শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

রবীন্দ্রনাথ বুঝি না

রবীন্দ্রনাথের কিছুই বুঝি না। এটা আমি মোটেও বিনয় করে, কিংবা কাব্য করে বলছি না। প্রথম কথা, রবীন্দ্রনাথ পড়ি নাই বললেই চলে। এত বেশি লিখেছেন যে তার চিঠিপত্রগুলো পড়েই তো শেষ করা যাবে না। কিন্তু যা লিখেছেন, তার শতকরা একভাগও পড়িনি। গান বেজে চলে। যতক্ষণ শুনি, রবীন্দ্রসংগীতই তো শুনি। শুনি, কথাই শুনি। কিন্তু প্রায়ই প্রথম লাইনটা আর সুরটাই কানে যায়, আর কিছু না। অন্তত আজকের দিনে তার যে গানটা প্রথম বাজবে, সেটার কথা বের করে পড়ব। আমাদের আলতাফ শাহনেওয়াজ দেখলাম, তার ফেসবুক স্টাটাসে লিখেছেন, সেলিম আল দীন তাঁকে বলেছিলেন গীতবিতান পড়তে।
তবে তা-ই করি। যে-গানটা বাজছে, সেটা বের করে পড়ে ফেলি। ইন্টারনেট থাকায় সুবিধা, গীতবিতান পড়তে হয় না।
আমার আপন গান আমার অগোচরে আমার মন হরণ করে,

নিয়ে সে যায় ভাসায়ে সকল সীমারই পারে॥
          ওই-যে দূরে কূলে কূলে ফাল্গুন উচ্ছ্বসিত ফুলে ফুলে--
              সেথা হতে আসে দুরন্ত হাওয়া, লাগে আমার পালে॥
কোথায় তুমি মম অজানা সাথি,
     কাটাও বিজনে বিরহরাতি,
          এসো এসো উধাও পথের যাত্রী--
                   তরী আমার টলোমলো ভরা জোয়ারে॥

এই গানটা বাজল। গানের কথার পেছনে কান ছুটছে,আর বাংলা টাইপ করে গুগল করছি। গানটাকে ধরা গেল ইন্টারনেটে।
বলছিলাম, রবীন্দ্রনাথ বুঝি না।এই গানটারও কিছুই বুঝলাম না। নিজের গান নিজের অগোচরে নিজের মন হরণ করে সকল সীমার পারে ভাসায়ে নিয়ে যাচ্ছে! ঘটনা কী ! আবার কূলের বসন্তের হাওয়া এসে আবার আমার পালেই লাগে। এ কী তিনি তার মঙ্গলময় ঈশ্বরকে বলছেন? নাকি প্রেমিকাকে বলছেন? এদিকে তার তরী ভরা জোয়ারে টলমল। যে জন বিরহের রাত কাটাচ্ছে বিজনে, তাকেই বলছেন উদ্ধার করতে। এই জোয়ার কি বিপদের জোয়ার, নাকি যৌবনের জোয়ার? আর মিলের রাজা রবীন্দ্রনাথ কেন 'পালে' আর 'যাত্রী' দুটো চরণের শেষ শব্দ কোনো মিল ছাড়া ছেড়ে দিলেন, সেও এক প্রশ্ন বটে।

বলছিলাম,রবীন্দ্রনাথ পড়া হয়নি। তারওপরেও যা পড়েছি, যা শুনেছি, তার কিছুই বুঝিনি। ধরা যাক, সবচেয়ে বেশিবার শুনেছি এবং গেয়েছি, গাইতে গাইতে অনেকবার চোখ ভিজে গেছে, নিজের কাছে নিজেই তা গোপন করেছি, সেই গানটার প্রথম লাইনটা:
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি!

এই লাইনটার মানেই কি বুঝি? 'আমার' কী? 'সোনার' কী? 'বাংলা' কী? 'সোনার বাংলা' কী? 'আমার সোনার বাংলা' কী? আমি কী? আমি কে? আমি কারা? তোমায় কী? তুমিটা কে? কোন তুমি? ভালোবাসি কী? সখি, ভালোবাসা কারে কয়?
টাইফয়েডে ভুগছিলাম। ২১ দিন পেরিয়ে গেছে। এবার সেরে না ওঠা অযৌক্তিক। সেরে উঠেছি কিনা, এটার একটাই প্রমাণ আমার কাছে আছে, আমি লিখতে পারছি কিনা। আজ শুক্রবার। প্রথম আলোয় আমার লেখা নেই। বুঝতেই পারছেন, মনের মধ্যে এখনো জোর পাই না। কমজোরি আছি। বাম চোখটা কী কারণে জানি না, বোধ হয়, মাস্কের খোচা খেয়েছিলাম, দিন পাঁচেক ধরে আধেকটা লাল হয়ে আছে। চোখ পীড়িত, লিখতে বসে তাকে আর পীড়া দিতে চাই না।কিন্তু পড়তে শুরু করেছি। কাল সারা দিনে মুরাকামির একটা গল্প পড়লাম 'আফটার দি  আর্থকোয়েক' বই থেকে, দ্য হানিপাই গল্পটার নাম। এমনিতেই কোরোনায় বাঁচি না। তারওপর ভূমিকম্পের পরের মনখারাপ করা সময়ের গল্প। এর চেয়ে শিবরাম পড়া যেতে পারে। হাসান আজিজুল হকের ভূমিকা আছে, হায়াৎ মামুদের সম্পাদিত। কয়েকটা পড়ি। নিজের অসুখ উপলক্ষে কন্যার ঘরে আছি, ওর বইয়ের তাক থেকে নামাই 'রিডিং লাইক আ রাইটার।' এটা পড়তে থাকি। কে উপন্যাস কীভাবে শুরু করেছেন, প্রথম অনুচ্ছেদ থেকে তুলে ধরে তার বাক্য, শব্দ, কর্তা, বিশেষণ, ক্রিয়াবিশেষণগুলোকে নিরীক্ষা করা। ভালো লাগে। ইংরেজিতে এই ধরনের বই দিয়ে বাজার ভরা। আমার নিজের কাছেই,মেরিনার আর পদ্যর থেকে পাওয়া, অন্তত বিশটা এ-ধরনের বই আছে। কিন্তু বাংলায় এ ধরনের বই নাই বললেই চলে। সাকল্যে ঘুরে ফিরে কেবল সৈয়দ শামসুল হক। 'রিডিং লাইক আ রাইটার-এর লেখক (লেখিকা) ফ্রান্সিস প্রোজ। নিজে উপন্যাস লেখেন, আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়েটিভ রাইটিং পড়ান। নিজের জীবনের গল্প বলতে বলতেই উপন্যাসের গঠনশৈলী নিয়ে আলোচনা করছেন। করতে গিয়ে বলছেন, একটা সময়ে, শিক্ষার্থী হিসেবে তিনি দেখতে লাগলেন, তাদের শিক্ষকেরা মার্কসবাদী, ডিকনস্ট্রাকশনবাদী, নারীবাদী, এই রকমভাবে কোনো না কোনো বাদে নিজেরা দীক্ষিত, শিক্ষার্থীদেরও যার যার বাদে দীক্ষা দেবার চেষ্টা করছেন, এবং পৃথিবীর সব সাহিত্যকে এই বাদের কাচের ভেতর দিয়ে দেখছেন। লেখক নিজে ছোটবেলা থেকেই বই পড়েন, কোথায় গেল তার সেই বই পড়ে আনন্দ পাওয়ার নিষ্পাপ দিনগুলো, এ আমি কোন পৃথিবীতে এসে পড়লাম, ভেবে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়লেন।

আজকাল, বিশেষ করে, জ্বরগ্রস্ত দিনগুলোয় খুব মন খারাপ করে থাকি। বোধ হয়, ফেসবুক কিংবা ইন্টারনেট না থাকলে এত দমিত থাকতাম না। মন খারাপ করে মনে হয়, সমাজসংসার ছেড়ে কোনো নির্জনদ্বীপে গিয়ে একা একা থাকতে পারব কিনা। ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা শেষ জীবনে বাঙালিদের ত্যাগ করে সাঁওতালপাড়ায় গিয়ে থাকতেন। ফেসবুক সূত্রে নানা লেখা পড়ে, নানা মত পড়ে একদম দমে যাই। আমাদের লেখকবন্ধু মশিউল আলম ফেসবুকে লিখেছিলেন, 'বিদ্যা ও আনন্দ-কোনো শব্দেই কোনো সাম্প্রদায়িকতা নাই। সাম্প্রদায়িকতার ভেদবুদ্ধি কাজ করে দুষ্ট লোকদের মগজে। ওখানেই সমস্যা।' কিন্তু যাদের লেখা পড়ে মন খারাপ করছি, এরা দুষ্টু লোক, তা আমার মনে হয় না। আমি এঁদের লেখা বিলক্ষণ পছন্দ করি। তাঁরা আমার বিপদের বন্ধু, সম্পদেরও বন্ধু। কিন্তু বন্ধুর মনের মধ্যে কোথায়ও লুকোনো একটা ভেদবুদ্ধি যেন ঝরা পাতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা একটা গেছোব্যাঙের মতো হঠাৎ নড়ে উঠল।
ফিরিয়ে দাও আমাদের সেই নিষ্পাপতার কাল। যখন আমরা রবীন্দ্রনাথ, কিংবা রুমি নিষ্পাপ আনন্দে পড়তে পারব!

ওই রিডিং লাইক আ রাইটার পড়তে পড়তে গিয়ে মনে হলো, আমার জ্বর আসবার আগে আমি মিলান কুন্ডেরার আরেকটা উপন্যাস অনুবাদ করতে শুরু করেছিলাম। সেটার নাম কী? সেই লেখাগুলো কোথায়? নিজের লাইব্রেরিতে গিয়ে বইটা খুঁজে আনি, ইগনোর‌্যান্স। সার্থক একটা নাম--আমার সম্পর্কে লিখেছে। দুটো চ্যাপ্টার অনুবাদ করেছিলাম। আছে তো? খুঁজে বের করি।

কয়েক পৃষ্ঠা পড়ি। কুন্ডেরার কায়দা মুখস্থ হয়ে গেছে। মার্কেসের পর হয়তো কুন্ডেরাই সবচেয়ে বেশি পড়েছি। কী করা যায়? পদ্যর বইয়ের তাকে ঢুঁ মারি। ঈশ্বরচন্দ্রের 'বেতাল পঞ্চবিংশতি' পাই। তার ভূমিকাগুলো পড়তে থাকি। ঈশ্বরচন্দ্র ভূমিকায় ঝগড়া করছেন। মদনমোহন তর্কালংকারের জামাতার  সঙ্গে, কারণ মদনমোহনের জীবনীতে জামাতা দাবি করেছেন, এই বেতাল পঞ্চবিংশতি  বইটা মনদমোহন এতটাই ঘষামাঁজা করে দিয়েছেন সেটা দুজনের রচনা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং সংস্কৃতি কলেজের অধ্যক্ষ পদে মদনমোহনই বসিয়েছেন ঈশ্বরচন্দ্রকে। এরপর খুঁজে পেলাম সেই বইটা, যেটা নিয়ে শুতে গেলে রাতে ভালো ঘুম হবে। তপনরায় চৌধুরীর রোমন্থন অথবা ভীমরতিপ্রাপ্তর পরচরিতর্চা। আল্লাহ বাঁচালেন। তপনরায় চৌধুরী লিখেছেন, গম্ভীর প্রকৃতির সদ্ব্যক্তির জন্য অনেক ভাল বই আছে।Nicomachean Ethics, Principia Mathematica, Das Capital, মোহমুদগর, আরও কত। সাম্প্রতিকদের মধ্যে Foucault, Lacan, Derrida ( যে দাদা কলকাতা শহরে একটু দেরিতে পৌঁছেছেন।)

জানালা দিয়ে বাইরে তাকাই। কত ধরনের গাছ। একই প্রজাতির দুটো গাছ, কিন্তু মিলের সঙ্গে অমিলও কত। পৃথিবীর কোনো দুজন মানুষের আঙুলের ছাপ কোনোদিনও মিলবে না। মানুষ তো প্রত্যেকেই আলাদা। হবেই। কেউ দেরিদা পছন্দ করবেন। কেউ করবেন না।
আমার প্রিয় লেখক মার্কেস তাত্ত্বিকদের সম্পর্কে বলেছেন, চারকোনা গর্তে তারা গোল পেরেক ঢোকাতে চায়।
GARCÍA MÁRQUEZ
Exactly. Chiefly because I cannot really understand them. That’s mainly why I have to explain most things through anecdotes, because I don’t have any capacity for abstractions. That’s why many critics say that I’m not a cultured person. I don’t quote enough.
INTERVIEWER
Do you think that critics type you or categorize you too neatly?
GARCÍA MÁRQUEZ
Critics for me are the biggest example of what intellectualism is. First of all, they have a theory of what a writer should be. They try to get the writer to fit their model, and if he doesn’t fit, they still try to get him in by force. I’m only answering this because you’ve asked. I really have no interest in what critics think of me; nor have I read critics in many years. They have claimed for themselves the task of being intermediaries between the author and the reader. I’ve always tried to be a very clear and precise writer, trying to reach the reader directly without having to go through the critic.

কিন্তু আমার তাত্ত্বিকদের ভালো লাগে। আমি তাঁদের খুব শ্রদ্ধা করি। বিদ্বান লোককে শ্রদ্ধা করি। বিদ্বান এবং বুদ্ধিমানদের খুবই সমীহ করি। তারপরেও বলি, যারা সৌন্দর্য সৃষ্টি করেন, আনন্দ দেন, তাদেরকে আমার ভালো লাগে সবচেয়ে বেশি। মানে শিল্পীদের। যখন গরমের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি যেতাম, খাঁ খাঁ রোদ, দুপুর ঝিম ধরে আছে, দূরে আমগাছের ছায়ায় বসে কেউ একজন বাঁশি বাজাচ্ছে। শুনে মন কেমন করত! ওই বাঁশির তো কানো মানে হয় না। সুরের। কিন্তু যারা পারেন, তারা তো জাদুকরের চেয়েও ঐন্দ্রজালিক ক্ষমতা রাখেন বেশি।
রবীন্দ্রনাথে এসে সাহস পেলাম।
তিনি বলেছেন:'কিছু-একটা বুঝাইবার জন্য কেহ তো কবিতা লেখে না। হৃদয়ের অনুভূতি কবিতার ভিতর দিয়া আকার ধারণ করিতে চেষ্টা করে। এইজন্য কবিতা শুনিয়া কেহ যখন বলে “বুঝিলাম না’ তখন বিষম মুশকিলে পড়িতে হয়। কেহ যদি ফুলের গন্ধ শুঁকিয়া বলে “কিছু বুঝিলাম না’ তাহাকে এই কথা বলিতে হয়, ইহাতে বুঝিবার কিছু নাই, এ যে কেবল গন্ধ।'

বলছিলাম রবীন্দ্রনাথ পড়িনি। এবং বুঝিও না। যাও হয়তো দূরাগত বাঁশির সুরের মতো কিছু বুঝি না বুঝি একটা ব্যথা পাই, ভালো লাগে, পণ্ডিতদের লেখা পড়তে গেলে, আজকালকার ফেসবুকের গুণে সহজপ্রাপ্য, সব ভালো লাগা পালানোর জন্য জানালা খোঁজে।
কিন্তু সৌন্দর্য সৃষ্টি করার, আনন্দ সৃষ্টি করার পেছনে মানুষ তো কাজ করেই। আমার ছোটভাই দেখি ক্যামেরা নিয়ে সুন্দর সুন্দর ছবি তোলে। ফেসবুকে পোস্ট করে। মেরিনাও মোবাইল ফোনে ছবি তোলেন। আমাদেরই বারান্দায় আমাদেরই নারকেলগাছের মতো পাতাওয়ালা টবের গাছের ছায়া আমাদের বারান্দার ছাদে কোন আলো থেকে যে গিয়ে পড়ে। মেরিনা তার ছবি তোলেন।
আমি আজকের দিনটায় কী করব? পদ্যর বইয়ের তাকের ওপরের তাক থেকে কষ্ট করে নামিয়েছি খাপড়ছাড়া। খাপছাড়া পড়ব।
সহজ কথায় লিখতে আমায় কহ যে,
সহজ কথা যায় না লেখা সহজে।
পরের পৃষ্ঠায়:
লেখার কথা মাথায় যদি জোটে
তখন আমি লিখতে পারি হয়তো।
কঠিন লেখা নয়কো কঠিন মোটে,
যা-তা লেখা তেমন সহজ নয় তো।

মজার ওপরে ডাবল মজা হলো, পাতায় পাতায় আঁকা রবীন্দ্রনাথের ছবিগুলো। আজ আমি এই খাপছাড়া পড়ব। আর এর ছবিগুলো দেখব। এই হলো আমার পঁচিশে বৈশাখ উদযাপন।
ডাকঘরটাও আলাদা বই পেলাম। অনেকবার পড়েছি। আরেকবার পড়ব। আমার তো এখন অমলের মতো অবস্থা।

লেখক: কথাসাহিত্যিক

Header Ad
Header Ad

সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার

ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সৌদি আরব ও মরক্কো থেকে ৭০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানি করবে সরকার। এর মধ্যে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার এবং ৩০ হাজার টন টিএসপি সার রয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৪৬৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতে সৌদি আরবের মা’আদেন কোম্পানির সঙ্গে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির আওতায় ৫ম লটের ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। এ চালানে ব্যয় হবে ৩০৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, যা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) বাস্তবায়ন করবে। প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সারের দাম পড়বে ৬২২ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।

এছাড়া, মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস কোম্পানির সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৫ম লটের ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদন পেয়েছে। এ চালানে ব্যয় হবে ১৬২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন টিএসপি সারের দাম ধরা হয়েছে ৪৪৫ মার্কিন ডলার।

দুইটি চালান মিলিয়ে মোট ব্যয় দাঁড়াবে ৪৬৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

Header Ad
Header Ad

গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ৫৯০ গ্রাম হিরোইন উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ৩ যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলায় অপর দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. আতিকুর রহমান এই দণ্ডাদেশ দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি হলেন, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে সোহেল রানা (৪১), একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আবুল কালাম আজাদ (৩৭) ও আসাদুল ইসলাম (৩২)।

দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনেই গ্রেফতারের পর থেকে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে ছিলেন। রায়ের আগে দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

এছাড়া খালাস পাওয়া দুই আসামি হলেন, শ্রীমন্তপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও আনারুল ইসলাম (৪০)। তারা দুইজন জামিনে ছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম প্রামাণিক জানান, ৫৯০ গ্রাম হিরোইন উদ্ধারের মামলায় আদালতে বিচারিক প্রক্রিয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। আসামিদের উপস্থিতিতে বিচারক আজ এ রায় দেন।

মামলার বরাত দিয়ে জেলা জজ আদালতের স্টোনে মো. সাইদুর রহমান জানান, ২০২১ সালে ১৬ই জুলাই গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে মাদক বেচাকেনার উদ্দেশে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামের ট্রাক চালক সোহেল রানা, আবুল কালাম আজাদ, আসাদুল ইসলাম, শফিকুল ও আনারুল একটি ট্রাকসহ অবস্থান করেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পেট্রোল পাম্পের সামনে থাকা ট্রাকটি তল্লাশি করে তাদের আটক করে গাইবান্ধা র‍্যাব-৩ এর সদস্যরা।

এসময় ট্রাকের ক্যাবিনে থাকা পলিথিনে মোড়ানো দুটি প্যাকেটে থাকা ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ৫৯০ গ্রাম হিরোইন জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় আটক পাঁচজনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে তদন্ত শেষে ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

মামলার দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুইজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার পর দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ রাষ্ট্রীয় অতিথি যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছবি: সংগৃহীত

পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনা অনুসন্ধানে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচের সঙ্গে সাক্ষাতে এলে প্রধান উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘কিছু বাধা আছে। আমাদের সেগুলো অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’

অতীতের কথা উল্লেখ করে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব বালুচ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে দুই দেশের মধ্যে সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব অধিকারে বিশাল আন্ত আঞ্চলিক বাজার রয়েছে। আমাদের এটি ব্যবহার করা উচিত। আমরা প্রতিবার বাস মিস করতে পারি না। দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে নিয়মিত বিটুবি (ব্যবসা থেকে ব্যবসা) মিথস্ক্রিয়া এবং সব স্তরে সফর বিনিময়ের প্রয়োজন।’

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় ব্যাবসায়িক চেম্বার এফপিসিসিআইয়ের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে এবং এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আশা করেন, ‘এপ্রিলের শেষে দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারের আসন্ন সফর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো জোরদার করবে।’

তিনি সর্বদা সার্কের কাঠামোর মধ্যে পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পছন্দ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক স্থবির হয়ে পড়ায় আমরা দীর্ঘদিন ধরে একে অপরকে মিস করে চলেছি। আমাদের বাধাগুলো অতিক্রম করতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের পাশাপাশি নিউইয়র্কে এবং ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কায়রোতে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে তার সাক্ষাতের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতিতে এই সাক্ষাতের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সার্ক, ওআইসি এবং ডি-৮-এর মতো বহুপক্ষীয় ও আঞ্চলিক ফোরামে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাবে।

এ সময় এসডিজিবিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১৫ বছরের মধ্যে প্রথম পাকিস্তানি পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে বাংলাদেশ সফর করছেন আমনা বেলুচ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
নিজেকে বরিশাল সিটির মেয়র ঘোষণার দাবিতে মামলা করলেন ফয়জুল করীম
ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিতের আহ্বান বাংলাদেশের
টাঙ্গাইলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে কেন্দ্র সচিব ও পরীক্ষার্থীসহ আটক ৬
৭১ এর গণহত‍্যার জন‍্য ক্ষমা ও সম্পদ ফেরত দেয়া নিয়ে আলোচনায় সম্মত পাকিস্তান
এবার স্ত্রী রিয়া মনিকে তালাকের ঘোষণা দিলেন হিরো আলম
সাবেক এমপি বাহারের জমি-বাড়ি জব্দ, ২৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরণের বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত
বিজ্ঞানীদের সফলতা: ইমপ্লান্ট নয়, নতুন করে গজাবে ক্ষয়ে যাওয়া দাঁত!
নওগাঁয় বাসায় ঢুকে তরুণকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বাংলাদেশের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে: পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব
অবশেষে আসছে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট সিজন-৫’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ‘বি’ ইউনিটের ফল প্রকাশ
ফোনের চার্জ দ্রুত শেষ? জেনে নিন ১০টি কার্যকর সমাধান
সংস্কারের নাম উচ্চারণের আগেই খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন: বিএনপি
১ মে থেকে ডিম-মুরগি উৎপাদন বন্ধের ঘোষণা, ১০ দফা দাবি পোল্ট্রি খামারিদের
গাজায় এক মাসে গৃহহীন প্রায় ৫ লাখ মানুষ: জাতিসংঘ