদুঘর। সাত আট মিনিটের ছোট্ট প্রামাণ্যচিত্রটি খুব আকর্ষণীয় কিছু না হলেও বেশ কিছু মজার তথ্য পাওয়া গেল। ‘হোয়েলস অব দ্য ডেজার্ট’ নামের একটি অংশে জানা গেল এক সময় পা বিশিষ্ট বিশাল তিমি মাছের বিচরণ ছিল এই এলাকায়। তিমিগুলো হয়ত লক্ষ কোটি বছরের বিবর্তনের ধাক্কা সামলাতে না পেরে পায়ে হেঁটে সমুদ্রে নেমে সাঁতার কাটতে চলে গেছে। তাহলে আমরা চার্লস ডারউইনের বিবর্তনের সূত্রকে কীভাবে অস্বীকার করব!

 তিন কোটি সত্তর লক্ষ বছর আগের তিমির কঙ্কাল

ডকুমেন্টারি শো শেষ হলে আমরা এলাম পাশের বড় বৃত্তাকার প্রদর্শনী কক্ষে। মাঝে বড় বৃত্তটি জুড়ে শুয়ে আছে তিন কোটি সত্তর লক্ষ বছর আগের  আঠারো মিটার লম্বা সেই পাওয়ালা তিমি। কেন্দ্রীয় বৃত্তটিকে ঘিরে পুরো ৩৬০ ডিগ্রি এলাকায় চক্রাকারে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন আকার আকৃতির র্যাক, কর্নার এবং ডিসপ্লে বোর্ড। কোথাও কাচের বাক্সে শোভা পাচ্ছে তিন থেকে পাঁচকোটি বছর আগের সামুদ্রিক নানা প্রাণীর কঙ্কাল, দাঁত বা হাড় গোড়ের অংশ বিশেষ। কোথাও দেয়ালের খাঁজে কাচে ঢাকা খোপে এক সারি দাঁত বের করে তাকিয়ে অছে প্রাগৈতিহাসিক চিতাবাঘ। আবার খোলা ডিসপ্লে টেবিলে সাজানো আছে গ্রানাইটের মতো হার্ডরক অথবা লাইমস্টোনের মতো সফ্ট রকের ছোট বড় টুকরো। অদ্যিকালে শুকনো গাছের গুড়িও প্রদর্শনযোগ করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে ধাতব স্ট্যান্ডে। কে জানে এই গাছের বয়সও হয়ত দেড় দুই কোটি বছর! জাদুঘরের আকারটি ছোট। তারপরেও তিরিশ থেকে পঞ্চাশ মিলিয়ন বছর আগের জীবাশ্ম এবং আরও লক্ষ কোটি বছর আগের সব নিদর্শন কাছে থেকে ছুঁয়ে দেখে ছবি তুলে বেরিয়ে আসতে সময় লেগেছে চল্লিশ মিনিটের মতো।  

জাদুঘর থেকে বেরিয়ে একটু সামনে এগোতেই একটা বিপত্তি ঘটে গেল। হেনা বালির প্রান্তরে ছড়িয়ে থাকা নানা কিসিমের ভাঙাচোরা ঝিনুক, শামুক বা অন্যকোনো জলচর প্রাণীর দেহাবশেষের কয়েকটি টুকরো বেছে হাতে তুলে নিয়েছিল। ব্যাপারটা জাদুঘরের তত্ত্ববধায়কের চোখ এড়ায়নি। তিনি কোথায় থেকে যেনো ‘লা- লা’ করে ছুটে এসে হেনার হাত থেকে এক রকম জোর করে ছিনিয়ে নিয়ে বালির উঠানে ছড়িয়ে দিলেন। ঘটনার আকস্মিকতায় হেনা তো বটেই মোহামেদ সাদেক পর্যন্ত অপ্রস্তুত হয়ে পড়ল। সে বারবারই বলছিল, ‘লোকটা এমন আচরণ না করলেও পারত। সে ভদ্রভাবে বলতে পারত, এখানকার কোনো পাথর, ফসিল বা বালি এলাকার বাইরে নেওয়া নিষেধ, তাতে তো আমরা কেউই আপত্তি করতাম না।’ সাদেক নিজেই ঘটনার জন্যে এতাবার দুঃখ প্রকাশ করল যে, শেষ পর্যন্ত বলতে হলো, ‘যা হবার তা তো হয়েছে, চলো এবার পরবর্তী গন্তব্যে যাওয়া যাক।’ যাকে নিয়ে এতো কথা হচ্ছিল ফিরে দেখলাম সেই দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাদুঘরের প্রবেশ পথের পাশেই ‘আল্লাহু আকবর’ বলে দিব্যি নামাজে দাঁড়িয়ে গেছেন। 

মরুভূমির ধু ধু প্রান্তর জুড়ে বালির স্তূপ আর পাহাড়ের অপূর্ব প্রাকৃতির স্থাপত্য শৈলীর সৌন্দর্য নিজের চোখে দেখার জন্যে একটা পথ চলে গেছে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত। আসা যাওয়ায় অন্তত ঘণ্টা তিনেক সময় দিলে পুরোটা ধীরে সুস্থে দেখে আসা যায়। আমাদের হাতে সময় কম। তা ছাড়া দুপুরের সূর্য ক্রমেই মাথার উপরে উত্তাপ বাড়াতে শুরু করেছে, সেই তাপে পায়ের নিচের তেতে উঠছে বালি। কিন্তু তাই বলে মরু ট্রেকিং একেবারেই বাদ চলে যাবে তা হতে পারে না। দুপাশে পাথরের গোলক দিয়ে চিহ্নিত পথ ধরে হাঁটতে শুরু করলাম। পর্যটকদের চলাচলের কারণে মাঝের পথটুকু কিছুটা মসৃণ, এ ছাড়া আসলে পুরো পথের বাইরে বালির সাগরে ছড়িয়ে আছে কাঁকর আর ঝিনুকের শামুকের খোলের টুকরো। একটু দূরে দূরে বিচিত্র সাজের হলদে বাদামি পাহাড় কোথাও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে, আবার কোথাও পাহড়ের শীর্ষে, শরীরের খোঁজে অথবা পায়ের কাছে বাতাসের কারুকাজ সারি সারি মূর্তিমান ভাস্কর্য সৃষ্টি করে পর পর সাজিয়ে রেখেছে। 

আমরা দুজন সামনে এগিয়ে গিয়েছিলাম, রানা ভাই কিছুটা পেছনে। পথটা ধীরে ধীরে ওপরের দিকে উঠে বাঁ দিকে বাঁক নিয়েছে। দুজন তরুণ তরুণী, তরুণের কাঁধে একটি বছর দুয়েকের শিশু নিয়ে সাচ্ছন্দ্যে নেমে আসছে। ভাবছিলাম সামনে এগিয়ে নতুন কিছু দেখবার সম্ভাবনা কতোটা ওদের জিজ্ঞেস করবো। কিন্তু তার আগেই রানা ভাই চিৎকার করে ডাক দিলেন, ফিরতে হবে। দেড় ঘণ্টার পথের মাত্র কুড়ি-বাইশ মিনিট এগিয়ে ছিলাম। রানাভাইয়ের ডাকে কয়েকটা ছবি তুলে তাড়াতাড়িই ফিরে এলাম। রেস্তোরাঁয় তখন রীতিমতো আড্ডা চলছে। দুজন পুলিশ, আমাদের মোহামেদ সাদেকসহ তিনজন টুরিস্ট গাইড এবং একজন ড্রাইভার। পুলিশ এং টুরিস্ট গাইডদের সঙ্গে জমিয়ে ফেলতে রানা ভাইয়ের একটুও দেরি হলো না। আমি চা কফি কিছুই খেতে চাই না জানিয়ে আবার বেরিয়ে পড়লাম। ’You are standing on the floor of an ancient sea.’ এই চমকপ্রদ কথাটি পড়ার পরে ‘ওয়াদি এল হাইতাম: ভ্যালি অব দ্য হোয়েলস ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের ছোট্ট কক্ষটির দেয়ালে সাঁটা পোস্টারগুলোতে একবার চোখ না বুলিয়ে পারা যায় না।’ আড়াই থেকে সাড়ে তিন কোটি বছর আগে পৃথিবীর বেশিরভাগ এলাকাই যখন জলমগ্ন ছিল সেই আদ্যিকালে বর্তমান মিশরের প্রায় পুরোটাই ছিল তেথিস সাগরের তলায়। আফ্রিকা মহাদেশের ভাঙনের বিপুল পরিমাণ পলি এসে জমা হতে থাকে এই অঞ্চলে। জমতে থাকা পাললিক শিলার স্তরে স্তরে অগণিত সামুদ্রিক প্রাণীর দেহাবশেষ থেকে এখানে গড়ে উঠেছে ফসিলের অপরিমেয় ভাণ্ডার!’ 

          সরাইখানায় জমাট আড্ডা

এক মুহূর্তের জন্যে মনে হলো আমার পায়ের তলা থেকে যদি পাললিক শিলায় গড়ে ওঠা ওয়াদি এল হাইতাম-এর মরুভূমি সরে যায় তাহলে সমুদ্রের পানিতে পড়তে হবে। আমি তাড়াতাড়ি মরুভূমির সরাইখানায় ফিরে যাই। সেখানে রানা ভাই তখন তুমুল আড্ডা জমিয়ে ফেলেছেন। আমাকে দেখে একজন টুরিস্ট গাইডদের বলে উঠলেন, ‘স্যার কেন ইউ গেজ মাই এজ?’ একটু চিন্তা করে বললাম, ‘পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন।’ সে হাসতে হাসতে উত্তর দিলেন, ‘নেক্সট ইয়ার আই উইল বি এইটটি!’

মরুভূমির জল-হাওয়া মিশরীয়দের তারুণ্য দীর্ঘায়িত করেছে এবং আয়ুষ্কাল বাড়িয়ে দিয়েছে সন্দেহ নেই! 

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ পুলিশের ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) নিয়োগ-২০২৫-এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এবছরের নিয়োগে লিখিত ও মনস্তত্ত্ব পরীক্ষা, বুদ্ধিমত্তা এবং মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ৫৯৯ জন প্রার্থীর প্রাথমিক সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৬৬ জন মেধাভিত্তিক, ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা কোটায়, ২ জন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী কোটায় এবং ১ জন শারীরিক প্রতিবন্ধী কোটায় সুপারিশ পেয়েছেন।

সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে অনুষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময়সূচি বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইট (www.police.gov.bd) এবং টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে।

 

Header Ad
Header Ad

হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের হাকিমপুরে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (ওএমএস) সাড়ে ৫ মেট্রিকটন চাল ও ১০৪টি খালি চালের বস্তা উদ্ধার করা হয়েছে। এসব চাল একটি ধান ভাঙ্গা মিলের গুদামে মজুদ করা ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে ২৬ এপ্রিল, শনিবার রাতে, যখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত রায় অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার করেন।

গুদামটির মালিক আসাদুজ্জামান আসাদ, যিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্য, তার বিরুদ্ধে চাল মজুদ করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, আলীহাট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের কাছে তার মিলের গুদামে এসব চাল মজুদ ছিল। অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৫ মেট্রিকটন চাল জব্দ করা হয়, তবে অভিযানের সময় মিল মালিক এবং কোনো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় আসাদকে গ্রেপ্তার করা না গেলেও তাকে আসামী করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, চাল মজুদ করা বেআইনি এবং এটি অপরাধ। উদ্ধারকৃত চাল উপজেলা খাদ্যগুদামে পাঠানো হয়েছে এবং পরবর্তীতে নিয়মিত মামলায় তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা খালেদা খাতুন জানিয়েছেন, মামলাটি রবিবার বিকালে থানায় করা হবে, যেখানে আসাদুজ্জামান আসাদকে প্রধান আসামী হিসেবে দায়ের করা হবে।

এদিকে, আসাদ আগেও বৈষম্যবিরোধী দুই ছাত্র হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

ক্যামেরার লেন্স চুরির অভিযোগ প্রমাণের ভিত্তিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত দুই শিক্ষার্থী হলেন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের আনাস আহমেদ ও শামীম ভূঁইয়া।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল হাকিম। 

আনাস আহমেদকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার ও আবাসিক হলের সীট বাতিল এবং শামীম ভুঁইয়াকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া তার ব্যাপারে পরিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে আগামীকাল সিন্ডিকেটে আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল হাকিম বলেন, "গণমাধ্যমে আনাসকে নিয়ে রিপোর্ট হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হয়েছে। এছাড়া তার চুরির সত্যতা পাওয়া গেছে। ফলে তাকে এক বছরের বহিষ্কার এবং হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর শামীমের ব্যাপারে শৃঙ্খলা বোর্ড বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে। আগামীকাল বিষয়টি সিন্ডিকেটে আলোচনা হবে।'

এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, 'শৃঙ্খলা বোর্ড দুইটি সিদ্ধান্তের সুপারিশ করেছে। এখনো সাইন হয়নি পেপারে। আগামীকাল সিন্ডিকেটে ফাইনাল হবে বিষয়টি।'

উল্লেখ্য, এর আগে কুমিল্লার একটি অভিজাত হোটেল থেকে ক্যামেরার লেন্স চুরি করে আনাস এবং শামীম। সিসি ফোটেজ বিশ্লেষণ করে এর সত্যতাও পাওয়া যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৫ এপ্রিল রাতে বেশ কয়েকজন বহিরাগত এসে ক্যাম্পাসে আনাসকে মারধরও করে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু
নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা চায় জামায়াত
কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক এমপি জাফর আলম গ্রেপ্তার
ভারতের দিকে তাক করা পাকিস্তানের ১৩০ পারমাণবিক বোমা
চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় তাওহিদ হৃদয়, বাড়ছে নাটকের রঙ
উত্তেজনার মধ্যেই যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল ভারত
ছেলে খুঁজে পাচ্ছি না, একজন জীবনসঙ্গী দরকার: মিলা
টাঙ্গাইলে শ্রমিকদলের নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধে ভারতের ১.১৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির শঙ্কা
দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা
রাজনীতির চেয়ারে ঘুণপোকা ধরেছে, এটি সংস্কার করা প্রয়োজন: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
উত্তাল ইউআইইউ ক্যাম্পাস, ভিসি-ডিনসহ ১১ কর্মকর্তার পদত্যাগ
এপ্রিলেই দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, সঙ্গে থাকবেন দুই পুত্রবধূ
বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে বিশাল নিয়োগ, পদ ৬০৮
ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় ফ্যাসিবাদী শাসক পালাতে বাধ্য হয়েছে: আলী রীয়াজ