বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থের যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি
এবারের বাজেট জনবান্ধব কি না তার একটি উদাহরণ হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী। সামজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর যে বরাদ্দ বাজেটে আছে, সেটা গত অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় কিছু বেশি। কিন্তু বাজেটের আনুপাতিক হার হিসেবে, আগের থেকে কমে গিয়েছে। যদিও টাকার অংকে কিছুটা বেড়েছে।
আমি মনে করি যে, কোভিডের কারণে যে মূল্যস্ফীতি দেশের অনেক মানুষকে দারিদ্র সীমার নিচে নিয়ে গিয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বরাদ্দ আরও বাড়ানো উচিত ছিল। এর আওতায় আরও বেশি সংখ্যক লোককে নিয়ে আসা উচিত ছিল। তাহলেই আমরা বাজেটকে জনবান্ধব বাজেট বলতে পারতাম।
শিক্ষাখাতে বরাদ্দ আমাদের দেশে জিডিপির দুই শতাংশ যা কি না আন্তর্জাতিক মানের চেয়ে ২ দশমিক ৬ শতাংশ কম। স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ খুব একটা বাড়েনি। কোভিডের শিক্ষা নিয়ে এই খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো আরও প্রয়োজন ছিল। এতে করে যদি বাজেটে ঘাটতির মাত্রা বেড়েও যায়, এতে আমার তেমন কিছু আপত্তি থাকবে না। মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে যদি বলি, বর্তমানে এটি আন্তর্জাতিক বাজারের প্রেক্ষাপটে হচ্ছে। কাজেই সেটি সহজে খুব একটা কমানো যাবে না।
কাজেই মূল্যস্ফীতির কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মানুষ, তাদেরকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় এনে সুরক্ষা দান করতে হবে। একটি বাজেটে বছরের আয় ব্যয়ের হিসাব থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সেদিক বিবেচনায় বাজেটে গতানুগতিক একটা বিষয় থাকবে। সেই অর্থে এটি গতানুগতিক। তবে কিছু প্রায়োরিটি সেক্টর যেমন শিক্ষা স্বাস্থ্য বিশেষ করে সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টি আমাদের আরও বেশি গুরুত্বের সাথে নেওয়া উচিত ছিল। আরও একটি বিষয়, যেটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে বরাদ্দের যথাযথ ব্যবহার ও বাস্তবায়ন জরুরি।
লেখক: অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা