শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ৭

বিষাদ বসুধা

মোহিনী অফিসে চলে যান। আনোয়ারা বেগম মোহিনীর শোবার ঘর গোছগাছ করে রাখেন। কাজের লোক দিয়ে ভালো করে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করান। বিকেলে মোহসীন আহমেদ বাসায় এসে জানতে পারেন যে, মোহিনী নিজের বাসা ছেড়ে চলে এসেছে। তখন তিনি বিস্ময়ের সঙ্গে বলেন, সে কি! ও চলে এসেছে মানে! কেন চলে এসেছে? ওদের কি কোনো সমস্যা হয়েছে?

আনোয়ারা বেগম তাকে জানান, আরেফিন বিদেশে গেছে। বিদেশে যাওয়া নিয়ে সম্ভবত ওদের মধ্যে কোনো ঝামেলা হয়েছে।

বলো কি! আমি আগেই বলেছিলাম, ওই ছেলের সঙ্গে মোহিনীর বনিবনা হবে না। ওই ছেলের মনমানসিকতা সুবিধার মনে হয়নি। কেন যে ছেলেটাকে মোহিনী পছন্দ করল!

আনোয়ারা বেগম বললেন, তুমি আবার এসব কথা মোহিনীর সামনে বোলো না। ওকে বুঝতেও দিও না তুমি কিছু জানো।

না না। তুমি পাগল হয়েছ! আচ্ছা, মোহিনী কখন ফিরবে?
সন্ধ্যার মধ্যেই হয়তো ফিরে আসবে। তুমি চলো তো, আমরা বাজার করে আসি। মাছ, মাংস, তরিতরকারি কিছু নিয়ে আসি।

বাসায় এলাম। চা খাওয়াবে না?
হ্যাঁ। চা খেয়েই যাবো। তুমি ড্রেস পরিবর্তন করবে না? এই ড্রেসেই যাবে?
আমি অন্য ড্রেস পরে আসছি।

মোহসীন আহমেদ নিজের ঘরে যান। আনোয়ারা বেগম হালিমাকে ডাকেন। তাকে চা নাশতা টেবিলে দেয়ার জন্য বলেন। হালিমা তড়িঘড়ি করে টেবিলে নাশতা দেয়। চা দিয়ে বলে, খালাম্মা টেবিলে নাশতা দিছি। তাড়াতাড়ি আহেন।
আনোয়ারা বেগম খাবার টেবিলে গিয়ে বসেন। তিনি হাফপ্লেটে নাশতা বেড়ে মোহসীন আহমেদকে ডাকেন। তোমার হয়েছে? তাড়াতাড়ি আসো। ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে।


মোহসীন আহমেদ দ্রুত পায়ে এগিয়ে এলেন। চেয়ার টেনে বসেই নাশতা খাওয়া শুরু করলেন। স্ত্রীকে উদ্দেশ করে বললেন, তুমি খাচ্ছো না?

আমি শুধু চা খাবো।
কেন?
আমি ডায়েটে আছি।
এই বুড়ো বয়সে আর ডায়েট করে কি হবে?
এই! তুমি আমাকে বুড়ো বললে কেন? আমি কি বুড়ো হয়ে গেছি?
না না! এখনো তরুণীই আছো। হা হা হা!
নাহ! তোমার হাসিটা ভালো লাগছে না।
সিরিয়াসলি বলছি, ডায়েট করে তুমি বয়স কমিয়ে ফেলেছ।
ফেলতেই হবে। তা না হলে তো চলবে না। কি বলো?
হুম। কথাটা মন্দ বলোনি।

জানি তো! পুরুষ জাতিকে আমার চিনতে বাকি নেই। তারা সব সময় তাদের স্ত্রীদের তরুণী দেখতে চায়। কি ঠিক না?
নিজের স্ত্রীকে তরুণী দেখতে চাওয়া নিশ্চয়ই কোনো অপরাধ নয়। যদি এমন হতো যে তরুণী বিয়ে করার জন্য পাগল হতাশ তাহলে বলতে পারতে।

আনোয়ারা বেগম চোখ বড় করে মোহসীন আহমেদের দিকে তাকিয়ে বললেন, তোমার সাহস তো কম না!
মোহসীন আহমেদ হাসলেন। তারপর বললেন, চলো এবার বাজারে চলো।
আনোয়ারা বেগম মোহসীন আহমেদের পেছনে পেছনে এগিয়ে গিয়ে গাড়িতে উঠলেন। গুলশান দুই থেকে ইউনিমার্ট বেশি দূরে নয়। ইউনিমার্টে ঘুরে ঘুরে সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনলেন। মোহিনীর পছন্দের বিভিন্ন মাছ, দেশি মুরগী এবং খাসির মাংস কিনলেন। বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। ততক্ষণে মোহিনীও বাসায় এসে হাজির হয়েছে। তাকে দেখে মোহসীন আহমেদ ভীষণ খুশি। তিনি মহা উচ্ছ¡াসের সঙ্গে বললেন, আমার আম্মু যে!

কেমন আছো মামনি?
আমি ভালো আছি বাবা। তুমি কেমন আছো?
আমিও ভালো আছি। চীনের খবর শুনে তো মনটাই খারাপ হয়ে গেলো।
কেন বাবা? চীনের কি খবর শুনেছ?

আমাদের তো কিছু ব্যবসা আছে চীনের সঙ্গে তুই জানিস সেটা। কয়েকজন চীনা নাগরিক আমাদের সঙ্গে কাজও করে। ওরা জানাল, চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে নভেল করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। বেশ কিছু মানুষ আক্রান্ত হয়েছে।
মোহিনী বিস্ময়ভরা কণ্ঠে বললেন, তাই নাকি!

হুম। ভাইরাসটি প্রাণী থেকে মানবদেহে ঢুকেছে। একে বলা হচ্ছে কভিড-১৯; বা করোনা ভাইরাস। এটি মারাত্মক ছোঁয়াচে। এই ভাইরাস বহনকারী আরেকজনের কাছাকাছি গেলেই সংক্রামিত হবে। তাকে ছোঁয়ারও দরকার নেই। কাজেই একজন মানুষের কাছ থেকে হাজার জনে ছড়িয়ে যেতে পারে। ভয়ঙ্কর। উহান শহরে বাংলাদেশের মানুষের ব্যাপক যাতায়াত আছে। আবার ওখান থেকে এখানেও বিপুল সংখ্যক চীনা কাজ করছে। ফলে আমাদের দেশে ছড়াতে খুব বেশি সময় লাগবে না। তাছাড়া আমাদের দেশের সংস্কৃতি হচ্ছে, করমর্দন, কোলাকুলি। একজন আরেকজনের সঙ্গে করমর্দন না করে পারেই না! এভাবেই বেশি ছড়াবে। কারণ, কে করোনা বহন করছে তা তো কেউ জানতে পারছে না। অজানা ভাইরাস। অজানা আতঙ্ক।

কথাগুলো শুনে মোহিনী যেন নিভে গেলেন। তিনি মনে মনে ভাবেন, আরেফিন তো উহান শহরেই গেছে। ওর কি হবে? কি কি ভালো আছে? ওখানে যাওয়ার পর কিছুই তো জানাল না। হয়তো দুএকদিনের মধ্যেই জানা যাবে। ও যে কেন আমার কথা শুনল না? নিজে যা বোঝে তাই করে। আমার কথার কোনো মূল্য নেই ওর কাছে। ও যদি আক্রান্ত হয়।

মোহিনীকে চুপ থাকতে দেখে মোহসীন আহমেদ বললেন, কিরে মা, কি ভাবছিস?
মোহিনী দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে বললেন, না বাবা। কিছু না।
মোহিনী মন খারাপ করে নিজের কক্ষের দিকে গেলেন। তার মন খারাপ দেখে মোহসীন আহমেদ চিন্তায় পড়লেন। মনে মনে বললেন, মেয়েটার আবার কী হলো!

রাতে মা বাবার সঙ্গে খেতে বসেন মোহিনী। মোহিনীকে আনোয়ারা বেগম খাবার তুলে দেন। মোহসীন আহমেদকেও তুলে দিয়েছেন। মোহসীন আহমেদ খাওয়া শুরু করেছেন। কিন্তু মোহিনী খাচ্ছেন না। তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে গভীর চিন্তায় নিমগ্ন। তার সামনে যে খাবার দেয়া হয়েছে তাও সে টের পেয়েছে কি না সন্দেহ। মোহসীন আহমেদ মেয়ের দিকে তাকান। আনোয়ারা বেগমও কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলেন, মোহিনী শুরু কর না মা। কি এতো চিন্তা করছিস?


মোহসীন আহমেদও মোহিনীর কাছে তার মন খারাপের কারণ জানতে চান। তারপরও মোহিনীর ঘোর কাটছে না। নানারকম নেতিবাচক চিন্তা তার মাথায় ঘুরপাক খায়। আরেফিন যদি ওখানে আক্রান্ত হয়! তাহলে তো মহাবিপদে পড়বে! কে দেখবে ওকে? ও তো আমার সঙ্গে একটু যোগাযোগ করতে পারে। আমাকে নিশ্চিন্ত করতে পারে। ও এমন কেন! আমার কিছু ভালো লাগে না।

মোহসীন আহমেদ আবারও মেয়েকে উদ্দেশ করে বলেন, হ্যা রে মা! কি হয়েছে তোর?
বাবা, চীনের উহানে যেখানে করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি; আরেফিন সেখানেই তো গেছে। ওর যে কি অবস্থা খোদা তায়ালাই জানেন। আমি এতো করে বললাম, যেও না। আমার কথা শুনল না। এখন কি হবে?
হুম। আমিও বিষয়টা নিয়ে ভাবছি। গভীরভাবে ভাবছি। ওখানে করোনাভাইরাস যেভাবে ছড়িয়েছে! মাই গড! আচ্ছা, আরেফিন কি টেলিফোন করে? তোর সঙ্গে কোনো কথাবার্তা হয়?

মোহিনী চুপ করে আছেন। তিনি কী বলবেন? কোনো রকম কথাবার্তা তো হয় না। আরেফিন মোহিনীকে একটা ফোন নম্বর দিয়েছিলেন। সেই নম্বরে একবারও মোহিনী তাকে পাননি। আরেফিন ফোন দিলেও দুদিন পর হয়তো একবার দুই মিনিটের জন্য ফোন করেন। মোহিনীকে চুপ থাকতে দেখে মোহসীন আহমেদ বললেন, তার মানে তোকেও সে ফোন করে না? এটা কি কোনো কথা হলো?

আনোয়ারা বেগম বললেন, আসলে ছেলেটা এতো বেশি আত্মকেন্দ্রিক এবং আত্মবিমুখ; ওকে ঠিক বুঝতে পারি না। মোহিনী ওকে কতটুকু চিনেছে জানি না। তবে ওকে চেনা খুব সহজ ব্যাপারও নয়।


মোহিনী চুপ করেই আছেন। কোনো কথা বলছেন না। তিনি যে দ্রুত খেয়ে উঠবেন তাও পারছেন না। খাবার যেন ওর গলা দিয়ে নামছে না। অল্প করে ভাত মুখে দিয়ে এপাশ ওপাশ করেন। দাঁতের শক্তিও যেন হ্রাস পেয়েছে। মাঝেমধ্যে পানি দিয়ে গিলে ফেলেন।

মোহিনীর অবস্থা দেখে দুশ্চিন্তায় পড়েন মোহসীন আহমেদ ও আনোয়ারা বেগম। তারা উভয়েই মোহিনীকে নিয়ে ভাবেন। এক পর্যায়ে পরিস্থিতিটা অন্য দিকে নেয়ার জন্য মোহসীন আহমেদ বলেন, একটা ভালো ব্যাপার লক্ষ্য করলাম। মোহিনী ওর ব্যবসায় বেশ মনোযোগ দিয়েছে। মনোযোগটা আরো বাড়বে বলে মনে হচ্ছে।

তোমাকে এই খবর কে দিল বাবা? মোহিনী জানতে চাইলেন।
মোহসীন আহমেদ হাসলেন। তিনি যে ধারনা করে কথাটা বললেন তা প্রকাশ না করে বললেন, তোর অফিসের লোকজনই আমাকে জানালো।

বাহ! তাহলে তো খুব ভালো খবর! আনোয়ারা বেগম বললেন।
মোহিনী বললেন, আমি সত্যি সত্যিই মনোযোগ বাড়াতে চাচ্ছি। কিন্তু পারছি না। বার বার আরেফিনের কথা মনে পড়ে। ওর জন্য খুব খারাপ লাগছে। ওর যদি কিছু হয়ে যায়!

মোহসীন আহমেদ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলেন, আসলে জীবনে একবার ভুল করলে তার মাশুল সারাজীবন দিতে হয়। মোহিনী নিশ্চয়ই এখন বুঝতে পেরেছে যে, ও কী ভুল করেছে! তুমি ওর সঙ্গে বেশি বেশি গল্প কোরো। ওকে সময় দাও।


আমি চেষ্টা করছি। নানাভাবে ব্যস্ত থাকার পরামর্শ দিচ্ছি। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়!
খাওয়া শেষ করে মোহসীন আহমেদ নিজের ঘরে গিয়ে টিভি দেখেন। টিভিতে উহানের খবর দেখে মেয়েকে ডাকেন। মোহিনী, মোহিনী!
মোহিনী দৌড়ে এসে বিস্ময়ভরা কণ্ঠে বলেন, কি বাবা! কি হয়েছে!

দেখ দেখ! টিভিতে উহানের খবর দেখাচ্ছে। প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত আর মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ার কথা বলা হচ্ছে। আমাদের দেশেও করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে। প্রতিদিন যে পরিমাণ মানুষের যাতায়াত!

শুধু বাংলাদেশের কেন বলছ বাবা! সারা দুনিয়ার সঙ্গে চীনের যে যোগাযোগ তাতে এই ভাইরাস সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। শুনলাম, ভাইরাসটা ভয়ঙ্কর ছোঁয়াচে। একজন মানুষ যদি হাজার মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে তাহলে এর ভয়াবহতা তো সহজেই বোঝা যায়! এই গ্রহের কোনো দেশ আর বাদ থাকবে না!

বিস্ময় আর হতাশার সঙ্গে আনোয়ারা বেগম বললেন, হায় হায়! একটা ভাইরাস এতো ভয়ঙ্কর! মোহসীন আহমেদ বললেন, হুম। বড় বিপদ আমাদের সামনে। এখনই দেখছ না! বাজারে আগুন! হঠাৎ হঠাৎ বাজার থেকে চাল উধাও! ডাল উধাও! লবন উধাও! আরো কত কী! সুযোগ পেলেই কিছু কুলাঙ্গার ব্যবসায়ী জোট বেঁধে বাজারে শর্টফল করে। ওমনি শুরু হয় নাই নাই! আর মানুষ হাহাকার করতে থাকে। করোনায় যে কত মানুষকে বিপদে ফেলবে তা ভেবে আমার মাথা খারাপ অবস্থা!

আনোয়ারা বেগম ও মোহিনীর কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।

চলবে..

 

আরও পড়ুন

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

Header Ad
Header Ad

পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গে সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশের উদ্বেগ প্রকাশের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ মন্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে মন্তব্য এসেছে, তা ভিত্তিহীন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যে নিপীড়ন চলে আসছে, তার প্রতি ভারতের দীর্ঘদিনের উদ্বেগের সঙ্গে এই বিষয়টির তুলনা টানার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা একেবারেই অসৎ প্রচেষ্টা। এমনকি যেসব অপরাধী ওইসব ঘটনায় জড়িত, তারা আজও বিচার এড়িয়ে চলেছে।”

এর আগে ৮ এপ্রিল, ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

এই মন্তব্যকেই ‘হস্তক্ষেপমূলক’ ও ‘অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশকে দায়ী করেছেন। গত ১৬ এপ্রিল নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক সভায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পশ্চিমবঙ্গে অশান্তি ছড়িয়েছেন।”

প্রসঙ্গত, নতুন ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলায় ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আগুন লাগানো, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সড়ক অবরোধের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এই ইস্যু শুধু পশ্চিমবঙ্গেই সীমাবদ্ধ নয়—উত্তর প্রদেশসহ ভারতের আরও কিছু রাজ্যেও সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষ এবং নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

Header Ad
Header Ad

দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্টে ইমিগ্রেশন বিভাগে কর্মরত পুলিশ কনস্টবল শামীম হোসেন (৩০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সহকর্মীরা শয়নকক্ষের জানালা দিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।

নিহত শামীম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে। তার কনস্টবল নং ৫৩২।

চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ এসআই রমজান আলী জানান, শামীম হত অক্টোবরে দর্শনা ইমিগ্রেশনে যোগদান করে। যোগদানের পর থেকেই গত ৬ মাস ধরে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের ২য় তলার একটি কক্ষে বাস করে আসছিলেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় কয়েকজন সহকর্মী খোঁজ নিতে গেলে শামীম হোসেনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।

খবর পেয়ে সকালে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, সহকারী পুলিশ সুপার দামুড়হুদা -জীবননগর) সার্কেল জাকিয়া সুলতানা, দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর বেলা ১১ টায় মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন ২০১৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে।

Header Ad
Header Ad

দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁর আত্রাইয়ে বিষ প্রয়োগ করে দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে সানজিদা (১৬) নামে এক কিশোরীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকালে নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন নিহত কিশোরীর স্বজনেরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত কিশোরীর মামা ফজলুর রহমান। এ সময় অন্যদের মধ্যে ওই কিশোরীর মা খুশি বেগম, নানা মোসলেম প্রামাণিক, চাচা সাইফুল ইসলাম মন্ডল, মামা হামিদুল প্রামাণিক উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্য ফজলুর রহমান বলেন, নিহত কিশোরী সানজিদা আত্রাই উপজেলার আন্দার কোটা গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী শামসুল মন্ডলের মেয়ে। সানজিদা উপজেলার ঘোষগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা কাজের সূত্রে দীর্ঘদিন ধরে সৗদি আরবে ও আরব আমিরাতে (দুবাই) অবস্থান করছেন। শামসুল মন্ডলের স্ত্রী খুশি বেগম মেয়ে সানজিদাকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে বাস করে আসছিলেন। শামসুল বসতবাড়ির বসতভিটার উত্তর পাশে বাবা মোসলেম মন্ডলের কাছ থেকে জমি কিনে নিয়ে ৪ বছর আগে মাটির বাড়ি তৈরি করেন। সেই বাড়িতেই সানজিদা ও তার মা বসবাস করতো। পরে ওই জায়গায় পাকা বাড়ি করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করলে শামসুলের বাবা মোসলেম ও ভাই সাজিম মন্ডল বাঁধ সাজে। সানজিদার দাদা শামসুলকে বসতভিটার উত্তর পাশে পাকা বাড়ি না করে দক্ষিণ পাশে নীচু জায়গায় বাড়ি করার জন্য বলে আসছিল। এ নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। সানজিদার বাবা ও ভাই বিদেশে থাকায় বাড়ি করা নিয়ে বিরোধের জেরে সানজিদা ও তার মায়ের সঙ্গে তাঁর দাদা মোসলেম ও চাচা সাজিমের প্রায় পারিবারিক কলহ লেগে থাকতো। এই কলহের জেরে দাদা মোসলেম মন্ডল ও সাজিম মন্ডল হত্যার উদ্দেশ্যে গত ৯ এপ্রিল হত্যার উদ্দেশ্যে সানজিদার শরীরে বিষ প্রয়োগ করে। পরবর্তীতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ এপ্রিল রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে সানজিদা বলে গেছে তার দাদা ও চাচা তাঁর শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে বিষ প্রয়োগ করেছে। তাঁর এই বক্তব্যের ভিডিও ধারণ করা আছে। এ ঘটনায় রাজশাহী রাজপাড়া থানায় একটি অপমৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে মোসলেম মন্ডল ও সাজিম মন্ডল পলাতক রয়েছেন।

লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, গত ৯ এপ্রিল সকালে সানজিদা প্রাইভেট পড়ার জন্য ঘোষগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ে যায়। প্রাইভেট পড়ে সে বেলা ১১টার দিকে বাড়িতে আসে। এ সময় সাংসারিক কাজে সানজিদার মা খুশি বেগম বাড়ির বাইরে ছিলেন। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে সানজিদার দাদা মোসলেম ও চাচা সাজিম সানজিদার ঘরের ভেতরে যায়। দাদা মোসলেম সানজিদার পাশে বসে একপর্যায়ে তাকে জাপটে ধরে এবং চাচা সাজিম পকেট থেকে বিষের ইনজেকশন বের করে তার বাম হাতের শিরায় জোর ইনজেকশন প্রয়োগ করে। তারা সানজিদাকে হুমকি দিয়ে বলে এ কথা কাউকে বললে তার মতো বাবা ও ভাইকেও হত্যা করবে। সানজিদার মা খুশি বেগম বাড়িতে এসে মেয়েকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পেয়ে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় মেয়েকে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ওই দিনই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১২ এপ্রিল রাতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সানজিদার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত মোসলেম ও সাজিমের ফাঁসি দাবি করা হয়।

সাজিম মন্ডলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়ে তা বন্ধ পাওয়ায় অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাবুদ্দীন বলেন, ‘যে মেয়েটি মারা গেছে তার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় যোগাযোগ করা হয়েছিল। এ ঘটনায় রাজশাহী রাজপাড়া থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। সেখানেই নিহত কিশোরীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি
সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিলো রাশিয়া
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, জানালেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
নিজেকে বরিশাল সিটির মেয়র ঘোষণার দাবিতে মামলা করলেন ফয়জুল করীম