বৈশাখের পূর্ণতায় ভিন্ন সাজে রাজশাহী কলেজ
বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে বৈশাখ বিদায়ের আর মাত্র এক দিন বাকি। তবে বৈশাখে প্রকৃতির যে সৌন্দর্য তার পূর্ণতার সময় এখনই। চৈত্রের দাবদাহের রুক্ষতা মাড়িয়ে রাজশাহী কলেজের প্রকৃতিও এখন চির সবুজ। মনজুড়ানো বাহারি ফুলের সমাহার পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে। সবুজ পত্র-পল্লবে মোড়ানো দেশসেরা এই ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য নজর কাড়ছে শিক্ষার্থীসহ আগত দর্শনার্থীদের।
লাল-সাদার ঐতিহ্যবাহী ভবন ও প্রকৃতির সৌন্দর্যের মিতালির সঙ্গে বাড়তি মাত্রা যোগ করছে পাখিদের গুঞ্জন। কিচির-মিচির ধ্বনির সঙ্গে ককিলের কুহুতান।
প্রকৃতির সৌন্দর্য ও পাখিদের সুরের এমন মূর্ছনার মাঝেই বৈশাখের বিদায়ী লগ্নে বৃহস্পতিবার (১২ মে) সকালে রাজশাহী কলেজ প্রশাসনের উদ্যোগে এদিন বৈশাখী সাংস্কৃতিক উৎসব ১৪২৯ উদযাপিত হয়েছে নাচে-গানে। পহেলা বৈশাখে রমজান চলমান থাকায় বিলম্বেই এ আয়োজন। রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে এই সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঐতিহ্যবাহী এই কলেজটিতে ঠুকতেই চোখে পড়বে লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়ার রক্তরাঙ্গা হাসি। বৈশাখের আবহে রাজশাহী কলেজ শহীদ মিনারের পাশের এই সৌন্দর্য যে কারোরই নজর কাড়ছে। কলেজ লাইব্রেরির পাশ দিয়ে সরু পথে হেঁটে যেতেই চোখে পড়বে নয়নাভিরাম ফুলের এক বর্ণিল আয়োজনের ফুলেল বাগান।
শুধু এটিই নয়; কলেজের বিলুপ্ত প্রজাতির বৃক্ষসহ প্রতিটি গাছের ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য অপলকে চেয়ে থাকার মতো। যে বৃক্ষ মাঝে বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতির অবাধ বিচরণ। কলেজ প্রশাসন ভবনের পেছনেই পদ্ম পুকুরের সৌন্দর্য। যদিও এখনো পুরো পুকুরজুড়ে কানায় কানায় পদ্ম ফোঁটেনি। তবে পদ্ম ফুলের মাঝে সাদা বকের এ পাশ থেকে ওই পাশে উড়ে বেড়ানোর দৃশ্য অপলকে চেয়ে থেকে দেখছেন পুকুর পাড়ে বসে থাকা শিক্ষার্থীরা।
এমনিই একজন রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থী আফসানা মিমি। তিনি বলেন, রাজশাহী কলেজের সৌন্দর্যের কোনো তুলনা হয় না। এটি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলেও এখানকার গুছানো পরিবেশ ও সৌন্দর্য যে কারও মন কাড়বে। কলেজের এমন পরিবেশ শিক্ষার্থীদের জন্য বড় পাওয়া। আজ (১২ মে) পদ্ম পুকুরের পাশে সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন চলছে। তবে মঞ্চের দিকে চেয়ে থাকতে থাকতে কখন যে পাশেই পুকুরের পদ্ম ফুলে আবদ্ধ হয়ে গেছে দৃষ্টি বুঝতেই পারিনি।
শুধু পদ্ম ফুলে দৃষ্টি আবদ্ধ হওয়ায় নয়; কলেজে ক্লাস রুমের বাইরে শিক্ষার্থীদের খোশ গল্পের একটি বড় অংশজুড়ে থাকে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য। ক্যাম্পাসের অভ্যান্তরীণ রাস্তাগুলোর দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির সৌন্দর্য বর্ধনকারীর গাছ রয়েছে। যে গাছগুলোতে ফুটেছে বাহারি ফুল। কাঠগোলাপ আর কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ছে।
রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আব্দুল খালেক বলেন, রাজশাহী কলেজ সব সময় গোছানো থাকে। যারাই এই কলেজে আসে এখনকার পরিবেশ ও সৌন্দর্যের মায়া ডোরে আবদ্ধ হয়। প্রকৃতিতে এখন বৈশাখের সৌন্দর্য বিরাজ করছে। পুকুরে পদ্ম, গাছে ফুল, পাখিদের গুঞ্জন সবকিছুই আছে। সবুজের মাঝে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমন সৌন্দর্য শিক্ষার্থীদের সকল অবসাদ নিমিষেই দূর করে দেয়।
এমএসপি