রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

কয়েকদিন পরে কায়রো ফিরে মনে হলো নিজের বাসায় ফিরেছি। একটু রাত করে নিজের বিছানায় ঘুমিয়ে বেশ বেলা করে যখন উঠেছি তার আগেই সৌরভ অফিসের উদ্দেশে বেরিয়ে গেছে। আমরা ধীরে-সুস্থে ঘরে নাস্তা বানিয়ে খেয়ে কিছুটা সময় আলসেমি করে বাইরে বেরোতে সাড়ে এগারোটা বেজে গেল। হাঁটতে হাঁটতে আল মাদি স্টেশনে যাবার পথে রানা ভাই দুই দুটো ব্যাংকের এটিএম বুথে টাকা তোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেন। লুক্সরেও আমাদের একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। ফলে বুঝলাম মিশরের বেশিরভাগ এটিএম বুথ অনেক সময় খারাপ থাকে। 

এল মাদি থেকে ট্রেনে চেপে দুটো স্টেশন পার হবার পরে রানাভাই বললেন, আমরা তো উল্টো দিকে যাচ্ছি।’ তিনি যেহেতু আগে একবার কায়রো এসে গেছেন, সেই কারণে আমি নিজে কোনো কিছু না দেখে তাকে কেবল অনুসরণ করেছি মাত্র। উল্টো পথের যাত্রা নিশ্চিত হবার পরে পরবর্তী স্টেশন কোজিকায় নেমে গেলাম। ওভার ব্রিজ দিয়ে প্লাটফর্ম বদলে ওপারে যাবার পরপরই সঠিক পথের ট্রেন এসে দাঁড়াল। ট্রেনে উঠেই শূন্য আসনে বসে পড়তে পেরেছি তিনজনই। মহিলাদের জন্য নির্ধারিত কামরা থাকলেও পুরুষের কামরায় মহিলাদের উঠতে মানা নেই।

হিজাব-নিকাব-বোরকার পাশাপাশি টিশার্ট-জিনস কিংবা স্কার্ট-টপস পরিহিতাদেরও একই কামরায় আসা যাওয়ায় কোনো সমস্যা নেই। যাত্রীদের কেউ কারো দিকে তাকায় বলেও মনে হলো না। বরং আমিই আমাদের উল্টো দিকের সিটে বসা মেরুন রঙের বোরকায় আবৃত এক মহিলাকে আড় চোখে কয়েকবার দেখে নিলাম। কিছুক্ষণ পরপরই তিনি যখন তার বোরকার লম্বা জিহ্বা তুলে একটা করে চকলেট মুখে পুরে দিচ্ছিলেন আমার মনে হচ্ছিল তিনি লেটারবক্সের ঢাকনা তুলে একটা করে চিঠি পোস্ট করছেন। 

একে একে তোরা এল বালাদ, এল মাদি, দার এল সালাম, জগলুল নামের গোটা দশেক স্টেশন পার হয়ে যেখানে এসে আমরা নেমে গেলাম, সেই স্টেশনটির নাম সাদাত এবং পরের স্টেশনই নাসের। আনোয়ার সাদাত বা গামাল আব্দুল নাসেরের লম্বা চওড়া নাম বাদ দিয়ে শুধুই সাদাত এবং নাসের। এতে মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্টদের কোনো ক্ষতি বৃদ্ধি হয়নি, বরং স্টপেজের সংক্ষিপ্ত নামই মানুষের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়। সাদাত স্টেশনটি এদেশের মেট্রোর সমসাময়িক, অর্থাৎ পঁত্রিশ বছরের পুরোনো। ইওরোপ এবং এশিয়ার যে সব দেশে মেট্রোরেলে আসা যাওয়া করেছি তার সবগুলোই ভীষণ পরিচ্ছন্ন ঝকঝকে। সেই তুলনায় মিশররের মেট্রোরেল এবং স্টেশন অনেকটাই নিষ্প্রভ। আফ্রিকায় অবশ্য কায়রো এবং আলজিয়ার্স ছাড়া আর কোনো শহরে মেট্রো নেই। সেদিক থেকে কায়রো অনেক এগিয়ে আছে। 

বেশ বড় মেট্রো স্টেশন সাদাত থেকে অনেকগুলো বাইরে বেরিয়ে যাবার পথ। পথ খুঁজে বাইরে বেরোতে আমাদের বেশ সময় লেগে গেল। সাদাত থেকে সঠিক পথে বাইরে বেরোতে পারলে মিনিট খানেক পায়ে হেঁটেই তাহরির স্কয়ার পৌঁছানো যায়। আমরা একটু ভুল পথে বেরিয়েও মিনিট পাঁচেক হেঁটে গোটা পাঁচেক বড় রাস্তার সংযোগস্থলের যে বিশাল সড়ক দ্বীপে এসে পৌঁছলাম সেটিই বিখ্যাত তাহরির স্কয়ার।  

তিউনিশিয়ায় ২০১০ সালে স্বৈরশাসকের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আরব বসন্ত নামে যে গণজাগরণ ঘটেছিল তার ঢেউ এসে লেগেছিল মিশরসহ আর বিশ্বের আরও অনেক দেশে। সে সময় মিশরে সমাজের বিভিন্ন আর্থ সামাজিক স্তরের লাখ লাখ বিক্ষুব্ধ মানুষ তাহরির স্কয়ার এবং সংলগ্ন এলাকায় সমবেত হয়ে প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের পদত্যাগের দাবি জানায়। গণ বিরোধী রাষ্ট্রীয় জরুরি আইন, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, পুলিশি নির্যাতন, মূল্যস্ফীতি ও বেকারত্ব এবং ঘুষ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিনের পুঞ্জিভুত ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল কায়রো। 

গণ আন্দোলনের মুখে ২০১১ সালের এগারোই ফেব্রুয়ারি হোসনি মোবারক পদত্যাগ করলেও সমস্যা সমাধান হয়নি। সামরিক বাহিনীর সুপ্রিম কাউন্সিল ক্ষমতা দখল করে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে। ২০১২ সালে নির্বাচনে জনগণের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইসলামিক ব্রাদারহুডের মোহম্মদ মুরসি। একটি ইসলামপন্থী সংবিধান পাশ করানোর চেষ্টা করে মুরসি পার্লামেন্টের ভেতরে বাইরে, জনগণ এবং সামরিক বাহিনীর তীব্র বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছিলেন। 
গণরোষকে কাজে লাগিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ এল সিসি সেনাবাহিনীর সহায়তায় মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে ২০১৪ সালে আবারো একটি নির্বাচন দিয়ে নিজেই প্রেসিডেন্ট হয়ে বসে পড়েছেন। প্রকৃতপক্ষে ক্ষমতার রদবদল ছাড়া তাহরির স্কয়ার ঘিরে জনগণের বিক্ষোভ সংগ্রামের ফলাফল একেবারেই শূন্য।  

দুপুরের এই সময়টাতে তাহরির স্কয়ারে খুব একটা জনসমাগম নেই। চত্বরে সবুজ ঘাস এবং ছোট ছোট গাছপালার ভেতরে ভেতরে বেঞ্চ পাতা। পাথরের বেদীতে বসানো ভাস্কর্যটি কার তা না জেনেই ক্যামেরা বের করে ভিউ ফাইন্ডারে চোখ রাখতেই বেঞ্চে বসা নীল পোশাকধারী দুজনের একজন এগিয়ে এসে হাসিহাসি মুখে বললো, লা তসবির, লা তসবির, তসবির মানে ছবি আগে থেকেই জানতাম আর লা মানে যে না অথবা নাই সে তো মুসলমান মাত্রেরই জানা। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ... মানে যদি আল্লাহ ছাড়া উপাস্য নেই হয়, তাহলে লা তসবির মানে ছবি নাই। এই এলাকায় ছবি তোলা যে নিষিদ্ধ, তা কিন্তু কোথাও লেখা নেই। কোনো বোর্ডে-বিজ্ঞপ্তি দিয়েও জানানো হয়নি। পরে খেয়াল করে দেখলাম তাহরির চত্বরের চারিদিকে নীল রঙের বেসামরিক পোশাক পরা বেশ কিছু সংখ্যক সতর্ক প্রহরী আসলে পুরো স্কয়ারকে ঘিরে রেখেছে। কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, পোশাকধারী কোনো সরকারি বাহিনী নেই অথচ অদৃশ্য প্রহরার বেস্টনি দিয়ে ঘেরা বিদ্রোহ বিপ্লব সংগ্রামের সূতিকাগার তাহরির স্কয়ার। মুরসির কুরসি উল্টে যাবার অভিজ্ঞতা শাসকগোষ্ঠীর মনে এই চত্বর সম্পর্কেই একটা ভীতি ছড়িয়ে দিয়েছে। তাই সিসি মহোদয়ের এই সাবধানতা।  কী মনে করে সতর্ক প্রহরী কাছে এসে বলল তোমরা ইচ্ছে করলে একটা ছবি তুলে রাখতে পারো, তার বেশি নয়।’ আমার ততোক্ষণে ছবি তোলার ইচ্ছে চলে গেছে। 

তাহরির স্কয়ার থেকে বেরিয়ে রাস্তার ওপারে যাবার জন্যে ট্রাফিক সিগনালে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম, তারপরে রাস্তা পেরিয়ে হাঁটতে শুরু করলাম কায়রোর জাতীয় জাদুঘরের দিকে। তাহরির স্কয়ারের দৃষ্টি সীমার মধ্যে আরব বিশ্বের প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের গোলাপি রঙের ভবনের দিকে এগোতে থাকি। ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ ঈজিপ্টশিয়ান অ্যান্টিকুইটি নামে ১৯০২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই জাদুঘর খুব শিগগিরই স্থান্তরিত হয়ে গ্রান্ড ঈজিপ্টশিয়ান মিউজিয়াম নামে গিজায় চলে যাবে। তখন এটিই হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর। এরই মধ্যে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবার ফলে জাদুঘরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন চলে গেছে গ্রান্ড মিউজিয়ামে। সম্প্রতি দ্বিতীয় তৃতীয় রামেসেস, প্রথম ও দ্বিতীয় আমেনহোতেপ, নেফারতারি এবং হাতসেপস্যুসহ ফারাও যুগের সম্রাট সম্রাজ্ঞীদের বাইশটি মমি রাজকীয় আনুষ্ঠানিকতায় বাদ্য বাজনা বাজিয়ে শোভাযাত্রা করে গ্রান্ড ঈজিপ্টশিয়ান মিউজিয়ামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারপরেও কায়রোর পুরোনো মিউজিয়ামে ঢুকে পড়ার ইচ্ছে ছিল। রানাভাই ঘড়ি দেখে বললেন, এখন ২০০ পাউন্ড দিয়ে টিকেট কিনে ঘণ্টা দুয়েকের জন্যে মিউজিয়ামে ঢুকে দেখে শেষ করা সম্ভব হবে না। বরং অন্য কোনো দিন সকালের দিকে আসা যাবে।’ 

বাইরে থেকে মিউজিয়াম ভবন দেখে খানিকটা উল্টো দিকে হেঁটে আমরা মূল সড়ক ছেড়ে একটা অপ্রশস্ত পথে ঢুকে পড়লাম। বেলা প্রায় আড়াইটা বাজে, অতএব লাঞ্চের সময়ও পার হয়ে গেছে বলা যায়। পথে প্রথমেই যে রেস্টুরেন্ট চোখে পড়ল তার ঝকঝকে নাম ফলক এবং কাচের স্যুইংডোর দেখে বিভ্রান্ত হয়ে সেখানে ঢুকে পড়লাম। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হলঘরের ভেতরে তুমুল হৈ হট্টগোল চলছে। এক নজর চারিদিকে তাকিয়ে দ্রুত, বলা যায় ছিটকে বেরিয়ে এলাম। আবার ফুটপাথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে খানিকটা এগিয়ে একটা মোড়ের ওপরে পাওয়া গেল কায়রোর জনপ্রিয় স্ট্রিটফুডের ভ্যান। অনেকটা কলকাতায় রাস্তায় লুচি তরকারি আলুর দম পরিবেশনের মতো পরিবেশিত হচ্ছে রুটির ভেতরে ভাজা মাংসের কিমা পুরে শরমা কিংবা বনরুটির মধ্যে কাবাব জাতীয় কিছু একটা দিয়ে বার্গার। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় আলেক্সাদ্রিয়ান লিভার কিংবা সসেজ স্যান্ডউইচ। সসেজ জিনিসটা আমার পছন্দ নয় বলে পরীক্ষামূলকভাবে লম্বা ব্রেডের ভেতরে কলিজি ভুনার পুর দেয়া আলেক্সাদ্রিয়ান লিভার স্যান্ডউইচ এবং কোল্ডড্রিংকস দিতে বললাম। 

অল্প সময়ে লিভার স্যান্ডউইচ তৈরি হয়ে গেলে রাস্তার ওপার থেকে ঠাণ্ডা পানীয়ের বোতল আনিয়ে নিয়ে আমাদের হাতে ধরিয়ে দিলেন স্ট্রিটফুড কার্টের মধ্য বয়সী মালিক কাম বাবুর্চি। পাশেই একটি বন্ধ ভবনের সিঁড়ি দেখিয়ে দিয়ে বললেন, তোমরা বসে পড়ো না কেন। সত্যিই তো! রাস্তায় বসে না খেলে আর স্ট্রিটফুড খাওয়া কেন। আমরা যখন সিঁড়িতে বসে আলেক্সাদ্রিয়ান লিভার স্যান্ডউইচ সাবাড় করছি তখন স্কুল ড্রেস পরা একদল কিশোরী খাবারের গাড়িটা ঘিরে দাঁড়িয়ে গেছে। একে একে খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে কেউ কেউ আমাদের কাছাকাছি এসে বসেও পড়েছে। তারা প্রথমে আমাদের দিকে কৌতূহল নিয়ে তাকাচ্ছিল আর মিট মিট করে হাসছিল। আমি যখন বললাম, তোমরা কি কিছু বলবে? তখন দু তিনজন হাসতে হাসতে এক অন্যজনের গায়ে গড়িয়ে পড়ল। খাবারের দাম মিটিয়ে আমরা যখন আবার হাঁটতে শুরু করেছি, তখন ফুডকার্টের বিশাল ছাতার নিচে ভিড় জমিয়েছে নতুন একদল তরুণ। কে জানে তাদের মূল আকর্ষণ আলেক্সাদ্রিয়ার স্যান্ডুইচ নাকি একঝাঁক রূপবতী কিশোরী! 

রানা ভাই বললেন, এখন এক কাপ কফি হলে ভালো হতো। আমিও ভাবছিলাম, কফি বা চা হলে মন্দ হতো না। একটু সামনে এগোতেই দুই সারি ভবনের মাঝখানে ছোট্ট এক কানাগলিতে দু পাশে চেয়ার টেবিল সাজিয়ে অস্থায়ী চা কফির আয়োজন। দুপাশে উঁচু ভবন ছাড়াও ভেঙে ফেলা একটা বাড়ির খালি জায়গায় ইট পাথরের স্তূপ। সে অংশটা অবশ্য পর্দা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। গোটা  কয়েক টেবিলে কয়েক জোড়া তরুণ-তরুণী কফির কাপ সামনে নিয়ে বসে আছে। বোরকা আবৃত তরুণীদের মুখ খোলা, তারা কথা বলে ফিসফাস করে কিন্তু হাসে উচ্চস্বরে। পথের রেস্তোরায় পথিক নেই কিন্তু চলছে ফেরিওয়ালা নারী পুরুষের বিরতিহীন আসা যাওয়া। মালা, মানিব্যাগ, চিরুনি, রুমাল, টুপিসহ অনেক কিছুই এখানে বসে কিনে ফেলা যায়। এক নারী হাতে কতগুলো তসবিহ ঝুলিয়ে আমাদের সামনে করুণ মুখ করে হাজির হতেই রানা ভাই তসবিহ না কিনেই তার হাতে একটা দশ পাউন্ডের নোট ধরিয়ে দিলেন।  

আমরা যে কফির কাপ সামনে নিয়ে বসেছিলাম, অ্যারাবিয়ান কফি নামের সেই বিস্বাদ কফির তলায় ঘন তলানি জমে, আমার খুব একটা ভালো লাগে না। আমাদের উল্টো দিকের এক টেবিলে বিভিন্ন বয়সের চারজন বসে ডমিনো খেলছেন। বেলা সাড়ে তিনটায় গলিপথের কফিশপে জমিয়ে আড্ডা দেওয়া বোধহয় মিশরীয়দের পক্ষেই সম্ভব। আমি টেবিল থেকে উঠে ডোমিনো খেলায় মগ্ন মানুষদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি, অনুমতি নিয়ে কয়েকটা ছবিও তুলি। এদের একজন আমাদের পরিচয় জানতে চান, কিন্তু বাকিদের খেলায় বিঘ্ন ঘটবে বলে আমি পরিচয় দিয়ে খুব বেশি কথা না বলেই নিজেদের টেবিলে ফিরে আসি। 

