শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা

আসিফ আহমেদ নিজের কক্ষে পাগলের মতো ছোটাছুটি করছেন। ছাঁটাইয়ের চাপ জগদ্দল পাথরের মতো তার মাথার ওপর চেপে বসেছে। ছাঁটাই বন্ধ করার উপায় খুঁজছেন তিনি। দিন-রাত তার এক চিন্তা। ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে। কিন্তু কীভাবে? কি বললে কর্তৃপক্ষ ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে তা নিয়ে তিনি ভাবেন। বিকল্প প্রস্তাবগুলো তো ভালো ছিল। কেন তারা সেগুলোকে গ্রহণ করছে না? কেন সেগুলোকে যৌক্তিক মনে করছে না? কেন তারা ভাবছেন, ছাঁটাই-ই তাদের একমাত্র সমাধান? যাদের ছাঁটাই করতে চাচ্ছে সেই লোকগুলো বছরের পর বছর প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করেছে। প্রতিষ্ঠানকে তারা অনেক দিয়েছে। দিন নেই রাত নেই গাধার খাটুনি খেটে তারা প্রতিষ্ঠানটিকে দাঁড় করিয়েছে। অথচ বিপদের দিনে সেই প্রতিষ্ঠানই তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে! না না! এটা মানা যায় না।

আসিফ মনে মনে বললেন, আমি আমার কথা বলে যাব। তালিকা চাইলে বলব, আমার পক্ষে তালিকা করা সম্ভব না। ছাঁটাই করার মতো কাউকে দেখছি না। প্রয়োজনে বেতন কমিয়ে দিন। সেটাও মানা যায়। এই বিপদের দিনে ছাঁটাই কেন? এরা যাবে কোথায়?

আসিফ আহমেদের ভাবনাগুলো মিলিয়ে যাওয়ার আগেই তার কক্ষে কয়েকজন বিভাগীয় প্রধান এল। তাদের দেখে আসিফ আহমেদ নিজের চেয়ারে গিয়ে বসলেন। তাদেরকেও বসতে বললেন। পিয়ন এসে সবাইকে চা-নাশতা দিতে শুরু করে। কারো মুখে কোনো কথা নেই। সবাই চুপচাপ। আসিফ বললেন, কি হলো, চা নাও!

বিজ্ঞাপন বিভাগের নুরুজ্জামান চায়ে চুমুক দিয়ে কাপটা টেবিলের ওপর রাখল। তারপর বলল, কিছু করতে পারলেন?
এমডি সাহেব ছাঁটাইয়ের বিকল্প কিছু দেখছেন না।
কেন? আমাদের প্রস্তাবগুলো পছন্দ হয়নি!
না। উনি বললেন, এসব দিয়ে হবে না। তালিকা করে আনেন। ছাঁটাই ছাড়া বিকল্প নেই। এত লোক আমার কোনো প্রয়োজন নেই। কাগজের ভলিউম কমে গেছে। লোকও কমাতে হবে। যখন ভলিউম বাড়বে তখন লোক বাড়াব। নতুন লোক দিয়ে চালাব! আমার প্রস্তাবগুলো পড়েও দেখল না। আচ্ছা অন্যরা কি করছে? কোনো খবর পেলে?
এখনো কেউ ছাঁটাইয়ে যায়নি। তবে ছাঁটাইয়ের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। নুরুজ্জামান বলল।
সুনির্দিষ্ট করে বলো না! কোন কোন পত্রিকা ছাঁটাই করতে পারে?
প্রথম আলো, ইত্তেফাক, সমকাল, ডেইলি স্টারসহ অনেকেই। বেশ কিছু পত্রিকা তো বন্ধই হয়ে গেছে। অনেক সাংবাদিক বেকার হয়েছে।
কিন্তু বড় কাগজগুলো এখনো ছাঁটাইয়ে যায়নি, তাই না?

নুরুজ্জামান কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল। এরমধ্যেই মামুন রশিদ হন হন করে সম্পাদকের কক্ষে এসে হাজির হলো। এসেই সে বলল, কোনো পত্রিকাই ছাঁটাই করছে না। আমাদের কেন ছাঁটাই করতে হবে আসিফ ভাই? আপনি এমডি সাহেবকে বুঝিয়ে বলেন। প্রয়োজন হলে আমাদেরকে নিয়ে চলেন।
আমি স্পষ্ট করেই তোমাদের বলছি, ছাঁটাই করতে হলে আমি নাই। প্রয়োজন হলে আমি পদত্যাগ করব। তবু ছাঁটাই করতে পারব না। আমি কারো পেটে লাথি দিতে পারব না।

ঠিক আছে আসিফ ভাই। আপনার এই সিদ্ধান্তকে স্যালুট জানাই।
না মানে আমার নিজস্ব একটা নীতি তো আছে! নীতি-নৈতিকতার বাইরে আমি কিভাবে যাব? আমি নীতি বিসর্জন দিতে পারব না। অন্যরা পারতে পারে। আমার পক্ষে সম্ভব না। আমি যদি ভাবি, অন্যদের ডুবিয়ে দিয়ে আমি নিজে বাঁচব। তাহলে তা সম্ভব হবে না। কোনো দিনও হবে না। একা বাঁচা যায় না। এটা যদি কেউ ভাবে, তাহলে তা ভুল।
ধন্যবাদ আসিফ ভাই। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমি আসি।
কথা শেষ করেই মামুন রশিদ চলে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ায়। এ সময় তার বেতনের কথা মনে পড়ে। আচ্ছা আসিফ ভাই, আরেকটা কথা ভুলে গেছি বলতে। বেতনের কি অবস্থা আমাদের?
নুরুজ্জামানের সঙ্গে সে বিষয় নিয়েই কথা বলছিলাম। বিজ্ঞাপনের তো কোনো টাকাই পাচ্ছি না। কিছু টাকা পাওয়া গেলে নিচের দিক থেকে শুরু করা যেত। চেষ্টা করছি। দেখা যাক।
কেন আমাদের কর্তৃপক্ষ কোনো টাকা দেবে না? মামুন রশিদ জানতে চাইল।
কোনো সম্ভাবনা নেই। তারা বার বারই বলছে, আমরা কোনো টাকা-পয়সা দিতে পারব না। তারা নিজেদের বিজ্ঞাপনের টাকাটাও যদি দিত তাহলেও কিন্তু আমাদের কোনো সংকট থাকত না। তারা বিজ্ঞাপন করবে কিন্তু টাকা দেবে না। এ এক আজব জায়গা!
মামুন রশিদ আর দাঁড়াল না। আসিফ আহমেদ নুরুজ্জামানকে উদ্দেশ করে বললেন, তুমি সর্বোচ্চ চেষ্টা কর। আমি যাদেরকে ফোন করলাম তারা কি কোনো চেক দিয়েছে?
রেডি করছে। শিগগিরই দেবে বলেছে। আপনি একটু চেয়ারম্যান সাহেবকে বলেন না; আমাদের বিজ্ঞাপনের টাকাও যদি এই বিপদের সময় দিত!
বলেছি। অনেকবার বলেছি। উনি বললেন, আমি এমডিকে বলে দিচ্ছি। এমডি সাহেব সেদিক ডেকে নিয়ে বলল, আপনাদের বেতনের বিষয়ে চেয়ারম্যান সাহেবকে কিছু বলার দরকার নেই। আমি দেখছি কি করা যায়। আর তাকে কেনই বা বলেন, বুঝি না! তাকে বললে কি সমাধান হবে?
নুরুজ্জামান বলল, বিপদের সময় যদি বেতনটাও ঠিকমতো না দেওয়া যায়!
দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে আসিফ আহমেদ বললেন, হুম। আচ্ছা, তুমি তাহলে যাও। চেষ্টা কর। সর্বোচ্চ চেষ্টা কর। আমরা দেখি কতদূর কি করতে পারি।
জি। ঠিক আছে।
নুরুজ্জামান চলে যেতে না যেতেই প্রশাসন বিভাগের রাকিব এসে বলল, স্যার এমডি স্যার নাকি বলছে, করোনার মধ্যে যারা অফিস করে না; তাদের বেতন কাটতে!
কে বলেছে তোমাকে?
স্যার, অ্যাকাউন্টস থেকে বলছে।
কি বলেছে?
বলেছে, করোনাকালীন কে কয়দিন অফিস করেছে তার তালিকা দেন। বেতন হওয়ার আগেই দিতে হবে।
আমরা তো অনেককে বাসা থেকে অফিস (হোম অফিস) করার জন্য বলেছি। তারা বাসায় থেকে নিয়মিত রিপোর্ট পাঠাচ্ছে। অনলাইনে সাপোর্ট দিচ্ছে। তাদের কি হবে? আমাদের লোকবল তো এমনিতেই কম। করোনার মধ্যে প্রতিদিন পত্রিকাটা বের করতে হয়। কাজ না করলে কিভাবে বের হয়? করোনার মধ্যে সবাই কষ্ট করে অফিসে আসে। আমরা কাউকে গাড়ি সাপোর্টও ঠিকমতো দিতে পারি না।
জি স্যার। রাকিব বলল।
তুমি বলো, আমাদের সবাই অফিস করছে। অফিসের নির্দেশেই অনেকে বাসা থেকে অফিস করছে। কারণ, সবাইকে অফিসে টেনে আনলে আরও বিপজ্জনক কিছু ঘটলে পত্রিকা বের করাই সম্ভব হবে না। আর ওরা আমার সঙ্গে কেন কথা বলে না?
স্যার, আমি বলেছি আপনার সঙ্গে কথা বলতে।
ঠিক আছে তুমি যাও।

রাকিব চলে যাওয়ার পর আসিফ আহমেদ আয়-ব্যয়ের হিসাবের ফাইলে চোখ রাখে। আর কোন কোন খাত থেকে খরচ কমানো যায় তা ভালো করে দেখে। পত্রিকার প্রেস, হিসাব বিভাগ এবং সাধারণ বিভাগে লোকবল অনেক বেশি। সেখানে বাড়তি প্রায় চল্লিশ লাখ টাকা খরচ হয়। এই খরচের কথা মুখে আনা যায় না। তা ছাড়া প্রতিমাসে গ্রুপের বিজ্ঞাপন বাবদ বিশ থেকে পঁচিশ লাখ টাকার বিল হয়। ওই বিলও প্রতি মাসে পাওয়া যায় না। ওই বিষয় নিয়ে কথা বলাই মানা। তার মানে ন্যূনতম ষাট লাখ টাকা বাড়তি খরচের বোঝা!

আসিফ আহমেদ মনে মনে ভাবেন, কেন এই খরচের বোঝা আমি বহন করব? কেন আমাকে বলা হবে, লোক কমাও লোক কমাও! এই এক গীত তো শুরু থেকেই শুনে আসছি। কত লোক চলে গেল! নতুন লোক তার পরিবর্তে কয়জন নেওয়া হয়েছে? লোক না থাকলে পত্রিকা বের করব কাদের দিয়ে? ভালো পত্রিকা বানাতে চাই ভালো লোক। পত্রিকা চাইবে প্রথম আলোর মতো! আর লোক দেবে মানবকণ্ঠের মতো! তাহলে ভালো পত্রিকা কীভাবে হবে?

আরেকটা বিষয় আসিফের মাথায় ঘুরপাক খায়। পত্রিকার মালিকরা পত্রিকা বের করার সময় বলেন, আমি ভাই প্রথম আলোর মতো একটা পত্রিকা চাই। কিন্তু প্রথম আলোর মালিকের মতো আমরা হতে পারব না। ওটা সম্ভব নয়। আমরা পত্রিকা চালাব আমাদের মতো করে। আপনারা আমাদের নির্দেশ মোতাবেক পত্রিকা করবেন। ভালো পত্রিকা করার জন্য যে পেশাদার লোক লাগে সেটাও তারা বুঝতে চান না। অথচ প্রতিদিন প্রথম আলোর সঙ্গে তুলনা করেন। কথায় কথায় বলেন, ওরা পারলে আপনারা কেন পারছেন না?

আসিফ মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন, দিনের পর দিন আপোস করবেন না তিনি। কিছুতেই তিনি মেরুদণ্ডহীন প্রাণীতে পরিণত হবেন না। নিজের নীতি-নৈতিকতা, সত্ত্বাকে তিনি বিকিয়ে দেবেন না। সম্পাদকগিরিই তার কাছে বড় নয়। বড় হচ্ছে মানবিকতা। একজন মানুষ মানবিক না হলে সে আর মানুষ থাকে না। নিজের স্বার্থে সেই মানবিকতা তিনি জলাঞ্জলি দেবেন না। সবকিছু জলাঞ্জলি দেওয়া যায় না। তাহলে আর কিছু থাকে না।

আসিফ আহমেদের ভাবনাগুলো মিলিয়ে যাওয়ার আগেই তার মোবাইলে ফোন আসে। মোবাইল হাতে নিয়ে দেখেন, এমডি সাহেবের ফোন। ফোন তুলে হ্যালো বলতেই অপর প্রান্ত থেকে ভেসে এল অচেনা এক কণ্ঠস্বর। আসিফ ভাবে, এটা তো এমডি সাহেবের কণ্ঠস্বর নয়! দুদিন আগেও তার কণ্ঠস্বর এমন ছিল না। তার মানে কী!

শাহবাজ খান রাশভারী কণ্ঠে বললেন, আমি শাহবাজ খান বলছি। তালিকা বানিয়েছেন? ছাঁটাইয়ের তালিকা! বুঝতে পারছেন? তালিকাটা নিয়ে কালই আমার সঙ্গে দেখা করেন। বেতন পারপাস কত যেন কমাতে বলেছিলাম? মনে আছে নিশ্চয়ই। অ্যাকাউন্টস নিয়ে বসেন। ভালো করে হিসেব কষে তালিকাটা বানান। আমি কালই তালিকাটা চাই।
কথা বলা শেষ করে শাহবাজ খান ফোন কেটে দিলেন। আসিফ আহমেদ হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। তিনি কী করবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না। হতাশায় ডুবে যান তিনি।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত

অ্যন্টিগার পেস সহায়ক উইকেটে নতুন বলের বাড়তি সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছিল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম সেশনে দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সময় গড়াতেই বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার মিকাইল লুইস ও আলিক অ্যাথানেজকে। জুটি গড়ে দুজনের ছুটতে থাকেন শতকের পথে। কিন্তু দুজনের কারও প্রত্যাশা পূরণ হতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের শেষভাগে নার্ভাস নাইন্টিতে দুজনকে মাঠ ছাড়া করে প্রথম দিনের ইতি টানে বাংলাদেশ।

টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে বৃষ্টি হানা দেয় ম্যাচে। বৃষ্টি থামার পর আলোক স্বল্পতায় ৮৪ ওভার হওয়ার পরই দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা।

টস জিতে বোলিংয়ে নেমে মেডেন ওভারে শুরুটা ভালো করেন হাসান মাহমুদ। অন্যপ্রান্তে আরেক পেসার শরিফুল ইসলামও মেডেন ওভার নেন। উইকেটের দেখা না পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার কার্লোস ব্রাথওয়েট ও লুইসকে বেশ কয়েকবার পরাস্ত করেন বাংলাদেশের দুই পেসার।

ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আনা হয় তাসকিন আহমেদকে। এই পেসারই প্রথম ব্রেকথ্রু দেন দলকে। ১৪তম ওভারে তাসকিনের অফ স্টাম্পে পড়ে একটু ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেছিলেন ব্রাথওয়েট। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে পায়ে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেন। যদিও তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন ব্রাথওয়েট। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়নি।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি কেসি কার্টি। ডানহাতি ব্যাটারকেও ফিরিয়েছেন তাসকিন। উইকেটে আসার পর থেকেই তাড়াহুড়ো করছিলেন তিনি। তাসকিনের মিডল এবং লেগ স্টাম্পের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করার চেষ্টায় লিডিং এজ হয়ে মিড অনে থাকা তাইজুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়েছেন কার্টি।

২৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে পথ দেখান লুইস ও কেভম হজ। তবে হজ ২৫ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৫৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

এরপর বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছে লুইস ও আথানজে জুটি। দুজনেই সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও কেউই মাইলফলক ছুঁতে পারেননি।

ইনিংসের ৭৫তম ওভারে মিরাজের বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে ভুল করেন লুইস। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় স্লিপে। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি শাহাদাত হোসেন দিপু। নব্বইয়ের ঘরে ২৬ বল আটকে থেকে আউট হন লুইস। ফলে ভেঙে যায় ২২১ বলে ১৪০ রানের জুটি। ২১৮ বলে এক ছক্কা ও নয় চারে ৯৭ রান করেন এই ওপেনার।

এর কিছুক্ষণ পরই ফিরেছেন আথানজেও। তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি স্কুপের মতো খেলেছিলেন আথানজে। যদিও তেমন গতি না থাকায় তার ব্যাটে লেগে বল উপরে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক লিটন। দশটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩০ বলে ৯০ রান আসে বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটে। তিন রানের মধ্যে দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরার সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি