শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

গভীর রাতে গুলির শব্দে ঘুম ভেঙে যায় আকাশী আর রবিউলের। আচমকা ঘুম ভেঙে গেলে দুজনে দুজনকে গভীরভাবে জড়িয়ে ধরে। প্রথমে শব্দ বেশ দূরে হচ্ছিল। আস্তে আস্তে কাছের দিকে এগিয়ে আসে ঝাঁক ঝাঁক গুলির শব্দ। ওদের মনে হয়–পাকিস্তানি বাহিনী বোধহয় সামনের দিকে এগিয়ে এসেছে। তবে একদম বাড়ির কাছে নয়।

দুজনে কান পেতে রাখে। বাইরে কোনো পাখির ডাক নেই। রাতে ঘুমানোর আগে দুজনে বারান্দায় বসে পাখির ডাক শোনে। রাতের নীরবতায় দুজনের কাছে পাখির ডাক মধুরতম সঙ্গীত।

রবিউল বলে, ছোটবেলায় ঘুমানোর আগে মা ঘুম পাড়াতো ‘ঘুমপাড়ানি মাসী-পিসী মোদের বাড়ি এসো’ বলে। মায়ের কাছ থেকে এটুকু না শুনলে আমার ঘুম আসতো না। এখন পাখির ডাক না শুনলে ঘুম আসে না। অনেকক্ষণ বিছানায় গড়াগড়ি করলে তারপর ঘুমিয়ে পড়ি।

এমন কথা ওর বন্ধুরা সবাই জানে। আকাশী ওর এমন আচরণে ভালোবাসায় গুটিয়ে পড়ে। নিজেরও ভালোলাগে পাখির ডাক শুনতে। গুলির শব্দে আতঙ্কিত দুজনে বিছানায় উঠে বসে।

রবিউল বলে, আমাদের গ্রামে পাকবাহিনী ঢুকেছে। নাহলে এত রাতে গুলি করবে কে?

আকাশী বলে, চলো বের হয়ে দেখি। লণ্ঠন জ্বালাবো না। অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকবো।

রবিউল সায় দেয়, হ্যাঁ, চলো। উঠোনের বাইরে যাব না।

আমিতো মনে করি বারান্দার নিচে নামব না। দুলাল ঘুমিয়ে আছে। যদি জেগে ওঠে সেজন্য।

আসমানীর ঘরে যেতে হবে ও কি করছে দেখার জন্য। মেয়েটা গর্ভবতী। বাচ্চা হওয়ার জন্য মায়ের কাছে এসেছে। আকাশীর খুব চিন্তা হয়। এই অবস্থায় যদি বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয় তবে কি করবে মেয়েকে নিয়ে? চোখে পানি আসে। ভয়ে মুষড়ে পড়ে। চোখের পানি মুছতে মুছতে চৌকি থেকে নেমে দাঁড়ায় আকাশী। বুঝতে পারে গুলির শব্দ আর এগিয়ে আসছে না।

রবিউল বলে, আজকে বোধহয় ওরা ধনিয়া গ্রাম পর্যন্ত এসেছে। কাল হয়তো আমাদের এদিকে আসবে।

–থাক, থাক এসব কথা আর চিন্তা করার দরকার নাই। চলো বাইরে যাই।

দুজনে দরজা খুলে বাইরে এসে দেখতে পায় দাউদাউ আগুন জ্বলছে চারদিকে। বিভিন্ন দিকে বাড়িঘর পুড়ছে।

–হায়, হায় কত মানুষকে যে মেরে ফেলল কে জানে? সবাই কি আগুন লাগার আগে বের হতে পেরেছে?

আকাশীর চোখ আবার পানিতে ভরে যায়। দু’হাতে চোখ মুছে বলে, যারা ঘরের আগুন টের পায়নি তারা তো পুড়ে শেষ।

রবিউল বলে, ভোরবেলা পর্যন্ত যদি বেঁচে থাকি তাহলে আমরা বাড়ি ছেড়ে চলে যাব।

–কোথায় যাব? আকাশীর আতঙ্কিত কন্ঠস্বর থরথর করে।

–দেশের মধ্যে তো থাকতে পারব না। ওরা সবখানেই আক্রমণ করবে।

–আমরা কি ওদের ছেড়ে দিব নাকি?

–একদমই না। আমরাও ওদেরকে আক্রমণ করব। আমাদের জিততে হবে। স্বাধীনতা পেতে হবে।

–আমিও যুদ্ধ করব। আমিও অস্ত্র চালাতে শিখব।

–তুমি কি পারবে?

–পারব, পারব। পারবনা কেন? শেখালেই পারব।

–তোমাকে কে শেখাবে?

–এমন মানুষকে আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। আমরা তো একা না, অনেকেই যুদ্ধ করবে। আমাদের পুলিশবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে অস্ত্র চালানো শিখব।

–আমাকেও শেখাতে বলবে। তোমার কথা শুনলে ওরা একটু বেশি গুরুত্ব দেবে।

–তোমার এত কথা আমি নিজেও মানতে পারছি না।

–ঠিক আছে আর কথা বলব না।

রবিউল বলে, ভোরবেলা পর্যন্ত যদি বেঁচে থাকি তাহলে আমরা বাড়ি ছেড়ে চলে যাব। আগে ভারতে গিয়ে শরণার্থী হব।

আকাশী সঙ্গে সঙ্গে সায় দেয়, আমাদের চেনা-পরিচিত অনেকেই তো ভারতে চলে গেছে। আমরা ভেবেছিলাম দেশে থেকে যুদ্ধের জন্য কাজ করব। সেনা শয়তানরা এগিয়ে আসতে থাকবে। চলো আমরা ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যাই।

–দুলালকে জাগাবে না। ওকে ঘাড়ে তুলে নাও।

–আসমানীকে কি করবে? মেয়েটার সন্তান প্রসবের দিন ঘনিয়েছে। ওর জন্য আমার বেশি চিন্তা হচ্ছে।

–আমারও। আকাশী আবার কেঁদে ফেলে। তারপর বলে, আজকে ঘরে থাকি আমরা। জিনিসপত্র গুছিয়ে কাল সকালে বের হব। দেখি মারুফ আর আসমানী কি বলে। এই অবস্থায় আসমানী কি হাঁটতে পারবে?

–পারবে বলে তো মনে হয় না। মারুফকে বলে দেখি ও কোনো ব্যবস্থা করতে পারে কিনা।

–তাহলে এখন আর ওদেরকে ঘুম থেকে উঠাই না।

–হ্যাঁ, থাক। ওরা যখন উঠে উঠবে। আমরাও শুয়ে পড়ি।

দুজনে শুয়ে পড়ে। রাত্রি শেষ হয়ে আসছে। তবে ভোর হয়নি। দুজনের কারোই ঘুম আসে না। ওদের ভাবনায় ভেসে ওঠে যুদ্ধের ছবি। নিজেরা এখনো দেখেনি, কিন্তু অনবরত শুনতে পায় দেশের যুদ্ধের খবর। দেশজুড়ে সবার বুকের ভেতর রণধ্বনি। স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ-যুদ্ধ ধ্বনির তালে তালে বেজে ওঠে ডঙ্কা। বুকের ভেতর স্রোতের মতো বয়ে যায় শব্দরাজি।

পুড়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি-বাস্তুভিটা, ভিটার ওপর জমে থাকছে ছাই। শহীদ হচ্ছে শত শত মানুষ। পুলিশ-ইপিআর বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। নিরীহ সাধারণ মানুষ কিছু করতে পারছেনা। তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে ভারতে। ওরা শুনতে পায় ওখানে গিয়ে অনেক যুবক ছেলে যুদ্ধ করার জন্য ট্রেনিং নেয়। মুক্তিযোদ্ধা হয়ে ফিরে আসে দেশে। গড়ে উঠছে মুক্তিবাহিনী। মুক্তিবাহিনীর তোপের মুখে অনেক সময় পাকবাহিনীর ক্যাম্প উড়ে যায়। এইসব সাহসী ছেলেদের মাঝে নিজেদের শক্তি আবিষ্কার করে রবিউল-আকাশী। ওরা শরণার্থী হলে মারুফও যোদ্ধা হতে পারবে। আসমানী কীভাবে যাবে এই ভাবনায় নির্ঘুম রাত কেটে যায় দুজনের। টের পায়না যে বাইরে বেলা বেশ বেড়েছে।

আকাশী দরজা খুলে বের হলে দেখতে পায় মারুফ আর আসমানী বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে।

–কি রে কি করছিস?

–তোমার জন্য দাঁড়িয়ে আছি মা।

মারুফ এগিয়ে এসে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে। বলে, আম্মা আমাদের চলে যাওয়ার সময় হয়েছে। কাল রাতে গোলাগুলির শব্দ শুনেছি।

–কি করবে বাবা?

–আমি আজকেই একটা গরুর গাড়ি ঠিক করব। বর্ডার পর্যন্ত গরুর গাড়িতে যাব। ওখানে গিয়ে গাড়ি ছেড়ে দেব। বেনাপোল থেকে হেঁটে যশোর রোডে উঠব আমরা। ওখানে কয়েকদিন থেকে তারপর কোথায় যাব ঠিক করব।

–ঠিক আছে বাবা, তুমি যা বল তাই হবে। আমি রান্নাঘরে যাই তোমার জন্য পান্তাভাতের ব্যবস্থা করি। ডিম ভাজি করব। তোমরা হাতমুখ ধুয়ে আস।
আসমানী হাসতে হাসতে বলে, ভোরের বাতাসে আমার হাতমুখ ধোওয়া হয়ে গেছে।

–মাগো যাও পানি দিয়ে ধুয়ে আস। ভোরের বাতাস তো ঠান্ডা বাতাস হওয়ার কথা না।

–হ্যাঁ, মা আজকের বাতাস গরম ছিল। তুমি কি করে বুঝলে?

–সারারাত পাকিস্তানি শয়তানরা ঘরবাড়ি পুড়িয়েছে।

–বুঝেছি। আমরা হাতমুখ ধুয়ে আসছি।

দুজনে উঠোনে নেমে যায়। আকাশী রান্নাঘরে আসে। থালায় পান্তা বেড়ে ডিম ভাজি করে। আলুভাজি গরম করে বাটিতে গোছায়। দুজনের জন্য মাদুর বিছিয়ে দেয় রান্নাঘরে। গ্লাসে পানি ঢালে কলসি থেকে। তখন দুজনে রান্নাঘরে ঢোকে। মাদুরে বসে মারুফ বলে, আম্মা আমি ভাত খেয়েই গরুর গাড়ি দেখতে যাব। আপনারা ঘর গুছিয়ে ফেলবেন।

আসমানী চেঁচিয়ে ওঠে, ঘর গুছিয়ে কি হবে। ঘর তো লুটপাট করবে, তারপরে পোড়াবে।

–না গো মা, ও বলেছে আমরা যাওয়ার সময় কী নেব, তা গুছিয়ে নিতে। আমি তো সারাদিনের জন্য খাবার গোছাব। চাল, ডালও নেব। শরণার্থী শিবিরে গেলে সঙ্গে সঙ্গে কেউ কি খাবার দেবে আমাদেরকে, সেজন্য সঙ্গে কিছু রাখতে হবে।

–আচ্ছা মা, আমি কাপড় গোছাব।
তখন রান্নাঘরের দরজায় এসে দাঁড়ায় রবিউল।

–বাবা, এতক্ষণে তোমার ঘুম ভাঙলো।

–না গো মা, অর্ধেক রাতের পর থেকে আমরা জেগে ছিলাম। আমি অনেক আগেই উঠেছি। কাপড়চোপড় গুছিয়ে নিয়েছি। আমরা আজকেই বাড়ি ছেড়ে চলে যাব। তোরাও তৈরি হয়ে নে।

–আব্বা আমি একটি গরুর গাড়ি খুঁজতে যাচ্ছি।

–হ্যাঁ, যাও বাবা। না পেলে তাড়াতাড়ি চলে এসো। আমরা হেঁটেই রওনা দেব।

–আচ্ছা আব্বা, আমি দেরি করবনা। তাড়াতাড়ি আসব।

বেরিয়ে যায় মারুফ। আসমানী নিজের ঘরে যায়। গর্ভবতী অবস্থায় কীভাবে হাঁটবে বুঝতে পারেনা। ঘরে ঢুকে নানা কাপড় বেঁধে একটি পোটলা বানায়। রবিউল রান্নাঘরে পান্তভাত খেতে বসে। গপগপিয়ে খেতে খেতে বলে, তাড়াতাড়ি কাজ শেষ কর। বেরিয়ে যাব আমরা।

–মেয়েটাকে নিয়ে আমি চিন্তায় আছি।

–সাহস রাখ মনে। এত চিন্তার দরকার নাই।

আকাশী চুপ করে যায়। ভাবে, রবিউলতো ঠিক বলেছে। রাস্তায় যা কিছু ঘটবে তা সাহসের সঙ্গে সামলাতে হবে।

রবিউল ভাত খেয়ে উঠে চলে যায়। আকাশী রান্নাঘর থেকে যা নেবার তা গুছিয়ে নিয়ে বেরিয়ে আসে। দরজায় তালা লাগিয়ে দেয়। আসমানীও নিজের প্রস্তুতি শেষ করেছে। কিছুক্ষণ পরে ফিরে আসে মারুফ। বলে, গরুর গাড়ি পাওয়া যাচ্ছেনা। চলেন আমরা হেঁটে রওনা করি। রাস্তায় দেখলাম অনেক লোকজন যাচ্ছে। একজন আমাকে ডেকে বলল, ঘরে বসে পুড়ে মরার চেয়ে অথবা গুলি খেয়ে মরার চেয়ে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে শরণার্থী হওয়া ভালো। ওখানে গিয়ে যুদ্ধ করার প্রস্তুতিও নিতে পারব। এজন্য আমি আর গরুর গাড়ির অপেক্ষায় না থেকে চলে এসেছি।

রবিউল সঙ্গে সঙ্গে সায় দেয়, হ্যাঁ ভালো করেছ। চলো আমরা যাত্রা শুরু করি। হাঁটতে হাঁটতে চারদিকে খোঁজ-খবর রাখব যাতে কোথাও গরুর গাড়ি পাওয়া যায়।

আসমানী মৃদুস্বরে বলে, মাগো আমি কি হাঁটতে পারব? আমারতো এই মাসেই প্রসব হওয়ার কথা।

–মা রে, আমি তো জানি। তারপরও শরণার্থী ক্যাম্পে পৌঁছে গেলে তোর ব্যথা উঠলে একটা কিছু করতে পারব। মন খারাপ করবিনা। ওদের কিছু বলবিনা।

–আচ্ছা মা, চলো। যা হবার হবে। সামাল দিতে পারাটাই হবে জরুরি কাজ। পরক্ষণে নিজে নিজে ভাবে, বাচ্চাটা বের হওয়ার সময় হলে সামাল দেয়ার সাধ্য ওর থাকবেনা। তখন কি পথের মধ্যে আর ভাবতে পারেনা আসমানী। সবার সঙ্গে হাঁটতে শুরু করে।

মারুফ বলে, বেনাপোল পার হলে ভারত। সেখান থেকে শুরু হয়েছে যশোর রোড। অনেকের কাছে শুনেছি যশোর রোডে শরণার্থীদের জন্য ক্যাম্প করা হয়েছে। ওখানে গেলেই আমরা ঠাঁই পাব মা। তখন আসমানীকে নিয়ে আপনি ক্যাম্পে থাকবেন। আমি আর আব্বা খাবার খুঁজব।

–আচ্ছা বাবা। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা হবে। চলো আগে।

(চলবে)

এসএ/

Header Ad

দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তারেক রহমান বলেন, সব রাজনৈতিক দল মিলে আমরা এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। দেশের মানুষের হাতে ক্ষমতা ফিরে যেতে নির্বাচন প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য আরও ২ বছর আগে সংস্কারের প্রস্তাব ৩১ দফা দিয়েছি আমরা। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। একজন শুরু করবে, আরেকজন টেনে নিয়ে যাবে। অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ও সত্যিকারের নির্বাচন আয়োজন করতে পারলে, জনগণ তবেই জনপ্রতিনিধি বাছাই করতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।

নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেকের মনে প্রশ্ন আমরা কেন বারবার নির্বাচনের কথা বলছি। আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে। এর ফলে সংসদের যারা জনপ্রতিনিধি বাছাই হয়ে আসবে, তারা সংসদে বসে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, কীভাবে দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরের সমস্যা সমাধান করা যায়। সকল সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব প্রকৃত ও সত্যিকারের একটি নির্বাচনের মাধ্যমে।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দায়িত্ব নিতে হলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে আশপাশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। যদি এই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারা যায়, তবেই মানুষ আপনাদের দায়িত্ব দিবে, অন্যথায় দ্বিতীয়বার ভাববে।

এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপি খুলনা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. শরীফুজ্জামান শরীফ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ।

Header Ad

২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা

ফাইল ছবি

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে

রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া আগামী পাঁচদিনে আবহাওয়া পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

Header Ad

অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের

ছবি: সংগৃহীত

গত অক্টোবর মাসে দেশজুড়ে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৩৪টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৭৫ জন এবং আহত হয়েছেন ৮৭৫ জন। এরমধ্যে ৪৫২টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭৫ জন এবং আহত হয়েছেন ৮১৫ জন। একই সময়ে রেলপথে ৬৩টি দুর্ঘটনায় ৭৬ নিহত, ২৪ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১৯টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত, ৩৬ জন আহত এবং ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

এছাড়া এই সময়ে ১৩৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৩ জন নিহত, ২৩৯ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩০.৫৩ শতাংশ, নিহত ৩৪.৩১ শতাংশ ও আহত ২৯.৩২ শতাংশ।

শনিবার (২৩ অক্টোবর) সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। সংগঠনটি বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয়, আঞ্চলিক, অনলাইন এবং ইলেক্ট্রনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ-পথের সংগঠিত দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৭ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৪৯ চালক, ১৩৭ পথচারী, ৫১ পরিবহন শ্রমিক, ৭৩ শিক্ষার্থী, ১৮ শিক্ষক, ৭৬ নারী, ৬২ শিশু, ৫ চিকিৎসক, ৯ সাংবাদিক এবং ১৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছে ৬ জন পুলিশ সদস্য, ৩ সেনা সদস্য, ১ আনসার সদস্য, ১২৪ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ১১৭ জন পথচারী, ৫৮ জন নারী, ৫১ জন শিশু, ৪৯ জন শিক্ষার্থী, ৩২ জন পরিবহন শ্রমিক, ১৫ জন শিক্ষক, ৪ জন চিকিৎসক, ৬ জন সাংবাদিক, ১৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৬৩১টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৪.৪১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২.৫০ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৮.৫৪ শতাংশ বাস, ১৭.৯১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৩.৯৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৬.৬৫ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬.০২ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪৯.৪৮ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৫.২৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৪.৭৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৯.৫১ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০.২৫ শতাংশ ট্রেন যাববাহনে সংঘর্ষ। এবং চাকায় ওড়না পেছিয়ে ০.৭৫ শতাংশ।

সেপ্টেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— দেশের সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশের অনুপস্থিতি সুযোগে আইন লঙ্ঘন করে যানবাহনের অবাধ চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় এবং অতি বৃষ্টির কারণে সড়কের মাঝে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়া; এসব গর্তের কারণে যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে; জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টানিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে; মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন এবং অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানোকে।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে— জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মত ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান; ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন যথাযতভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা; উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেফটি অডিট করা; মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়ক দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার