সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

একাত্তরের শরণার্থীরা কেন মুক্তিযোদ্ধা নয়

আমি মুক্তিযুদ্ধের জন্য এতো ত্যাগ স্বীকার করলাম, ভাই হারালাম,মা মেয়ে হারালাম, তিনমাস বয়সী নাতনি হারালাম, দেশের বাড়িঘর, গরু, ছাগল, ধান, মাছ, গাছ, সহায় সম্পত্তি সব হারালাম। নিঃস্ব হলাম। ক্যাম্পে যেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করলাম। বিশ্ববিবেককে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আনতে সহায়ক ভূমিকা রাখলাম। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করলাম। মুক্তিযুদ্ধের জন্য এতো কিছু ত্যাগ করলাম। নিজে নিঃস্ব হলাম। তবুও আমি কেন মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভুক্ত হতে পারব না। কেন এই লাইনে আমার দাঁড়ানোর অধিকার নেই।

কথাগুলো বলছিলেন দক্ষিণবঙ্গের শেষ প্রান্তের গ্রাম জেলেখালি চান্নির চক এর মুক্তিযুদ্ধের জন্য সব হারানো একজন মানুষ সুরেন বাবু। সুরেন বাবু ছিলেন ঐ গ্রামের একজন জমিজমাওয়ালা বিত্তশালী ও প্রভাব প্রতিপত্তিশালী লোক। হিন্দু মুসলিম অধ্যুষিত বড় গ্রামের বিচার শালিসেও তিনি থাকতেন প্রধান ভূমিকায়। হিন্দু মুসলিম সবাই তাকছ শ্রদ্ধা করতো। তার ছোট ভাই নগেন বাবুও ছিল স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকার প্রভাবশালী। এলাকায় দুই ভাইয়ের প্রভাব প্রতিপত্তি ও মানুষের প্রতি আন্তরিক ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট সুনাম ছিল। সবাই তাদের ভালোবাসতো।

তখনও তাদের ছিল যৌথ পরিবার। দুইভাইয়েরই ছেলে মেয়ে বিয়ে দিয়েছে। পরিবারে সদস্য ও কৃষাণ-মাহিন্দার, ঝি-চাকরসহ বাড়িতে প্রায় ২৫ /৩০ জন লোক। তরপর তো আত্মীয়-স্বজন, অতিথি লেগেই আছে। প্রতি ওয়াক্তে সবমিলিয়ে প্রায় ৪০/৫০ জন লোকের রান্না হতো। তাদের পরিবারকে ছোটখাটো একটা মজলিস বাড়ি বললেও অত্যুক্তি হবে না।
প্রায় ৮০ বিঘার মতো পৈত্রিক ধানী জমি। ৩ বিঘার উপর বিশাল বাড়ি। এক বিঘার উপর বিরাট পুকুর। পুকুর ভরা মাছ। গোয়াল ভরা ৩০/৩২ টা গরু। ৭/৮ টা দুধের গাভি। উঠানে ২/৩ টা গোলায় ভর্তি ধান। গ্রামের অভিজাত পরিবার বলতে যা বোঝায় তা তারা।

তখন দেশে চলছে একটা অরাজক অবস্থা। সুরেণ বাবু সবসময় দেশকে নিয়ে ভাবতো। তার এমনি ভাব ছিল যে, দেশের ভালোর জন্য সে সব বিলিয়ে দিতে পারে।
এসে গেল ১৯৭১ সাল। দেশে শুরু হলো স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন। হটাও পাক বাঁচাও দেশ শ্লোগানে মুখর হলো সারা বাংলা। ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দিলেন "এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। তোমাদের যার যা আছে তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ো"।
ভাষণটি সুরেণ বাবুর পরিবার মনোযোগ দিয়ে রেডিওতে শুনলেন এবং মানসিকভাবে যুদ্ধে নামার প্রস্তুতি নিলেন।
২৫ শে মার্চ কালো রাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করার আগেই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে গেলেন। ২৬ শে মার্চ ঘোষণাপত্রটি বঙ্গবন্ধু্র পক্ষে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন জন পাঠ করলো। সেটাও সুরেণ বাবু শুনলেন।
শুরু হয়ে গেল স্বাধীনতা যুদ্ধ।
গ্রামে গ্রামে গঠিত হচ্ছে মুক্তিবাহিনীর কমিটি। সুরেণ বাবু তার নিজ গ্রামের মুক্তিবাহিনীর প্রধান হলেন । যুদ্ধে যাওয়ার সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করলেন। কিন্তু বাধ সাধল গ্রামের কিছু পাকিস্তানি দোসর মুসলিম রাজাকার, আলবদর, আল শামসরা। তারা সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ির উপর এসে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিতে লাগলো। বৌ, মা-বোনদের তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিলো। লুটপাট, ছিনতাই ও বাড়িঘরদোর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিলো।
ভয় পেয়ে গেল হিন্দুরা। তারা জন্মভিটা ছেড়ে
শরনার্থী হয়ে পার্শ্ববর্তি দেশ ভারতে আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো।
অগত্যা পরিবারের কথা ভেবে সুরেণ বাবুও সেই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন।

সুরেন বাবু যখন সিদ্ধান্ত নিলেন তার পরিবার নিয়ে ভারতে শরণার্থী হবে তখন তার গরুবাছুড় সহায় সম্পদ স্থানীয় চেয়ারম্যান ঘনিষ্ঠ বন্ধু সৈয়দ সানার হেফাজতে রাখার চিন্তা করলেন।
সেই মোতাবেক সৈয়দ সানার কাছে যেয়ে বললেন, দেখে বন্ধু আজ সময়ের বড় বেরহম। নিজের জন্মভিটা, জন্মভূমি, জন্মমাটি ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে পরবাসে। জানিনা ভাগ্যে কি আছে? আমার এই গরু বাছুড়, সহায় সম্পদ, বাড়িঘর সব তোমার হেফাজতে রেখে গেলাম। দেখো!
যদি কখনও দেশ স্বাধীন হয় আর বেঁচে ফিরে আসতে পারি, সেদিন আবার দেখা হবে।
তারপর জন্মভিটের একদলা মাটি নিয়ে কান্না বিজড়িত কণ্ঠে নিজের কপালে তিলক এঁকে দিলো। বললো হে মাটি তোমাকে ছেড়ে চললাম নিরুদ্দেশে। যদি বেঁচে থাকি আর যদি ভাগ্য সহায় হয় আবার ফিরে আসব।
সব ফেলে নিঃস্ব হয়ে পাড়ি জমালেন ভারতের উদ্দেশ্যে।
বাড়ির সকল সদস্যকে তুলে দিলেন নৌকায়। আর তারা দুইভাই তাদের বোন ও বোনজামাইকে সাথে নেওয়ার জন্য গেলেন ডাঙাপথে। কিছুদুর যেতেই পাকসেনাদের হাতে ধরা পড়লো দুই ভাই। ব্রাশফায়ারের জন্য অন্যদের সাথে দুজনকেও লাইনে দাঁড় করিয়ে দিলো।
সুরেন বাবু সেখান থেকে কোনোমতে পালিয়ে বেঁচে গেলেও ছোট ভাই নগেন বাবু আর পালাতে পারলো না। পাক আর্মিদের ব্রাশফায়ারে শহীদ হলো সে।

সুরেন বাবু কোনোমতে বেঁচে পরিবারের সাথে নৌকায় যোগ দিলো। সেদিন শরণার্থীদের পদে পদে ছিলো বিপদ।
কিছু দুর যেতেই এবার আবার নৌকাসহ পাক আর্মিদের আক্রমণে পড়লো। পাকদের তাড়া খেয়ে নৌকা থেকে যে যার মতো ছুটে পালালো। সুরেন বাবুর বড় পুত্রবধূ ভয়ে দৌড়াতে গিয়ে কোঁচড় থেকে তিন মাসের শিশু কন্যাটি কখন যে পড়ে গেল ঠিক পেলো না। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছে কিন্তু আর পাওয়া যায়নি।
পুত্রবধূটি পাগলির মতো কাঁদতে কাঁদতে চললো তাদের সাথে।
অবশেষে অনেক কষ্টে যেয়ে পৌঁছালো‌ শরণার্থী শিবিরে।

অস্থায়ী একটা তাঁবুতে স্থান হলো তার পরিবারের। ঘিঞ্চি পরিবেশ। শুধু লোক আর লোক। কেউ তাঁবু খাটিয়ে, কেউ একচালা টিনের ছাবড়া বানিয়ে, কেউ কেউ স্কুল কলেজের বারান্দায়, কেউবা সিমেন্টের বড় পাইপের মধ্যে অবস্থান নিয়েছে।
ঘন জনসমাগমে তৈরি হয়েছে এক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। বস্তির চেয়েও খারাপ অবস্থা।
নেই কোনো পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। একটা কাঁচা পায়খানায় শতাধিক লোক পায়খানা করছে। নেই স্নানের ব্যবস্থা। নদীর ময়লা নোংরা জলে পায়খানা ভাসছে সেই জলে সব ডুব মেরে স্নান করছে। খাওয়া দাওয়ার পরিবেশও অস্বাস্থ্যকরকর। রোগবালাই, মহামারী লেগে আছে। প্রতিদিন হাজার হাজার শিশু বৃদ্ধ যুবা মারা যাচ্ছে বিভিন্ন রোগে।
এরমধ্যেই সুরেন বাবু পরিবার নিয়ে কোনোমতে দিনাতিপাত করছে। হঠাৎ আশ্রয়কেন্দ্রে কলেরা মহামারী আকার ধারণ করলো। তার মা ও বড় মেয়ে কলেরায় মারা গেল।
এতো কিছুর মাঝেও যারা এদেশ থেকে মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে গিছিল সুরেন বাবু তাদের বিভিন্নভাবে সাধ্যমতো সহযোগিতা করলো। মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিলো, খাবার ব্যবস্থা করলো, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নিয়ে গেলো ইত্যাদি ইত্যাদি।

যাইহোক নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করলো। শরণার্থীরা সব দলে দলে দেশে ফিরে আসতে থাকলো। সুরেন বাবুও পরিবার নিয়ে দেশে ফিরে আসলেন।
বাড়িতে ফিরে এসে দেখলেন এক বিরাণভূমি। ধানের গোলাগুলি ভাঙাচোরা। তাতে নেই কোনো ধান। ঘরে আসবাবপত্রসহ কিচ্ছুটি নেই। একেবারে ফাঁকা। পুকুরে মাছ নেই। বাড়ির বড় বড় গাছগুলো সব কেটে নিয়ে গেছে। সৈয়দ সানার কাছে গরু চাইতে গেলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ফিরিয়ে দিলো।
এখন তার পরিবার একেবার নিঃস্ব।

স্বাধীনতার কিছুদিনের মধ্যেই গ্রামে গ্রামে শুরু হলো মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি।
মুক্তিযোদ্ধার খাতায় নাম ওঠানোর জন্য সব লাইন দিলো।
সুরেন বাবুও সেই লাইনে দাঁড়িয়ে গেলেন।
চেয়ারম্যান সাহেব সুরেন বাবুর কাছে এসে প্রশ্ন করলেন,
তুমি লাইনে দাঁড়িয়েছো কেন? তুমি কি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলে?
সুরেন বাবুর স্পষ্ট জবাব, শুধু যারা যুদ্ধ করেছিল তারাই কি মুক্তিযোদ্ধা? যারা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছিল তারা? স্বাধীনতাকে দ্রুত পাইয়ে দিতে যারা সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল তারা? তারা কি মুক্তিযোদ্ধা নয়?

আচ্ছা চেয়ারম্যান সাহেব জানা আছে কি
সেসময় এই শরণার্থীরাই স্বাধীনতার জন্য বিশ্ববিবেককে নাড়া দিতে সক্ষম হয়েছিল?
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই শরণার্থীদের দুর্বিষহ জীবন বিবেচনা করে দ্রুত স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য বিশ্ব সংঘকে চাপ প্রয়োগ করেছিল।
আমি তো মনে করি এই শরণার্থীরাই অর্ধেক স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। স্বাধীনতার জন্য শরণার্থীদের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। তবুও কেন তারা মুক্তিযোদ্ধা হতে পারবে না।

সেদিনের অনেক রাজাকার আলবদর আল শামসকে দেখছি মুখের খোলস বদলে এই লাইনে দাঁড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধা বনে যাচ্ছে।
অথচ আমি স্বাধীনতার জন্য এতো ত্যাগ করার পরও মুক্তিযোদ্ধা হতে পারব না? কেন পারব না বলতে পারেন?
এই বলে আক্ষেপের সুরে উপরের কথাগুলো বলছিলেন সুরেণ বাবু।
এ কথাগুলো শুধু সুরেন বাবুর নয় এ কথাগুলো আমাদের সকলের। এ কথাগুলো বিশ্ব বিবেকের।



ডিএসএস/ 

Header Ad
Header Ad

পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

দেশের পাঁচটি জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার ও সোমবার (২৭ ও ২৮ এপ্রিল) দেশের বিভিন্ন স্থানে এসব মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। কুমিল্লার মুরাদনগর ও বরুড়া উপজেলায় চারজন, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও মিঠামইনে তিনজন, নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও মদনে দুজন, সুনামগঞ্জের শাল্লায় একজন এবং চাঁদপুরের কচুয়ায় একজন প্রাণ হারিয়েছেন।

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর পূর্বপাড়া এলাকায় ধান কাটতে গিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বজ্রপাতে দুজন কৃষক নিহত হন। নিহতরা হলেন নিখিল দেবনাথ (৫৮) ও জুয়েল ভূঁইয়া (৩০)।

একই জেলার বরুড়া উপজেলার খোসবাস উত্তর ইউনিয়নের পয়েলগচ্ছ গ্রামে দুপুর ১২টার দিকে ঘুড়ি ওড়ানোর সময় বজ্রপাতে মারা যায় দুই কিশোর—মোহাম্মদ জিহাদ (১৪) ও মো. ফাহাদ (১৩)। এ সময় আবু সুফিয়ান (সাড়ে ৭) নামের একটি শিশু আহত হয় এবং তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে খয়েরপুর আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের হাওরে ধান কাটার সময় সকালে বজ্রপাতে প্রাণ হারান দুই কৃষক—ইন্দ্রজিৎ দাস (৩০) ও স্বাধীন মিয়া (১৫)। একই সময়ে মিঠামইন উপজেলার শান্তিগঞ্জ হাওরে ধানের খড় শুকাতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হন ফুলেছা বেগম (৬৫) নামের এক নারী।

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ধনুন্দ গ্রামে রবিবার রাত ১০টার দিকে বজ্রপাতে আহত হয়ে পরে হাসপাতালে মারা যান দিদারুল ইসলাম (২৮)। তিনি একটি ইফতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন।
আজ সকাল ৭টার দিকে মদন উপজেলার তিয়োশ্রী গ্রামে মাদ্রাসাগামী শিশু মো. আরাফাত (১০) বজ্রপাতে মারা যায়।

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার আটগাঁও গ্রামের বুড়িগাঙ্গাল হাওরে গরু চরাতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান রিমন তালুকদার। তিনি শাল্লা ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার নাহারা গ্রামে সকালে বজ্রপাতের বিকট শব্দে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান বিশাখা রানী (৩৫)। তিনি কৃষক হরিপদ সরকারের স্ত্রী। চিকিৎসক জানান, বজ্রপাতের সরাসরি আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল না, শব্দের প্রভাবে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

 

Header Ad
Header Ad

জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম

মডেল মেঘনা আলম। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জামিন পেয়েছেন মডেল মেঘনা আলম।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহ শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুরের আদেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার অভিযোগপত্র পর্যালোচনা এবং মেঘনা আলমের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।

এর আগে গত ১০ এপ্রিল মডেল মেঘনা আলমকে ডিটেনশন আইনে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে আটক করে আদালতে হাজির করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর আদালতে তাকে আটক রাখার আবেদন করলে সেটি মঞ্জুর হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, মেঘনা আলম ও দেওয়ান সমিরসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জন মিলে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। এই চক্রটি বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদের ব্যবহার করে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কূটনীতিক ও দেশীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনে উৎসাহিত করত। এরপর এসব সম্পর্কের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে ভিকটিমদের সম্মানহানির ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হতো।

 

মডেল মেঘনা আলম। ছবি: সংগৃহীত

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামি দেওয়ান সমির 'কাওয়ালি গ্রুপ' নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং 'সানজানা ইন্টারন্যাশনাল' নামে একটি ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক। এর আগে তার 'মিরআই ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড' নামের একটি প্রতিষ্ঠান ছিল।

চক্রটি 'ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর' নিয়োগের নামে সুন্দরী ও আকর্ষণীয় মেয়েদের ব্যবহার করে সহজে বিদেশি কূটনীতিক ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের কাছে যাতায়াতের সুযোগ তৈরি করত। উদ্দেশ্য ছিল ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে বড় অঙ্কের চাঁদা আদায় এবং দেওয়ান সমিরের ব্যক্তিগত ব্যবসাকে লাভজনক করা।

Header Ad
Header Ad

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন করলো সরকার

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস সংরক্ষণ, আন্দোলনে নিহতদের পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন এবং এই গণ-অভ্যুত্থানের আদর্শকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে 'জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর' গঠন করেছে বাংলাদেশ সরকার।

সোমবার (২৮ এপ্রিল ২০২৫) সরকারের পক্ষ থেকে গেজেট আকারে এ সংক্রান্ত ঘোষণা প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এই অধিদপ্তর গঠনের জন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন অধিদপ্তর গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনেই এই নতুন অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

এর পাশাপাশি, অধিদপ্তর গঠনের প্রক্রিয়ায় গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজমের সভাপতিত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরে উপদেষ্টা পরিষদে বিষয়টি উপস্থাপিত হলে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই অধিদপ্তর শুধু ইতিহাস সংরক্ষণের কাজই করবে না, বরং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন গবেষণা, প্রকাশনা এবং সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। একইসঙ্গে, নিহত এবং আহতদের পরিবারদের যথাযথ পুনর্বাসন ও সহায়তার ব্যবস্থাও করা হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু
জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন করলো সরকার
নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি
পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা