রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭  

কায়রোতে এসে নামার পরদিন থেকে গিজার পিরামিড, সাক্কারার ধ্বংসাবশেষ, ফিলাই দ্বীপ ও আবু সিম্বেলের স্থানান্তরিত প্রত্ম নিদর্শন এবং এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই কোমওম্বো, এদফু, কর্নাক, লুক্সর ও ভ্যালি অফ কিংস অ্যান্ড কুইন্সে হাজার তিনেক বছর আগের ফারাওদের রাজ্যে বিস্তর ঘোরাঘুরি ঘরে সকলেই বোধহয় একটু ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাই রামসেস-নেফারতারি কিংবা ক্লিওপেট্রা- তুতেনখামেন-নেফারতিতির প্রস্তর মূর্তি, পিলার ও দেয়াল, পিরামিড-স্ফিংস এবং অন্ধকার কবরের দেয়ালে হায়রোগ্লিফিক লিপিতে লেখা ইতিহাসের বাইরে বেরোবার জন্যে হাঁসফাঁস করছিলেন। সেই কারণে দেখা গেল ভ্যালি অফ কুইন্স থেকে লুক্সর ফেরার পথে কলোসি অফ মেমননে কিছু সময়ের জন্যেও কেউ দাঁড়াতে রাজি নয়। অবশ্য কনভেয়ার বেল্ট টুরিস্টদের যেমন করে ট্যুর গাইডেরা কুতুব মিনার দেখিয়ে দেয় তেমনি করে চলতে থাকা গাড়িতে বসেই মোস্তফা আমাদের কলোসি অফ মেমনন দেখিয়ে দিল।
 ফারাও তৃতীয় আমেনহোটপের দুটি বিশাল প্রস্তর মূর্তি দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীন থিবস নগরীর সবচেয়ে বড় সমাধি মন্দিরের সামনে। তবে সমাধি মন্দির বলতে এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। খ্রিস্টপূর্ব ১৩৫০ অব্দ অর্থাৎ এখন থেকে তিন হাজার তিনশ বাহাত্তর বছর আগের নির্মিত মহামহিম যে প্রস্তরীভূত হয়ে এখনো সশরীরে দণ্ডায়মান থেকে পর্যটকদের কৌতূহল মিটিয়ে মিশরের সরকারকে রাজস্বের যোগান দিয়ে যাচ্ছেন সে জন্যেই তৃতীয় আমেনহোটপ এবং তাঁর সময়ের ভাস্কর্য শিল্পীদের ধন্যবাদ দেয়া যায়। অন্য সব বিবেচনা বাদ দিলেও এর বিশালত্বই রীতিমতো বিস্ময় জাগায়। 

কলোসি অফ মেমনন

কলোসি অফ মেমনন থেকে লুক্সর পৌঁছাতে চল্লিশ মিনিটের বেশি সময় লাগার কথা নয়। সম্ভবত সেই কারণে মোস্তফা তার সর্বশেষ বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে আর দেরি করেনি। দুটি সাদা খামের একটিতে তার নিজের এবং অন্যটিতে গাড়িচালকের নাম লিখে পেছনের দিকে পাঠিয়ে দিয়ে বললো, ‘তোমাদের যার যেমন ইচ্ছে টিপস-এই খামের ভেতরে ভরে দিতে পারো।’ রানা ভাই বললেন, ‘ইচ্ছে না করলে না দিলেও চলবে?’  মোস্তফার উত্তর, ‘আমার সার্ভিস যদি যথেষ্ট ভালো মনে না হয়ে থাকে বা টুরিস্ট গাইড হিসাবে আমার যদি কোনো সমস্যা থাকে তুমি বলতে পারো এবং কোনো টিপস নাও দিতে পারো।’ রানা ভাই শুরু থেকেই মোস্তফার উপরে খুব একাট খুশি ছিলেন না, তারপরেও অবাক হয়ে দেখলাম অংকের শিক্ষক কাম গাইড ওসামাকে বাদ দিলে তিনি মোস্তফাকেই টিপস দিয়েছেন সবচেয়ে বেশি। 

লুক্সরের পথে ফলের দোকান

ফেরার পথে রাস্তার ডান পাশে ধীরে ধীরে ধূসর পাহাড় এবং উঁচু নিচু হলদে বালুময় ঊসর মাটি সবুজে রূপান্তরিত হতে থাকে। কিন্তু এবারে খেজুর গাছের সারি, আখখেত এবং অন্যান্য ফসলের সবুজ ক্ষেত ছাড়াও মাইলের পর মাইল ফুটে আছে লাল গোলাপি হলদে সাদা নানা রঙের ফুল। অবশ্য একটা প্রায় পরিত্যক্ত ভাঙাচোরা রেল লাইন পেরিয়ে শহরের ঢুকবার পরেই ফলের সমারোহ উধাও হয়ে গেল, তার পরিবর্তে দেখা দিল রাস্তার পাশে সাজানো ফলের দোকান, মসজিদ এবং কোথাও কোথাও বসত বাড়ি। লুক্সরে নীল নদের জাহাজ ঘাট এগিয়ে আসতে থাকলে আমাদের প্রথম চিন্তা হলো টুইয়া থেকে লটবহর নামিয়ে নিয়ে শহরের পান্থ নিবাসে যাবার ব্যবস্থা। মোস্তফাকে বলতেই সে সানন্দে বলে উঠলো, ‘তোমাদের কোনো চিন্তা নাই। আমরাই পৌঁছে দেবো।’ 

 লুক্সর আদালত ভবন

সৌরভের দেয়া নির্দেশনার পাতা উল্টিয়ে দেখলাম ঘাট থেকে হোটেল একশ থেকে দেড়শ ঈজিপ্টশিয়ান পাউন্ড। মোস্তফা শুরুতেই একশ পাউন্ড বলে ফেলায় আর দর কষাকষির ঝামেলায় যেতে হলো না। এই বাড়তি একশ পাউন্ড যে ড্রাইভার এবং গাইডের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে গাড়ির মালিকের হাতে এক পেনিও পৌছোব না তা নিশ্চিত করে বলা যায়। যাই হোক আমাদের গন্তব্যে পৌঁছানোটাই আসল কথা। সাথে বাড়তি সুবিধা হলো গাড়ি থেকে নামতে হলো না। আমাদের তিনজনের বোঝা দুজনে বয়ে নিয়ে গাড়িতে তুলে দিলে চারদিন তিনরাতে টুইয়া জাহাজকে বিদায় জানিয়ে চললাম লুক্সর শহরের পথে। 

রিসর্টের সীমানার পরে নীল নদ

সাত তোরণের থিবস নগরী যে আসলেই আধুনিক শহরে পরিণত হয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। নিশ্চিত করেই বলা যায়, আমার দেখা কায়রো, আসোয়ান, আলেক্সান্দ্রিয়া এবং ছোট ছোট আরো দুই একটি শহরের মধ্যে লুক্সরই সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন, সাজানো গোছানো। বিশাল বড় এলাকা নিয়ে বস্তি, ভাঙাচোরা দালান কোঠা ও ধূলি ধূসর কায়রো কিংবা পলেস্তারা খসা পুরোনো বসত বাড়িতে পরিপূর্ণ আসোয়ান এবং পরিচ্ছন্ন কিন্তু অপরিসর সমুদ্র শহর আলেক্সান্দ্রিয়ার সাথে তুলনা করলে নীলে তীরে গড়ে ওঠা লুক্সর অতীতের মতো এখনো তিলোত্তমা। বিশেষ করে আলোকোজ্জ্বল এবং জাকজমকে ভরা রাতের লুক্সর পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় শহর। এই শহরের মূল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পর্যটন কেন্দ্রীক হলেও হোটেল রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি বেড়েছে ব্যাংক-বীমা, কিছু শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। চলার পথেই আমাদের চোখে পড়ে আদালত ভবন, লুক্সর  বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অফ আর্টস ভবনসহ বেশ কিছু আধুনিক স্থাপনা।        

