ন্যাটো রাশিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত নয়: পুতিন
প্রায় একমাস পর ইউক্রেন সংকট নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুললেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি অভিযোগ করেন, ন্যাটোও পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত নয়। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এ খবর জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, ইউক্রেনকে ঘিরে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার সহজ সমাধান কঠিন। তবে রাশিয়া সবসময়ই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার পক্ষপাতি। ন্যাটোসহ পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আদৌ আগ্রহী না। ফলে তারা কেবল রাশিয়ার উপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একতরফা ইউক্রেন সমস্যার সমাধান হবে না। সবপক্ষকে সবার নিরাপত্তা নিয়ে আগ্রহ দেখাতে হবে।’
ন্যাটো এবং যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া চিঠি প্রসঙ্গে পুতিন জানান, চিঠির বয়ান খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঠিক সময়ে উত্তরও দেওয়া হবে। তবে চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, চিঠিতে রাশিয়ার আশঙ্কার বিষয়গুলো ধরা হয়নি।
পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, পূর্ব ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করেছে। যুদ্ধের মহড়া চলছে। যে কোনোদিন তারা ইউক্রেন আক্রমণ করতে পারে। রাশিয়া অবশ্য বরাবরই বলে এসেছে, ইউক্রেন আক্রমণ করার জন্য ওই সেনা মোতায়েন করা হয়নি। নিজেদের আত্মরক্ষার্থে সেনা সাজিয়েছে রাশিয়া। তবে পূর্ব ইউক্রেনের বিতর্কিত অঞ্চলে রাশিয়া সেনা ঢুকিয়ে দিতে পারে, এ আশঙ্কা আছে। রাশিয়া আগ্রাসী হলে তার ফল ভালো হবে না বলে স্পষ্ট হুমকি দিয়ে রেখেছে ন্যাটো, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এতদিন এর উত্তর দিচ্ছিলেন। এবার মুখ খুললেন প্রেসিডেন্ট।
পুতিন জানিয়েছেন, রাশিয়া বরাবরই শান্তিপূর্ণ আলোচনার পক্ষপাতী। তারা যুদ্ধের বিরোধী। সাম্প্রতিক বিষয়টি নিয়েও তারা আলোচনা করতে আগ্রহী। সেখানে রাশিয়ার স্বার্থের কথাও আলোচনায় রাখতে হবে।
ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করা হবে কি না, এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই টালবাহানা চলছে। ২০০৮ সালে ন্যাটো জানিয়েছিল, ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হতে পারে। কিন্তু গত ১৩ বছরে তা বাস্তবে করা সম্ভব হয়নি। বরাবরই রাশিয়া এর বিরোধিতা করে এসেছে। সাম্প্রতিক বিতর্কে রাশিয়া এই বিষয়টিকে বড় করে দেখছে। এবং ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করলে তাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে।
চলতি সপ্তাহেই পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছেন হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট। হাঙ্গেরি রাশিয়াকে সমর্থন করছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। তারপরই সাংবাদিকদের সামনে মুখ খুললেন পুতিন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁকে আলোচনায় আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
এসএ/