শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান

এই ঘটনার কথা মনে করে জ্যাক বুঝতে পারল, সে তার বাবা সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি জেনেছে তার ওই শিক্ষকের কাছ থেকে। তবে তার খোঁজ খবর করা কঠিন এখন। অবশ্য তার মায়ের নীরবতা থেকে যা কিছু জানা হয়েছে তার বেশি কিছু আঁচ করা যাবে না শুধু ঘটনার বর্ণনা ছাড়া। বাবা সম্পর্কে জ্যাক ধারণা করতে পারে, তিনি ছিলেন একজন কঠিন মানুষ, তিক্ত অভিজ্ঞতার মানুষ, সারা জীবন কাজ করে গেছেন; হুকুমের গোলাম হয়ে হত্যা করেছেন; যেসব বিষয় এড়াতে পারেননি সেগুলোর কাছে হার মেনেছেন; তবে নিজের বলতেও ছিল কিছু বিষয়; সেখানে অন্য কারো প্রবেশ ঘটেনি। মোটের ওপর একজন হতভাগা মানুষ।

দারিদ্র কেউ চেয়ে নেয় না। তবে হতভাগা মানুষও নিজেকে রক্ষা করতে পারে। মায়ের কাছ থেকে যা কিছু শুনেছে তার থেকে ওই একই মানুষ সম্পর্কে জ্যাকের ধারণা হয়েছে: নয় বছর পরে বিবাহিত, দুই সন্তানের বাবা, জীবনে কিছুটা ভালো অবস্থান অর্জন করেছেন; তারপর তাকে আলজিয়ার্সে ডাকা হলো যুদ্ধে যোগদানের জন্য। অসুস্থ স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে দীর্ঘ ভ্রমণ, স্টেশনে বিদায় এবং তিন দিন পর বেলকোর্টের ছোট অ্যপার্টমেন্টে জুয়াভ রেজিমেন্টের সুদর্শন লাল-নীল ইউনিফর্ম, ঢিলা ট্রাউজার পরে এসেছিলেন; জুলাইয়ের কড়া তাপে মোটা পশমী কাপড়ের নিচে শরীরের ঘাম, হাতে একটা খড়ের হ্যাট। কারণ তার টারবুশের হ্যাট ছিল না, হেলমেটও ছিল না। জাহাজঘাটার ছাউনির নিচের ডিপো থেকে দৌড়ে ফিরে এসেছিলেন স্ত্রী আর সন্তানদের বিদায়ী চুমু দিতে। কারণ যে ফ্রান্সকে তিনি আগে কখনও দেখেননি সেই ফ্রান্সের উদ্দেশে সেই রাতেই রওনা হওয়ার কথা, সমুদ্রপথে যাওয়ার কথা যে সমুদ্রের বুকের ওপর দিয়ে তিনি আগে কোথাও যাননি। তিনি স্ত্রী এবং সন্তানদের গভীর আবেগে চুমু দিলেন এবং একই গতিতে আবার ফিরে চললেন।

তার স্ত্রী ছোট ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে তার উদ্দেশে হাত নাড়ালেন। ধূলি আর তাপে দগ্ধ রাস্তায় নামার আগে দৌড়ের ওপরেই স্ত্রীর হাত নাড়ানোর উত্তরে তিনি তার হাতের হ্যাটটা উঁচু করে নাড়াতে লাগলেন। তারপর সিনেমার সামনে, তারপর আরো দূরে, শেষে সকালের ঝকঝকে আলোর ভেতর তিনি মিলিয়ে গেলেন যেখান থেকে আর কখনও ফিরবেন না। বাকিটা জ্যাককে কল্পনা করে নিতে হয়েছে; তবে মা যা বলেছেন শুধু সেটুকুর ওপরে ভরসা করে নয়। কারণ ইতিহাস এবং ভূগোল বলতে কী বুঝায় সে জ্ঞান মায়ের ছিল না। মা জানতেন, তার বসবাস সমুদ্রের কাছাকাছি স্থলভাগে; আরো জানতেন, ফ্রান্স দেশটা ওই সমুদ্রের ওপারে। তিনি সেখানে কখনও যাননি। ফ্রান্স একটা অজানা দেশ যেন রাতের অন্ধকারে ডুবে থাকা দূরের দেশ, সেখানে পৌঁছনো যায় মার্সেই নামক বন্দর দিয়ে; কল্পনায় তিনি দেখতে পেতেন ওই বন্দর আলজিয়ার্স বন্দরের মতোই; লোকমুখে তিনি শুনেছিলেন, সেখানে আছে প্যারিস নামে এক নয়নাভিরাম, সুদর্শনা নগরী। সেই নগরীর একটা জায়গার নাম আলসেস; সেখান থেকেই এসেছিল তার স্বামীর পরিবারের লোকেরা।

সে অনেক দিন আগের কথা। তারা জার্মান নামক শত্রু-তাড়িত হয়ে আলজিয়ার্সে বসতি স্থাপন করতে এসেছিল। তারপর এল সেই নগরীকে ওই হিংস্র শত্রুদের কাছ থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার সময়। ফ্রান্সের প্রতি শত্রুরা ছিল আসলেই নিষ্ঠুর। এর চেয়ে বড় আর কোনো কারণ ছিল না। ফ্যাসাদপ্রিয় এবং অপ্রশম্য শত্রুদের কবল থেকে নিজেদের বাঁচানোর জন্য ফ্রান্সকে সব সময়ই বাধ্য হয়ে লড়ে যেতে হয়েছে। এভাবেই তার জানাশোনার মধ্যে ছিল স্পেনও। তবে স্পেনের অবস্থান সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না। মনে হতো খুব দূরে নয়; সেখান থেকেই তার নিজের পরিবারের লোকেরা, মাহুন জাতির লোকেরাও এসেছিল। সে-ও অনেক দিন আগের কথা। তার স্বামীর পরিবারের লোকেরা যে সময়ে আলজেরিয়ায় এসেছিল তার নিজের পরিবারের লোকেরাও সেই একই সময়ে এসেছিল। তার পরিবারের লোকেরা এখানে এসেছিল ক্ষুধার জ্বালায় মরণাপন্ন অবস্থায়; তার পূর্বপুরুষদের বসতি ছিল একটা দ্বীপে-সে কথা তিনি জানতেন না; অবশ্য দ্বীপ কী রকম সে বিষয়েও তার কোনো ধারণা ছিল না।  

অন্য দেশ সম্পর্কে তার ধারণার কথা বলতে গেলে কিছু কিছু দেশের নাম শুনে তার ভালো লাগত। অবশ্য ওই সব দেশের নাম ঠিকমতো উচ্চারণ করতে পারতেন না। কোনো প্রসঙ্গেই তিনি অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি সম্পর্কে কিংবা সার্বিয়া, রাশিয়া এমনকি ইংল্যান্ড সম্পর্কে তেমন কিছু জানতেন না। আর্চডিউক কী রকম পদবী, সে সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই ছিল না। তিনি কখনও সারায়েভো নামের চার সিলেবল এক সঙ্গে উচ্চারণ করতেও পারেননি। যুদ্ধ সেখানেই, অন্ধকার আতঙ্কবাহী ভারী মেঘের মতো। কিন্তু ওই মেঘের আকাশ আক্রমণ কিছুতেই টিকিয়ে রাখার মতো নয়।

পতঙ্গের আক্রমণ ঠেকানো যায়, কিংবা আলজিয়ার্সের সমতলভূমি আক্রমণকারী সর্বগ্রাসী ঝড়কেও ঠেকানো যায়। কিন্তু যুদ্ধের মেঘ ঠেকানো যায় না। জার্মানরা আবারো ফ্রান্সকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছিল। আর আমাদের ভোগান্তির শুরু হলো বলে। এর পেছনে কোনো কারণই ছিল না। তিনি ফ্রান্সের ইতিহাস জানতেন না; আদৌ ইতিহাস বিষয়টাই ছিল তার জানার বাইরে। তার নিজের ইতিহাস সম্পর্কে সামান্য জানতেন। তার ভালোবাসার মানুষদের ইতিহাস প্রায় জানতেন না বললেই চলে। আর জানতেন যাদের তিনি ভালোবাসেন তারাও তার মতোই ভোগান্তির শিকার হতে যাচ্ছে। তিনি ইতিহাস জানতেন না এবং রাতের মতো পৃথিবীর চলমান ঘটনাবলীর ভেতর তিনি কল্পনা করতেও পারেননি, আরো অন্ধকারাচ্ছন্ন রাত এসে গেছে। রহস্যময় বিশৃঙ্খলা এসে হাজির হয়েছে এক ক্লান্ত, ঘর্মাক্ত কনস্টেবলের হাত ধরে। যে খামারের আঙুর তারা তুলতে প্রস্তুত হচ্ছিলেন সেই খামার ছেড়ে তাদের চলে যেতে হবে।

বন স্টেশনে মহল্লার পাদ্রীর সঙ্গে দেখা। পাদ্রী স্টেশনে এসেছিলেন সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলকভাবে যোগদানের জন্য যাদের বাছাই করা হয়েছে তাদের বিদায় জানাতে। তিনি বলেছিলেন, আমাদের সবাইকে প্রার্থনা করতে হবে। তার কথার উত্তরে মা বলেছিলেন, হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন মসিঁয়ে। তবে আসলে তিনি পাদ্রীর কথা ঠিকমতো শুনতে পাননি; পাদ্রী মহাশয় খুব আস্তে কথা বলেছিলেন। তাছাড়া প্রর্থনার কথাটা তার মাথায়ই আসেনি কখনও। তিনি কারো ব্যাপারে নাক গলাতেন না। আর এখন তো তার স্বামী বহুবর্ণিল ইউনিফর্মে যুদ্ধে গেছেন; ফিরে আসবেন খুব শিঘ্রই, সেরকমই তো সবাই বলছে। জার্মানদের শাস্তি হওয়া উচিত। তবে ততদিনে তার কাজ খুঁজে নিতে হবে। এক প্রতিবেশী নানিকে বলেছিলেন অস্ত্রাগারের কারতুজ ফ্যাক্টরিতে নারীদের নিয়োগ দেওয়া হবে, যাদের স্বামীরা যুদ্ধে গেছেন এবং পরিবারের দায়িত্ব ঘাড়ে আছে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তিনি ভেবেছিলেন, পুরুত্ব আর রং অনুসারে কার্ডবোর্ডের নল তৈরি করার কাজে দিনে দশ ঘণ্টা পরিশ্রম করে সৌভাগ্যের মুখ দেখবেন। জার্মানদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত এবং হেনরি ফিরে না আসা পর্যন্ত ছেলেমেয়েরা প্রয়োজন মাফিক খেয়ে পরে বাঁচতে পারবে। অবশ্য তিনি রাশিয়ান রণাঙ্গন সম্পর্কে কিছু জানতেন না। রণাঙ্গন বিষয়ে তার জ্ঞানও তেমন ছিল না।

আরো জানতেন না, যুদ্ধ বলকান পর্যন্ত, মধ্যপ্রাচ্য পর্যন্ত, এমনকি গোটা পৃথিবীতেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফ্রান্সে সবকিছুই ঘটে যাচ্ছে: কোনো রকম ইঙ্গিত ছাড়াই জার্মানরা প্রবেশ করছে ফ্রান্সে; এমনকি শিশুদেরও হত্যা করছে তারা। ওখানে সবকিছুই ঘটছে আফ্রিকা থেকে আগত সৈনিকদের জীবনেও। তাদের মধ্যে এইচ করমারিকেও যত দ্রুত সম্ভব পাঠানো হয়েছিল মার্নের মতো এক রহস্যময় এলাকায়। লোকজন সেরকমই বলাবলি করত। তাদের জন্য তখন আর হেলমেট যোগাড় করা সম্ভব হয়নি। ওখানকার সূর্য অবশ্য আলজেরিয়ার সূর্যের মতো প্রখর ছিল না যে খুব দ্রুত তাদের রং মুছে দিবে। আরব এবং ফরাসি আলজেরিয়ানরা সুবেশ উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরিহিত, মাথায় তৃণের টুপি, লাল-নীল পোশাকে সবাই যেন বিরাট পশুপালের সদস্য, এগিয়ে চলেছে আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য। দলের মধ্যেই তাদের হত্যা করা হচ্ছে সেখানকার স্বল্প পরিসর এলাকাটা যেন উর্বর করার জন্য।

সেখানে পৃথিবীর সকল প্রান্ত থেকে মানুষ আসতে থাকে প্রায় চার বছর ধরে। আগুনবর্ষী সূর্যের নিচে তারা প্রতি ইঞ্চি মাটির জন্য লড়াই করে যাচ্ছে কাদা মাটির মধ্যে হামাগুড়ি দিয়ে। চার পাশে গোলার আর্তনাদ আর  কামানের অগ্নিব্যুহ ব্যর্থ আগ্রাসনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাইরের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য মাটি খুঁড়ে কোনোরকম আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা যায়নি। শুধু আফ্রিকার সৈন্যরা আগুনের নিচে বহুবর্ণিল মোমের পুতুলের মতো গলে শেষ হয়ে গেছে। আর প্রতিদিন আলজেরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় শিশুরা নতুন করে  এতিম হয়েছে। পিতৃহীন পুত্র কন্যারা এখন থেকে পিতার দিক নিদের্শনা ছাড়াই জীবনে বেঁচে থাকার শিক্ষালাভ করবে; থাকবে না উত্তরাধিকারের কোনো কিছুই।

কয়েক সপ্তাহ পার হয়ে গেল। তাদের একমাত্র ওপরের তলার ভেতরের ল্যান্ডিংয়ে, সিঁড়ি আর অন্ধকার টয়লেটের মাঝখানে। সুরকির ভেতর তুর্কী কেতায় কালো ছিদ্র করে রাখায় অবিরত ক্রেসিল দিয়ে পরিষ্কার করা হলো তবু সেখান থেকে দুর্গন্ধ আসত- সেখানে কয়েক সপ্তাহ পরের এক রবিবারের সকালে লুসি করমারি আর তার মা একটা নিচু চেয়ারে বসে সিঁড়ির ওপরের জানালা দিয়ে আসা আলোয় মসুরের ডাল বাছছেন আর শিশুটা ছোট একটা লন্ড্রীর ঝুড়িতে শুয়ে নিজের মুখের লালায় ভিজানো একটা গাজর মুখে দিয়ে চুষছে। তখন গম্ভীর চেহরার এবং পরিপাটি পোশাক পরিহিত এক ভদ্রলোক সিঁড়ির মাথায় উঠে এলেন; হাতে খাম জাতীয় কিছু একটা। লুসি এবং তার মা নিজেদের মাঝখানে একটা পাত্র রেখে সেখান থেকে মসুরের ডাল বাছার কাজ করছিলেন। বিস্মিত হয়ে হাত মুছতে মুছতে তারা উঠে দাঁড়ালেন। তখনই ভদ্রলোক সিঁড়ির শেষ ধাপ ওঠা বাদ থাকতে তাদেরকে ব্যস্ত না হতে বললেন এবং মিসেস করমারির খোঁজ জানতে চাইলেন।

জ্যাকের নানি বললেন, এই তো মিসেস করমারি। আর আমি ওর মা। ভদ্রলোক বললেন, তিনি মেয়র এবং তিনি একটা দুঃখজনক খবর নিয়ে এসেছেন: তার স্বামী মহিমান্বিত ময়দানে মৃত্যুবরণ করেছেন। ফ্রান্স শোকে আচ্ছন্ন এবং একই সময়ে তার জন্য গর্বও বোধ করে। লুসি করমারি তার কথা ভালো করে বুঝতে পারেননি। উঠে দাঁড়িয়ে তিনি ভক্তিসহকারে তার হাত বাড়িয়ে দিলেন ভদ্রলোকের দিকে। নানি মুখের কাছে নিজের শক্ত হাতখানা নিয়ে স্পেনীয় ভাষায় কয়েকবার বলে উঠলেন, হায় আল্লাহ। ভদ্রলোক লুসির হাতখানা নিজের দুহাতের মধ্যে নিয়ে মৃদু চাপ দিলেন এবং খামটি এগিয়ে দিয়ে সান্ত¦নার কথা আওড়ালেন এবং সঙ্গে সঙ্গে পেছনের দিকে ঘুরে সিঁড়ি বেয়ে গম্ভীর চালে নামতে লাগলেন।


     লুসি তার মাকে জিজ্ঞেস করলেন, কী বললেন উনি?
     হেনরি আর নেই। সে নিহত হয়েছে।

 


চলবে...

 

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad

অনুর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ

তামিমকে অধিনায়ক করে বাংলাদেশের দল ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

আগামী ২৯ নভেম্বর শুরু হচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের এবারের আসর। ওয়ানডে ফরম্যাটে হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচেই মাঠে নামবেন বাংলাদেশের যুবারা। এশিয়া কাপের শিরোপা ধরে রাখার মিশনে আজ দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

এবারের বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে নেতৃত্ব দেবেন আজিজুল হাকিম তামিম। আগামী ২৯ নভেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯। ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও আফগানিস্তান। অন্যদিকে ‘বি’ গ্রুপে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, জাপান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ শেষে ১ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ম্যাচে নেপাল ও ৩ ডিসেম্বর শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

টুর্নামেন্টের সবগুলো ম্যাচই সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হবে। দুবাই ও শারজা দুই ভেন্যুতে আয়োজিত হবে টুর্নামেন্টের ১৫টি ম্যাচ।

আগামী ২৪ নভেম্বর আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ। ২৬ নভেম্বর শারজাতে ভারতের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে আজিজুল হাকিম তামিমরা।

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ স্কোয়াড:
আজিজুল হাকিম তামিম (অধিনায়ক), জাওয়াদ আবরার (সহ অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিফাত বেগ, সামিউন বশির রাতুল, দেবাশীষ সরকার দেবা, রিজান হোসেন, আল ফাহাদ, ইকবাল হাসান ইমন, রাফিউজ্জামান রাফি, ফরিদ হাসান ফয়সাল, মারুফ মৃধা, শিহাব জেমস, মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বরেণ্য, সাদ ইসলাম রাজিন।

স্ট্যান্ডবাই:
কালাম সিদ্দিকী, শাহরিয়ার আজমীর, ইয়াসির আরাফাত, সানজিদ মজুমদার।

Header Ad

নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেবে রোববার

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন। ছবি: সংগৃহীত

আউয়াল কমিশনের পদত্যাগের আড়াই মাস যেতেই অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান করে বেছে নেওয়া হয়েছে নতুন নির্বাচন কমিশন। আগামী রোববার শপথ নিতে যাচ্ছে এ কমিশন।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) নতুন নির্বাচন কমিশন বেছে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর এ তথ্য জানান সুপ্রিম কোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম।

সিদ্ধান্ত মোতাবেক রোববার (২৪ নভেম্বর) বেলা দেড়টায় নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার কমিশনারকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণ অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক মাস পর গত ৫ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করে হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এর আড়াই মাস যেতেই এবার অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ভার ন্যস্ত থাকবে এ কমিশনের ওপর।

নতুন নির্বাচন কমিশনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন ছাড়াও কমিশনার হিসেবে থাকছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব বেগম তহমিদা আহমদ এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা বিধান অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠন করার পর ওই কমিটির প্রস্তাবিত ১০ নামের তালিকা থেকে এই নির্বাচন কমিশন বেছে নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

দেশের চতুর্দশ সিইসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া নাসির উদ্দীনক স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার।

নিয়োগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নাসির উদ্দীন বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার, তা তা করব, ইনশাআল্লাহ। যে দায়িত্ব এসেছে, তা আমাদের সুষ্ঠুভাবে পালন করতে হবে সবার সহযোগিতা নিয়ে।

Header Ad

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার

ছবি: সংগৃহীত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭১ জন নিহত হয়েছেন। এতে চলমান যুদ্ধে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ৪৪ হাজার ছাড়িয়ে গেল।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে আনাদোলু এজেন্সি জানায়, দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর হামলার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৪৪ হাজার ৫৬ জন নিহত এবং ১ লাখ ৪ হাজার ২৬৮ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বোমা ও গুলিতে ৭১ জন নিহত এবং ১৭৬ জন আহত হয়েছেন।

তবে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ অনেক মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে এবং সেগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়।

এদিকে, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থার কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি এক্স পোস্টে বলেছেন, গাজা উপত্যকার ৮০ শতাংশই এখন উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। ওইসব এলাকার মানুষেরা নিরাপত্তা ও অস্তিত্বহীনতার মধ্যে বসবাস করছেন।

অনিরাপদ রুটের কারণে গাজাজুড়ে সামান্য ত্রাণ সরবরাহ করা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে জানিয়ে ফিলিপ লাজারিনি বলেন, গাজার উত্তরাঞ্চলে মানুষ কঠোর অবরোধের মধ্যে রয়েছে। যুদ্ধের দুষ্টচক্রে পড়ে তারা জীবন বাঁচাতে ছুটাছুটির মধ্যে রয়েছেন। ৪০ দিনেরও বেশি সময় ধরে ওই অঞ্চলটি মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। উপত্যকায় নাগরিক শৃঙ্খলা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসসাম ব্রিগেডের দীর্ঘদিনের নেতা মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধেও পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

আইসিসির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আদালত দুই ব্যক্তি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং ৮ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে ২০ মে, ২০২৪ পর্যন্ত সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করছে।

বিবৃতি অনুযায়ী, নেতানিয়াহু ও গ্যালান্ত ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ও জ্ঞাতসারে গাজার বেসামরিক জনগণকে খাদ্য, পানি, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহের পাশাপাশি জ্বালানি ও বিদ্যুৎসহ তাদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য বস্তু থেকে বঞ্চিত করেছেন বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে’।

পৃথক এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত জানায়, দেইফ, পুরো নাম মোহাম্মদ দিয়াব ইব্রাহিম আল-মাসরিও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি। বিবৃতি মতে, আদালত ‘সর্বসম্মতভাবে’ তার বিরুদ্ধে ৭ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দেইফের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে আরও রয়েছে- ইসরাইলি ভূখণ্ডে রকেট নিক্ষেপ এবং ৭ অক্টোবর হামলা চালানো হামলায় সহস্রাধিক ইসরাইলি নিহত হয়। তবে৭ অক্টোবর হামলার কয়েক মাস পর চলতি বছরের জুলাইয়ে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসসাম ব্রিগেডের দীর্ঘদিনের নেতা দেইফকে এক বিমান হামলায় হত্যার দাবি করেছে ইসরাইল। বিমান হামলাটি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের তাঁবুতে এবং একটা পানি শোধনাগারে আঘাত হানে। এতে কমপক্ষে ৯০ জন নিহত ও ৩০০ জন আহত হয়।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

তামিমকে অধিনায়ক করে বাংলাদেশের দল ঘোষণা
নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেবে রোববার
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত