মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫ | ২৫ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ফিরে দেখা ২০২১

ফিরেনি ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা

২০২০ সালের করোনার ধাক্কা সামলাতে সরকার বিভিন্নভাবে উদ্যোগ নেয় চলতি বছরে। অর্থনীতি চাঙ্গা করাই ছিলো উদ্দেশ্য। ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা প্যাকেজসহ বিভিন্নভাবে সুবিধা দেয়। কিন্তু তাতে বিভিন্ন স্থানে হয়েছে নয়-ছয়। খেলাপী ঋণের লাগাম টানা যায়নি। তা কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। অনিয়মে সহায়তা করার অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নর ও কয়েকজন নির্বাহী পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যা নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। শুধু তাই নয়, নিজের ব্যাংকে ভুয়া ঋণ নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে এসবিএসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এস এম আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে। এমনকি ব্যাংকারদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হওয়ায় নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। ব্যাংকে জমে টাকার পাহাড়। সুদহার কমতে সুদ বেঁধে দিলেও তেমন কার্যকর হয়নি নয়-ছয়। এভাবে বিভিন্ন আলোচনার মাধ্যমে ২০২১ সাল বিদায় হচ্ছে ব্যাংক খাত।

খেলাপি ঋণ:

বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনার প্রভাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সংকট দেখা দেয়। তা মোকাবেলা করতে বিভিন্ন সুযোগ দেয় সরকার। এরফলে ২০২০ সালে তেমন ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হয়নি গ্রাহককে। খেলাপী হয়নি ব্যাংক।। ফলে কাগজে-কলমে কমে যায় খেলাপি ঋণ। বছরের শুরু হয় ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নিয়ে। এরপরও অনেক ক্ষেত্রে সুবিধা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিভিন্ন শিথিলতার আওতায় চলতি বছর একজন গ্রাহকের যে পরিমাণ ঋণ পরিশোধের কথা, ডিসেম্বরের মধ্যে তার ২৫ শতাংশ পরিশোধ করলেও তাকে আর খেলাপি করা যাবে না। এরপরও বাড়ছে খেলাপিঋণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য মতে, সেপ্টেম্বর মাসে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতের মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়ায় ১২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি পরিণত হয়েছে এক লাখ এক হাজার ১৫০ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৮ দশমিক ১২ শতাংশ। এরফলে চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে খেলাপি ঋণ বাড়ে ১২ হাজার ৪১৬ কোটি টাকা।

প্রণোদনা ঋণে ‘নয়-ছয়’:

করোনার সংকট থেকে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সরকার বিভিন্ন খাতে মোট ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সব মিলিয়ে এসব প্যাকেজে অর্থের পরিমাণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকার নয়টি প্যাকেজের বাস্তবায়ন হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে। কিন্তু অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের এ প্যাকেজ নিয়েও অনিয়ম, ঋণজালিয়াতি ও বেআইনিভাবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের অভিযোগ ওঠে। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর জরিপে বলা হয়েছে, দুর্নীতিবাজদের ঘুষের পাতা ফাঁদ সরকারঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও স্বচ্ছতার অভাব ও দুর্নীতিবাজদের কারণে দেশের ৭৯ শতাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানই ঘোষিত ওই প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ পায়নি।

ব্যাংক মালিক ও শীর্ষ নির্বাহীরাও অনিয়মে:

আগে যা কখনো ঘটেনি চলতি বছরে ব্যাংকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এস এম আমজাদ হোসেনের নাম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে নামে-বেনামে নিজ ব্যাংকের অর্থ সরানোর। ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে তুলে নিয়েছেন টাকা, কর্মচারীদের নামে ঋণ নিয়েছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর প্রতিবেদন বলছে, খুলনা বিল্ডার্স নামের একটি নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমানতকারীদের ২০ কোটি ৬০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন আমজাদ হোসেন। এমন অভিযোগে মামলাও হয়েছে দুদকে। শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।

অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতায় বছরের শুরু থেকেই আলোচনায় ছিল ন্যাশনাল ব্যাংক। কিছুদিন কোনো পর্ষদসভা না থাকলেও প্রায় ৯০০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়। নামে-বেনামে ঋণ বিতরণ ঠেকাতে নতুন করে ন্যাশনাল ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া নানা অভিযোগে ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক এমডি বুলবুলকে নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

অপরদিকে অতিতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে অনিয়মে সহায়তা করার অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নরসহ তিনজন নির্বাহী পরিচালককে (ইডি) জিজ্ঞাসাবাদও করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের কারণ উদঘাটনে গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং (কারণ উদ্ঘাটন) কমিটি। এটা চলতি বছরের নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। অর্থের বিনিময়ে অনিয়ম গোপন ও নানা কেলেঙ্কারিতে সহযোগিতার অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর ও বর্তমান নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমের বিরুদ্ধে। এছাড়া সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান, সাবেক নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান, শেখ আব্দুল্লাহকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এছাড়া বছরজুড়ে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও (এনবিএফআই) আলোচনায় ছিল। বছরের শুরুতে বেসরকারি খাতের আর্থিক প্রতিষ্ঠান উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড’র বড় ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারির তথ্য বেরিয়ে আসে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকরা ঋণ বের করে নেন। যার নথিপত্রও গায়েব করে ফেলা হয়।

 

ব্যাংক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস:

বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ব্যাংকের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়। কিন্তু বছরের শেষে সেখানেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গত ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে পাঁচটি সরকারি ব্যাংকের এক হাজার ৫১১টি ‘অফিসার ক্যাশ’ পদের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর একাধিক প্রার্থী অভিযোগ করেন, পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১০০টি প্রশ্নের প্রিন্ট করা উত্তরপত্র ফেসবুকে পাওয়া গেছে। এমন অভিযোগ ওঠার পর পরীক্ষা বাতিল করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকার সিলেকশন কমিটি। ওই ঘটনায় দায়িত্বে থাকা আহছানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়কে কালো তালিকাভূক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সাথে সরকারি ব্যাংকের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

ঠিক থাকেনি আমানত-সুদে নয়ছয়:

সুদের লাগাম টানতে সরকার বেধে দেয় ঋণ-আমানতে নয়-ছয়। অর্থাৎ নয় শতাংশের বেশি সুদে ঋণ ও ছয় শতাংশের বেশি সুদে আমানত সংগ্রহ করা যাবে না। কিন্তু বছরের মাঝামাঝিতে আমানতের সুদহার ২ থেকে তিন শতাংশে নেমে যায়। বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা জারি করে, তিন মাস ও এর বেশি মেয়াদি আমানতের সুদ কোনোভাবেই তিন মাসের গড় মূল্যস্ফীতির কম হতে পারবে না।

সরকারের ব্যাংকঋণ:

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে সরকার প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে মোট ১৮ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। যা গত ২০২০-২১ অর্থবছরের এই পাঁচ মাসে ১ হাজার ৩১৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিল সরকার।

তবে ঋণের উল্টো চিত্র বেসরকারি খাতে। গত বছর করোনার ধাক্কায় ঋণ তলানিতে নামলেও বর্তমানে গতি ফিরছে বিনিয়োগ খাতে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের অক্টোবর শেষে বেসরকারি খাতে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ১৯ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা। গত বছর একই সময়ে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১১ লাখ ১৪ হাজার ৩২২ কোটি টাকা।

রিজার্ভে রেকর্ড:

এক সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ নিয়ে অনেক কথা হলেও সেই চিত্র পাল্টে গেছে। প্রবাসীদের পাঠানো আয় ও রফতানি আয় বাড়তে থাকায় বাড়তেই আছে রিজার্ভ। চলতি বছরের ৩ মে দেশের রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৪৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। ওইদিন রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলারে।

করোনা মহামারির মধ্যেও রিজার্ভের পরিমাণ একের পর এক রেকর্ড গড়ে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে রিজার্ভ গত ২৪ আগস্ট ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে। ওইদিন রিজার্ভের পরিমাণ ৪৮ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ চার হাজার ৮০৪ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলারের আমদানি-ব্যয় হিসাবে মজুত এ বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে ১২ মাসের আমদানি-ব্যয় মেটানো সম্ভব।

এদিকে রিজার্ভ বাড়তে থাকায় ঋণদাতার কাতারে জায়গা করে দিয়েছে বাংলাদেশ। সরকার বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কাকে ২৫ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এরই মধ্যে আগস্টে পাঁচ কোটি ডলার ছাড় করে বাংলাদেশ ব্যাংক। স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪২৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকেই এ অর্থ দেওয়া হয়েছে।

বাড়তেই থাকে ডলারের দাম:

করোনার কারণে ২০২০ সালে আমদানি কমতে থাকে। কিন্তু বছরের শুরুতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাড়তি চাহিদার কারণে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে মার্কিন ডলারের দাম। মান হারায় দেশীয় মুদ্রা ‘টাকা’। ২০২০ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে বড় ধরনের আমদানি-ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলারের সংকট শুরু হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০ ডিসেম্বর ব্যাংকগুলোর নিজেদের মধ্যে লেনদেনের জন্য প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য দাঁড়ায় ৮৫ টাকা ৮০ পয়সায়। তবে খোলাবাজার ও নগদ মূল্যে তা আরও বেশি ছিলো ডলারের দাম। এমন পরিস্থিতিতে গত জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ২০৩ কোটি ২০ লাখ অর্থাৎ ২০৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা মজুত রয়েছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যাংকগুলোর চাহিদার বিপরীতে ডলার সরবরাহ করা হচ্ছে।

চলতি বছরের ব্যাংকিং খাতের সার্বিক ব্যাপারে জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ২০২১ সালে ব্যাংকিং সেক্টর ভালো হবে না। এটা স্বাভাবিক। কারণ এটা ছিলো অতিমারির বছর। কাজেই খেলাপী ঋণ বাড়বে এটা স্বাভবিক। বেশির ভাগ ব্যাংকই প্রভিশন করেনি এটার বপরীতে। কিন্তু টাকা আসেনি। তারপরও লভাংশ দিয়েছে। কাজেই ব্যাংকের স্বাস্থ্যখাত খারাপ হবার কথা। তবে ব্র্যাক ব্যাংকে এর প্রভাব পড়েনি। সবাই চাই প্রণোদনা ভালোভাবে বিতরণ হোক। বড়দের ক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি অর্থ বিতরণ হয়েছে। কিন্তু ব্র্যাক পুরোটাই বিতরণ করেছে। অন্য ব্যাংকের অদক্ষতা আছে। কাজেই তারা পারেনি। সরকারের নীতি এটার জন্য দায়ী। অদক্ষতা রয়েছে। ২০২২ সালেও নতুন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কোভিড। কারণ পশ্চিমা বিশ্বে আবার ভয়াবহ হচ্ছে। তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে।

Header Ad
Header Ad

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পিটার হাসের সাক্ষাৎ

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পিটার হাস। ছবি: সংগৃহীত

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রপ্তানিকারক মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি অ্যাকসিলারেট এনার্জির স্ট্রাটেজিক উপদেষ্টা পিটার হাস বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়, যা প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট প্রকাশ করা হয়েছে, তবে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেয়া হয়নি।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পিটার হাসের সাক্ষাৎ। ছবি: সংগৃহীত

পিটার হাস ২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ১৭তম রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন সার্ভিস থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি অ্যাকসিলারেট এনার্জিতে স্ট্র্যাটেজিক উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন।

অ্যাকসিলারেট এনার্জি, যা যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের উডল্যান্ডে অবস্থিত, পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ এলএনজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। এলএনজি সরবরাহ এবং রূপান্তরের জন্য ভাসমান টার্মিনাল এবং অবকাঠামো উন্নয়নেও কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশ ছাড়াও আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের নানা দেশে তাদের ব্যবসা রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

ভবিষ্যতে কোনো প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বৃদ্ধি করা হবে না: রেল উপদেষ্টা

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রকল্প গ্রহণে অপ্রয়োজনীয় ও বাড়তি ব্যয় পরিহারের পরামর্শ দিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেছেন, ক্রয়ধর্মী প্রকল্পের মেয়াদ এক থেকে দুই বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। প্রকল্পে অপ্রয়োজনীয় ও বাড়তি ব্যয় পরিহার করতে হবে। ভবিষ্যতে কোনও প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বৃদ্ধি করা হবে না।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রেল ভবনে এক মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা এ কথা বলেন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রেল পরিচালনা ও সামগ্রিক কার্যক্রম পর্যালোচনা এবং আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করা হয়।

ফাওজুল কবির খান বলেন, রেলের ইঞ্জিন ও কোচের সংকট রয়েছে। পর্যাপ্ত কোচ ও ইঞ্জিন সংগ্রহের জন্য চেষ্টা চলছে। এর আগে ২০০ কোচ কেনার যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, তা দ্রুততম সময়ে শেষ করতে হবে। পার্বতীপুরে কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানাকে অ্যাসেম্বলিং (সংযোজন) ও মেরামত কারখানায় রূপান্তর করতে হবে। এ জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির নির্দেশ দেন তিনি।

প্রকল্প গ্রহণে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার করার তাগিদ দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ক্রয়ধর্মী প্রকল্পের মেয়াদ এক থেকে দুই বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধে অনলাইন টিকেটিং সেবা প্রদানকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহজ ডটকমকে আরও আন্তরিক ও সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশ দেন রেল উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

তিনি উপস্থিত সহজ ডটকমের প্রতিনিধির উদ্দেশে বলেন, টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধে তাঁরা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে বিদ্যমান চুক্তি পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে যারা টিকিট কালোবাজারি করে, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে রেলওয়ের একটি নিজস্ব ইন্টেলিজেন্স টিম থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ঈদুল ফিতরে রেলের যাত্রীসেবায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রেল উপদেষ্টা বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় মানুষ স্বস্তিতে ও নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পেরেছেন। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আরও উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে। এবারের ঈদযাত্রায় সাফল্যের ধারাবাহিকতা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখতে হবে।

রেলওয়ের আয় বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, অপ্রয়োজনীয় ও বাড়তি খরচ, অর্থাৎ অপচয় কমাতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেনসহ রেলপথ মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

গণহত্যা চালিয়ে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি, তার ধ্বংস অনিবার্য: টুকু

বক্তব্য রাখছেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলির গণহত্যার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেছেন- কখনোই গণহত্যা চালিয়ে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে নাই। তার ধ্বংস অনিবার্য, ইতিহাস তাই বলে। আজকে মুসলমান হিসেবে শুধু নয়, একজন মানুষ হিসেবে বাংলাদেশের সকল মানুষ সবার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ কেউ এই গণহত্যা কে সমর্থন করেনি। পৃথিবীর সকল দেশেই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ হচ্ছে।

তিনি বলেন- যে শিশুটি মারা যাচ্ছে তার কি দোষ, তার কি অপরাধ? এভাবে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। এ জন্য সারা বিশ্বে ইসরায়েলির পণ্য বর্জন করছে, ঘৃণা করে প্রত্যাখ্যান করছে। এই গণহত্যা চালিয়ে যারা মনে করেছেন টিকে থাকবেন, থাকতে পারবেন না। আমরা কোন গণহত্যাকে প্রশ্রয় ও সমর্থন করবো না। আমরা ঘৃণা করে প্রত্যাখ্যান করি ও নিন্দা জানাই। এই হত্যার বিচারের দাবি জানাই। এদের বিরুদ্ধে সমস্ত বিশ্ব বাসিকে সোচ্চার হতে হবে।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইলে ছাত্রদলের আয়োজনে শহীদ মিনারে ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সমাবেশ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেছেন- আওয়ামী লীগের দোসররা বিভিন্ন কায়দায় দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য মিছিলে থেকে বিভিন্ন দোকানপাটে হামলা করছে। দোকান পাটে লুটপাট করছে। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি করছে। আওয়ামী লীগের গণহত্যাকারী দোসরা কিন্তু মিছিলে ঢুকে এই ধরনের অপকর্মের সাথে লিপ্ত হচ্ছে। কাজেই আমাদের সোচ্চার থাকতে হবে। যাতে করে আমাদের সম্পদ কেউ ধ্বংস করতে না পারে।

বিএনপির এই নেতা বলেন- বাংলাদেশেও কিছুদিন আগে একটি ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় নিয়েছে। তারাও কিন্তু নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছিল। খুনি শেখ হাসিনা বাংলাদেশের নিরীহ ছাত্র জনতার উপরে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে। প্রায় ৮ জন শিশুকে গুলি করে হত্যা করেছে।

সুলতান সালাউদ্দিন টুকু আরও বলেন- যে ব্যবসায়ীটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সে কিন্তু আমাদের ভাই। যে দোকান ভাঙচুর করা হচ্ছে সেটিও আমাদের ভাইয়ের দোকান। কাজেই আমরা কোন ধরনের বিশৃঙ্খলাকে প্রশ্রয় দেব না। কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা না করতে পারে সে জন্য সর্বোচ্চ সচেতন থেকে আমরা তীব্র নিন্দা জানাব। এই গণহত্যা বন্ধের জন্য আমাদের যা যা করা প্রয়োজন আমরা সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব।

এ সময় টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক দূর্জয় হোড় শুভর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এম এ বাতেনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন- টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু প্রমুখ। 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পিটার হাসের সাক্ষাৎ
ভবিষ্যতে কোনো প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বৃদ্ধি করা হবে না: রেল উপদেষ্টা
গণহত্যা চালিয়ে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি, তার ধ্বংস অনিবার্য: টুকু
বিদেশি বিনিয়োগের এমন অনুকূল পরিবেশ আগে কখনো ছিল না: প্রধান উপদেষ্টা
বিরামপুরে স্কাউটস দিবস পালিত
১৩৫ সরকারি কলেজে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ
নাইজেরিয়ার বন্দুকধারীদের হামলায় ৫২ জন নিহত
এফডিসিকে পূর্ণাঙ্গ ফিল্ম সিটি বানানো হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ আলম
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচি
আমি ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী ছিলাম না: আদালতে তুরিন আফরোজ
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগকারীদের বৈঠক
টাঙ্গাইলে বিয়ের ১৫ বছর পর একসঙ্গে ৪ সন্তানের জন্ম দিলেন গৃহবধূ
নেতানিয়াহুকে ট্রাম্প বললেন ‘তুরস্কের সঙ্গে যৌক্তিক আচরণ করবেন’
৫৪তম দেশ হিসেবে নাসার সঙ্গে ‘আর্টেমিস অ্যাকর্ডস’ চুক্তি সই করল বাংলাদেশ
লাইভে এসে ছাত্রদল নেতার বহিষ্কার চাইলেন গাইবান্ধা জেলা বিএনপি সভাপতি
চালু হচ্ছে সরকারি ফার্মেসি, স্বল্পমূল্যে মিলবে ওষুধ
অভিনেত্রী মালাইকা অরোরার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ম্যাক্স ও তমা গ্রুপের চেয়ারম্যানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
খালেদা জিয়াকে নিয়ে ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, ইমাম গ্রেপ্তার
বদলে গেল বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব ও পশ্চিম থানার নাম