পারিবারিকভাবে আয়োজিত বিয়ে বেশি সুখের হয়: গবেষণা
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
বিয়ে করা যে একটা অতীব ভালো কাজ এটা নিয়ে কারও কোন সন্দেহ মনে হয় নেই। তাই বলে যারা বিয়ে করবে না বলে পণ করেছে তাদের কিন্তু খারাপ বলা যাবে না। একটা ছেলে বা মেয়ে বিয়ে করবে কি করবে না এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমাদের সমাজে সাধারণত দুই পদ্ধতিতে বিয়ে হয়ে থাকে। প্রেম করে বিয়ে এবং পরিবারের পছন্দ মত বিয়ে। প্রেমের বিয়ে, নাকি পারিবারিকভাবে আয়োজিত সমন্ধের বিয়ে? এ নিয়ে প্রচলিত আছে নানা মত।
তবে যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে, সমন্ধের বিয়েটা বেশি সুখের হয়। ১৫ হাজার মায়ের ওপর চালানো জরিপের ফলাফল থেকে এমন তথ্য মিলেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফ। যৌথভাবে গবেষণাটি করেছেন ম্যারেজ ফাউন্ডেশনের গবেষণা পরিচালক হ্যারি বেনসন ও লিংকন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক স্টিভ ম্যাককে। গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে তাদের দাবি, সমন্ধের বিয়েটা টেকসই ও সুখের হয়।
এ ব্যাপারে ব্রিটিশ পারিবারিক আদালতের সাবেক বিচারক ও ম্যারেজ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা স্যার পল কোলরিজ বলেন, প্রেমের বিয়ের ক্ষেত্রে ‘উপযুক্ত’ জীবনসঙ্গী খুঁজে বের করার ব্যাপার থাকে। যাকে পছন্দ করে বাকি জীবনটা একসঙ্গে কাটানোর চিন্তা করছেন, তিনি শেষ পর্যন্ত এমন থাকবেন তো? মনের ঘরে উঁকি দেয় এ প্রশ্ন। এ থেকে আসে আরও নানা বিষয়। সৃষ্টি করে মানসিক জটিলতার। তবে সমন্ধের বিয়েতে এই চাপটা থাকে না। কারণ, ধরেই নেওয়া হয় উপযুক্ত মানুষটির সঙ্গেই ঘর করার আয়োজন করে দিচ্ছে পরিবার।
এই গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত হিসেবে পরিচয় দেওয়া ৪৫ শতাংশ মা জানিয়েছেন যে তারা বিবাহিত জীবনে খুবই সুখী। ৩৪ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ মা এমন উত্তর দিয়েছেন। বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিদের ৯৯ শতাংশ নিজেদের ধার্মিক হিসেবে উল্লেখ করেছে। আর শ্বেতাঙ্গ মায়েদের ৪৭ শতাংশ নিজেদের খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী হিসেবে উল্লেখ করেছে।
ওই গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় জীবনবোধের সঙ্গে বিবাহিত জীবনে সুখী হওয়ার একটা সম্পর্ক আছে। কারণ, খ্রিষ্টান ও ইসলাম ধর্মের অনুসারী মায়েদের মধ্যে যথাক্রমে ৪৫ শতাংশ ও ৪৩ শতাংশ নিজেদের অনেক সুখী বলে জানিয়েছে। মুসলমান নারীদের বেশির ভাগের সমন্ধের বিয়ে হয়েছে। তাঁরা বলেছেন যে তাঁরা বিবাহিত জীবনে সুখী। খ্রিষ্টান ধর্ম পালন করেন এমন মায়েদের মধ্যে যাদের সমন্ধের বিয়ে হয়েছে, সংসার নিয়ে তাঁরা সুখের কথাই জানালেন।
সমন্ধের বিয়ে বেশি সুখের হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে ম্যারেজ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, এ ধরনের বিবাহবন্ধনে যারা আবদ্ধ হন, তারা কোনো ধরনের কৃত্রিমতা নিয়ে সম্পর্কে ঢোকেন না। পরস্পরের প্রতি অতি উচ্চাশা থাকে না। ফলে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে পরস্পরকে নতুন করে চেনাজানার মধ্য দিয়ে ভালো জীবনসঙ্গী হয়ে উঠতে পারেন তারা। তবে দেওয়া-নেওয়ার ওপর সম্পর্কের সাফল্য নির্ভর করে দুই বলে জানিয়েছেন গবেষকের একজন হ্যারি বেনসন।