ফেরার পথে সাদাত মেট্রো স্টেশনে এবং ট্রেনে ভিড় বেড়েছে। এবারে তিন চারটে স্টেশন পার হবার পরে বসার জায়গা পেলাম। যাত্রীর ভিড় কমে যাবার সঙ্গে সঙ্গেই ফেরওিয়ালার ভিড় বেড়েছে। মাস্কের ফেরিওয়ালা ঘোরাঘুরি করলেও বিক্রি হতে দেখিনি একটাও। অধিকাংশ যাত্রীর মুখে মাস্ক নেই, দুতিনজন তাদের মাস্ক যথারীতি গলায় ঝুলিয়ে রেখেছেন। ট্রেন থেকে নেমে স্টেশনের বাইরে বেরোতেই ফুটপাথ জুড়ে পসরা সাজিয়ে বসা নানা পণ্যের মাঝখানে জুতা সেলাইয়ের দোকানে সৌমকান্তি বৃদ্ধ লোকটিকে চোখে পড়ে। সাদা চুল দাড়ি মিলিয়ে তাকে চর্মকার নয়, দার্শনিক বলে মনে হয়। রানা ভাই জানালেন কয়েক বছর আগেও তাকে ঠিক একই জায়গায় একইভাবে বসে জুতা স্যান্ডেল মেরামত কিংবা পালিশ করতে দেখেছেন। হয়ত আরও বহু বছর দার্শনিক চর্মকার তার কর্ম করে যাবেন। তার দোকানের উল্টোপাশেই একটি বইপত্রের দোকান। হয়ত একেই বলে জুতা সেলাই থেকে চণ্ডিপাঠ। আমাদের দার্শনিক মুচির তেমন পাঠাভ্যাস আছে কিনা কে জানে! 

চলবে...  

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

 

Header Ad

ভারতে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করা হচ্ছে বাংলাদেশি তরুণীদের

প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশি নারীদের দিয়ে যৌন ব্যবসা চালানো একটি চক্রের সন্ধান মিলেছে ভারতে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে এক কিশোরীসহ অন্তত ২৩ তরুণী বাধ্য হয়ে সেখানে এসব কাজ করছেন। ওড়িশার রাজধানী ভুবনেশ্বর থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। রাজ্যটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওড়িশাটিভি রোববার (২৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই তরুণীরা বৃহৎ মানবপাচারের শিকার হয়েছেন। তাদের দৈনিক ২ হাজার রুপি বেতনের কাজের লোভ দেখিয়ে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা শোষণ ও অন্যায়ের শিকার হয়েছেন।

এই যৌনব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকা দালালরা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে খদ্দেরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যখন কোনো খদ্দের আগ্রহ প্রকাশ করেন তখন তাদের বাংলাদেশি তরুণীদের ছবি পাঠানো হয়। সেখান থেকে যে কোনো একজনকে বেঁছে নেয় তারা। এরপর আগেই অর্থ পরিশোধ করতে হয়। সবশেষে ওই খদ্দেরকে হোটেলের ঠিকানা দেওয়া হয় যেখানে নির্দিষ্ট তরুণী অপেক্ষা করেন।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, কোটাক থেকে এক অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীকে উদ্ধারের পর পুরো বিষয়টি সামনে আসে। ওই কিশোরীকে লিংক রোডের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর তদন্ত শুরু হয় কীভাবে বাংলাদেশি তরুণীদের ওড়িশায় নিয়ে আসা হচ্ছে।

পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া এক যৌনকর্মী জানান, নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তিনি এই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। তিনি এখানে আটকা পড়ে গেছেন। উদ্ধারকৃত ওই যৌনকর্মী জানান, পুরো বিষয়টি পরিচালনা করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।

ধারণা করা হচ্ছে, প্রতারণার শিকার এই তরুণীদের কয়েক বছর ধরে আটকে রেখেছে চক্রটি। যারা এরসঙ্গে জড়িত তাদের ধরে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা চলছে।

স্থানীয় যেসব দালাল এই ব্যবসা চালানোয় ভূমিকা রেখেছে তাদের শনাক্ত করতে সক্রিয় অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।

ভুবনেশ্বরের ডিসিপি পিনাক মিশ্রা ওড়িশাটিভিকে বলেছেন, “আমরা টুইন সিটিতে এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রমের ওপর দৃষ্টি রাখছে। আমাদের কাছে এসব বিষয়ে পর্যাপ্ত গোয়েন্দা তথ্য আছে। যারা এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত আছেন তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Header Ad

ব্রাজিলকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট পেল আর্জেন্টিনা

ছবি: সংগৃহীত

কনমেবল সাব-২০ ফুটসাল টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ব্রাজিলকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে আর্জেন্টিনা। পেরুর লিমার ভিলা এল সালভাদর স্পোর্টস সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় দুই দল।

রবিবার (২৪ নভেম্বর) সকালে অনুষ্ঠিত ম্যাচে শুরু থেকেই আর্জেন্টিনা ব্রাজিলকে চাপে রেখে ম্যাচটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।

পেরুর লিমাতে বসেছে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের ১০ দলের ফুটসাল টুর্নামেন্ট। যদিও ব্রাজিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিল। বিপরীতে আর্জেন্টিনা রার্নাসআপ হয়ে। গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচের চারটিতেই জিতেছিল ব্রাজিল। কিন্তু আর্জেন্টিনা জয় পায় দুইটিতে। তবে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ঠিকই জয় তুলে নেয় আলবিসেলেস্তেরা।

আগামীকাল সোমবার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে কলম্বিয়ার মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। কলম্বিয়াও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন প্যারাগুয়েকে একই ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে।

Header Ad

আওয়ামী লীগের ২ সাবেক সংসদ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন

নায়েব আলী জোয়ারদার এবং তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি। ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নায়েব আলী জোয়ারদার ২টি মামলায় ৭ দিনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন। অন্যদিকে ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি ৩টি মামলায় ২০ দিনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন।

রোববার (২৪ নভেম্বর) ঝিনাইদহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. এমরান হোসেন চেীধুরী আগামী ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ জামিন আদেশ দেন।

জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান।

জানা যায়, সাবেক সংসদ সদস্য নায়ের আলী জোয়ারদারকে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদের বাড়ি ও জেলা বিএনপির অফিসে হামলা অগ্নিসংযোগের অভিযোগের মামলায় গত ১২ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার দিন রাতে ঝিনাইদহ শহরের আরপপুরের জামতলা এলাকার বাড়ি থেকে র‍্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে। তারপর থেকেই তিনি জেলে ছিলেন। ঝিনাইদহ-১ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবদুল হাই মৃত্যুবরণ করলে বিনাভোটে নায়েব আলী জোয়ারদার এমপি নির্বাচিত হন।

এ দিকে ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকীকে গত ৬ অক্টোবর সাভারের নবীনগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। ২০১৩ সালে জামায়াত নেতা আব্দুস সালাম হত্যা মামলা, জেলা বিএনপি সভাপতি এম এ মজিদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও জেলা বিএনপি অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে তিনটি পৃথক মামলা রয়েছে।

এ বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান বলেন, মেডিকেল গ্রাউন্ডে আদালত আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্যকে জামিন দিয়েছেন। দীর্ঘদিন তারা শারীরিকভাবে অসুস্থ বলে আসামির আইনজীবী আদালতকে জানান। তারপরও তাদেরকে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে জামিন মঞ্জুর করেছেন।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ভারতে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করা হচ্ছে বাংলাদেশি তরুণীদের
ব্রাজিলকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট পেল আর্জেন্টিনা
আওয়ামী লীগের ২ সাবেক সংসদ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন
পলাশবাড়ীতে যৌথবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র-গুলিসহ যুবক গ্রেফতার
আইপিএল মেগা নিলাম সর্বশেষ: কোন দলে কোন ক্রিকেটার?
রেকর্ড এডিট দাবি, দশ লাখ টাকার চেক নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা
পাকিস্তানে শিয়া-সুন্নি সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮২
হত্যা মামলায় গ্রেফতার ডিসি মশিউর ও এডিসি জুয়েল বরখাস্ত
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে রেকর্ড মৃত্যু, শনাক্ত আরও ১০৭৯
আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার পান্ত
আরও এক মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান
সৌদি আরবে এক সপ্তাহে ২০ হাজার অবৈধ প্রবাসী গ্রেপ্তার
আমাদের নিয়ত সহি, জাতিকে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই: সিইসি
৫ বিসিএস থেকে নিয়োগ পাবেন ১৮ হাজার ১৪৯ জন
শপথ নিলেন নতুন সিইসি ও ৪ নির্বাচন কমিশনার
দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে থানায় জিডি করলেন নওশাবা
আইইউটির ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় পল্লী বিদ্যুতের ৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত
বাংলাদেশ-বেল‌জিয়ামের রাজনৈতিক সংলাপ আজ
রাজধানীতে সিলিন্ডার গ্যাস বিস্ফোরণে শিশুসহ দগ্ধ ৭
জোড়া উইকেট হারিয়ে দিন শেষ করলো বাংলাদেশ