শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

অঞ্জন ট্রানজিষ্টার হাতে নিয়ে নদীর ধারে থেকে ফিরে এসে গাছতলার নিচে বসে যায়। ওর বাবা আসেনা। দাঁড়িয়ে থাকে সবার সঙ্গে। অঞ্জন বিবিসি শোনার জন্য নব ঘোরায়। ভেসে আসে বিবিসির বাংলা বিভাগ থেকে কন্ঠস্বর। আর্জেন্টিনার লেখক ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গড়ে তোলে। লেখক-বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে মিছিল করে। বাংলাদেশের শরণার্থীদের প্রতি সহযোগিতার জন্য আর্জেন্টাইন সরকারকে স্মারকলিপি প্রদান করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী লুইস মারিয়া ডি পাবলো পারডোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য সাহায্যে পাঠানোর দাবি জানান। ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে ছিলেন খ্যাতিমান সাহিত্যিকরা।


সংবাদ শুনে বুক ভরে যায় অঞ্জনের। ভাবে, এভাবে বিশ্বের সব দেশ যদি সহযোগিতার হাত না বাড়ায় তবে শরণার্থীদের কষ্টের সীমা থাকবে না। ভারতের সহযোগিতায় বেঁচে থাকার প্রেরণা শক্ত হয়ে আছে। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ওর নিজের একটি অসাধারণ দিকদর্শন হবে। বাবার ডান হাত চেপে ধরে বলে, বাবা, আমি ঠিক করেছি যুদ্ধ করব।

-তুইতো ডাক্তাররে বাবা। তুই মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা শুশ্রুষা কর। এটাওতো যুদ্ধেরই একদিক।
-না বাবা, আমি এভাবে বসে থাকবনা। আমি যুদ্ধ করব।
-না রে বাবা, তুই যুদ্ধে যাবিনা। তুই যুদ্ধে গেলে আমি মরে যাব।
-কি যে বলেন না আপনি। আপনিতো জানেন আমাদের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ চলছে।

শব্দ করে কেঁদে ওঠে অঞ্জনের বাবা। কাঁদতে কাঁদতে দুহাতে চোখ চেপে রাখে। পানি গড়ায় গালের ওপর।
অঞ্জন বাবাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলে, কাঁদবেন না বাবা। আশেপাশের সবাই এখানে এসে জড়ো হবে। ওরা আপনাকে অন্যরকম মানুষ ভাবুক এটা আমি চাইনা। আপনি বিবিসিতে শুনলেননা বিদেশী একজন সাহিত্যিক বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য ভাবনাচিন্তা করে।

ছেলের বুক থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয় বাবা। এভাবে নিজেকে শক্তিহীন মানুষ ভাবতে চায়না। মাথা সোজা করে সামনে তাকালে পুরো যশোর রোডের এমাথা ওমাথা দেখার জন্য মাথা ঘোরায়। তারপর ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে বলে, ভারতের এই জায়গা আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসে উল্লেখ থাকবে।


-শুধু এ জায়গা কেন বাবা? যত জায়গায় শরণার্থী আছে, যেখানে মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে সেসব জায়গা এবং আমাদের মা ইন্দিরা গান্ধী আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসকে ধারণ করেছেন। আজ থেকে আমি ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোকেও মনে রাখবো। তিনি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধকে বিজয়ী করার জন্য নিজের দেশের সরকারের কাছে আবেদন করেছেন। নিজের দেশের জ্ঞানী-গুণী মানুষদের জড়ো করেছেন আমাদের স্বাধীনতার লাভের পক্ষে।

অঞ্জন কথা শেষ করলে কথা বলেনা ওর বাবা। বুকের ভেতরে গুমগুম শব্দ তাকে ম্রিয়মান করে রাখে। দেশে যুদ্ধ করতে গলে যদি শহীদ হয়। ভাবনার জায়গা নিঃশেষ হয়ে যায়। বুকের ভেতর দম আটকে থাকে। পরক্ষণে সুবাতাস বইতে থাকে বুকের ভেতর। ছেলে স্বাধীনতার জন্য প্রাণদানকারী মানুষ হবে। দেশ-জাতি ওকে স্মরণ ক০রবে। তাহলে কেন যুদ্ধ করবেনা? যুদ্ধ না করলে স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ হবে কিভাবে? কথাবিহীনভাবে নিজেকে ধমকায়। মনে মনে নিজেকে বলে, আমারওতো যুদ্ধ করা দরকার। শুধু শরণার্থী মানুষ হয়ে বেঁচে থাকা কি দেশের জন্য প্রেম? ধমক দিয়ে নিজের বোধকে চাঙ্গা করে। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠে। ভাবে, শরণার্থী হয়ে বেঁচে থাকা একটা দিক, স্বাধীনতার জন্য জীবন দেয়া আর একটা দিক। সবকিছু মেনে নিয়ে বেঁচে থাকার সত্যকে তুমুল করে তুলতে হবে। স্বাধীনতা লাভ সহজ কথা নয়। হঠাৎ মনে হয়, পাকিস্তানের কারাগারে বঙ্গবন্ধু বেঁচে আছেন কি? বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ একসঙ্গে বলতে হবে। নিজের বুকের ভেতরের প্রতিক্রিয়ায় উদ্ভাসিত হয় চেহারা।

অঞ্জন বাবার দিকে তাকিয়ে বলে, বাবা কি ভাবছেন?

-ভাবছি, স্বাধীন দেশ মানে বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ। ভাবছি, তিনি কি বেঁচে আছেন?
-ঠিক বলেছেন। আমাদেরকে এই ভাবনায় ডুবে থাকতে হবে বাবা। আপনি খুবই সুন্দরভাবে ভেবেছেন।
তখন দুটো ছেলেমেয়ে কাঁদতে কাঁদতে হাঁটে। অঞ্জন উঠে গিয়ে কাছে নিয়ে আসে ওদের। জিজ্ঞেস করে, তোরা কাঁদছিস কেন? কি হয়েছে?

ছেলেটি বলে, আমরা শুধু নুন দিয়ে ভাত খেয়েছি সেজন্য কাঁদছি। মা কোনো তরকারি রাঁধতে পারেনি।
মেয়েটি বলে, কালকে আমরা ভাত খেতে পারবনা। আমাদের কাছে চাল নাই। আমার মাও কাঁদছে।
এই কথা বলে দুজনে আবার হাউমাউ করে কাঁদে। অঞ্জন ওদের মাথায় হাত রেখে বলে, কাঁদিসনা সোনারা। ভাত খেয়ে পেট ভরেছে?

-হ্যাঁ, ভরেছে। এখন আর খিদা নাই।
-তাহলে আর তোরা কাঁদবিনা।
দুজনে একসঙ্গে বলে, কাঁদব, কাঁদব। কালকে তো কিছুই খাওয়া হবেনা।
-আমি তোদের জন্য চাল যোগাড় করার চেষ্টা করব। দেখি পাই কিনা। যা, তাঁবুতে যা।
-না, তাঁবুতে যাবনা। গাছের নিচে বসে থাকি। এখানে বসে থাকতে আমাদের খুব ভালোলাগে।
-তোদের নাম কি?
-আমার না হাশেম। আমি ফাতেমা।

দুজনে একটুখানি দূরে গিয়ে ঘাসের ওপর বসে পড়ে। তাকিয়ে থাকে সামনে। দেখতে পায় ওদের বয়সী তিনজন কাঁদতে কাঁদতে হাঁটছে। কখনো কাশতে কাশতে আকাশের দিকে তাকায়। অঞ্জন উঠে গিয়ে ওদের হাত ধরে টেনে এনে ওদের কাছে বসায়।
-কাঁদছিস কেন তোরা?
-অল্প ভাত খেয়েছি। পেট ভরেনি। আবার খিদা পেয়েছে। মায়ের কাছে গেলে মাতো কিছু খেতে দিতে পারবেনা।
-আয় বস এখানে।
-আমরা ওদের কাছে গিয়ে বসি।
তিনজনে এগিয়ে যায় হাশেম আর ফাতেমার দিকে। কাছে গিয়ে বসে পড়ে।
হাশেম বলে, দুলালরে কাঁদছিস কেন?
-খিদে পেয়েছে।
-আমরাও নুন দিয়ে ভাত খাওয়ার জন্য কেঁদেছিলাম। আর কাঁদবনা।
দুলাল বলে, আমরাও আর কাঁদবনা। তোদের কি মনে হয় রে বেলাল আর লাকী?
-আমরাও আর কাঁদবনা।
দুজনে দুহাতে চোখের পানি মোছে।
-ঠিক বলেছিস তোরা। হাশেম, চল আমরা রাস্তায় খেলি।
-কি খেলব?
-লুকোচুরি।
-চল, ভালোই হবে।

পাঁচজন দৌড় দিয়ে সামনে এগিয়ে যায়। অঞ্জন তাকিয়ে থাকে। নিজের শৈশবের কথা মনে হয়। এমন দীর্ঘ রাস্তাতো ওর শৈশবে ও দেখেনি। শহরের জীবনে রাস্তা মানে গাড়ি-রিকশা-লোকজনের হাঁটাহাঁটি। শিশুরা ওখানে কোনো ঠাঁই পেতনা। শিশুদের জন্য খেলার মাঠ ছিল। সেই মাঠে অনেকদিন একা একা দৌড়াদৌড়ি করেছে। সবুজ ঘাসের ওপর দৌড়াতে ওর খুব ভালোলাগত। মনে হতো এমন সবুজ রঙের নরম ঘাস দিয়ে জীবন সাজাবে। নিজের জীবনের চারদিকে এমন ঘাস লাগাবে। কিন্তু কিভাবে লাগাবে? পড়ালেখা দিয়ে। ওর পড়ালেখা হবে ওর জীবনের সবুজ ঘাস। অঞ্জন এমন ভাবনা নিজের বোধের জায়গায় রেখেছিল। কিন্তু বেঁচে থাকার এই পর্যন্ত সবুজ ঘাসের চিন্তা ও মাথায় তেমনভাবে থাকেনি। এখন ছেলেমেয়েদের দৌড়াতে দেখে সবুজ ঘাসের ভাবনা মাথায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এসব ভাবনার মাঝে দেখতে পায় ক্যামেরাম্যান রঘু রাই আসছে। কোথাও কোথাও দাঁড়িয়ে ছবি তুলছে। ওর তোলা ছবি দেখে বিস্মিত হয় অঞ্জন। এত নিখুঁত ছবি একটি সময়কে ধারণ করে ইতিহাসের দিকচিহ্ন হবে। মাথায় পোঁটলা-পুটলি নিয়ে স্রোতের মতো হেঁটে আসছে মানুষ। ওদের পেছনে মৃত্যুর তাড়া, সামনে শরণার্থী শিবিরের কষ্টকর জীবন। সবকিছু ছাপিয়ে স্বাধীনতার স্বপ্ন। নিজেদেরকে মুক্তিযোদ্ধার প্রেরণায় ধারণ করার মানসিক ভরসা। রঘু রাইয়ের ছবি দেখে নিজের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ইতিহাস সংরক্ষিত হচ্ছে, এই চেতনায় অঞ্জন খুব অনুপ্রাণিত হয়। রঘু রাইকে আসতে দেখে উঠে দাঁড়ায়। কাছে এলে জিজ্ঞেস করে, কেমন আছেন?

-ভালো। একটা অন্যরকম ছবি তুলেছি। তোমাকে দেখাব।

রঘু রাই ক্যামেরা থেকে ছবি বের করে। ছবি দেখে চেঁচিয়ে ওঠে অঞ্জন, ওহ দারুণ ছবি।

 

চলবে..

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

 

 

Header Ad
Header Ad

২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো

লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত

কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই প্রশ্ন উঠছে—লিওনেল মেসি কি খেলবেন ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে? বারবারই আশাব্যঞ্জক ইঙ্গিত দিয়েছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। এবারও তার কথায় সেই সম্ভাবনার ইঙ্গিত মিলেছে।

সম্প্রতি ‘সিম্পিলিমেন্টে ফুটবল’ নামক এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, তিনি ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবছেন এবং দলে থাকতে চান। তবে সিদ্ধান্ত নেবেন নিজের শারীরিক ও মানসিক ফিটনেস বিবেচনা করে।

“নিজের প্রতি সৎ থাকতে হবে আমাকে। আমি যদি দেখি যে বিশ্বকাপে খেলার মতো ফিট আছি, দলকে সাহায্য করতে পারব—তবেই সিদ্ধান্ত নেব। আমি কোনোভাবেই দলের বোঝা হতে চাই না।” — বললেন মেসি।

আগামী জুনে ৩৮ বছরে পা রাখবেন তিনি, আর ২০২৬ বিশ্বকাপে বয়স হবে ৩৯। এমন বয়সে বিশ্বকাপ খেলাটা সহজ নয়। তাই মেসি বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে যাচাই করে এগোচ্ছেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি ফিরেছেন ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালের কথায়ও, যেখানে আর্জেন্টিনা হেরে গিয়েছিল জার্মানির কাছে। এ প্রসঙ্গে কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে নিজের একটি তুলনা টেনেছেন তিনি।

“এমবাপ্পে ২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালে চার গোল করেও জিততে পারেনি। এটা অনেকটা আমার ২০১৪ সালের অনুভূতির মতো। যদিও তার কাছে ২০১৮ সালের একটি বিশ্বকাপ শিরোপা আছে, সেটা একটা সান্ত্বনা। কিন্তু ওই হার আমার জন্য মানসিকভাবে খুবই কষ্টদায়ক ছিল। এখনো ভাবলে মনে হয়, আমারও দুটি বিশ্বকাপ থাকতে পারত।”

তবে কাতারে বিশ্বকাপ জয়ের পর মেসি নিজেকে পরিপূর্ণ মনে করছেন। তিনি বলেন, “আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। ফুটবলে যা কিছু অর্জন করা সম্ভব, আমি তা পেয়েছি। বিশ্বকাপটাই শুধু ছিল না, সেটাও এখন আছে। ঈশ্বরের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ—তিনি আমাকে সব দিয়েছেন।”

Header Ad
Header Ad

পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গে সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশের উদ্বেগ প্রকাশের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ মন্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে মন্তব্য এসেছে, তা ভিত্তিহীন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যে নিপীড়ন চলে আসছে, তার প্রতি ভারতের দীর্ঘদিনের উদ্বেগের সঙ্গে এই বিষয়টির তুলনা টানার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা একেবারেই অসৎ প্রচেষ্টা। এমনকি যেসব অপরাধী ওইসব ঘটনায় জড়িত, তারা আজও বিচার এড়িয়ে চলেছে।”

এর আগে ৮ এপ্রিল, ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

এই মন্তব্যকেই ‘হস্তক্ষেপমূলক’ ও ‘অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশকে দায়ী করেছেন। গত ১৬ এপ্রিল নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক সভায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পশ্চিমবঙ্গে অশান্তি ছড়িয়েছেন।”

প্রসঙ্গত, নতুন ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলায় ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আগুন লাগানো, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সড়ক অবরোধের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এই ইস্যু শুধু পশ্চিমবঙ্গেই সীমাবদ্ধ নয়—উত্তর প্রদেশসহ ভারতের আরও কিছু রাজ্যেও সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষ এবং নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

Header Ad
Header Ad

দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্টে ইমিগ্রেশন বিভাগে কর্মরত পুলিশ কনস্টবল শামীম হোসেন (৩০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সহকর্মীরা শয়নকক্ষের জানালা দিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।

নিহত শামীম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে। তার কনস্টবল নং ৫৩২।

চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ এসআই রমজান আলী জানান, শামীম হত অক্টোবরে দর্শনা ইমিগ্রেশনে যোগদান করে। যোগদানের পর থেকেই গত ৬ মাস ধরে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের ২য় তলার একটি কক্ষে বাস করে আসছিলেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় কয়েকজন সহকর্মী খোঁজ নিতে গেলে শামীম হোসেনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।

খবর পেয়ে সকালে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, সহকারী পুলিশ সুপার দামুড়হুদা -জীবননগর) সার্কেল জাকিয়া সুলতানা, দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর বেলা ১১ টায় মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন ২০১৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি
সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিলো রাশিয়া
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, জানালেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট