শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১

দ্য ফার্স্ট ম্যান

প্রথম ভাগ: পিতার সন্ধানে

পাথুরে পথে গড়িয়ে চলা ওয়াগনের মাথার উপর দিয়ে বড় বড় ঘন মেঘের পাহাড় গোধূলির গা বিদীর্ণ করে ছুটে চলেছে পূর্বদিকে। আটলান্টিকের উপর মেঘেদের শরীর ভরে উঠেছে প্রায় তিন দিন আগেই। পশ্চিম দিক থেকে বয়ে আসা বাতাসের অপেক্ষায় ছিল অনড়। তারপর আস্তে আস্তে চলা শুরু করে ক্রমেই দ্রুত থেকে দ্রুততর গতি পেয়েছে। শরতের মৃদু আলোকিত পানির উপর দিয়ে উড়ে চলে এসেছে গোটা মহাদেশের ওপর। মরক্কোর পাহাড়চূড়ায় এসে টুকরো টুকরো হয়ে আবার দলবদ্ধভাবে একত্রিত হয়েছে আলজেরিয়ার উঁচু মালভূমিতে। আর এখন তিউনিসিয়া সীমান্তে এসে চেষ্টা করছে তাইরেনীয় সমুদ্রের জলে গলে একাকার হতে।

বিশাল দ্বীপের মতো হাজার হাজার কিলোমিটার দূরত্বের ভ্রমণ শেষে উত্তর দিকে বহমান সমুদ্র জল আর দক্ষিণ দিকে বহমান জমাট বালির উর্মিমালার কোলে আশ্রয় পেয়ে মেঘেদের গতিবেগ হাজার বছরের সাম্রাজ্য আর মানব অধ্যুষিত নামহীন এই দেশটার উপর ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। কোনো কোনো টুকরো সবিরাম বৃষ্টির ফোঁটা হয়ে টুপ টুপ ঝরে পড়ছে এই চারজন ভ্রমণকারীর মাথার উপরের মোটা কাপড়ের ছাউনির উপর।

রাস্তাটার সুপরিসর অবয়ব থাকলেও উপরিভাগটা মজবুত নয়। ঘোড়ায় টানা গাড়িটা চলার সময় ক্যাচ ক্যাচ শব্দ হচ্ছে। যখন তখন ছোট ছোট পাথরের টুকরোর সঙ্গে ধাতব চাকার বেষ্টনীতে ঘষা লেগে কিংবা ঘোড়ার খুরের আঘাতে ফুলকি জ্বলে উঠছে; ছিটকে উঠে বাড়ি খাচ্ছে গাড়ির কাঠ-শরীরের সঙ্গে। কখনোবা বোবা শব্দ তুলে ডুবে যাচ্ছে রাস্তার খানাখন্দের নরম মাটিতে। ইতিমধ্যে ছোট ঘোড়া দুটো মাঝে মধ্যে অপারগতায় শ্লথ হলেও সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে ভারী গাড়িটাকে টেনে নিয়ে; দুলকি চালে মিশ্র পদক্ষেপে পথটাকে তারা পিছে ফেলে চলেছে। কোনোটা হয়তো কখনো নাসারন্ধ্র থেকে ফোঁস ফোঁস আওয়াজ তুলে ভারী নিশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পিছিয়ে পড়ছে; ঠিক তখনই আরব গাড়োয়ান তার পিঠের ওপরের লাগামে টান মারছে আর পশুটা চলার ছন্দ ফিরিয়ে আনায় সচেষ্ট হচ্ছে।