 লুক্সরের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের দপ্তর

সৌরভ আমাদের জন্য লুক্সর শহরের প্রান্তে ঠিক নীল নদের উপরে যে হোটেল বুক করে রেখেছিল সেখানে ঢুকে পড়ার পরেই মনে হলো গাছপালায় ঘেরা নির্জন এলাকায় যেখানে আমরা রাত্রি যাপন করতে যাচ্ছি সেটি শহরের ব্যস্ত এলাকায় প্রচলিত ধারণার কোনো হোটেল নয়। সাদামাটা বড় তোরণে লেখা নাম ফলক ‘স্টিগেন বার্গার রিসর্ট’। চত্বরে বিশাল উদ্যান, সুইমিংপুল, স্পা-জিম-ফিটনেস সেন্টার মিলিয়ে পাঁচতারা মর্যাদা সম্পন্ন একটি রিসর্টে রাত কাটাবার ব্যয় এতো কম কেন! ভাবলাম কোনো ভুল হচ্ছে না তো! চেক-ইন করার পরে ক্রেডিট কার্ড থেকে বাড়তি কত টাকা কেটে নেয় সেই আশঙ্কায় ছিলাম। কিন্তু লবিতে বসে ওয়েলকাম ড্রিংক শেষ হতে না হতেই চেক-ইন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়ে গেল। হতে পারে করোনো মহামারি থেকে উত্তরণের পরে পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করতে সকলেই একটু ছাড় দিচ্ছে। লিফটে তিনতলায় নিজেদের ঘরে পৌঁছে জানালার পর্দা টেনে দিতেই চোখে পড়ে রিসর্টের সীমানার ওপারে বয়ে যাচ্ছে নীল। অবশ্য এই নদী  এতোটাই শান্ত যে দক্ষিণ থেকে উত্তরে প্রবহমান কোনো স্রোতধারা চোখেই পড়ে না, ফলে নদী আসলে বয়ে চলেছে বলে মনে হয় না । দুই একটা ফেলুকা পাল তুলে প্রায় গতিহীন ভেসে যাচ্ছে। ওপারে সবুজ গাছপালা এবং আধুনিক বাড়ির ওপারে রিসর্টের সীমানার ঠিক নিচেই ফেলুকা ছাড়াও গোটা কয়েক সাজানো গোছানো ছোট ছোট নৌযান অপেক্ষায় আছে, পর্যটক পেলেই ভেসে যাবে নীলের নীল জলে।  

 

ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে বেশিক্ষণ বাইরের দৃশ্য দেখার উপায় ছিল না। পেটে টান পড়লে বুঝতে বাকি থাকে না বেলা তিনটা বেজে পার। রানা ভাই খাদ্য অনুসন্ধানে আগেই নিচে নেমে গেছেন। আমরা এলে জানালেন এখানে লাঞ্চ আওয়ার শেষ, তবে রিসর্টের অঙ্গনেই একটাে রেস্তোঁরা আছে সেখানে কিছু পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু কপাল খারাপ হলে যা হয়। স্ন্যাকস জাতীয় খাবার থাকলেও সেখানেও শেফ নেই। অতএব বাইরে কোনো স্ট্রিটফুড বা পাড়ার ছোটখাট রেস্টুরেন্ট পাওয়া যায় কিনা দেখতে বের হলাম। গেট পেরিয়ে রিসর্টের বাইরে বেরোতেই হাতের ডান দিকে একটা কোক ফান্টা বিস্কিট চানাচুরের দোকানের মতো গ্রোসারিশপ পাওয়া গেল। ব্রেড বাটার থাকলে এখানেই যাত্রা বিরতি দিয়ে কিছু কিনে ঘরে ফেরা যেতো। কিন্তু হা হোতস্মি! এ দোকানের ব্রেডও শেষ গেছে আমরা আসার আগেই। তবে তিনজন ক্ষুধার্ত ভিনদেশিকে দেখে দোকানী আমাদেরকে গলিপথ ধরে সামনে কিছুটা এগিয়ে যেতে বললেন। ঝকঝকে পাঁচতারা হোটেলের বাইরেই অপরিসর নোংরা গলিপথ ধরে খানিক দূর এগোতে সত্যিই একটা রেস্টুরেন্ট চোখে পড়লো। আমাদের হাতিরপুল বাজার বা সেন্ট্রাল রোডের মাথায় যেমন রেস্টুরেন্ট দেখা যায় তেমনি এক রেস্টুরেন্টের বাইরে হাড়ি পাতিল মাজা ধোয়ার কাজ চলছে। বিদেশি দেখে রেস্তোাঁর এক তরুণ কর্মী উৎসাহের সাথে এগিয়ে আসায় বেশ ভরসা পেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের কথা শুনে সে দুঃখ প্রকাশ করে বললো, ‘নাইট কাম, গিভ গুড ফুড!’ বুঝলাম সে নৈশ্যভোজে ভালো খাবারের ব্যবস্থা করতে পারবে, তবে আপাতত কিছু করার নেই। এভাবে প্রতিবেলার খাবার শেষ করে বসে থাকলে এরা ব্যবসা চালাবে কেমন করে! আমাদের রেস্টুরেন্টে নাকি যতো দিনের দোকান ততোদিনের ডাল পাওয়া যায়! 

 নীল নদের ওপারে সূর্যাস্ত

কয়েকদিন জাহাজে সময় মতো বুফে ব্রেকফাস্ট-লাঞ্চ-ডিনারে চর্ব চোষ্য লেহ্য পেয়, কোনো কিছুরই সদ্ব্যবহার করতে ছাড়িনি। জলযান থেকে বাস্তুচ্যুত হবার প্রথম দিনেই খাদ্য পানীয়ের অভাবে প্রাণ প্রায় ওঠাগত। আর সামনে এগোবার শক্তি সাহস কোনোটাই ছিল না বলে আবার আমাদের আস্তানায় ফিরে এলাম। বেলা চারটে বেজে যাওয়ায় রেস্তোঁরার কাজ শুরু হবার পরে তিনজনের জন্য স্যান্ডুইচের অর্ডার দেয়া হলো। রানা ভাই জিজ্ঞেস করলেন, ‘কতোক্ষণ লাগবে?’ উত্তর এলো, ‘টেন টু ফিফটিন মিনিটস স্যার।’ এই ফিফটিন মিনিটস যখন থার্টি মিনিটসে দাঁড়ালো তখন রানা ভাই রাগ করে বললেন, ‘এবারে চলেন ঘরে চলে যাই, শুয়ে থাকি। ডিনারের সময় হলে নেমে আসা যাবে।’ রানা ভাইয়ের উত্তেজনা প্রশমনের জন্য আমি ইচ্ছে করেই একটা গল্প শুরু করলাম। গল্প হলেও গল্পটা অনেক বছর আগের এক ঘটনা।


একটা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে যোগ দিতে কেরালায় এসেছি। ত্রিবান্দ্রম তখনও নাম বদলে দুঃসাধ্য উচ্চারণের নতুন নগরীতে পরিণত হয়নি। উৎসবের দ্বিতীয় সপ্তাহে এক সন্ধ্যায় একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে খেতে গেছি। সঙ্গে এফডিসির পরিচালক সাজ্জাদ জহির এবং ভারতীয় বন্ধু চলচ্চিত্র পরিচালক সুরজিৎ ধর। যতোদূর মনে পড়ে চিকেন ফ্রাইড রাইস এবং একটা ভেজিটেবল ছাড়াও বিফের একটা আইটেম ছিল। যাঁরা জানেন না, তাঁদের  জন্য বলে রাখা ভালো, কেরালার সকল নন-ভেজ রেস্তোঁরায় সে সময় বিফ সহজলভ্য ছিল। পরিবর্তিত রাজনৈতিক বাস্তবতায় সেই কেরালা এখন কোন পথে হাঁটছে জানি না। আমরা খাবারের অর্ডার দিয়ে বসে আছি তা আছিই। পনের কুড়ি পঁচিশ মিনিটেও খাবার আসে না। দুবার তিনবার জিজ্ঞেস করা হয়ে গেছে। প্রতিবারই উত্তর আসে ফাইভ মিনিটস স্যার! পঁয়তাল্লিশ মিনিটের সময় সুরজিৎ সিদ্ধান্ত দিয়ে দিল, ‘যে মুহূর্তে কিচেনের দরজা দিয়ে খাবারের ট্রে হাতে পরিবেশক ভেতরে আসবে সেই মুহূর্তে আমরা সামনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যাবো।’ আরো দশ মিনিট অর্থাৎ পঞ্চান্ন মিনিট পরে যখন সত্যিই খাবারের দেখা মিলল ঠিক সেই সময় আমরা সামনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। পেছন থেকে শুনতে পাচ্ছিলাম, ‘ইওর ফুড ইজ অন দ্য টেবল স্যার!’  


পঁয়ত্রিশ মিনিটের সময় আমার গল্প শেষ হতে না হতেই তিনটি বিশাল আকৃতির স্যান্ডুইচ এসে হাজির হলো। আমরা এবারে সত্যিই নিজেদের ঘরে চলে গেলাম, তবে যাবার সময় স্যান্ডুইচগুলো সঙ্গে নিতে ভুলিনি। প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত হলেও দুজনের দুটি স্যান্ডুইচ শেষ করা সম্ভব হলো না। প্রচণ্ড ক্লান্তির কারণে কিছুক্ষণের জন্য ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম ভাঙলে ব্যলকনিতে দাঁড়িয়ে মোহিত হয়ে দেখলাম নীল নদের ওপারে অসাধারণ সূর্যাস্ত!  

 

 

চলবে...

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

   

Header Ad
Header Ad

হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের হাকিমপুরে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (ওএমএস) সাড়ে ৫ মেট্রিকটন চাল ও ১০৪টি খালি চালের বস্তা উদ্ধার করা হয়েছে। এসব চাল একটি ধান ভাঙ্গা মিলের গুদামে মজুদ করা ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে ২৬ এপ্রিল, শনিবার রাতে, যখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত রায় অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার করেন।

গুদামটির মালিক আসাদুজ্জামান আসাদ, যিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্য, তার বিরুদ্ধে চাল মজুদ করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, আলীহাট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের কাছে তার মিলের গুদামে এসব চাল মজুদ ছিল। অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৫ মেট্রিকটন চাল জব্দ করা হয়, তবে অভিযানের সময় মিল মালিক এবং কোনো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় আসাদকে গ্রেপ্তার করা না গেলেও তাকে আসামী করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, চাল মজুদ করা বেআইনি এবং এটি অপরাধ। উদ্ধারকৃত চাল উপজেলা খাদ্যগুদামে পাঠানো হয়েছে এবং পরবর্তীতে নিয়মিত মামলায় তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা খালেদা খাতুন জানিয়েছেন, মামলাটি রবিবার বিকালে থানায় করা হবে, যেখানে আসাদুজ্জামান আসাদকে প্রধান আসামী হিসেবে দায়ের করা হবে।

এদিকে, আসাদ আগেও বৈষম্যবিরোধী দুই ছাত্র হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

ক্যামেরার লেন্স চুরির অভিযোগ প্রমাণের ভিত্তিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত দুই শিক্ষার্থী হলেন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের আনাস আহমেদ ও শামীম ভূঁইয়া।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল হাকিম। 

আনাস আহমেদকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার ও আবাসিক হলের সীট বাতিল এবং শামীম ভুঁইয়াকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া তার ব্যাপারে পরিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে আগামীকাল সিন্ডিকেটে আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল হাকিম বলেন, "গণমাধ্যমে আনাসকে নিয়ে রিপোর্ট হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হয়েছে। এছাড়া তার চুরির সত্যতা পাওয়া গেছে। ফলে তাকে এক বছরের বহিষ্কার এবং হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর শামীমের ব্যাপারে শৃঙ্খলা বোর্ড বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে। আগামীকাল বিষয়টি সিন্ডিকেটে আলোচনা হবে।'

এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, 'শৃঙ্খলা বোর্ড দুইটি সিদ্ধান্তের সুপারিশ করেছে। এখনো সাইন হয়নি পেপারে। আগামীকাল সিন্ডিকেটে ফাইনাল হবে বিষয়টি।'

উল্লেখ্য, এর আগে কুমিল্লার একটি অভিজাত হোটেল থেকে ক্যামেরার লেন্স চুরি করে আনাস এবং শামীম। সিসি ফোটেজ বিশ্লেষণ করে এর সত্যতাও পাওয়া যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৫ এপ্রিল রাতে বেশ কয়েকজন বহিরাগত এসে ক্যাম্পাসে আনাসকে মারধরও করে।

Header Ad
Header Ad

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

অধিকৃত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা বেড়েই চলছে। তবে এই ইস্যুতে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে চলমান উত্তেজনা প্রশমনের পক্ষে বাংলাদেশ। দুটি বন্ধুপ্রতিম দেশ চাইলে বাংলাদেশ মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে তার আগে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা।

রোববার (২৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান স্পষ্ট, আমরা শান্তি চাই দক্ষিণ এশিয়ায়। আমরা জানি, বিভিন্ন ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতময় সম্পর্ক আছে। কিন্তু আমরা চাই না এখানে কোনো বড় কোনো সংঘাত সৃষ্টি হোক, যাতে এটা এ অঞ্চলের মানুষের কোনো বিপদের কারণ না হয়ে উঠতে পারে। ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক বিদ্যমান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা চাইব তারা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাদের সমস্যার সমাধান করে ফেলুক। আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি, দু’একটি দেশের পক্ষ থেকে মধ্যস্থতার প্রস্তাব এসেছে। যেভাবে হোক মধ্যস্থতার মাধ্যমে হোক, দ্বিপক্ষীয় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে হোক, আমরা চাই উত্তেজনা প্রশমিত হোক এবং শান্তি বজায় থাকুক।

ভারত-পাকিস্তান দুটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইরান ও সৌদি আরব ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সমস্যা সমাধানে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশও মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতে পারি কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমি মনে করি না এই মুহূর্তে আমাদের মধ্যস্থতা করার মতো কোনো ভূমিকা নেওয়া উচিত। আমরা চাইব, তারা নিজেরা নিজেরা সমস্যার সমাধান করুক। তারা যদি আমাদের সহায়তা চায়, আপনারা মধ্যস্থতা করুন তাহলে হয়ত আমরা যাব। কিন্তু তার আগে আমরা আগবাড়িয়ে কিছু করতে চাই না।

ভারত-পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনার কোনো প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে কি না– জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আধুনিক জামানায় সবকিছু সবাইকে কমবেশি প্রভাবিত করে। কাজেই কোনো কিছু আমাদের একটুও প্রভাবিত করবে না, সেটা আমি বলি না। তাদের যেই সংঘাত সেটা আমাদের সরাসরি প্রভাবিত করার কিছু নাই। কারণ, আমরা এতে কোনো পক্ষ নিইনি। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যেকোনো সংঘাত বা সম্পর্ক খারাপ হলে প্রভাব পড়ে।

‘তবে তাদের কাছ থেকে আমাদের যদি কোনো স্বার্থ থাকে আমদানি করার, আমরা করব।’, যোগ করেন তৌহিদ হোসেন।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্নে উপদেষ্টা জানান, এটা হয়ত নিরাপত্তা নিয়ে যারা সরাসরি কাজ করেন তারা বলতে পারবেন। এই মুহূর্তে আমার কাছে এরকম কোনো তথ্য নেই।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু
নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা চায় জামায়াত
কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক এমপি জাফর আলম গ্রেপ্তার
ভারতের দিকে তাক করা পাকিস্তানের ১৩০ পারমাণবিক বোমা
চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় তাওহিদ হৃদয়, বাড়ছে নাটকের রঙ
উত্তেজনার মধ্যেই যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল ভারত
ছেলে খুঁজে পাচ্ছি না, একজন জীবনসঙ্গী দরকার: মিলা
টাঙ্গাইলে শ্রমিকদলের নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধে ভারতের ১.১৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির শঙ্কা
দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা
রাজনীতির চেয়ারে ঘুণপোকা ধরেছে, এটি সংস্কার করা প্রয়োজন: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
উত্তাল ইউআইইউ ক্যাম্পাস, ভিসি-ডিনসহ ১১ কর্মকর্তার পদত্যাগ
এপ্রিলেই দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, সঙ্গে থাকবেন দুই পুত্রবধূ
বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে বিশাল নিয়োগ, পদ ৬০৮
ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় ফ্যাসিবাদী শাসক পালাতে বাধ্য হয়েছে: আলী রীয়াজ
মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত