বিশেষ নাটক ‘একজন কফিলুদ্দিন’
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এটিএন বাংলায় আজ (১৫ আগস্ট) রাত ৮টা ৪৫মিনিটে প্রচার হবে বিশেষ নাটক ‘একজন কফিলুদ্দিন’। ‘মহামানবের দেশে’ গল্প অবলম্বনে নির্মিত নাটকটির রচনা করেছেন সহিদ রাহমান। নাট্যরূপ দিয়েছেন বিদ্যুৎ রায় এবং পরিচালনা করেছেন সুমন ধর।
নাটকটিতে বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন দু-বাংলার খ্যাতিমান কথা-সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, গাজী রাকায়েত, আহমেদ রুবেল, রোকেয়া প্রাচী প্রমুখ।
নাটকে গল্পে দেখা যাবে-ছোটবগী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব কফিলুদ্দিন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসায় ২৬ বছর ধরে খালি পায়ে, কালো-কাপড় পরিধান করে ও কোন প্রাণীর মাংস না খেয়ে জীবন যাপন করছেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার এমন শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর শোক পালন মানুষকে হতবাক করে। ফলে গ্রামের মানুষ তাকে মুজিব পাগল নামে ডাকে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয় সে। পরিবার পরিজনের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধে গিয়েছিলেন কফিলুদ্দিন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি ছিল তার অগাধ বিশ্বাস। যুদ্ধ শেষে গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মিজানের কাছে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাত লাভের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।
কমান্ডার জানান, ঢাকাতে নিয়ে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাৎ প্রাপ্তির বিষয়টি জটিল ও অনিশ্চিত। তবে কমান্ডার আশান্বিত করে বঙ্গবন্ধু আমতলীতে এক জনসভায় আসবেন। তাকে সেখানে নিয়ে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে দূর থেকে দেখার সুযোগ করে দিবেন। পরবর্তী সময়ে কমান্ডারের কাছ থেকে খবর পেয়ে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলা হয়ে ৩৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে কফিলুদ্দিন সেখানে যান। ততক্ষণে বঙ্গবন্ধু আমতলীর জনসভা শেষ করে ঢাকার উদ্যেশে চলে যান। অল্প সময়ের জন্য বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার দেখা হয়নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে এক নজর দেখার হাল ছাড়েননি কফিলুদ্দিন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট চরপাড়া গ্রামে চায়ের দোকানে বসে রেডিওতে শুনতে পারেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে ঘাতকরা হত্যা করেছে। স্বাক্ষর জ্ঞানহীন কফিলুদ্দিন শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েন।
কফিলুদ্দিন খুনি ঘাতকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ ঐ সময় থেকেই প্রতিজ্ঞা করে আমৃত্যু খালি পায়ে, গায়ে কালো-কাপড় পরে ও মাংস না খেয়ে জীবন যাপন শুরু করেন এবং বিনিময়ে কিছুই চাননি।
এএম/এমএমএ/