চালকের পাশে প্রথম আসনে বসা ত্রিশ বছর বয়সী ফরাসি লোকটা তার সামনের পশু দুটোর ছন্দময় চলমান পেছনের অংশকে ভাসমান নিরিখে দু-এক পলক দেখে নিয়েছে। মাঝারি উচ্চতার এবং গাট্টাগোট্টা চেহারার লোকটার মুখটা লম্বাটে, ললাট চওড়া এবং গোলাকার, চোয়াল শক্ত আর চোখ নীল। মৌসুম আগে আগে শুরু হলেও লোকটার পরনে নিখুঁত করে বোনা তিন বোতামঅলা জ্যাকেট, ওই সময়ের কেতা অনুযায়ী গলা পর্যন্ত তুলে এনে আঁটো করে বাঁধা; তার ছোট করে ছাঁটা চুলের মাথার ওপরে পরেছে উদ্ভিদের শাঁস থেকে তৈরি হেলমেট। মাথার উপরে আচ্ছাদিত মোটা কাপড়ের উপর দিয়ে ঘন বৃষ্টি শুরু হলে গাড়ির পেছনের দিকে তাকিয়ে লোকটা জোর গলায় জিজ্ঞেস করে, ঠিক আছো তো?

পুরনো বাক্স-পেটরা আর আসবাবপত্রের স্তূপের মাঝে সাঁটানো দ্বিতীয় আসনটাতে বসে আছে একজন নারী, অন্য পোশাকাদি মলিন হলেও গায়ে জড়িয়ে আছে একটা পশমী মোটা শাল। ক্ষীণ একটা হাসি ছড়িয়ে দিয়ে সে বলল, হ্যাঁ, ঠিক আছি। বলার সময় তার অঙ্গভঙ্গিতে একটা ক্ষমাপ্রার্থী ভাব প্রকাশ পেল। চার বছর বয়সী একটা ছেলে তার গায়ে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। মহিলার স্বাভাবিক সুন্দর অবয়বের চেহারায় ছড়িয়ে আছে কোমলতা, বাদামী চোখে তার উষ্ণ চাহনি, নাকটা তার ছোট তবে খাড়া, স্পেনীয় নারীদের মতো মাথাভর্তি ঢেউ খেলানো কালো চুল; কিন্তু ওই মুখাবয়বে কী একটা অস্বাভাবিক ইঙ্গিত রয়েছে। ক্লান্তির মতো ক্ষণিকের কোনো কালো ছায়া তার মুখের উপর পড়েছে এমন নয়। তার চাহনির উৎস যেন দূরে কোথাও, এ চাহনি যেন মিষ্টি কোনো অমনোযোগের।

এ রকমটি দেখা যায় কোনো নির্বোধের মুখে। তবে এ চাহনি যেন থেকে থেকে তার মুখের সৌন্দর্যের উপর ছড়িয়ে পড়ছে। মাঝে-মাঝেই অকারণ ভয়ের মিশ্রণ ঘটছে তার চিত্তহারী চাহনির ভেতর দিয়ে প্রকাশিত কোমলতার সঙ্গে। তবে সেই ভয়টা নিমিষেই কেটেও যাচ্ছে। তার কাজ করে ক্ষয়ে যাওয়া গ্রন্থিল হাতের মসৃণ অংশ দিয়ে স্বামীর পিঠ স্পর্শ করে মহিলা বলে, ঠিক আছে, ঠিক আছে। অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে হাসি থামিয়ে মাথার উপরের মোটা কাপড়ের ছাউনির তলা দিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখতে পায় রাস্তার উপর ইতিমধ্যে জমে উঠা কাদা চিকচিক করে ওঠা শুরু করেছে।

গাড়োয়ানের মাথায় পাগড়ির হলুদ রঙের মোটা রশির কারণে তার চেহারায় প্রসন্ন একটা ভাব ফুটে উঠেছে। পায়ের গুলের ওপরে সাজানো প্রশস্ত আসনে বসা ঢিলা পাজামায় তাকে আরও বেশি গাট্টাগোট্টা দেখাচ্ছে। স্বামী লোকটা আরব গাড়োয়ানের দিকে ফিরে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, আমাদের কি আরও অনেক দূর যেতে হবে?

