চীনের মধ্যস্ততায় নতুন সম্পর্কে ইরান-সৌদি
সৌদি আরব ও ইরান গতকাল শুক্রবার (১০ মার্চ) তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক আবার শুরু করতে রাজি হয়েছে ও বছরের পর বছরের উত্তেজনা কাটিয়ে আগামী দুই মাসের মধ্যে আবার দুই দেশের দূতাবাসগুলো চালু করতে সম্মত হয়েছে।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এসপিএ একটি সরকারী বিবৃতিতে জানিয়েছে ‘চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মহৎ উদ্যোগে এবং সৌদি আরব রাজ্য ও ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের মধ্যে চীনের সমর্থনে ভালো উন্নয়নশীল সম্পর্ক গড়ার কাজে সাড়া দিয়েছে সৌদি আরব।’
তারা আরও জানিয়েছে এই তিনটি দেশ ঘোষণা করেছে যে, ‘সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে একটি সমঝোতা তৈরি হয়েছে। এই সমঝোতার মধ্যে তাদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আবার আরম্ভ ও আবার তাদের দূতাবাসগুলো খোলা ও মিশনগুলো চালু করা রয়েছে। এই কার্যক্রমগুলো দুই মাসের মধ্যে শুরু করা হবে। তারা পরস্পরের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করবে ও আভ্যন্তরীন বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করবে না।’
৬ মার্চ ও ১০ মার্চ শুক্রবার বেইজিংয়ে আলোচনার পর এই সমাঝোতাগুলো চীন, ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে হয়েছে।
সমঝোতা চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য দেশ দুটি তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের আলোচনার অঙ্গীকার করেছে। তারা তাদের রাষ্ট্রদূতদের আবার দূতাবাসগুলোতে প্রেরণ করবেন এবং দিপাক্ষিক উন্নয়নমুখী আলোচনার আয়োজন করবেন।
২০০১ সালের নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তিকে কার্যকর করতেও রাজি হয়েছে তেহরান ও রিয়াদ। তারা ১৯৯৮ সালের পারস্পরিক বাণিজ্য, অথনীতি ও বিনিয়োগ চুক্তিকেও নতুন করা সমঝোতার শর্তানুসারে কার্যকর করবেন।
এবারের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন ইরানের পক্ষে দেশের অন্যতম নিরাপত্তা কর্মকতা আলী শামখানি ও সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাসুদ বিন মোহামেদ আল-আইবান। আল আইবান বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন আমাদের রাজতন্ত্রের নেতৃত্ব। ভালো প্রতিবেশীসুলভ নীতিমালাগুলোর অধীনে এই অঞ্চল ও বিশ্বের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্বকে বাড়িয়ে তোলে এমন যেকোনো ও প্রতিদিন বিষয়ের জন্য কথা বলা এবং আলোচনা ও কূটনৈতিক নীতিমালাগুলোর অধীনে পার্থক্যগুলোর সমাধান করতে আমরা কাজ করছি।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘যে মূল্যবোধ আমরা অর্জন করেছি, তার মাধ্যমে আমরা আশা করি যে, আমরা গঠনমূলক আলোচনা চালিয়ে যেতে পারবো। এই সমঝোতার মূল স্তম্ভগুলো ও ভিত্তিগুলোর মাধ্যমে এবং সমঝোতা চুক্তির যথাযথ মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আমরা আশা করছি চীন তার ভালো ভূমিকা চালিয়ে যাবে।’
এই বিষয়ে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান তার টুইটারে বলেছেন, ‘সৌদি আরব ও ইরানের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুর্ণগ্রহণের মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য হলো, রাজনৈতিক অবস্থাগুলো ও আলোচনাধীন বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসা এবং এই অঞ্চলের অবিরাম স্থায়ী রূপ প্রদান।’
‘আমাদের মূল লক্ষ্য সমৃদ্ধির একটি মডেল স্থাপন ও আমাদের জনগণের কাজে লাগানোর মতো দুই দেশের সম্পর্কগুলোর স্থায়ীত্ব প্রদান।’
চীনের কেন্দ্রীয় বৈদেশিক সম্পর্ক কমিশনের পরিচালক ওয়াং ই বলেছেন, আলোচনা ও শান্তির জয় হয়েছে তাদের কথা বলার মাধ্যমে।
তিনি আরও বলেছেন ‘এই জয় আলোচনার, শান্তির, বিশ্বের অনেক বেশি সমস্যাক্রান্ত সময়ে একটি প্রধান ভালো খবর দেওয়া হয়েছে।’
‘আয়োজক দেশ হিসেবে চীন বিশ্বস্ততার সঙ্গে নিজের দায়িত্বগুলো পালন করেছে।’
ওএফএস/এএস