ছাত্রলীগ নেতাকে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশে দিলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা
কাজী জহিরুদ্দিন বাবর। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জহিরুদ্দিন বাবরকে গণধোলাই ও জুতার মালা পরিয়ে শাহবাগ থানায় পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম কাজী জহিরুদ্দিন বাবর। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী এবং বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। অপর অভিযুক্ত কর্মচারীর নাম অমিত সরকার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ভবনের কর্মচারী এবং দক্ষিণ ফুলার রোডের স্টাফ কোয়ার্টারে বাস করতেন।
বুধবার (২১ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ফুলার রোড আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে মল চত্ত্বরে এনে রাত ১২টার দিকে ওই দুজনকে পুলিশে দেয়া হয়।
জানা যায়, দক্ষিণ ফুলার রোডে স্টাফ কোয়ার্টারে এক কর্মচারীর বাসায় অবস্থান করছিলেন ছাত্রলীগ নেতা বাবর। তিনি নীল দলের শিক্ষকদের সঙ্গে আন্দোলনের নেতাদের গুম করার ষড়যন্ত্র করছিলেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। গোপন সূত্রের মাধ্যমে এ তথ্য জানার পর কর্মচারীর বাসায় যান তারা। পরে বাবর ও আশ্রয়দাতা অমিতকে গণপিটুনি ও জুতার মালা পরিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
উপস্থিত এক শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রলীগ নেতা বাবর সরাসরি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সাথে যুক্ত ছিলো। সুযোগ পেলেই শিক্ষার্থীদের ‘শিবির’ ট্যাগ দিয়ে হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দিতো। হলে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করতো এই বাবর। আর কর্মচারী একজন হিন্দু হয়েও মুসলিম হিজাব পরা মেয়েদের প্রতি এট্রাক্ট্রেড। হিজাব পরা মেয়েদের তার নাকি ভালো লাগে। সে রুম নিয়ে মেয়েদের অনৈতিক কাজের জন্য অন্য আরেকজনকে বলেন। তাছাড়া আজকে তিনি বাসায় বাবরকে আশ্রয় দিয়েছিলেন।
ঢাবির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান বলেন, আমি এসে দেখলাম একজনকে মারধর করা হচ্ছে। পরে জানতে পারলাম সে বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। কিন্তু এতে অবাক না হলেও তার সঙ্গে আটক হওয়া রেজিস্ট্রার ভবনের এক কর্মচারী আটক হবার ঘটনায় অবাক হই। তার মোবাইলে মুসলিম মেয়েদের নিয়ে অপ্রীতিকর মেসেজ পাওয়া গেছে। পোস্তগোলায় সে রুম নিয়ে মুসলিম মেয়েদের ধর্ষণের ষড়যন্ত্র আঁক ছিল। পরে গণপিটুনি দিয়ে আমরা তাদের দুজনকে পুলিশে সোপর্দ করি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জিরো টলারেন্স জারি রেখেছে। তার ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ ফুলার রোডের এক বাসা থেকে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও তার আশ্রয়দাতাকে আটক করে শিক্ষার্থীরা। তারা গোপনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয় শিক্ষার্থীদের গুম করতে নীল দলের শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বলে জানতে পেরেছি। পরে তাদের শিক্ষার্থীরা পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। আমরা ক্যাম্পাসে পুনরায় আওয়ামী লীগের দোসরদের আধিপত্য কায়েমের সুযোগ দিব না।
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার এসআই আশরাফ বলেন, শিক্ষার্থীরা দুজনকে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। মামলা হলে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।