বিরাট সাদা গোঁফের আড়ালে হাসি ছড়িয়ে দিয়ে গাড়োয়ান বলে, আর আট কিলোমিটার গেলেই পৌঁছে যাবেন।

মুখে হাসি না থাকলেও মনোযোগী দৃষ্টিতে স্বামী লোকটা তার স্ত্রীর দিকে তাকায়। তার দৃষ্টি এখনো সামনের রাস্তায় নিবদ্ধ। লোকটা গাড়োয়ানকে বলে, লাগাম আমার হাতে দিন।

–আপনার যা ইচ্ছে, বলে বৃদ্ধ গাড়োয়ান তার হাতে লাগাম দিয়ে পাশে ফাঁকা হওয়া জায়গায় একটু সরে বসে। লাগাম হাতে দুটো ঝাঁকি মেরে লোকটা ঘোড়া দুটোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। ঘোড়া দুটো ধীর গতি থেকে আরেকটু দ্রুততায় দুলকি চালে চলা শুরু করে এবং দ্রুতই সোজা চলতে থাকে।

আরব গাড়োয়ান মন্তব্য করে, আপনি ঘোড়া চালানোর কায়দা কানুন বেশ ভালোই জানেন, দেখছি।

লোকটা শুকনো সংক্ষিপ্ততায় উত্তর দেয়, হ্যাঁ।

চারপাশের আলো কমে আসে। হঠাৎই যেন ঝুপ করে রাত নেমে আসে। বাম পাশ থেকে একটা লণ্ঠন তুলে এনে পেছনের দিকে ফিরে গাড়োয়ান কয়েকবার চেষ্টা করে ভেতরের সলতেয় আগুন জ্বালাতে পারে। আবার জায়গামতো রেখে দেয় লণ্ঠনটা। এখন বৃষ্টি পড়ছে মৃদু লয়ে, একটানা। লণ্ঠনের মৃদু আলোয় বৃষ্টি চক চক করে। বাইরে বৃষ্টির মৃদু শব্দে অন্ধকার ভীড় করে। মাঝে মাঝেই গাড়িটা কাঁটাঅলা ঝোপঝাড়ের পাশ ঘেঁষে চলতে থাকে। ছোট ছোট গাছপালা লণ্ঠনের মৃদু আলোয় সেকেন্ডের জন্য ঝিঁকিয়ে উঠে মিলিয়ে যায়। তবে বেশিরভাগ সময় গাড়িটা ফাঁকা জায়গার ভেতর দিয়ে এগিয়ে যায়। চার পশের অন্ধকারের কারণে ফাঁকা জায়গা আরও প্রশস্ত মনে হয়। রোদে পোড়া ঘাসের গন্ধ আর থেকে থেকে ভেসে আসা প্রাকৃতিক সারের গন্ধ মনে করিয়ে দেয় তারা এখন আবাদী জমির ভেতর দিয়ে এগিয়ে চলেছে।

পেছনের দিকে ঝুঁকে বসে লাগাম ধরে আছে স্বামী লোকটা। পেছন থেকে তার স্ত্রী কথা বলে ওঠে, এদিকে মনে হয় জনমানুষ নেই।

–তোমার কি ভয় করছে?

–কী বললে?

স্বামী পুনরায় জিজ্ঞেস করে। তবে এবার তার কথা বলা চিৎকারের মতো শোনায়।

–না, না। ভয় করছে না। তুমি সাথে থাকলে ভয় কিসের? তবে চিন্তিত মনে হয় তাকে।

–তোমার মনে হয় ব্যথা হচ্ছে?

–একটু একটু।

লোকটা ঘোড়া দুটোকে তাড়া দিলে রাস্তার মাঝে উঁচু হয়ে থাকা মাটির ওপরে চাকার আওয়াজ আর রাস্তার ওপরে ঘোড়ার নাল পরা খুরের আওয়াজ চারপাশের অন্ধকারকে ভরিয়ে তোলে।

১৯১৩ সালের এক রাত। ভ্রমণকারীরা দুঘণ্টা আগে বনের রেল স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করেছে। তৃতীয় শ্রেণির ট্রেনের কাঠের বেঞ্চে এক দিন এক রাতের দীর্ঘ ভ্রমণের পর তারা পৌঁছেছিল রেল স্টেশনে। এই আরব গাড়োয়ান তাদেরকে প্রায় বিশ কিলোমিটার ভেতরের দিকে একটা ছোট গ্রামের কাছে অবস্থিত এক খামারে নিয়ে আসার জন্য স্টেশনে অপেক্ষায় ছিল। ওই খামারের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেওয়ার কথা স্বামী লোকটার। বাক্সপেটরা এবং অন্যান্য কয়েকটা জিনিসপত্র গাড়িতে তুলতে অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। তাছাড়া খারাপ রাস্তার কারণে আরও দেরি হয়ে গেছে। সঙ্গীর নীরবতা ভাঙার জন্য গাড়োয়ান বলে ওঠে, ভয় পাাবেন না। এদিকে কোনো চোর ডাকাত নেই।

সবখানেই আছে। তবে আমার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও আছে, বলে স্বামী লোকটা তার আঁটো পকেটের উপর চাপড় মারে।

গাড়োয়ান বলে, ঠিকই বলেছেন, পাগল ছাগল সবখানেই আছে।

ঠিক তখনই পেছন থেকে মহিলা তার স্বামীকে ডাক দেয়, হেনরি, ব্যথা করছে।

লোকটা ঘোড়াগুলোকে আরেকবার তাড়া দিয়ে স্ত্রীর উদ্দেশে বলে, এই তো আমরা পৌঁছে গেলাম বলে। আরেক মুহূর্ত পরে লোকটা পিছু ফিরে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, এখনও কি ব্যথা আছে?

স্বামীর দিকে অন্যমনস্কতার দৃষ্টিতে তাকিয়ে একটুখানি হাসে মহিলা। দেখে মনে হয় না তার কষ্ট হচ্ছে। তবু বলে, হ্যাঁ, অনেক।

লোকটা গম্ভীর দৃষ্টিতে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকে।

মহিলার কণ্ঠে ক্ষমা প্রর্থনার সুর বাজে, তেমন কিছু না। মনে হয়, ট্রেনের কারণে এরকম হচ্ছে।

গাড়োয়ান বলে ওঠে, ওই যে দেখুন গ্রামটা। আসলেই রাস্তা থেকে বেশ খানিক দূরে বাম দিকে সলফেরিনো গ্রামের কয়েকটা আলো দেখা যায়। বৃষ্টির ভেতর দিয়ে আলোগুলো আবছা আবছা দেখায়। গাড়োয়ান আরও বলে, তবে আপনাদের ডান দিক দিয়ে যেতে হবে।

স্বামী লোকটা কিছুটা দ্বিধায় থেকে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, আমরা কি গ্রামের ভেতরে যাব, না কি বাড়িটাতে আগে যাব?

–না, না বাড়িটার দিকেই চলো। সেটাই ভালো হবে।

গাড়িটা ডান দিকে মোড় নেয়। সামনে অচেনা বাড়িটা তাদের জন্য অপেক্ষা বরছে। গাড়োয়ান বলে, আর এক কিলোমিটার।

স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে লোকটা বলে, আমরা পৌঁছে গেলাম বলে। হাতের মাঝখানে মুখ ডুবিয়ে মহিলা মাথা গুঁজে পড়ে আছে। লোকটা ডাক দেয়, লুসি।

তবে তার কোনো সাড়া নেই। হাত বড়িয়ে স্ত্রীকে ছুঁয়ে দেয় হেনরি। তার স্ত্রী নীরবে কাঁদছে। কণ্ঠ আরও জোরে চিৎকারের মতো করে প্রত্যেকটা শব্দ আলাদা আলাদা করে উচ্চারণ করে লোকটা বলে, তুমি ওখানে গিয়েই শুয়ে পড়বে। আমি ডাক্তার নিয়ে আসব।

–হ্যাঁ, ডাক্তার নিয়ে এসো। ব্যথাটা আমার কাছে ওই রকম মনে হচ্ছে।

আরব গাড়োয়ান তাদের দিকে বিস্ময়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বলে হেনরি বলে, তার বাচ্চা হবে।
–গ্রামে কি ডাক্তার আছে?

–হ্যাঁ, আছে। আপনি চাইলে আমিই ডাক্তার ডেকে আনতে পারি।

–না, না যেতে হবে না। বাড়িটাতে খেয়াল রাখলেই হবে। আমিই দ্রুত যেতে পারব। কোনো ছোট গাড়ি কিংবা ঘোড়া পাওয়া যাবে?

–হ্যাঁ, গাড়ি একটা আছে। তারপর সে লুসির দিকে তাকিয়ে বলে, আপনার ছেলে হবে। দোয়া করি ছেলেটা খুব সুন্দর হোক।

লুসি তার কথা কিছু বুঝেছে বলে মনে হয় না। তবে মৃদু হাসতে থাকে।

হেনরি বলেন, ও শুনতে পায় না। বাড়িতে গিয়ে ওর সাথে কথা বলার সময় জোরে বলতে হবে আর ইশারায় বুঝাতে হবে। গাড়িটা হঠাৎ ঘাসের চাপড়ার উপর দিয়ে চলতে থাকলে চাকার নিচে কোনো শব্দ শোনা যায় না। রাস্তাটা এখানে আরও সরু। পাশে কয়েকটা টালি ছাওয়া ঘর দেখতে পাওয়া যায়। ঘরগুলোর পেছনে আঙুরের ক্ষেতের প্রথম সারি। গাঁজানো আঙুরের কড়া গন্ধ এসে নাকে লাগে। উঁচু ছাদঅলা কয়েকটা ভবন পার হয়ে যায় গাড়ি। তারপর গাড়ির চাকা আকর বিছানো একটা উঠোনের উপর চলে আসে। মুখে কিছু না বলেই গাড়োয়ান লাগাম হাতে নিয়ে টেনে ধরে। ঘোড়াগুলো থেমে যায়; একটা বেশ জোরে নিশ্বাস ছাড়ে।

গাড়োয়ান হাতের ইশারায় একটা সাদা রং করা বাড়ি দেখায়। নিচু একটা দরজার পাশ বেয়ে উঠে গেছে একটা লতাগাছ। কপার সালফেট দিয়ে নীল রং করা হয়েছে দরজাটা। গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে নেমে হেনরি বৃষ্টির ভেতরেই দৌড়ে যায় ঘরটার দিকে। দরজা খুলে সামনে দেখতে পায় একটা অন্ধকার কামরা। ফাঁকা অগ্নিকুণ্ড থেকে একটা চাপা গন্ধ নাকে আসে। তার পেছন পেছন আগত গাড়োয়ান অন্ধকার পার হয়ে সরাসরি উনানের কাছে চলে আসে; জ্বলন্ত কয়লা ঘেঁটে কামরার মাঝখানে রাখা টেবিলের ওপরে ঝুলন্ত কোরোসিনের একটা লণ্ঠন জ্বালায়।

তখনই কেবল হেনরির চোখে পড়ে সে সাদা রং করা রান্নাঘরের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে। লাল সিরামিক টালির তৈরি বাসনপত্র ধোয়ার জায়গা, একটা পুরনো দেরাজ এবং তাকঅলা টেবিল, আর দেয়ালে একটা ভেজা স্যাঁতসেতে ক্যালেন্ডার। লাল টালির সিঁড়ি শেষ হয়েছে দ্বিতীয় তলার মাথায়। আগুনটা জ্বালিয়ে দাও, বলে সে গাড়ির কাছে ফিরে এলো। তার স্ত্রী গাড়িতেই নীরবে অপেক্ষা করছে। হেনরি স্ত্রীকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে নামিয়ে আনার চেষ্টা করে যাতে নিরাপদে মাটিতে তার পা রাখতে পারে। তাকে বুকের সাথে এক মুহূর্ত ধরে রেখে হেনরি জিজ্ঞেস করে, হাঁটতে পারবে?

–হ্যাঁ, পারব, বলে সে স্বামীর বাহুতে আলতো ছোঁয়া রাখে।

ঘর পর্যন্ত ধরে নিয়ে গিয়ে হেনরি বলে, একটু অপেক্ষা করো।

(চলবে)

এসএ/

Header Ad

জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি

ছবি: সংগৃহীত

ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর সাথে এবার জুটি বাধলেন বাংলাদেশের তারকা অভিনেত্রী আফসানা মিমি। বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তর জীবনকাহিনি নিয়ে এই সিনেমা নির্মাণ করতে যাচ্ছেন ভারতের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা মানসমুকুল পাল।

জানা গেছে, হুমায়ূন আহমেদের একটি উপন্যাসকে কেন্দ্র করে সিনেমা বানাবেন নির্মাতা মানসমুকুল পাল। আগামীতে সেই সিনেমাতেই দেখা যাবে মিঠুনকে। শোনা যাচ্ছে, অভিনেতার বিপরীতে দেখা যেতে পারে বাংলাদেশি অভিনেত্রী আফসানা মিমিকে। যদিও নিশ্চিত করে কিছু জানাননি নির্মাতা। তবে ভারতের জাতীয় পুরস্কারজয়ী এই পরিচালক চিত্রনাট্য লেখার আগে বাংলাদেশ ভ্রমণ করবেন।

মূলত সিনেমার চিত্রনাট্য লেখার আগে হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসে থাকা জায়গাগুলো নিজে ঘুরে দেখতে চান মানসমুকুল। ভারতীয় গণমাধ্যমে এ প্রসঙ্গে নির্মাতা বলেন, হুমায়ূন আহমেদের যে উপন্যাস অবলম্বনে চিত্রনাট্য লেখা শুরু করছি তাতে বাংলাদেশের একাধিক জায়গার উল্লেখ রয়েছে।

তাই ঢাকা, কিশোরগঞ্জসহ অন্যান্য জায়গায় যাওয়ার কথা আছে। সেই জায়গাগুলো নিজে দেখলে উপলব্ধি থাকবে, আর তাতে চিত্রনাট্য লেখার কাজও সহজ হবে।

শুধু জায়গা পরিদর্শন নয়, বাংলাদেশে এসে অভিনেত্রী আফসানা মিমির সঙ্গেও দেখা করবেন মানসমুকুল। তিনি এ-ও জানান, সিনেমার অধিকাংশ শুটিং বাংলাদেশে হবে। কিন্তু এখনই নয়। বর্তমানে মানসমুকুলের হাতে ৩টি সিনেমার কাজ রয়েছে। সেসব চলচ্চিত্র শেষ করে তবেই তিনি এই সিনেমার কাজ শুরু করবেন।

Header Ad

দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তারেক রহমান বলেন, সব রাজনৈতিক দল মিলে আমরা এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। দেশের মানুষের হাতে ক্ষমতা ফিরে যেতে নির্বাচন প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য আরও ২ বছর আগে সংস্কারের প্রস্তাব ৩১ দফা দিয়েছি আমরা। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। একজন শুরু করবে, আরেকজন টেনে নিয়ে যাবে। অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ও সত্যিকারের নির্বাচন আয়োজন করতে পারলে, জনগণ তবেই জনপ্রতিনিধি বাছাই করতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।

নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেকের মনে প্রশ্ন আমরা কেন বারবার নির্বাচনের কথা বলছি। আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে। এর ফলে সংসদের যারা জনপ্রতিনিধি বাছাই হয়ে আসবে, তারা সংসদে বসে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, কীভাবে দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরের সমস্যা সমাধান করা যায়। সকল সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব প্রকৃত ও সত্যিকারের একটি নির্বাচনের মাধ্যমে।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দায়িত্ব নিতে হলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে আশপাশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। যদি এই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারা যায়, তবেই মানুষ আপনাদের দায়িত্ব দিবে, অন্যথায় দ্বিতীয়বার ভাববে।

এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপি খুলনা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. শরীফুজ্জামান শরীফ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ।

Header Ad

২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা

ফাইল ছবি

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে

রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া আগামী পাঁচদিনে আবহাওয়া পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান