সোমবার, ১৩ মে ২০২৪ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৭

বিষাদ বসুধা

স্বাস্থ্যমন্ত্রী পাগলের মতো সাহেদ করিমকে খুঁজছেন। সাহেদ তাকে কথা দিয়েছিল যে, মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিডিয়াতে আর কোনো রিপোর্ট হবে না। অথচ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একের পর এক দুর্নীতির রিপোর্ট পত্রিকায় আসছে। পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির রিপোর্ট। সারাক্ষণ তার মনের মধ্যে ভয়, এই বুঝি প্রধানমন্ত্রী তাকে ডেকে পাঠালেন! এই বুঝি তাকে চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে বলা হলো! মন্ত্রী কারও কাছে মুখ দেখাতে পারেন না। বাসায় পত্রিকা লুকিয়ে রাখেন। বউ ছেলে মেয়েদের কাছে ছোট হয়ে যাওয়ার ভয় তার। কিন্তু পত্রিকা লুকালে কী হবে? টিভিগুলির কী করবেন? টিভিগুলো যেন আরেক ডিগ্রি সরেষ। সেখানে খবর তো প্রচার করেই। খবরের পর পরই শুরু হয় টকশো। সেই টকশো বড়ই টক লাগে মন্ত্রীর কাছে। সেদিন পরিবারের সবাই মিলে টিভিতে খবর দেখতে বসে বড় লজ্জার মুখে পড়লেন মন্ত্রী। সংবাদের শুরুতেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির খবর! মন্ত্রীর হাতেই ছিল রিমোট কন্ট্রোল। হেডলাইন পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি অন্য চ্যানেলে চলে গেলেন। এক পর্যায়ে বন্ধই করে দিলেন।
মেহেরুন্নেসা বললেন, কি হলো? খবরটা দাও না!
না।
কেন?
খবরটা তিতা।
মেহেরুন্নেসা বিস্ময়ের দৃষ্টিতে মন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে রইলেন। কোনো খবরটা তিতা তা মনে করার চেষ্টা করলেন। কোনো একটা দুর্নীতির খবর! না। মনে করতে পারছেন না। তিনি মন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বললেন, রিমোটটা আমার কাছে দাও তো।
না। এখন থাক।

মেহেরুন্নেসা আবারও বিস্ময়ের দৃষ্টিতে মন্ত্রীর দিতে তাকিয়ে রইলেন। বাচ্চারা টিভির সামনে থেকে উঠে চলে গেল। মেহেরুন্নেসাও কিছুক্ষণ পর অন্য ঘরে চলে গেলেন। মন্ত্রী বসে রইলেন। দুশ্চিন্তার বোঝা ভারী হয়ে তার মাথায় চেপে বসে। তিনি মনে মনে ভাবেন, এভাবে লুকিয়ে তিনি কতদিন ঠেকিয়ে রাখবেন! একদিন না একদিন তো পরিবারের লোকরা জানবেন। তখন তাদের কাছে তিনি কীভাবে মুখ দেখাবেন!
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্যাচারা লোক খারাপ না। নিরেট ভদ্রলোক। তিনি নিজে দুর্নীতি করেন না। কিন্তু তার মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি কিছুতেই ঠেকাতে পারছেন না। আসলে তিনি প্রশাসনিকভাবে শক্ত লোক না। কাউকে কিছু বলতে পারেন না। শুরুতেই তিনি যদি শক্তভাবে হাল ধরতেন তাহলে নিয়ন্ত্রণ হয়তো করতে পারতেন। তার অদক্ষতার কারণেই দুর্নীতি করার সুযোগ পাচ্ছে। আসলে শুধু সৎ ভদ্রলোক হলেই চলে না। তাকে দক্ষ হতে হয়। প্রশাসনকে শক্ত হাতে চালাতে হয়। সেই কথা বার বার স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পছন্দ করেন বলে হয়তো এখনই চাকরিটা যাবে না। কিন্তু যেতে কতক্ষণ! তিনি আর যা-ই হোক, দুর্নীতি এবং দুশ্চরিত্র লোকদের দুই চোখে দেখতে পারেন না। কারও বিরুদ্ধে এই দুই ধরনের অভিযোগ উঠলে তার আর রক্ষা নেই। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি এক মুহূর্তও দেরি করেন না। এটা স্বাস্থ্যমন্ত্রী খুব ভালো করেই জানেন। তিনি এও জানেন, প্রধানমন্ত্রী পত্রিকার কাটিং নয়; প্রতিদিন পত্রিকার হার্ড কপি পড়েন। তার কাছে সবগুলো পত্রিকা যায়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির রিপোর্টগুলো তার নজর এড়াবে না।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী পত্রিকায় দুর্নীতির রিপোর্ট দেখে দাঁতে দাঁত চেপে বলেন, ইস! কয়েকদিন আগেও প্রধানমন্ত্রী ডেকে করোনা মোকাবিলার জন্য বড় একটা বাজেট দিয়েছেন। এখন প্রধানমন্ত্রী যদি ভাবেন, আমরা সবাই মিলে প্রধানমন্ত্রীর করোনার বাজেট নয়ছয় করছি! ছি ছি! এটা কোনো কাজ হলো!
কদিন ধরে দুশ্চিন্তায় মন্ত্রী ঘুমাতে পারেন না। তার স্ত্রী মেহেরুন্নেসা তাকে অস্থির দেখে বলেন, কী হয়েছে করিম? কী নিয়ে এত চিন্তা করছ? কোনো সমস্যা হয়েছে?
না। তেমন কিছু না।
তাহলে এমন করছ কেন?
কেমন করছি?
কেমন অস্থির লাগছে তোমাকে! মনে হচ্ছে, কোনো বিষয় নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তা করছ!
আমার কিছুই ভালো লাগছে না।
আমাকে খুলে বলো। কোনো অসুবিধা নেই। আমি তোমাকে হেল্প করব।
পরে বলব।
পরে কেন? প্রেমে ট্রেমে পড়নি!
মন্ত্রী এবার না হেসে পারলেন না। একটা ভয়ানক থমথমে পরিবেশকে মেহেরুন্নেসা হালকা করে দিলেন। কিছুক্ষণের পরেই তিনি বললেন, হাসছ কেন? তোমার এখন অনেক ক্ষমতা। সরকারের ডাকসাইটে মন্ত্রী! এখন তো দুধের মাছিরা তোমার কাছে ঘুরঘুর করবেই। আমি মেয়ে। তাই মেয়েদের আমি খুব ভালো করে চিনি।
মন্ত্রী নিজে আবার চিন্তার রাজ্যে ডুবে গেলেন। তিনি মনে মনে সাহেদ করিমকে খোঁজেন। চিন্তা করতে করতেই মোবাইল হাতে নিয়ে সাহেদ করিমকে ফোন করেন। না। তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। তার ফোন বন্ধ।

মন্ত্রী মনে মনে সাহেদ করিমকে গালমন্দ করেন। লোকটা একটা ভুয়া। কথা দিয়ে কথা রাখে না। বিপদের সময় পাশে থাকে না। আমার বিপদ থেকে সে বোধহয় কেটে পড়েছে। চরম বিরক্তি নিয়ে আবার টেলিফোনে সাহেদকে খোঁজেন।
কিছুক্ষণ পর মেহেরুন্নেসা আবার মন্ত্রীর কাছে গিয়ে বললেন, আজ পত্রিকা দেখেছ? স্ত্রীর কথা শুনে মন্ত্রী চমকে উঠলেন। বিস্ময়ের সঙ্গে তিনি বললেন, পত্রিকা! সকালে কখন দেখলে তুমি পত্রিকা! কী লিখেছে পত্রিকায়!
মন্ত্রীর চেয়েও বেশি বিস্মিত হলেন মেহেরুন্নেসা। তিনি ভাবতেও পারেননি মন্ত্রী তার কথায় এতটা বিস্ময় প্রকাশ করবেন। তার মানে কী! গত কয়েকদিন ধরে পত্রিকা পাচ্ছিলাম না কী কারণে? মন্ত্রী নিজেই কি লুকিয়ে রেখেছিলেন?
কিছুক্ষণ পর মেহেরুন্নেসা আবার বললেন, পত্রিকার কথা শুনে তুমি ওমন বিস্ময় প্রকাশ করলে কেন?
মন্ত্রী কথা ঘুরানোর জন্য বললেন, না মানে তুমি পত্রিকা কখন দেখলে?
আমি আজ অনেক আগেই ঘুম থেকে উঠেছি। জানো, গত কয়েকদিন ধরে পত্রিকা পাচ্ছিলাম না। তাই ভাবলাম আগে আগে উঠে আজ হকারকে ধরব। হাঁটতে যাওয়ার নাম করে নিচে হাঁটাহাঁটি করলাম।
মন্ত্রী আবারও বিস্ময়ভরা কণ্ঠে বললেন, তারপর! হকারকে পেলে?
হুম। হকারের কাছে জানতে চাইলাম, পত্রিকা সে ঠিকঠাক মতো দেয় কি না-
কী বলল?
বলল, ঠিকমতোই দিয়ে আসছে। কোনো রকম ত্রুটি করেনি। তাহলে পত্রিকাগুলো কোথায় গেল?
যাকগে, ওসব কথা রাখো। পত্রিকায় কী লিখেছে সেটা বলো।
মেহেরুন্নেসা সাহেদ করিম বলার সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্রী লাফিয়ে উঠলেন। বিস্ময় আর আতঙ্ক নিয়ে স্ত্রীর সামনে এগিয়ে গিয়ে বললেন, সাহেদ কী করেছে!
এত উত্তেজিত হচ্ছ কেন? বলছি।
আচ্ছা আচ্ছা...
তোমাদের সঙ্গে সাহেদ কোনো চুক্তি করেছিল নাকি!
হুম। করেছিল। করোনার ফ্রি টেস্ট করানোর বিষয়ে চুক্তি।
রিজেন্ট হাসপাতাল তো!
হুম।
এই দেখ তাকে নিয়ে পত্রিকায় কী লিখেছে।
পত্রিকা হাতে নিয়ে বিস্ময়ের দৃষ্টিতে মন্ত্রী তাকিয়ে রইলেন।

গণমাধ্যমে ব্যাপক লেখালেখির পর সাহেদ করিমকে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সরকারের সিদ্ধান্তের কথা পুলিশ ও র‌্যাবের উপর মহলকে জানিয়ে দেওয়া হয়। শুরু হয় অভিযান। সারাদেশে পুলিশ ও র‌্যাব তৎপর। তৎপর মিডিয়াও। প্রতিদিনই তাকে নিয়ে নানা ধরনের কার্টুনসহ প্রতিবেদন ছাপা হচ্ছে। তাতে বলা হচ্ছে, সাহেদেও পুরো ব্যবসাই দাঁড়িয়েছে মিথ্যার উপর। সে যে হাসপাতাল করেছে তার বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিলেও নিজের কোনো মিডিয়া নেই। অথচ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তার চলাফেরা, ওঠাবসা। তার দুই নম্বরি কাজকর্মেও খবর এখন পত্রিকায় উঠে আসছে। উঠে আসছে টিভির খবরের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে। তাকে নিয়ে টিভিগুলোতে থাকছে টকশো। সে এখন টক অব দ্য টাউন থেকে টক অব দ্য কান্ট্রি হয়ে গেছে। তাকে নিয়ে সর্বত্র আলোচনা। রাস্তাঘাটে, চায়ের দোকানে, পাড়ায় মহল্লায় আলোচনার তুফান উঠছে। ছেলে-বুড়ো সবাই বলছে, দেশে এখন একটাই ইস্যু, সাহেদ।

বাংলাদেশে এই হলো আরেক সমস্যা। যখন যে ইস্যু আসে সেই ইস্যুটি তিতা না হওয়া পর্যন্ত কচলাতেই থাকে। দেশে যেন আর কোনো ইস্যু নেই। কেন? যখন ইস্যুটি তৈরি হচ্ছিল তখন কেন ধরা হলো না? আগে কেন সবাই সাহেদকে নিয়ে এতো নাচানাচি করল। অনেকে বলেন, সাহেদকে ছাড়া নাকি কোনো কোনো টিভি চ্যানেলে টকশোই শুরু হয় না! বাপরে! এত ক্ষমতা সাহেদের! এখন সেই সাহেদ কোথায়?

সাহেদ করিমের সঙ্গে বড় সাংবাদিকদের ছবি গণমাধ্যম লুকোবার চেষ্টা করলেও ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ছড়িয়ে পড়ে মন্ত্রী-এমপিদের ছবিও। সেই ছবিগুলো ভাইরাল হয়ে যায়। অতি সাধারণ মানুষও জানে, সাহেদের সঙ্গে কারা ওঠাবসা করেছে। এখন গরু খোঁজার মতো সাহেদকে খোঁজা হচ্ছে। পেলেই তাকে সুলে চড়ানো হবে-এমন অবস্থা।
সাহেদ করিমের সৃষ্টি হলো কীভাবে সে কথা কিন্তু কেউ বলছে না।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

 

Header Ad

মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে বিসিবি সভাপতির হঠাৎ বৈঠক, অধিনায়ক বদলের গুঞ্জন!

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। ছবি: সংগৃহীত

পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগের চারটিতে হেরেছে সিকান্দার জিম্বাবুয়ে। তবে আজ শেষ ম্যাচে সান্ত্বনার জয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হোয়াইটয়াশ ঠেকিয়েছে সিকান্দার রাজার দল। এদিকে মাঠে খেলা গড়ানোর আগে যখন ক্রিকেটাররা প্রস্তুতি সারছিলেন; সে সময় অফিসিয়াল প্রেস কনফারেন্স ছাড়া মাঠের বাইরে কথা বলেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

শুধু তাই নয় এর বাইরেও বড় ঘটনা ঘটেছে হোম অব ক্রিকেটে অবস্থিত বিসিবি অফিস বিল্ডিংয়ে। সভাপতির কক্ষে বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের এক নীতি নির্ধারনী বৈঠকে বসেছিলেন বোর্ডের ১০ শীর্ষ কর্তা। সেই অনির্ধারিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন, সিইও নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন, সিনিয়র পরিচালক জালাল ইউনুস, অন্যতম পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিক, খালেদ মাহমুদ সুজন, ইফতেখার রহমান মিঠুসহ কয়েকজন।

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এবং বোর্ডের ৮- ৯ জন শীর্ষ পরিচালক বৈঠকে বসেছিলেন একজন সিনিয়র ক্রিকেটারকে নিয়ে।

জানা গেছে, বিসিবি সভাপতির কক্ষে একান্ত বৈঠকটি হয়েছে মূলত বোর্ড শীর্ষ কর্তা আর অন্যতম সিনিয়র ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াাদের মধ্যে। কিন্তু হঠাৎ কী এমন হলো যে, মাহমুদউল্লাহর সাথে বোর্ড নীতি নির্ধারকদের বৈঠক?

প্রেস বক্সে চাপা গুঞ্জন, প্রাণচাঞ্চল্য। এরই মধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়লো যে, নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটিং ফর্ম ভালো যাচ্ছেনা। বিসিবি সভাপতি পাপনও শান্তর ব্যাটিং নিয়ে খানিক অতৃপ্ত। তাই হয়তো শান্তর বদলে মাহমুদউল্লাহকে বিশ্বকাপে অধিনায়ক করার কথা ভাবছে বিসিবি। সেজন্যই রিয়াদকে ম্যাচ শেষে প্রেসিডেন্ট রুমে ডেকে নিয়ে একান্তে বসা।

পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ব্যাপারটা তা নয়। শান্তর ব্যাটিং ফর্ম নিয়ে যে কথা হয়নি, তা নয়। তবে অধিনায়ক রদবদলের কথা আলোচনা হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন শীর্ষ পরিচালক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, না, না। এ সময়ে এসে হঠাৎ অধিনায়ক পদে পরিবর্তন করা হবে কেন? শান্তর ক্যাপ্টেন্সি বদল নিয়ে কোনো কথা হয়নি।

ওই দুই পরিচালক জানান, আসলে রিয়াদ ভালো খেলেছে। এই বয়সেও নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে চলেছে। আজ প্রায় একাই লড়াই করেছে। তাই তাকে বাহবা দিতেই সঙ্গে নিয়ে বসা।

জানা গেছে, মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিংয়ের অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন বোর্ড পরিচালকরা। বিসিবি প্রধানও মাহমুদউল্লাহকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং এখনই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে সরে দাঁড়ানোর চিন্তা বা ঘোষণা না দেওয়ার পরামর্শও নাকি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অধিনায়ক শান্তকে সহায়তা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে বর্ষীয়ান এই ক্রিকেটারকে।

অন্তর্বাসে লুকানো থাকত ডিভাইস, ১০ মিনিটে শেষ হতো চাকরির পরীক্ষা

অন্তর্বাসে লুকানো ডিভাইসের সাহায্যে চাকরির পরীক্ষা, গ্রেপ্তার ৭। ছবি: সংগৃহীত

মেয়েদের অন্তর্বাসের মধ্যে এবং ছেলেদের গেঞ্জির মধ্যে লুকানো থাকতো অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইস। একই সঙ্গে কানেক্ট করে পরীক্ষার্থীর কানের মধ্যে রাখা হতো ক্ষুদ্রাকৃতির বল। প্রশ্নপত্রের উত্তর সমাধানের জন্য বাইরে থেকে কাজ করত আরেকটি চক্র। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে উত্তরপত্র সমাধান করে ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর জানিয়ে দেওয়া হতো পরীক্ষার্থীদের।

বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে উত্তর সরবরাহ করার সংঘবদ্ধ এই চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. জুয়েল খান (৪০), মো. রাসেল (৩০), মো. মাহমুদুল হাসান শাকিল (৩৯), মো. আব্দুর রহমান (৩৮), মো. আরিফুল ইসলাম (৩৫), মো. আজহারুল ইসলাম (২৯) এবং মো. মাসুম হাওলাদার (২৫)।

শনিবার (১১ মে) তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে থেকে বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত জিএসএম সুবিধা সম্বলিত ১০ টি অত্যাধুনিক ডিজিটাল ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস, ৭ টি মোবাইল ফোন ও ১০ টি সিম কার্ড এবং ১টি পকেট রাউটার জব্দ করা হয়।

চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ছবি: সংগৃহীত

রোববার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় পত্রফাঁস করে অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার প্রশ্ন উত্তর সাপ্লাই করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। প্রথমত তারা পরীক্ষা শুরুর ১ থেকে ২ মিনিট আগে পরীক্ষার কোনো না কোনো কেন্দ্রে ম্যানেজ করে প্রশ্নের কপি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বাইরে পাঠিয়ে দিত। বাইরে তাদের প্রশ্নপত্র সমাধান টিম পাঁচ মিনিটের মধ্যে প্রশ্ন সমাধান করে ফেলে। এরপর তারা উত্তরগুলো বলতে থাকে।

হারুন অর রশীদ বলেন, পরীক্ষার্থীর কাছে যে ক্ষুদ্র ডিভাইস থাকে সেটা পরীক্ষার্থীর কানের মধ্যে থাকে। আর পকেটের মধ্যে একটা রাউটার থাকে। অথবা মেয়েদের অন্তর্বাসের বা ছেলেদের গেঞ্জির মধ্যে লুকানো ডিভাইসের সঙ্গে কানেক্টেড একটা সিম রাখে। এরপর বাইরে থেকে যখনই টেলিফোন করে সাথে সাথে পরীক্ষার্থী শুনতে পায় এবং ১০ মিনিটের মধ্যে উত্তরগুলো সমাধান করে ফেলে।

ব্রিফ করছেন ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, দিন দিন এভাবে অপরাধের ধরন পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। এক সময় আমরা নকল প্রতিরোধের জন্য কাজ করেছি। সে সময় তারা পরীক্ষার হলে বই নিয়ে যেত। আমরাও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে ধরার জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করছি। এখন সর্বশেষ আমরা যেটা পেলাম সেটা হচ্ছে তারা ক্ষুদ্রাকৃতির বল ব্যবহার করছে এবং ডিভাইসটা এমন জায়গা রাখছে যেখানে ধরার কোন উপায় নেই।

তিনি আরও বলেন, চক্রের সদস্যরা প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ (তৃতীয় ধাপ), বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেট কালেক্টর (গ্রেড-২) ও বুকিং অ্যাসিসটেন্ট (গ্রেড-২), পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের অফিস সহায়ক, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, টাঙ্গাইলের অফিস সহায়ক, মৎস্য বিভাগের অফিস সহায়ক, গণপূর্তের হিসাব সহকারী ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সহকারী ব্যবস্থাপকসহ আরো বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় এ পন্থা অবলম্বন করেছে।

জব্দকৃত অন্তর্বাস, গেঞ্জি, ডিভাইস, মোবাইলফোন। ছবি: সংগৃহীত

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে জানা গেছে, গ্রেপ্তাররা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রার্থীদের সঙ্গে চুক্তি করে। চাকরি ভেদে এমসিকিউ লিখিত পরীক্ষায় টিকিয়ে দেওয়ার জন্য ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা এবং লিখিত ও ভাইভাসহ ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়ে থাকে।

