পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পে ১০ কাঠার একটি প্লট জালিয়াতির মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ মোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করে এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে গ্রেফতার সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৪ মে দিন ধার্য করেন আদালত।
শেখ হাসিনা-পুতুল ছাড়াও পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য ১৬ আসামি হলেন- জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লাহ খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (অব.) ইঞ্জিনিয়ার সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান ও হাবিবুর রহমান, তদন্ত প্রাপ্তে আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
পূর্বাচলে ১০ কাঠার প্লট জালিয়াতির ঘটনায় চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরও দুই আসামিসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। চার্জশিটে সাক্ষী করা হয়েছে ১৬ জনকে।
চার্জশিটে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ ও পরিবারের অন্য সদস্যদের মালিকানায় ঢাকা শহরে রাজউকের এখতিয়ারাধীন এলাকায় বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরও তা হলফনামায় গোপন করে পূর্বাচল নতুন শহর আবাসন প্রকল্পে প্লট নেন।
প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত আইন, বিধি ও নীতিমালা এবং আইনানুগ পদ্ধতি লঙ্ঘন করে শেখ হাসিনাকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করে রাজউকে কোনো আবেদন না করেই মায়ের কাছে আবদারপূর্বক আবেদন পেশ করেন পুতুল। এরপর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেন। বরাদ্দ প্লট নিজ নামে রেজিস্ট্রিভুক্ত করে নেন এবং সরকারি জমি আত্মসাৎ করে নিজ ভোগদখলে রেখেছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
প্রকল্পের বরাদ্দবিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত অপর ১৬ আসামি অবৈধভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আইনমতে বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও পরস্পর যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হয়ে ও অন্যকে লাভবান করার উদ্দেশ্যে আইনবহির্ভূত প্লট বরাদ্দ দেন।