মুকুলে ভরে গেছে আম বাগান
মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে আম বাগানগুলো। হলুদ বর্ণের মুকুলে ঢাকা পড়েছে গাছের সবুজ পাতা। আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনববগঞ্জ জেলা জুড়েই এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে মুকুল থেকে গুটি আসতেও শুরু হয়েছে, বাগান মালিকরা আমের সেই গুটি টিকিয়ে রাখতে নিয়মিত বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা বলছেন এ বছর আমের বাম্পার উৎপাদন হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, শিবগঞ্জ ও ভোলাহাট উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আম বাগানগুলোতে শ্রমিকদের কর্ম ব্যস্ততা। শিবগঞ্জের কানসাট এলাকার আমচাষি মতিন মাস্টারের বাগানে গিয়ে দেওয়া যায়, বাগানে ওষুধ স্প্রে করছেন শ্রমিকরা।
আমচাষি মতিন মাস্টার জানান, এ বছর আমের মুকুল এসেছে বেশ ভালোই, প্রায় সব গাছেই শতভাগ মুকুল এসেছে। সেজন্য বাগানে শ্রমও দিতে হচ্ছে বেশি। বৃষ্টিপাত নেই বাগানে মুকুল টিকিয়ে রাখতে সেচ দিতে হচ্ছে। তবে এ বছর আম শ্রমিকদের মজুরিসহ অনান্য খরচ বেশি, তারপরও আশা করছি যে মুকুল এসেছে তা থেকে যে ফলন হবে তাতে আমরা লাভবান হতে পারব।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক বলেন, আমের উৎপাদন বৃদ্ধি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, তাহলেই লাভবান হবেন আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা। তিনি আমকেন্দ্রিক শিল্প গড়ে তোলার দাবি জানান।
এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের পক্ষ থেকে আম বোর্ড গঠনের দাবি জানানো হয়েছে। চেম্বারের বার্ষিক সাধারণ সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। পরে এ দাবি তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ। তিনি বলেন, আম উৎপাদন, বাজারজাত, রপ্তানিসহ আমকেন্দ্রিক কার্যক্রমকে একত্রিত করতে আম বোর্ড গঠন জরুরি।
এবার রেকর্ড পরিমাণ মুকুল ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমের ফলন বেশি হবে বলে আশা করছেন ফল বিজ্ঞানীরা। তারা নিয়মিত বাগান পরিচর্যার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। আঞ্চলিক উদ্যোনতত্ব গবেষণা কেন্দ্র চাঁপাইনবাবগঞ্জের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোখলেসুর রহমান বলেন, এবছর প্রায় ৯৫ ভাগ গাছে মুকুল এসেছে। আমরা আম বাগান মালিক ও চাষিদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়ে আসছি। আশা করি এবার ভালোই ফল হবে এ জেলায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩৭ হাজার ৮৫৫ হেক্টর আম বাগানে গেল বছর ফলন এসেছিল ৩ লাখ মেট্রিকটনের কিছুটা বেশি। এবার রেকর্ড পরিমাণ মুকুল ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গেলবারের চেয়ে হেক্টর প্রতি ২ থেকে আড়াই মেট্রিকটন আমের ফলন বেশি হবে বলে আশা করেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার।
এসএন