ডিবিপ্রধান বলেন, চক্রের মূলহোতা জুয়েল খান বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত জিএসএম সুবিধা সম্বলিত ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস সংগ্রহ ও সরবরাহ, প্রশ্নপত্র সংগ্রহ, সমাধান টিমের সদস্য সংগ্রহ ও চক্রের অন্যান্যদের সাথে সমন্বয় করতেন। রাসেল, মাহমুদুল হাসান শাকিল এবং আব্দুর রহমান বিভিন্ন পরীক্ষার্থী সংগ্রহ এবং পরীক্ষার্থীদের কাছে ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ডিভাইসটি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে তার বিস্তারিত ব্যবহার বিধি শিখিয়ে দিতেন।

তিনি আর বলেন, আরিফুল ইসলাম পরীক্ষা কেন্দ্রের অভ্যন্তর থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর সুবিধামতো সময়ে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে হোয়্যাটসঅ্যাপের মাধ্যমে কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান করা চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে পৌঁছে দিতেন। এরপর তাদের সমাধান টিম অতিদ্রুত সেই প্রশ্নপত্র সমাধান করে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে তাদের নির্ধারিত পরীক্ষার্থীদের কাছে ডিজিটাল স্পাই ডিভাইসের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতো।

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আরাকান আর্মির গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত। ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের নাইক্ষ‌্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের সীমান্তের ৪৮ নম্বর পিলারের ওপারে আরাকান আর্মির গুলিতে আবুল কালাম (২৮) নামের এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন।

রবিবার (১২ মে) সকাল ৯টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ৪৮নং পিলারের ওপারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কালাম নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের বামহাতিরছড়ার মৃত বদিউজ্জামানের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, রোববার সকালে প্রতিদিনের ন্যায় মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির জন্য খাদ্যসামগ্রী নিয়ে সীমান্তের ৪৮নং পিলারের ওপারে ছেলির ঢালা নামক এলাকা দিয়ে মিয়ানমারের প্রায় দুই কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করে আবুল কালাম।খাদ্যসামগ্রী বুঝে দিয়ে ফেরার পথে আরকান বিদ্রোহীদের দখলকৃত আরাকান আর্মির ঘাঁটি বরাবর এলে তখন আরাকান আর্মির ডিউটিরত এক সদস্য চাঁদা ফাঁকি দেওয়ার বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আরকান আর্মির সেই দায়িত্বরত সদস্য আবুল কালামের মাথায় গুলি করে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আবুল কালাম নিহত হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে, সদর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার শামশুল আলম জানান, নিহত আবুল কালাম আমার এলাকার। তার লাশটি ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। তবে এ বিষয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে কোনো ধরনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজিবির এক কর্মকর্তা বলেন, আমরাও বিষয়টি শুনেছি। এখনও পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

সর্বশেষ সংবাদ

মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে বিসিবি সভাপতির হঠাৎ বৈঠক, অধিনায়ক বদলের গুঞ্জন!
অন্তর্বাসে লুকানো থাকত ডিভাইস, ১০ মিনিটে শেষ হতো চাকরির পরীক্ষা
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আরাকান আর্মির গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
বিএনপিকে নিশ্চিহ্নে ক্র্যাকডাউনের পরিকল্পনা করছে সরকার: রিজভী
নওগাঁয় ধান ব্যবসায়ী ও কৃষকদের ৩৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর সুপারিশের কার্যকারিতা নেই: শিক্ষামন্ত্রী
এসএসসির ফল পুনঃনিরীক্ষণ শুরু কাল, আবেদন করবেন যেভাবে
ভারতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কিডনি হাতিয়ে নিতো চক্রটি
উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর নির্দেশ ইসির
মারা গেলেন প্রথম শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনকারী সেই ব্যক্তি
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ: অধ্যক্ষের অপসারণ চান শিক্ষক-কর্মচারীরা
চামড়া ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে ঋণ পেতে সুপারিশ করা হবে: শিল্পমন্ত্রী
গোবিন্দগঞ্জে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
উড়ন্ত বিমান থেকে লাফ দেওয়ার হুমকি যাত্রীর, তারপর...
রাজশাহীর কোন আম কবে বাজারে আসবে জানালো জেলা প্রশাসন
আমরা যে উন্নয়নের রোল মডেল তৈরি করেছি তা এখানেই সীমাবদ্ধ না: নৌপ্রতিমন্ত্রী
এসএসসিতে ৫১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই ফেল
বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন ভেঙে সান্ত্বনার জয় পেল জিম্বাবুয়ে
বিয়ে করছেন ‘বিগ বস’ তারকা আবদু রোজিক
এসএসসিতে কোন বোর্ডে পাসের হার কত