শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫ | ১৫ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক

‘উরি আল্লাহ’ মুখ ফুটে বেরোনো কথাটাকে জিভ থেকে আবার টেনে পেটে নামাল নুহু। ওরা জানতে চায়ছে, আমরা রোহিঙ্গা কি না! তবে কি ওরা ভেক নিয়ে ছো মেরে বসে থাকা মায়ানমার-সেনা? লুন সানের ফৌজ?

রোহিঙ্গা! এই পরিচয়টার জন্যই আজ তাদের এই হাল। তাদের বেঁচে থাকাটাই লাটে উঠেছে। মাঝে মাঝে নুহুর মনে হয়, আল্লাহ তাদের এই রোহিঙ্গা না করে কোনো পোকামাকড় করে পাঠালেই পারতেন? কোনো বুনেঢ্যাঙর করেও পাঠাতে পারতেন। নুহু জানে, তাদের শরীরের হাড়ের কোনো দোষ নেই, তাদের শরীরের মাংসের কোনো দোষ নেই, তাদের নাক-চোখেরও কোনো দোষ নেই, যত দোষের মূলে হল এই একটাই পরিচয়, রোহিঙ্গা! এই রোহিঙ্গা পরিচয়টাকে কি গলা টিপে মারা যায় না? নুহু তার মনের এই ক্ষেদটা একবার বিড়ি টানতে টানতে সুং তান কে বলেছিল। সুং তান জেলে বৌদ্ধিষ্ট। নুহুদের পিঠাপিঠি জেলেপাড়ার লোক। নুহুর সাথে তার জব্বর পিরিত।

সুং তানরা গরীব জেলে। ‘খাটি খাই’ গোছের। দংখালীর এই জেলেপাড়াটায় সুং তানরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। নুহুরা বলে, বোদ্ধপাড়া। কেউ কেউ রসিকতা করে বলে, বুদ্ধুপাড়া। নুহুদের সঙ্গে সুংতানদের চিরদিনই দহরম-মহরম ভালো। চাল-ডাল, তেল-নুন ধার নেওয়ানেয়ির সম্পর্ক। এ সম্পর্কের হাড় শত শত বছরের পুরোনো। এই সেদিন পর্যন্তও হিংসার বিষাক্ত ফণা এখানে দাঁত বসাতে পারেনি। তাদের হক কথা, আমাদের আলাদা কোনো জাত নেই, আমরা এক সাথে খাটি, একসাথে খাই, এটাই আমাদের জাত। আমাদের জাত শ্রমে, ধর্মে নয়। তবুও নুহুরা টের পাচ্ছিল, ওপর তলার একটা অন্য গরম হাওয়া এখানেও দাঁত ফোটাতে শুরু করেছে। বিদ্বেষের একটা চোরা বিষ স্রোত মিহি করে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে এই গোব্যাচারি মানুষগুলোর মনে।

নুহু সুং তান কে বলেছিল, ‘আমাদের রোহিঙ্গা হয়ে জন্মানোটাই পাপ। আমরা যদি তোমাদের মতো বৌদ্ধ হতেম, তাহলে নিশ্চয় আমাদের ওপর এই জুলুম করত না মায়ানমার সেনা? যত দোষ মুখের দাড়ি আর মাথার টুপিতে!’

‘ধুর বোকা, এটা কোনো কথা হল? যে যে ধর্মেই জন্মাক না কেন, যে জাতিতেই জন্মাক না কেন, তাকে সেই ধর্ম বা জাতি নিয়েই গর্ব করা উচিৎ। কোনো জাতিই ছোট না। কোনো ধর্মও ছোট না। সব জাতিই সমান। সব ধর্মও সমান। এই পৃথিবীতে কত জাতি আর কত ধর্ম আছে বলো তো? শত শত, হাজার হাজার! একজন যদি আরেকজনকে ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লাগে, তাহলে তো পৃথিবীটাই ধংস হয়ে যাবে। একজন আরেকজনের মাথায় যদি কুঠার তোলে, তাহলে তো কোনো মানুষই বেঁচে থাকবে না। ধর্ম কুঠারে নয়, ধর্ম প্রেমে।’

‘তাহলে আমাদের কেন বেছে বেছে হত্যা করা হচ্ছে? ওই ধর্মের জন্যই তো?’

‘সব ধর্মেই, সব জাতিতেই কিছু খারাপ মানুষ থাকে, মন্দ মানুষ থাকে নুহু, আমাদের মধ্যেও তা আছে। আর এই খারাপ মানুষদের হাতে রাষ্ট্রের ক্ষমতা চলে এলেই সর্বনাশ। সব ভেঙে তছনছ করে দেয়। আজ আমাদের দেশে সেটাই ঘটছে।’ ফদফদ করে বকে গেছিল তামাটে রঙের পাঁচ ফুটের বেঁটেখাট মানুষ সুং তান। তারপর জোরে শ্বাস ঠেলে বলেছিল, ‘আমি কিন্তু ভাই, ওসবের ধাড়ধারি নে। তুমিও যা আমিও তাই।’ কথাটা বলার সময় যেন সুং তান তার বুক চিড়ে নুহুকে দেখাতে চেয়েছিল যে, সে একজন সাধারণ মানুষ ছাড়া অন্য কিছুই নয়। তার ‘নির্বাণ’য়েই শান্তি। বুদ্ধ আজীবন শান্তির কথাই বলতে চেয়েছেন। জীবনে অহিংসা ভড় না করলে ‘নির্বাণ’ হবে কীভাবে? ‘নির্বাণ’ ছাড়া তো মুক্তি নেই। সেই যেন একই কথা, কোথাও যেন ‘নির্বাণ’ আর ‘ঈমান’এর একই ঘাটে এসে গলাগলি করা।

‘হ্যাঁ, আমরা রোহিঙ্গা, তো কী হয়েছে? কেটে পানিতে ভাসিয়ে দেবেন? জবেহ করবেন? আসুন, তাইই করুন।’

আচমকা যেন দুম করে বাঁশ ফাটল। ছইয়ের ভেতর থেকে ছ্যান ছ্যান করে উঠলেন হালেমা। হৃদপিন্ড ধড়াক করে উঠল মতির। আরিফার তো মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার জোগাড়। নুহুর হৃদস্পন্দন তখন চরমে। আতঙ্কের পারদ ধুকপুক করছে। আর রেহাই নেই! মরণ এবার দুয়ারে! মা কি সর্বনাশটাই না করল! মতিও মনে মনে তার মা’কে দুষতে লাগল, অ্যা ক্যামুন মা গো, পেটে ধরা ছেলেকে জেনেবুঝে জল্লাদের হাতে তুলে দিচ্ছে!

বলতে বলতে আগন্তুক নৌকাটা থেকেও একটা মেয়েলি কণ্ঠস্বর ভেসে এল। যেন হালেমার কথাটাই দেওয়ালে ধাক্কা লেগে প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে এল। ঠান্ডায় বসে যাওয়া স্বর। যেন বহুত কষ্টে ঠেলেঠুলে গলা ফুঁড়ে বের হয়ে আসছে। গলার স্বরই জানান দিচ্ছে, মেয়েটি বৃদ্ধা এবং অসুস্থ। কথার মাঝে মাঝে গলা খিঁচে ধরা কাশিও জড় পাকিয়ে দিচ্ছে। নৌকাটার একেবারে পেট থেকে কথাটা ভেসে এল, ‘আমরাও তো তাই! হাতে জান নিয়ে পানি পানি ঘুরে বেড়াচ্ছি।’

‘বাপ রে, বাঁচলাম’। ধড়ে প্রাণ ফিরে এল মতির। ‘আমি তো বাঁচার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম।’ ঠোঁট নড়ল নুহুর। ভয়ের মেঘ কেটে মনের আকাশে এখন খুশির ঘুড়ি উড়তে শুরু করে দিয়েছে। নুহু এবার বৈঠাটাকে স্যাৎ স্যাৎ করে পাক মেরে মেহমান নৌকাটার দিকে টান মারল। মতিও দাঁড়টাকে বেঁকিয়ে ধরল। ‘কট’ করে উঠল নৌকাটা। মতি যখন গায়ের শক্তিটাকে একেবারে নিংড়ে দিচ্ছে, তখন তার দুবলা পাতলা শরীরটাও ধনুকের মতো বেঁকে যাচ্ছে। মতি ভাবছে, যাক একটা সাথী নৌকা তো পাওয়া গেল। আপদ-বিপদে একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়া যাবে। কিন্তু ওরা উচিপুরংএর দিক থেকে আসছে কেন! ওরা যদি আমাদের মতো পালিয়েই যাবে, তাহলে তো ওরা উচিপুরংএর দিকে যেত? কিন্তু এ তো দেখছি ঘুরে আকিয়াবের দিকেই যাচ্ছে! খটকা বাঁধল মতির। ব্যাপারটা কি? তবে কি উচিপুরংএর দিকেও বার্মিজ সেনারা ডেরা বেঁধে আছে! মতি একবার ভাবল, ব্যাপারটা নুহুর সঙ্গে আলোচনা করি। আবার পরক্ষণেই ভাবল, না থাক, সরাসরি ওদের সঙ্গেই কথা বলি। নৌকাটা একেবারে আগন্তুক মেহমান নৌকাটার ঘাড় ঘেঁষে ভিড়ল। আলতো করে দুই নৌকার খোলের সঙ্গে ঠোকাঠুকিও লাগল। দুই নৌকাই দুলে উঠল। দুই নৌকার এই প্রেমময় টোকাতে নদীর জলও ছলাৎ করে কোমর দুলিয়ে উঠল। তার নীল-কালো জলের গালে মিহি করে টোলও পড়ল। নুহুদের নৌকাটা কাছে ভিড়তেই, আগন্তুক নৌকাটা থেকে পিলপিল করে গুচ্চের মানুষ বেরিয়ে এল! ফিক করে একটা কুপিও জ্বলে উঠল। নৌকার ওপরে গেঁড়ে বসে থাকা কালো ঘুটঘুটে ছায়াটা দুদ্দাড় করে নদীতে নেমে গেল। ছায়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝিম মেরে থাকা নৈশব্দটাও নেমে গেল। একটা ফিনফিনে তামাটে আলো নৌকাটায় ছড়িয়ে গেল। এই আলোতে নুহু চোখ ফেড়ে দেখল, দশটা মানুষের মাথা! মাঝবয়সী দুজন মেয়ে। সঙ্গে দুটো বাচ্চা। আর পাঁচজন পুরুষ। তার মধ্যে একজন বৃদ্ধ। ছইয়ের ভেতরে কাঁথা মুড়ি দিয়েও কেউ একজন বসে আছেন। ‘খক’ ‘খক’ করে কাশছেন। সম্ভবত সেই বৃদ্ধা মেয়েটিই হবে, যিনি একটু আগেই কাশতে কাশতে কথাগুলো বলছিলেন।

 আপনারা রোহিঙ্গা তো আকিয়াবের দিকে যাচ্ছেন কেন?’ মনের খুঁতখুতিটা উগলালো মতি। সে এতক্ষণে দাঁড়টা ধরে খাড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।

‘আমরা উচিপুরংএর দিকেই যাচ্ছিলাম। কিন্তু ওদিকে বিজিবি যেতে দিচ্ছে না। তারা ধরে আবার এদিকে পাঠিয়ে দিচ্ছে।’ চুল কোঁকড়ানো একটা ছিপছিপে চেহারার মাঝবয়সী লোক কথাগুলো বলল।

‘হাই আল্লাহ!’ আঁতকে উঠল আরিফা। ভাবল, এবার কী হবে! ভদ্রলোকের কথাটা শুনে মতিরও বুক চিনচিন করতে শুরু করে দিয়েছে। সে আফসোস করল, যাহ শালা, যে আশা নিয়ে এগোচ্ছিলাম, তাও জলে ভেসে গেল! বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড আবার এমন কেন করছে! তারা তো রোহিঙ্গাদেরকে এতদিন আশ্রয় দিচ্ছিল। হঠাৎ কী এমন হল যে, তারা মুখ ফিরিয়ে নিল! মতিরা শুনেছে, তাড়া খাওয়া, ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের বড় আশ্রয়দাতা হল বাংলাদেশ। তাদের মানবিক মুখের জন্যেই হাজার হাজার রোহিঙ্গারা এখনও জীবনে বেঁচে আছে। টিকে আছে দুনিয়াদারি। বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার বিভিন্নপ্রান্তে শরণার্থী শিবিরগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কুতুপালং, নয়াপাড়া, থাংখালী, উচিপুরং ক্যাম্পগুলোই আজ রোহিঙ্গাদের ঠিকানা। এগুলোর কোত্থাও আমাদের ঠিকানা হল না! এতটুকু মাথা গোঁজার ঠাঁই হল না! হুহু করে উঠল মতির হৃদয়। হাই আল্লাহ, আব্বার কী হবে! ও যে যেকোনো সময় ইন্তেকাল করবে! তার দাফন করার মাটিটুকু পাব কোথায়! আব্বার স্বপ্নাদেশ তবে কি বিফল হয়ে যাবে!

কষ্ট দলা পাকিয়ে উঠছে মতির। হৃদয়টা টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে যাচ্ছে। আর কত সহ্য করবে! সে যে কাঠ-পাথর লোহা-ইস্পাত দিয়ে তৈরি নয়? সেও যে একজন রক্ত-মাংসের মানুষ।

‘তাহলে এখন কী করবে? কোন দিকে যাবে?’ কথা তো নয়, যেন একদলা কষ্ট টং করে গলা থেকে বেরিয়ে এল নুহুর। সঙ্গে দিক হারা পথ হারা মানুষের আকুতি।

‘আরে আলোটা!’ চমকে উঠল মতি। তারা যে এসব ঝুট-ঝামেলায় পড়ে ধেয়ে আসা লাল আলোটার কথা ভুলতেই বসেছিল।

‘আরে তাই তো!’ ঘাড় ঘোরালো নুহু। সে লম্বা দৃষ্টি ফেলল বঙ্গোপসাগরের দিকে। ঝাপসাতে যতদূর দৃষ্টি যায়, ভালো করে জরিপ করল। ‘কই, কোথায় গেল! আর তো দেখা যাচ্ছে না!’ বিস্ময় প্রকাশ করল নুহু। চোখের পাতায় অদ্ভুত সারল্যতা। ঠোঁটে একটা আত্মতৃপ্তির প্রশান্তি। কিন্তু মাথা চুলকালো মতি, ‘লেডা ক্যাম্পের দিকে যাব নাকি।’

‘তা গেলে হয়, তবে ওখানকার বিজিবি আবার চরে উঠতে দেবে? রাইফেল নিয়ে তাড়া করবে না তো!’ আশঙ্কা প্রকাশ করল নুহু।

‘হ্যাঁ, ওরাও ঢুকতে দিচ্ছে না। আমরাও খবর নিয়েছি।’ আগন্তুক নৌকা থেকে কথাটা ভেসে এল। চুল কোঁকড়ানো লোকটা গলা ঝেড়ে কথাগুলো বলল। সে আরও জানাল, ‘তবে শুনলাম, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের ঘুমধুম সীমান্ত চৌকির স্টেশন প্রধান লেফটানেন্ট জেনারেল আলি কাদের খুব ভালো লোক। খুবই মানবিক। দরদী মানুষ। তিনি নাকি রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাচ্ছেন না। তিনি রোহিঙ্গাদের ট্রলারে করে নিয়ে গিয়ে টেঙ্গার চরে রেখে আসছেন। একটু দূর হলে কী হল, মানুষগুলো বেঁচেবর্তে তো থাকছে? আপাতত একটা ঠাঁই তো পাচ্ছে?’

‘টেঙ্গার চর বলতে মেঘনা………।’ মতি ফট করে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল অমনি তার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে লোকটা ভড়ভড় করে বলতে লাগল, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ, ওই যে মেঘনা নদীর পলি জমে যেটা নতুন গড়ে উঠেছে, ওটাই টেঙ্গার চর।’

‘তা আপনারা ওখানে গেলেন না কেন?’ হুট করে বেখাপ্পা প্রশ্ন করল নুহু।

‘ওখানে তো সরাসরি যাওয়া যাবে না। সে তো অনেক দূর। ঢেরখানি পশ্চিমে। বিজিবির লোকেরাই অন্যান্য ক্যাম্প থেকে ট্রলারে করে ওখানে নিয়ে যাচ্ছে। ওখানে সরাসরি যাওয়ার ফুরসত থাকলে কি আর বলতে হত, ঠেলেঠুলে ঠিকই চলে যেতাম।’ একজন খোকলা দাঁতের লোক ত ত করে তোতলালো। সঙ্গে কোঁকড়ানো চুলের লোকটি যোগ করল, ‘টেঙ্গার চরে ওরা বেশিদিন রাখছে না। কিছুদিন রাখার পর আবার নাকি নয়াপাড়া অথবা কুতুপালং ক্যাম্পে সরিয়ে নিচ্ছে। টেঙ্গার চর যে জোয়ারের সময় তিন-চার ফুট পানির তলে ডুবে যায়।’

‘বলছেন কী!’ ভ্রূ কুঁচকে উঠল মতির। যেন এক বুক আশার মধ্যে কেউ জল ঢেলে দিল।

‘হ্যাঁ, তাইই তো শুনলাম। আমাদের পাশের বাড়ির কামালরা ওখানেই আছে।’ কোঁকড়ানো চুলের লোকটি এবার গলা দঢ় করে বলল। মতি বলল, ‘এ তো পেটে না মেরে ভাতে মারা!’

‘ওই আর কি, আজ না মেরে সাতদিন পরে মারা।’

‘তাহলে এখন উপায়?’ অন্ধকারে পথ হাতড়ায় মতি।

‘আপাতত পথ বলতে গেলে তো এখন একটাই পথ বাকি।’

‘কোন পথটা বলুন তো!’ উৎসুক হয়ে উঠল মতি। মনের মধ্যে তখন এক চিলতে ঠাঁই ফিরে পাওয়ার প্রবল আকুতি উছাল মারছে। 

‘নয়াপাড়া ক্যাম্প।’ লোকটা আলগোছে বললেন। তারপর সুখের কথা শোনালেন, ‘নয়াপাড়া ক্যাম্প বড় ক্যাম্প। ওখানে বিজিবি ঢুকতে দিচ্ছে না, এখন পর্যন্ত এরকম কোনো খবর নেই।’

‘তাহলে আর দেরি কেন? চলুন একসঙ্গেই যাই।’ তড়াক করে উঠল মতি। ঘাড়ের গামছাটাকে ঝেরে কোমরে বাঁধল। লোকটাও কোমর হেলাল, ‘হ্যাঁ, চলুন, তবে লেডা বর্ডার ঘেঁষেই যেতে হবে, তানাহলে আবার মায়ানমার সেনার খপ্পরে পড়ে যেতে পারি!’

‘তো, তাইই চলুন।’ তাড়া লাগাল মতি। সে এমন করছে যেন পারলে উড়ে চলে যাবে। নদী তার কাছে আর ভালো লাগছে না। অসহ্য হয়ে উঠছে। একটুখানি মাটি দেখার জন্যে তার মন ছু ছু করছে। 

‘আপনাদের বাড়ি কোথায় ছিল?’ জানতে চায়ল নুহু।

চলবে... 

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

আরএ

 

Header Ad
Header Ad

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, আগামীকাল সৌদিতে ঈদ

ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, আগামীকাল সৌদিতে ঈদ

 

বিস্তারিত আসছে...

Header Ad
Header Ad

ভারত-পাকিস্তানে ঈদের তারিখ ঘোষণার পর বাংলাদেশের বিষয়ে যা জানা গেল

ছবি: সংগৃহীত

ভারত ও পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছে যে, দেশ দুটিতে আগামী ৩১ মার্চ (সোমবার) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। এর ফলে বাংলাদেশেও একই দিনে ঈদ উদযাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামীকাল (রোববার) খালি চোখে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে হিসেবে ভারতে এবারের রমজান ২৯ দিনে সম্পন্ন হবে এবং সোমবার ঈদ উদযাপন করা হবে। একইভাবে পাকিস্তানেও ২৯ রোজা পালনের পর সোমবার ঈদ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের চাঁদ দেখা কমিটি যথাসময়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানাবে। তবে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ একই চাঁদ দেখার অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায়, বাংলাদেশের ঈদুল ফিতরও ৩১ মার্চ সোমবার উদযাপিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ব্রুনাইও ৩১ মার্চ সোমবার ঈদ উদযাপনের ঘোষণা দেয়। সবার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের তারিখ ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া, যেখানে একই দিনে ঈদ উদযাপিত হবে।

বাংলাদেশে রমজানের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে ঈদের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করা হবে। চাঁদ দেখা গেলে সরকারিভাবে তা ঘোষণা করা হবে এবং তার পরই দেশব্যাপী ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত হবে।

Header Ad
Header Ad

দুপচাঁচিয়ায় শহীদ যুবদল নেতার পরিবারকে তারেক রহমানের ঈদ উপহার

ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় যুবদল নেতা আবু রায়হান রাহিমের পরিবারকে ঈদ উপহার প্রদান করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রাহিম গত বছরের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় ৪ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে শহীদ নেতার পরিবারের কাছে এই উপহার তুলে দেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও শহর বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট হামিদুল হক চৌধুরী হিরু। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির যুগ্ম পরিচালক ড. আব্দুল মজিদ, দুপচাঁচিয়া থানা বিএনপির সভাপতি একেএম মনিরুল ইসলাম খান স্বপন, কাহালু উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন আজাদ।

এছাড়া, দুপচাঁচিয়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান তুহিন, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন, কাহালু উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম উদ্দিন, পৌর বিএনপির সহসভাপতি এ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আফছার আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সবুর খন্দকার রাকিবসহ যুবদল ও বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উপস্থিত নেতারা শহীদ আবু রায়হান রাহিমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন, বিএনপি তাদের কখনো ভুলবে না। ঈদ উপলক্ষে তারেক রহমানের এই উপহার শহীদ পরিবারের প্রতি দলের ভালোবাসা ও সংহতির বহিঃপ্রকাশ।

উল্লেখ্য, বিএনপির পক্ষ থেকে আন্দোলন-সংগ্রামে শহীদ ও আহত নেতাকর্মীদের পরিবারকে সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। দলীয় নেতারা জানান, ভবিষ্যতেও এই ধরনের সহায়তা ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, আগামীকাল সৌদিতে ঈদ
ভারত-পাকিস্তানে ঈদের তারিখ ঘোষণার পর বাংলাদেশের বিষয়ে যা জানা গেল
দুপচাঁচিয়ায় শহীদ যুবদল নেতার পরিবারকে তারেক রহমানের ঈদ উপহার
ভারত, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় ঈদের তারিখ ঘোষণা
সৌদি আরব ঈদের তারিখ ঘোষণা করবে রাত ৯টার পর
রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দিলেন মির্জা ফখরুল
কারাবন্দিদের জন্য ঈদের বিশেষ আয়োজনে থাকছে ভালো খাবার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
চীনের সঙ্গে চট্টগ্রামের সরাসরি ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ
পদ্মা সেতুতে এক দিনে সোয়া ৪ কোটি টাকা টোল আদায়
ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড দখল পরিকল্পনা নিয়ে পুতিনের সতর্কবার্তা
অস্ট্রেলিয়ায় ঈদ আগামী ৩১ মার্চ  
বাংলাদেশেও বড় ভূমিকম্পের শঙ্কা, ফায়ার সার্ভিসের বিশেষ সতর্কবার্তা
মেট্রোরেলে নেই চিরচেনা ভিড়, বন্ধ থাকবে ঈদের দিন
নাটোর ডিসি বাংলোর বাঁশবাগান থেকে শতাধিক সিলমারা ব্যালট উদ্ধার
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করবে: প্রধান উপদেষ্টা
ঈদে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে কাজ করছে পুলিশ-বিজিবি-আনসার : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
তাপপ্রবাহে পুড়ছে ৪০ জেলা
ঈদের তারিখ ঠিক করতে কাল সন্ধ্যায় বসছে চাঁদ দেখা কমিটি
ইংল্যান্ডে ফিরেই হামজা জাদু, শীর্ষে তুললেন শেফিল্ডকে
এবার ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদের নানি বললেন ‘আগে গোপনে মারতাম এখন ওপেনে মারব’