শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

গভীর রাতে গুলির শব্দে ঘুম ভেঙে যায় আকাশী আর রবিউলের। আচমকা ঘুম ভেঙে গেলে দুজনে দুজনকে গভীরভাবে জড়িয়ে ধরে। প্রথমে শব্দ বেশ দূরে হচ্ছিল। আস্তে আস্তে কাছের দিকে এগিয়ে আসে ঝাঁক ঝাঁক গুলির শব্দ। ওদের মনে হয়–পাকিস্তানি বাহিনী বোধহয় সামনের দিকে এগিয়ে এসেছে। তবে একদম বাড়ির কাছে নয়।

দুজনে কান পেতে রাখে। বাইরে কোনো পাখির ডাক নেই। রাতে ঘুমানোর আগে দুজনে বারান্দায় বসে পাখির ডাক শোনে। রাতের নীরবতায় দুজনের কাছে পাখির ডাক মধুরতম সঙ্গীত।

রবিউল বলে, ছোটবেলায় ঘুমানোর আগে মা ঘুম পাড়াতো ‘ঘুমপাড়ানি মাসী-পিসী মোদের বাড়ি এসো’ বলে। মায়ের কাছ থেকে এটুকু না শুনলে আমার ঘুম আসতো না। এখন পাখির ডাক না শুনলে ঘুম আসে না। অনেকক্ষণ বিছানায় গড়াগড়ি করলে তারপর ঘুমিয়ে পড়ি।

এমন কথা ওর বন্ধুরা সবাই জানে। আকাশী ওর এমন আচরণে ভালোবাসায় গুটিয়ে পড়ে। নিজেরও ভালোলাগে পাখির ডাক শুনতে। গুলির শব্দে আতঙ্কিত দুজনে বিছানায় উঠে বসে।

রবিউল বলে, আমাদের গ্রামে পাকবাহিনী ঢুকেছে। নাহলে এত রাতে গুলি করবে কে?

আকাশী বলে, চলো বের হয়ে দেখি। লণ্ঠন জ্বালাবো না। অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকবো।

রবিউল সায় দেয়, হ্যাঁ, চলো। উঠোনের বাইরে যাব না।

আমিতো মনে করি বারান্দার নিচে নামব না। দুলাল ঘুমিয়ে আছে। যদি জেগে ওঠে সেজন্য।

আসমানীর ঘরে যেতে হবে ও কি করছে দেখার জন্য। মেয়েটা গর্ভবতী। বাচ্চা হওয়ার জন্য মায়ের কাছে এসেছে। আকাশীর খুব চিন্তা হয়। এই অবস্থায় যদি বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয় তবে কি করবে মেয়েকে নিয়ে? চোখে পানি আসে। ভয়ে মুষড়ে পড়ে। চোখের পানি মুছতে মুছতে চৌকি থেকে নেমে দাঁড়ায় আকাশী। বুঝতে পারে গুলির শব্দ আর এগিয়ে আসছে না।

রবিউল বলে, আজকে বোধহয় ওরা ধনিয়া গ্রাম পর্যন্ত এসেছে। কাল হয়তো আমাদের এদিকে আসবে।

–থাক, থাক এসব কথা আর চিন্তা করার দরকার নাই। চলো বাইরে যাই।

দুজনে দরজা খুলে বাইরে এসে দেখতে পায় দাউদাউ আগুন জ্বলছে চারদিকে। বিভিন্ন দিকে বাড়িঘর পুড়ছে।

–হায়, হায় কত মানুষকে যে মেরে ফেলল কে জানে? সবাই কি আগুন লাগার আগে বের হতে পেরেছে?

আকাশীর চোখ আবার পানিতে ভরে যায়। দু’হাতে চোখ মুছে বলে, যারা ঘরের আগুন টের পায়নি তারা তো পুড়ে শেষ।

রবিউল বলে, ভোরবেলা পর্যন্ত যদি বেঁচে থাকি তাহলে আমরা বাড়ি ছেড়ে চলে যাব।

–কোথায় যাব? আকাশীর আতঙ্কিত কন্ঠস্বর থরথর করে।

–দেশের মধ্যে তো থাকতে পারব না। ওরা সবখানেই আক্রমণ করবে।

–আমরা কি ওদের ছেড়ে দিব নাকি?

–একদমই না। আমরাও ওদেরকে আক্রমণ করব। আমাদের জিততে হবে। স্বাধীনতা পেতে হবে।

–আমিও যুদ্ধ করব। আমিও অস্ত্র চালাতে শিখব।

–তুমি কি পারবে?

–পারব, পারব। পারবনা কেন? শেখালেই পারব।

–তোমাকে কে শেখাবে?

–এমন মানুষকে আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। আমরা তো একা না, অনেকেই যুদ্ধ করবে। আমাদের পুলিশবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে অস্ত্র চালানো শিখব।

–আমাকেও শেখাতে বলবে। তোমার কথা শুনলে ওরা একটু বেশি গুরুত্ব দেবে।

–তোমার এত কথা আমি নিজেও মানতে পারছি না।

–ঠিক আছে আর কথা বলব না।

রবিউল বলে, ভোরবেলা পর্যন্ত যদি বেঁচে থাকি তাহলে আমরা বাড়ি ছেড়ে চলে যাব। আগে ভারতে গিয়ে শরণার্থী হব।

আকাশী সঙ্গে সঙ্গে সায় দেয়, আমাদের চেনা-পরিচিত অনেকেই তো ভারতে চলে গেছে। আমরা ভেবেছিলাম দেশে থেকে যুদ্ধের জন্য কাজ করব। সেনা শয়তানরা এগিয়ে আসতে থাকবে। চলো আমরা ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যাই।

–দুলালকে জাগাবে না। ওকে ঘাড়ে তুলে নাও।

–আসমানীকে কি করবে? মেয়েটার সন্তান প্রসবের দিন ঘনিয়েছে। ওর জন্য আমার বেশি চিন্তা হচ্ছে।

–আমারও। আকাশী আবার কেঁদে ফেলে। তারপর বলে, আজকে ঘরে থাকি আমরা। জিনিসপত্র গুছিয়ে কাল সকালে বের হব। দেখি মারুফ আর আসমানী কি বলে। এই অবস্থায় আসমানী কি হাঁটতে পারবে?

–পারবে বলে তো মনে হয় না। মারুফকে বলে দেখি ও কোনো ব্যবস্থা করতে পারে কিনা।

–তাহলে এখন আর ওদেরকে ঘুম থেকে উঠাই না।

–হ্যাঁ, থাক। ওরা যখন উঠে উঠবে। আমরাও শুয়ে পড়ি।

দুজনে শুয়ে পড়ে। রাত্রি শেষ হয়ে আসছে। তবে ভোর হয়নি। দুজনের কারোই ঘুম আসে না। ওদের ভাবনায় ভেসে ওঠে যুদ্ধের ছবি। নিজেরা এখনো দেখেনি, কিন্তু অনবরত শুনতে পায় দেশের যুদ্ধের খবর। দেশজুড়ে সবার বুকের ভেতর রণধ্বনি। স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ-যুদ্ধ ধ্বনির তালে তালে বেজে ওঠে ডঙ্কা। বুকের ভেতর স্রোতের মতো বয়ে যায় শব্দরাজি।

পুড়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি-বাস্তুভিটা, ভিটার ওপর জমে থাকছে ছাই। শহীদ হচ্ছে শত শত মানুষ। পুলিশ-ইপিআর বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। নিরীহ সাধারণ মানুষ কিছু করতে পারছেনা। তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে ভারতে। ওরা শুনতে পায় ওখানে গিয়ে অনেক যুবক ছেলে যুদ্ধ করার জন্য ট্রেনিং নেয়। মুক্তিযোদ্ধা হয়ে ফিরে আসে দেশে। গড়ে উঠছে মুক্তিবাহিনী। মুক্তিবাহিনীর তোপের মুখে অনেক সময় পাকবাহিনীর ক্যাম্প উড়ে যায়। এইসব সাহসী ছেলেদের মাঝে নিজেদের শক্তি আবিষ্কার করে রবিউল-আকাশী। ওরা শরণার্থী হলে মারুফও যোদ্ধা হতে পারবে। আসমানী কীভাবে যাবে এই ভাবনায় নির্ঘুম রাত কেটে যায় দুজনের। টের পায়না যে বাইরে বেলা বেশ বেড়েছে।

আকাশী দরজা খুলে বের হলে দেখতে পায় মারুফ আর আসমানী বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে।

–কি রে কি করছিস?

–তোমার জন্য দাঁড়িয়ে আছি মা।

মারুফ এগিয়ে এসে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে। বলে, আম্মা আমাদের চলে যাওয়ার সময় হয়েছে। কাল রাতে গোলাগুলির শব্দ শুনেছি।

–কি করবে বাবা?

–আমি আজকেই একটা গরুর গাড়ি ঠিক করব। বর্ডার পর্যন্ত গরুর গাড়িতে যাব। ওখানে গিয়ে গাড়ি ছেড়ে দেব। বেনাপোল থেকে হেঁটে যশোর রোডে উঠব আমরা। ওখানে কয়েকদিন থেকে তারপর কোথায় যাব ঠিক করব।

–ঠিক আছে বাবা, তুমি যা বল তাই হবে। আমি রান্নাঘরে যাই তোমার জন্য পান্তাভাতের ব্যবস্থা করি। ডিম ভাজি করব। তোমরা হাতমুখ ধুয়ে আস।
আসমানী হাসতে হাসতে বলে, ভোরের বাতাসে আমার হাতমুখ ধোওয়া হয়ে গেছে।

–মাগো যাও পানি দিয়ে ধুয়ে আস। ভোরের বাতাস তো ঠান্ডা বাতাস হওয়ার কথা না।

–হ্যাঁ, মা আজকের বাতাস গরম ছিল। তুমি কি করে বুঝলে?

–সারারাত পাকিস্তানি শয়তানরা ঘরবাড়ি পুড়িয়েছে।

–বুঝেছি। আমরা হাতমুখ ধুয়ে আসছি।

দুজনে উঠোনে নেমে যায়। আকাশী রান্নাঘরে আসে। থালায় পান্তা বেড়ে ডিম ভাজি করে। আলুভাজি গরম করে বাটিতে গোছায়। দুজনের জন্য মাদুর বিছিয়ে দেয় রান্নাঘরে। গ্লাসে পানি ঢালে কলসি থেকে। তখন দুজনে রান্নাঘরে ঢোকে। মাদুরে বসে মারুফ বলে, আম্মা আমি ভাত খেয়েই গরুর গাড়ি দেখতে যাব। আপনারা ঘর গুছিয়ে ফেলবেন।

আসমানী চেঁচিয়ে ওঠে, ঘর গুছিয়ে কি হবে। ঘর তো লুটপাট করবে, তারপরে পোড়াবে।

–না গো মা, ও বলেছে আমরা যাওয়ার সময় কী নেব, তা গুছিয়ে নিতে। আমি তো সারাদিনের জন্য খাবার গোছাব। চাল, ডালও নেব। শরণার্থী শিবিরে গেলে সঙ্গে সঙ্গে কেউ কি খাবার দেবে আমাদেরকে, সেজন্য সঙ্গে কিছু রাখতে হবে।

–আচ্ছা মা, আমি কাপড় গোছাব।
তখন রান্নাঘরের দরজায় এসে দাঁড়ায় রবিউল।

–বাবা, এতক্ষণে তোমার ঘুম ভাঙলো।

–না গো মা, অর্ধেক রাতের পর থেকে আমরা জেগে ছিলাম। আমি অনেক আগেই উঠেছি। কাপড়চোপড় গুছিয়ে নিয়েছি। আমরা আজকেই বাড়ি ছেড়ে চলে যাব। তোরাও তৈরি হয়ে নে।

–আব্বা আমি একটি গরুর গাড়ি খুঁজতে যাচ্ছি।

–হ্যাঁ, যাও বাবা। না পেলে তাড়াতাড়ি চলে এসো। আমরা হেঁটেই রওনা দেব।

–আচ্ছা আব্বা, আমি দেরি করবনা। তাড়াতাড়ি আসব।

বেরিয়ে যায় মারুফ। আসমানী নিজের ঘরে যায়। গর্ভবতী অবস্থায় কীভাবে হাঁটবে বুঝতে পারেনা। ঘরে ঢুকে নানা কাপড় বেঁধে একটি পোটলা বানায়। রবিউল রান্নাঘরে পান্তভাত খেতে বসে। গপগপিয়ে খেতে খেতে বলে, তাড়াতাড়ি কাজ শেষ কর। বেরিয়ে যাব আমরা।

–মেয়েটাকে নিয়ে আমি চিন্তায় আছি।

–সাহস রাখ মনে। এত চিন্তার দরকার নাই।

আকাশী চুপ করে যায়। ভাবে, রবিউলতো ঠিক বলেছে। রাস্তায় যা কিছু ঘটবে তা সাহসের সঙ্গে সামলাতে হবে।

রবিউল ভাত খেয়ে উঠে চলে যায়। আকাশী রান্নাঘর থেকে যা নেবার তা গুছিয়ে নিয়ে বেরিয়ে আসে। দরজায় তালা লাগিয়ে দেয়। আসমানীও নিজের প্রস্তুতি শেষ করেছে। কিছুক্ষণ পরে ফিরে আসে মারুফ। বলে, গরুর গাড়ি পাওয়া যাচ্ছেনা। চলেন আমরা হেঁটে রওনা করি। রাস্তায় দেখলাম অনেক লোকজন যাচ্ছে। একজন আমাকে ডেকে বলল, ঘরে বসে পুড়ে মরার চেয়ে অথবা গুলি খেয়ে মরার চেয়ে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে শরণার্থী হওয়া ভালো। ওখানে গিয়ে যুদ্ধ করার প্রস্তুতিও নিতে পারব। এজন্য আমি আর গরুর গাড়ির অপেক্ষায় না থেকে চলে এসেছি।

রবিউল সঙ্গে সঙ্গে সায় দেয়, হ্যাঁ ভালো করেছ। চলো আমরা যাত্রা শুরু করি। হাঁটতে হাঁটতে চারদিকে খোঁজ-খবর রাখব যাতে কোথাও গরুর গাড়ি পাওয়া যায়।

আসমানী মৃদুস্বরে বলে, মাগো আমি কি হাঁটতে পারব? আমারতো এই মাসেই প্রসব হওয়ার কথা।

–মা রে, আমি তো জানি। তারপরও শরণার্থী ক্যাম্পে পৌঁছে গেলে তোর ব্যথা উঠলে একটা কিছু করতে পারব। মন খারাপ করবিনা। ওদের কিছু বলবিনা।

–আচ্ছা মা, চলো। যা হবার হবে। সামাল দিতে পারাটাই হবে জরুরি কাজ। পরক্ষণে নিজে নিজে ভাবে, বাচ্চাটা বের হওয়ার সময় হলে সামাল দেয়ার সাধ্য ওর থাকবেনা। তখন কি পথের মধ্যে আর ভাবতে পারেনা আসমানী। সবার সঙ্গে হাঁটতে শুরু করে।

মারুফ বলে, বেনাপোল পার হলে ভারত। সেখান থেকে শুরু হয়েছে যশোর রোড। অনেকের কাছে শুনেছি যশোর রোডে শরণার্থীদের জন্য ক্যাম্প করা হয়েছে। ওখানে গেলেই আমরা ঠাঁই পাব মা। তখন আসমানীকে নিয়ে আপনি ক্যাম্পে থাকবেন। আমি আর আব্বা খাবার খুঁজব।

–আচ্ছা বাবা। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা হবে। চলো আগে।

(চলবে)

এসএ/

Header Ad
Header Ad

নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা

ছবি: সংগৃহীত

রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মুখোমুখি লড়াই মানেই ফুটবল দুনিয়ায় বাড়তি উত্তেজনা। স্প্যানিশ ফুটবলের এই দুই মহারথীর লড়াই কেবল মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এতে মিশে আছে স্পেন ও কাতালুনিয়ার জাতিসত্ত্বার লড়াই এবং রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধের ইতিহাসও।

এবারের কোপা দেল রে ফাইনালে (শনিবার দিবাগত রাত ২টা, বাংলাদেশ সময়) আবার মুখোমুখি হচ্ছে রিয়াল ও বার্সা। তবে এবারের লড়াইয়ে যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। রেফারিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে অস্থিরতা। সেভিয়ায় ফাইনালের আগে নির্ধারিত অনুশীলন করেনি রিয়াল, সংবাদ সম্মেলনেও আসেননি কোচ ও খেলোয়াড়রা। এমনকি দুই ক্লাবের কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজেও থাকছেন না রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। গুঞ্জন উঠেছিল, রিয়াল হয়তো ফাইনাল বয়কটও করতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা খেলবে।

এদিকে, বার্সেলোনার সামনে রয়েছে ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখার চ্যালেঞ্জ। লা লিগায় শীর্ষে থাকা বার্সা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালেও জায়গা করে নিয়েছে। কোপা দেল রে শিরোপা তাদের ট্রেবল যাত্রার প্রথম ধাপ হতে পারে।

 

ছবি: সংগৃহীত

বার্সার জন্য দুঃসংবাদ, ইনজুরির কারণে দলের নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কি এই ফাইনালে খেলতে পারবেন না। তার জায়গায় শুরুতে দেখা যেতে পারে ফেরান তোরেসকে। তবে দলের বাকিরা সুস্থ ও প্রস্তুত রয়েছেন। লিগের শেষ ম্যাচে অধিকাংশ মূল খেলোয়াড় বিশ্রামে থাকায় বার্সেলোনা কিছুটা সতেজ ভাবেই নামবে মাঠে।

রিয়াল মাদ্রিদেও রয়েছে ইনজুরি সমস্যা। দলের ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপে চোটে পড়েছিলেন আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যাচে। শেষ মুহূর্তে তার ফিটনেস দেখে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ডিফেন্ডার ফার্লান্দ মেন্ডি ফাইনালে থাকছেন না, এটা নিশ্চিত।

এখন পর্যন্ত সামগ্রিক এল ক্লাসিকোতে রিয়াল মাদ্রিদ এগিয়ে—১০৫ জয়। বার্সেলোনা জয় পেয়েছে ১০২ ম্যাচে। তবে কোপা দেল রে’র ইতিহাসে এগিয়ে আছে বার্সা। ৩৭ দেখায় বার্সা জিতেছে ১৬ ম্যাচ, রিয়াল ১৩টি। ৮ ম্যাচ ছিল ড্র।

তবে কোপা দেল রে’র ফাইনালে ৭ বার এল ক্লাসিকো অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে রিয়াল জিতেছে ৪ বার এবং বার্সা ৩ বার।

চলতি মৌসুমে দুই দলের দুই দেখায় দুটিতেই বার্সেলোনা জয়ী হয়েছে—লা লিগায় ৪-০ এবং সুপারকোপা দে এস্পানার ফাইনালে ৫-২ ব্যবধানে।

 

স্টেডিয়াম: দে লা কার্তুহা, সেভিল
সময়: বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত ২টা

 

Header Ad
Header Ad

মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার মুরাদনগরে নাঈম সরকার (১৯) নামের এক যুবককে মাদকাসক্তির কারণে ত্যাজ্য ঘোষণা করেছেন তার বাবা মফিজুল ইসলাম। ছেলের মাদকাসক্তি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

মফিজুল ইসলাম উপজেলার কোম্পানীগঞ্জের নগরপাড় এলাকার বাসিন্দা। তিনি বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কুমিল্লা নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এক হলফনামার মাধ্যমে ছেলে নাঈমের সঙ্গে পারিবারিক, সামাজিক ও আর্থিক সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেন।

হলফনামায় মফিজুল উল্লেখ করেন, নাঈম একাদশ শ্রেণির ছাত্র হলেও দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। সে মদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশাজাত দ্রব্যে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এতে পরিবারে প্রতিনিয়ত অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছিল। গভীর রাতে বাড়ি ফেরা, মা-বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা এবং নানা অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েছিল নাঈম। পরিবারের মান-মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মফিজুল ইসলাম বলেন, "সন্তানের এমন বিপথগামী আচরণে আমি অত্যন্ত মর্মাহত। বহু চেষ্টা করেও তাকে সঠিক পথে ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছি। অবশেষে পরিবার ও সমাজের সম্মান রক্ষার্থে তার সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য হয়েছি।"

Header Ad
Header Ad

গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে ক্রমাগত গরম বাড়ছে। সামনে তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে লোডশেডিং ও ভোগান্তি বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে সাধারণ মানুষ। তবে এ নিয়ে আশার খবর দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেন, "এবারের গরমে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। আমরা সীমিত পর্যায়ে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছি। আমাদের প্রজেকশনে ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে। আশা করছি, অনেকটাই ম্যানেজ করতে পারবো।"

শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টারস বাংলাদেশ (এফইআরবি) আয়োজিত 'জ্বালানি সংকট উত্তরণের পথ' শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে উপদেষ্টা আরও জানান, লোডশেডিংয়ের ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করা হবে। জ্বালানি আমদানি করে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে হবে। এলএনজি আমদানির ক্ষেত্রে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সরকারের মেয়াদ স্বল্প হওয়ায় কাজের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, "জ্বালানির ক্ষেত্রে যেকোনো কাজ সম্পন্ন করতে সময় লাগে। আমরা এমন কিছু হাতে নিচ্ছি না, যা সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বকেয়া পরিশোধে। বিল পরিশোধ না করলে কোনো দেশ ব্যবসা করবে না।"

তিনি আরও জানান, আগামী দুই মাসের মধ্যে সিস্টেম লস ৫০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লাইন লিকেজ ও গ্যাস চুরির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্পে অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ও কমিয়ে আনা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আগামী বছর আর কোনো বকেয়া থাকবে না, শুধুমাত্র কারেন্ট পেমেন্ট দিতে হবে। ভর্তুকি বাড়বে না, বরং কমবে। আমরা যে সংকটের গহ্বরে পড়েছিলাম, সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি।"

সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়ে উপদেষ্টা জানান, বিট নিলামে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন শেষে পুনরায় রি-টেন্ডার করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক
সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলাওয়াল ভুট্টো
অন্য নারীতে মজেছেন সৃজিত! মিথিলা কোথায়?
৪ মাসে কুরআনের হাফেজ হলেন ১০ বছরের অটিস্টিক শিশু আহমাদ
রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন বেহাত না হয়: আলী রীয়াজ
১৪ ব্যাংকে ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর, যা বললেন বিসিবি সভাপতি
কাশ্মীর সীমান্তে ফের গোলাগুলি, মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান সেনা
বাইরে থেকে ফিরেই ঠান্ডা গোসল? সাবধান! এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে বিপদ
কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান-ভারত পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি
আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
নিজ দেশেই বিমান হামলা চালালো ভারত, ‘অসাবধানতা’ বলছে বিমান বাহিনী
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৮৪ ফিলিস্তিনি
আইনি নোটিশ প্রসঙ্গে যা বললেন ডা. তাসনিম জারা