কমতি আছে, ভালোবাসায় ভরা থাকে
লেখা ও ছবি : জুনায়েদ খান, প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
শহর, গ্রামের ইফতার ও সাহরির চেয়ে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আয়োজন। কমতি আছে, ভালোবাসায় ভরা থাকে। খুব আড়ম্বরপূর্ণ হয়। উৎসাহ ও উদ্দীপনার শেষ থাকে না কোনো ছেলে, মেয়েদের মধ্যে।
বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও সেরা সরকারী-চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক ও বর্তমানদের মধ্যে ভালোবাসা এবং মমতার বাঁধন যেন চিরকাল থাকে, সেজন্য দোয়া করে ‘অদম্য ৫৪ ব্যাচ’ ১৬ এপ্রিল প্রীতি ইফতারের আয়োজন করেছে।
কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের পাশে, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর’ চত্বরে হয়েছে তাদের বিশেষ ইফতার। দুটি বছর ক্যাম্পাস বন্ধ থেকে আবার খোলার পর সবার সঙ্গে সবার দেখা ও আলাপের এবং আড্ডার ঐতিহাসিক ক্ষণ হয়ে গিয়েছে।
এজন্য আগে থেকে তারা প্রস্তুতিতে নেমেছেন। ৫৪ ব্যাচ ইতিহাসের শ্রেণী প্রতিনিধি ও সবচেয়ে ভালো ছাত্র সাইমুর রহমান সিয়াম ইফতারের প্রধানের ভূমিকা নিয়েছেন। তার পরামর্শে দুপুরে ক্লাস শেষের পর কয়েকজনের দল চলে গিয়েছেন আশেপাশে। কিনে এনেছেন ও বান্ধবীদের সাহায্যে তৈরি করেছেন বেগুনি, আলুর চপ, খেজুর, ছোলা, জিলাপি, কলা ও জুস। সবার সামনে দিয়েছেন ধৃতি সুন্দর, নাদিম ও বদি (বদিউজ্জামান)। তারা সবাইকে আরো সব কাজে সাহায্য করেছেন।
বসার নীচে তাদের সবার খবরের কাগজ, সামান্য আলাপ ও খোঁজখবর নিয়েছেন একে-অন্যের। বন্ধুরা গোল হয়ে আর বান্ধবীরা এক কোণে বসেছেন। তবে সময় যত ঘনিয়েছে মাগরিবের আজানের, তাদের জড়তা তত কেটেছে। ভালোবাসার ভুবন তাদের ঘিরেছে। ইফতারের দোয়া ও মোনাজাত করেছেন মোহাম্মদ সোহাগ মিয়া। ইফতারের পরেও আড্ডা জমেছে অনেকক্ষণ।
এরপর খেয়েছেন তারা সবার টাকায় আগের মতো কেনা ‘বিরিয়ানি’।
সোহাগ পরে ঢাকাপ্রকাশ ২৪.কমের তাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও ছাত্র জুনায়েদ খানকে বলেছেন, ‘আমাদের প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলাদেশের সুনামের অংশীদার। মোট ২ হাজার ১শ একরের বিরাট ক্যাম্পাস। অনবদ্য সুন্দর। পাহাড় ঘেরা, লেক, ঝর্ণাতে বহমান বিশ্ববিদ্যালয়টিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়। এখানে পড়ালেখা করতে হয় বাইরে থেকে শাটলে চড়ে। এখন পড়েন প্রায় ৩০ হাজার ছাত্র, ছাত্রী। প্রায় দুই হাজার শিক্ষক আছেন আমাদের। অন্যান্য বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আমাদের ক্যাম্পাসটিও হলনির্ভর। অধিকাংশই হলে থাকেন। পাঁচটি বছর তারা বছরের প্রায় পুরোটা হলে কাটান। একে, অন্যকে নির্ভর করে বাঁচেন। রোজায়ও আমাদের মধ্যে সবার সুমধুর সম্পর্ক থাকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রোজার মাসের ছবি অনন্য।’
এই ইতিহাস ‘৫৪’র শ্রেণী প্রতিনিধি সাইমুর রহমান সিয়াম বলেছেন, ‘আমিও অন্যদের মতো মা-বাবাকে ছেড়ে পড়ালেখা করতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি। বন্ধু-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই আপনজন। সবার মাঝে বন্ধুত্ব থাকুক এই আমাদের প্রত্যাশা।’
ওএস।