রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫ | ২৪ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

পার্থর দুর্নীতি ও শিক্ষা খাতের বেহাল দশা

ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো স্লোগান তুলেছে-চোর ধর, জেল ভরো। এই স্লোগানে পশ্চিমবঙ্গের আকাশ বাতাস মুখরিত। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাহাড়সম দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই গোটা ভারতে তোলপাড় হয়ে গিয়েছে।

শিক্ষাক্ষেত্রে বেআইনি কার্যকলাপ চালাতে গিয়ে একজন শিক্ষামন্ত্রী কতটা নিচে নামতে পারেন তা নিয়ে নিরলস চলছে জলসা। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তার সঙ্গীনিকে গ্রেপ্তার করে গোটা ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে এনাফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সেই তদন্তে রোজ উঠে আসছে একের পর এক নতুন নতুন কেলেঙ্কারির কথা। পার্থ চট্টোপাধ্যায় যদি সেই কেলেঙ্কারির অক্টোপাস হন, তাহলে তার শুড় পৌঁছেছে প্রতিবেশী বাংলাদেশেও।

সরকারি শিক্ষা বাবস্থার বরোটা তো তিনি নিজের দায়িত্বে বাজিয়েছেন। পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকেও তিনি কোটি কোটি টাকার কাটমানি খেয়েছেন। এ যেন কেঁচো খুঁড়তে কেউটে। এসএসসি নিয়োগ মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ইতিমধোই গ্রেপ্তার করেছে ইডি। তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী যে দুর্নীতির পাহাড়ে বসেছিলেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত ইডির গোয়েন্দারা ।' ইডি আধিকারিকরা মনে করছেন, এ ক্ষেত্রেও কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে।

২০১৪ থেকে ২০২১-একটানা সাত বছর রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এই সময়কালে বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুমোদন দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রেই এই অনুমোদনের জন্য কোটি কোটি টাকার হাতবদল হয়েছে বলে ইডি খবর পেয়েছে। এমনই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের গভীর সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন ইডির গোয়েন্দারা। তারা জানিয়েছেন, এমনই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চাবিকাঠি হলেন বাংলাদেশের এক প্রাক্তন মেজর। তিন প্রায়ই কলকাতায় আসেন এবং বাংলাদেশ থেকে পড়ুয়াদের এপারের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর দায়িত্ব পালন করে থাকেন। প্রাক্তন আমলে অনুমোদনপ্রাপ্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চালুর ক্ষেত্রে গাইডলাইন অনুযায়ী যথেষ্ট পরিকাঠামো ছিল না। কিন্তু কাগজ-কলমে তা দেখিয়ে দেওয়া হয় কোটি কোটি টাকার । এমনকি কোর্স চালুর ক্ষেত্রেও কাটমানি নেওয়া হয়েছে বলে ইডির দাবি। এই সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ই এখন ইডির ব্যানারে।

এখানেই শেষ নয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বছরের বিভিন্ন সময় প্রশ্নপত্র, মার্কশিট মিট কার্ড, বুলেট, ম্যাগাজিন, ইত্যাদি ছাপতে হয়। সাধারণত সরকারি প্রেস থেকে এগুলো ছাপা হত। কিন্তু করোনাকালে এই বিপুল সামগ্রী ছাপার বরাত পায় একাধিক বেসরকারি প্রেস। এখানেও কমিশনের বিনিময়ে

টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার নথি সামনে এসেছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ কোটি টাকার একটি নথিও হাতে পেয়েছে ইডি। এক্ষেত্রে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ আধিকারিক ও লোকজনের নাম উঠে আসছে। কমিশনের নিয়মে অভিযান করে। তার ঘি অপি মুখোখোপাধ্যারের বাড়িতে টাকার পাহাড়ের খোঁজে । আপাতত দু'জনেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। এখন প্রশ্ন, এই দুর্নীতির শিকড় ঠিক কতটা গভীরে? কীভাবে হয়েছে এই গোটা দুর্নীতি? অঙ্কটা ঠিক কত এবং দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসতেই কীভাবে তা ধাপাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে এবং হিমশৈলের চুড়ার খোঁজে অন্তর্তদাস্তে উঠে এসেছে চোখ কপালে তোলার মতো সব তথ্য।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের দ্বারা নবম, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে দুীতির অভিযোগ উঠে। গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডিতেও নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। মূলত ওয়েটিং লিস্ট নিয়েই অভিযোগ ঘণীভূত হয়েছে। চাকরি প্রার্থীদের অভিযোগ। ওয়েটিং লিস্টে আগে নাম থাকা ব্যক্তি চাকরি পাননি। বরং পেছনের দিক থেকে অনেকেই চাকরি পেয়েছেন।

এমনকি বাইরে থেকেও নাকি চাকরি হয়েছে। এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে চাকরি প্রার্থীরা তথ্য-প্রমাণও জমা দেন। ১৯ হাজার থেকে ১২ হাজার পদে বেআইনিভাবে নিয়োগের অভিযোগ ওঠে। তদন্তে নামে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অভিযোগ ফাঁস হতেই নড়েচড়ে বসে। বঞ্চিতদের ক্ষোভের আগুন প্রশমিত করতে জরুরি ভিন্তিতে অতিরিক্ত পদ গঠন করা হয়। যে পদগুলোর নাম দেওয়া হয় ‘ডাইং ক্যাডার পোস্ট’।

কী এই ‘ডাইং ক্যাডার পোস্ট’?

স্কুল সার্ভিস কমিশন সূত্রে খবর, কেবলমাত্র বঞ্চিতদের নিয়োগের জনাই এই বিশেষ পদটি তৈরি হবে। ওই চাকরি প্রার্থীরা অবসরের সঙ্গে সঙ্গে ‘ডাইং ক্যাডার পোস্ট’ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। অতিরিক্ত ওই পদে আর কোনোদিন কাউকে নিয়োগ দেওয়া হবে না। কত অতিরিক্ত পদ? নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে ১৯৩২ অতিরিক্ত পদ এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে ২৮৭ অতিরিক্ত পদ, গ্রুপ সি’র নিয়োগে ১১০২ অতিরিক্ত পদ, গ্রুপ ডি’র নিয়োগে ১৯৮০ অতিরিক্ত পদ।

চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতি জেলা থেকে টাকা তোলা হয়। প্রচুর অযোগ্য ব্যাক্তি চাকরি পেয়েছেন। প্রাথীপিছু ১০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা পর্যস্ত ঘুষ নেওয়া হয়েছে। টাকা দিয়েও অনেকে চাকরি পাননি। তব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় রোজই বলে চলেছেন, তিনি কিছুই জানতেন না। সোশাল মিডিয়ায় একের পর এক বিদ্রুপাত্মক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তিনি যখন কিছুই জানতেন না, তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসে কী করছিলেন?

তিনি চিটফান্ড কেলেঙ্কারির কথা জানতেন না। তিনি নন্দী গ্রামে শিশির ও শুভেন্দু অধিকারীর ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না, কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যাওয়া মাত্র তিনি সব বুঝতে পেরেছিলেন।

রাজীব ব্যানার্জীর দপ্তরের গরমিল প্রসঙ্গেও তিনি কিছু জানতেন না. রাজীব বিজেপিতে যোগ দেওয়া অবধি। তারপর রাভীব ফিরে এলেন, মমতাও এখন আবার কিছুই জানেন না। অর্জুন সিং যে গুণ্ডা তাও তিনি অর্জুন বিজেপিতে যোগ দেওয়া অবধি জানতেন না। যেই অর্জুন বিজেপিতে গেলেন, মমতা সমস্ত শুণ্ডামি আর অন্যায়গুলো জেনে ফেললেন। এখন আবার অর্জুন তৃণমূলে চলে আদার গর উনি আর কিছুই জানেন না। ভাদু শেখের দুর্নীতি নিয়েও মমতা কিছুই জানতেন না। দশটা লোক পুড়ে মরে যাওয়ার পরে জানতে পারলেন। টেট কেলেঙ্কারির কথাও মমতা জানতেন না, এদিকে ওরই পুলিশ প্রতিবাদীদের মেরে ঠাণ্ডা করে দিতে চেয়েছিল । মইদুল মিদ্দা মারা যায় সেই ঘটনায়। মমতারই মন্ত্রিসভার সদসা পরেশ অধিকারীর মেয়ে বিনা ইন্টারভিউতেই চাকরি পেয়ে যায়। এসএসসি কেলেঙ্কারির কথাও মমতা জানতেন না। ৫০০ দিন ধরে চলতে থাকা আন্দোলনের পরেও । এখানেও মমতারই পুলিশ বহুবার আন্দোলনকারীদের ওপরে হামলা করেছে। মমতা জানতেন না।

চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে কুণাল ঘোষের জড়িত থাকা সম্পর্কেও মমতা কিছুই জানতেন না। না জেনেই কুণালের জন্যে মিছিল টিছিল করে ফেলেছিলেন। তারপর কুণালের দুর্নীতির কথা জানতে পেরে সাসপেন্ড করলেন। আবার কুণালকে ফিরিয়ে এনে মুখপাত্র আর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক করে দিলেন। এখন আবার মমতা কিছুই জানেন না কুণাল সম্পর্কে।

পার্থ চ্যাটাজীর ঘটনা সামনে আসার পর তিনি বলছেন যে উনি এসবের কিছুই জানতেন না। অথচ পার্থ তৃণমূলের জন্ম থেকে মমতার সঙ্গে রয়েছেন, দলের মহাসচিব-রাষ্ট্রসংঘ ছাড়া যে পদ আর কারও নেই।

রাজোর প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া শিক্ষা দফতরের নানা নথি এবং দু'জনকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ইডি সূত্রের দাবি, শিক্ষায় সরকারি নিয়োগে দুর্নীতির শুরুটা অস্ত ১০ বছর আগে। ২০১২-র প্রাথমিক টেট (টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট) থেকেই ওই দুর্নীতির শুরু বলে দাবি তদন্তকারী একটি সৃত্রের। সূত্রের আরও দাবি, চাকরি বিক্রির জন্য অতিরিক্ত পদও না কি সৃষ্টি করা হয়েছিল বলে তাদের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।

তদন্তকারীদের দাবি, ২০১২-তে প্রাথমিক. টেট হয়েছিল। পরবর্তী কালে ২০১৪-র টেট ২০১৫-তে হয় এবং ২০১৭-র পরীক্ষা ২০২১-এ হয়। ২০১৪-র উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষাও সময় অনুযায়ী হয়নি এবং ওই পরীক্ষার মূল্যায়নের ভিত্তিতে এখনো পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়নি। তদন্তকারীদের দাবি, স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি), প্রাথমিক টেট এবং উচ্চ প্রাথমিকের সব নিয়োগ পরীক্ষা পদ্ধতি ধোঁয়াশায় ভরা। ইডি সূত্রের দাবি অনুযায়ী, তদন্তকারীদের জিজ্ঞাসাবাদে পার্থ নাকি জানিয়েছেন, ২০১২-ত তিনি শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন না। তাই ওই বিষয়ে তার জানা নেই।

তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি, তদন্ত যত এগোচ্ছে, নিয়োগ দুর্নীতিতে আরও 'প্রভাবশালীর নাম উঠে আসছে। রাজা জুড়ে শাসক দলের মন্ত্রী বিধায়ক, সাংসদ, পুরসভার কাউন্সিলর, পঞ্চায়েত কর্তাদের সুপারিশে চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। টাকার লেনদেনও হয়েছে বলে দাবি তদস্তকারীদের। তদন্তকারীদের দাবি, মূলত শাসক দলের কর্মীদেরই বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে এবং তা সব ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমেই করা হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। ইডির এক কর্তা বলেন, ‘তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে একাধিক প্রভাবশালী এবং শিক্ষা দপ্তরের একাধিক কর্তা-কর্মীদের যোগসাজশের তথ্য সামনে আসতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত সচিব সুকান্ত আচার্য ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্যদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যসহ একাধিক আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। দুর্নীতি কাণ্ডের লভ্যাংশের টাকা কোথায় পৌঁছেছে এবং সম্পন্তিসহ কোথায় বিনিয়োগ করা হয়েছে তার একাধিক সূত্র হাতে এসেছে।

লেখক: ভারতের সিনিয়র সাংবাদিক

 

Header Ad
Header Ad

বনশ্রীতে স্বর্ণ ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তার আমিনুল ছাত্রলীগের নেতা

বনশ্রীতে স্বর্ণ ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তার আমিনুল ছাত্রলীগ নেতা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ছয়জনের মধ্যে দুজনের পরিচয় মিলেছে। তাঁদের মধ্যে একজন পটুয়াখালীর বাউফলের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের প্রভাবশালী নেতা আমিনুল ইসলাম,অন্যজন শ্রমিক দল নেতা সুমন মোল্লা।

এর মধ্যে আমিনুল পেশাদার ডাকাত। আগেও তাঁকে ডাকাতি মামলায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল শনিবার তাঁদের গণমাধ্যমের সামনে হাজির করা হলে স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গ্রেপ্তার আমিনুল ইসলাম বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের নতুন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) এলাকার বাসিন্দা এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য। আর সুমন মোল্লা একই ইউনিয়নের পাশের গ্রাম আয়নাবাজ কালাইয়ার বাসিন্দা। তিনি কালাইয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক।

এলাকাবাসী জানিয়েছে, ছাত্রলীগ নেতা আমিনুল আগে একাধিক ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় জেলা পুলিশের কয়েকটি টিমের যৌথ তদন্তে আন্তবিভাগ ডাকাল দলের সদস্যরা শনাক্ত হন। অভিযান চালিয়ে ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর আমিনুলসহ সাত ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। ডাকাত দলকে আশ্রয় দেওয়াসহ অস্ত্রের জোগানদাতাও ছিলেন আমিনুল। এ ছাড়া একাধিক ডাকাতির নেতৃত্বেও ছিলেন তিনি। পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দিতে আমিনুল এ অভিযোগ স্বীকারও করেছিলেন।

বিভিন্ন সূত্র থেকে ওই দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে তাঁদের পরিচয় জানাতে গিয়ে কেউ নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হননি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পরিচিত ও প্রভাবশালী নেতা আমিনুল ইসলাম। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর সঙ্গে সাবেক চিফ হুইপ ও পটুয়াখালী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ফিরোজের ছেলে রায়হান সাকিব, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে তাঁর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাউফল উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক হাসান মাহমুদ মঞ্জু বলেন, ‘আমি ওনাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। উনি কমিটিতে কীভাবে এলেন বলতে পারছি না। তবে ইউনিয়ন শ্রমিক দলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দ্রুত তাঁকে বহিষ্কার করার জন্য।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাউফল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমিনুল পেশাদার ডাকাত এবং তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আগেও তাঁকে ডাকাতির ঘটনায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

এর আগে শুক্রবার (৭ মার্চ) ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, পিরোজপুর ও মাদারীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ‌

এ সময় তাদের থেকে লুষ্ঠিত স্বর্ণের মধ্যে ৪ ভরি ৯ আনা স্বর্ণ, বিক্রিত স্বর্ণের মূল্য বাবদ নগদ দুই লাখ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা, একটি রিভলবার, ৪ রাউন্ড গুলি ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সাবেক এমপির বাড়িকে পাগলাগারদ বানানো হলো না ‘সমন্বয়কের’

আ.লীগের সাবেক এমপির বাড়ি দখল করে পাগলাগারদ বানালো সমন্বয়ক। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলামের বাড়ি দখল করে ‘পাগলের আশ্রম’ চালু করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক পরিচয়ধারী এক তরুণী। শনিবার দুপুরে প্রায় ২৫ জন ছিন্নমূল মানসিক প্রতিবন্ধীকে নিয়ে এই আশ্রম চালু করেন তিনি।

ওই তরুণীর নাম মারইয়াম মুকাদ্দাস ওরফে মিষ্টি। তিনি নিজেকে আল মুকাদ্দাস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সংগঠক হিসেবে পরিচয় দেন।

মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি জানান, ফেসবুকে পূর্ব ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সকল নেতাদের বাড়িতে পাগলদের জন্য ‘আশ্রম’ গড়ে তোলা হবে। তারই অংশ হিসেবে শনিবার সকালে তালা ভেঙে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের ৬তলা ভবনে প্রবেশ করা হয়েছে। ওই বাসায় আল মুকাদ্দাস ফাউন্ডেশনের ২০ জন পাগল রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মিষ্টির মতে- এটাকে জবরদখল বলা যাবে না, কারণ কোনো ব্যক্তি বিশেষের ব্যবহারের জন্য ভবনটি নেওয়া হয়নি। সমাজের অবহেলিত পাগলদের জন্য আশ্রম করা হচ্ছে। এটাকে অন্য সমন্বয়করা তাকে সমর্থন দিয়েছেন বলে জানান।

এদিকে, ১০ কোটি টাকা চাঁদা না দেওয়ায় টাঙ্গাইলের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের বাসা জবরদখলের অভিযোগ করেছেন জোয়াহেরুল ইসলামের স্ত্রী রউশন আরা।

তিনি বলেন, ‘টাঙ্গাইলের ছাত্র প্রতিনিধি ও সমন্বয়ক পরিচয়ে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি নামে এক মেয়ে আমাদের কাছে প্রথমে ১০ কোটি টাকা চাঁদা চেয়ে ছিল। সেই টাকা না দেওয়ায় তারা বাড়ি জবরদখল করে। আমি এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করব।’

রউশন আরা আরও বলেন, ‘বাড়িটি আমার নামে, আমার স্বামীর নামে নয়। আমি এ ঘটনায় সঠিক বিচারের দাবি করছি।’

এ ঘটনায় জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হলে নড়চড়ে বসে প্রশাসন।

এদিন রাত সাড়ে ১০ টার দিকে পৌর শহরের ছোট কালিবাড়ীতে অবস্থিত ছয়তলা বিশিষ্ট ভবনটি যৌথবাহিনীর অভিযানে দখলমুক্ত করা হয়। এতে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা সহকারী কমিমনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমিন শরিফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলা সহকারী কমিমনার (ভূমি) রুহুল আমিন শরিফ বলেন,‘দখল হওয়া বাসাটি যৌথবাহিনীর অভিযানে বাসাটি দখল মুক্ত করা হয় এবং সেখানে রাখা ১৭ জন মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীকে পূর্বের জায়গায় পাঠানো হয়েছে।’

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর থেকে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম স্বপরিবারে আত্মগোপনে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা টাঙ্গাইলের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের (ভিপি জোয়াহের) বাসায় প্রবেশ করে লুটপাট ও ভাঙচুর চালায়।

Header Ad
Header Ad

ধর্ষণের শিকার শিশুটির সব ছবি অপসারণ করতে হাইকোর্টের নির্দেশ

ছবিঃ সংগৃহীত

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির সকল ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। রোববার (৯ মার্চ) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর দৈত বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।

আদেশে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরিসি) কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিকভাবে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলে হাইকোর্ট।

এদিকে শিশু ধর্ষণের ঘটনার তিনদিন পর ৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সদর থানায় শিশুটির মা মামলাটি দায়ের করেন। আসামিরা হলেন, শিশুর বোনের স্বামী সজিব (১৮), রাতুল শেখ (২০), সজিবের মা জাহেদা বেগম ও বাবা হিটু শেখ। আগেই এই চারজনকে আটক করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী চরপড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, কয়েকদিন আগে শিশুটি তার বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানে শিশুটিকে একা পেয়ে বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। এতে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় আনা হয়। বর্তমানে শিশুটি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বনশ্রীতে স্বর্ণ ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তার আমিনুল ছাত্রলীগের নেতা
সাবেক এমপির বাড়িকে পাগলাগারদ বানানো হলো না ‘সমন্বয়কের’
ধর্ষণের শিকার শিশুটির সব ছবি অপসারণ করতে হাইকোর্টের নির্দেশ
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে দেখতে সিএমএইচে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা  
কুমিল্লায় বৃদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যা
রাজু ভাস্কর্যকে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ ঘোষনা, ধর্ষকের প্রকাশ্যে শাস্তিসহ ২ দাবি  
সিরিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে দুই দিনে হাজারেরও বেশি বেসামরিক নিহত
শিরোপার লড়াইয়ে, শেষ হাসি কার ভারত নাকি কিউইদের
মধ্যরাতে উত্তাল ঢাবি, ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড দাবি  
বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় ভারত: রাজনাথ সিং
পিলখানা হত্যাকাণ্ড: শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে ডেকেছে তদন্ত কমিশন
ভারতে ঘুরতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার ইসরায়েলি নারী, একজনের মরদেহ মিলল লেকে
নারী দিবসে জ্যাকলিনের চমক! এই প্রথম বাংলা গান গাইলেন অভিনেত্রী (ভিডিও)
ঈদে যেভাবে মিলবে টানা ৯ দিনের ছুটি
কুমিল্লায় হত্যা মামলায় যুব মহিলা লীগ নেত্রী বিথি গ্রেপ্তার
ভারতের শেয়ারবাজারে ট্রিলিয়ন ডলারের ধস, মধ্যবিত্তের মাথায় হাত
টাঙ্গাইলে মৃতপ্রায় গরু জবাই করে মাংস বিক্রি, কসাইকে জরিমানা
মুম্বাইয়ের সম্পত্তি বিক্রি, তবে কি বলিউড থেকে বিদায় নিচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা?
মুশফিককে বিদায়ী সংবর্ধনা দেবে বিসিবি
ইফতার মাহফিল স্থগিত করলো বিএনপি