মায়ের কবরেই শায়িত হলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার
‘নীল আকাশের নিচে আমি রাস্তা চলেছি একা’; ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল; জয় বাংলা বাংলার জয়; হে বন্ধু বঙ্গবন্ধু-এরকম ২০ হাজারেরও বেশি গানের শ্রষ্টা গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) তাকে বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরেই চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন বাংলা গানের এই বরণ্যে গীতিকবি।
তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে দেশের সংস্কৃতি জগতের একটা বড় অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল।
সোমবার দুপুরের দিকে তার মরদেহ চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে নেওয়া হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় কবির দ্বিতীয় জানাজা। এরপরই শুরু হয় বৃষ্টি। কিংবদন্তিকে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষ চ্যানেল আই ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে বৃষ্টির ফোঁটা যেন আপন করে নেয় গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে বহন করা লাশবাহী গাড়িটিকে।
জানাজা শেষে বৃষ্টির মধ্যেই তার মরদেহ নেওয়া হয় গুলশানের আজাদ মসজিদে। সেখানে বাদ আসর অনুষ্ঠিত হয় তৃতীয় জানাজা। মন ভারী করা আকাশের কান্না তখনও থামেনি। আকাশের কান্না কিছুটা কমলে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বনানী কবরস্থানে মা খোদেজা বেগমের কবরে সমাহিত করা হয় বাংলা গানের আকাশে উজ্জ্বলতম এই গীতিকবিকে।
তাকে চিরনিদ্রায শায়িত করার সময় বনানী কবরস্থানে উপস্থিত ছিলেন-ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, কবির ছেলে উপল, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়সহ পারিবার ও সংগীতাঙ্গনের ঘনিষ্ঠজনেরা।
এর আগে কবিকে রাষ্ট্রীয় সম্মান ও ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সোমবার বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত মরদেহ রাখা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। ১২টার পর নিয়ে যাওয়া হয় তার ৬০ বছরের কর্মস্থল এফডিসি প্রাঙ্গণে।
রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান গাজী মাজহারুল আনোয়ার। ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। বর্ণাঢ্য জীবনে তিনি গান লিখার পাশাপাশি চলচ্চিত্র পরিচালনা, প্রযোজনা এবং চিত্রনাট্য রচনার ক্ষেত্রেও নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা স্বাধীনতা ও একুশে পদকসহ শতাধিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন নন্দিত এই গানস্রষ্টা।
এনএইচবি/এমএমএ/