কেউ জানে না বৃক্ষটির নাম বয়স
কেউ জানে না বৃক্ষটির নাম কি? কত বছর আগে এর জন্ম তাও জানেন না কেউ। সবাই এ গাছকে অচিন বৃক্ষ বলেই জানেন। নওগাঁ সদর উপজেলার চকপ্রসাদ এলাকায় নওগাঁ-শৈলগাছী সড়কের পশ্চিম পাশে দৈব্য আকৃতি এ বৃক্ষ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এই বৃক্ষটি দূর থেকে অনেকটা বটবৃক্ষর মতো দেখতে হলেও পাতা বা ফলের কোন মিল নেই বট বৃক্ষের সঙ্গে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, বৃক্ষটির বয়স প্রায় ৪০০ বছর। ৪ পুরুষ এ বৃক্ষের জন্ম বৃত্তান্ত সর্ম্পকে কিছুই বলতে পারেননি। বৃক্ষটির শাখা-প্রশাখা অনেক। বর্তমানে বৃক্ষটি প্রায় এক একর জমির আয়তন ঘিরে রয়েছে।
স্থানীয় ফিরোজ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা আমাদের বাপ-দাদার কাছ থেকে এই বৃক্ষ সম্পর্কে শুনেছি। আমাদের ৪ পুরুষও কেউ জানেনা বৃক্ষটির নাম কি? তারা বলেছেন, অনেক বছর আগে বড় একটা বন্যা হয়। সেই বন্যার এই বৃক্ষটি ভেসে এসে এখানে আটকে যায়। তারপর থেকে বৃক্ষটি এখানে বড় হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই বৃক্ষের নাম কেউ জানেন না। নামহীন এই অচিন বৃক্ষটিকে ঘিরে আমাদের এলাকার মানুষের মাঝে অনেক কৌতুহল। এছাড়াও বৃক্ষটিকে দেখতে প্রতিদিনই আশে পাশের এলাকা থেকে অনেক মানুষ দেখতে আসে।’
স্থানীয় আব্দুল মান্নান জানান, এই বৃক্ষের পাতা বছরে একবার ঝরে পড়ে। এরপর দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে আবারও পাতা গজায়। এই বৃক্ষের ফল মাটিতে পড়লেও তা থেকে নতুন গাছ জন্মায় না। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এই বৃক্ষের গোড়ায় পূজা-পার্বণ করে থাকেন। বছরে একবার এখানে বড় আকারে মেলা বসে ও ভরন খেলা হয়। এবং অনেক মানুষের সমাগম হয়। বৃক্ষটিকে গ্রামীণ ঐতিহ্য হিসেবে সরকারিভাবে সংরক্ষণের দাবি জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা সন্তোষ কুমারের কাছে পূজা করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের পূর্ব-বংশধররা পূজা করেছিলেন। তাই আমরাও পূজা করে আসছি। প্রতি বছর আমরা এখানে কালিপূজা করে থাকি এবং বছরে একবার জাঁকজমকপূর্ণভাবে এখানে মেলা বসে এবং ভরন খেলা হয়। প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটে।'
গাছটির বিষয়ে কথা হয় স্থানীয় পরিবেশবিদ ও নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খানের সঙ্গে। তিনি জানান, গাছটি এলাকার মানুষের কাছে অচিন বৃক্ষ নামে পরিচিতি। এই বৃক্ষটির নাম কেউ বলতে পারে না। তাই এই বৃক্ষ নিয়ে মানুষের যে সন্দেহ, আছে সেটি উদঘাটন হওয়া দরকার। তাই এই বৃক্ষটির সঠিক নাম ও বয়স জানতে গবেষণা করা দরকার। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।