অল্প পুঁজি বেশি লাভ পানিফল চাষিদের
কম পুঁজি, কম খরচ এবং লাভ বেশি হওয়ায় পানিফেলের চাষাবাদ অল্পদিনেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে জয়পুরহাটে। পতিত জমিতে পানিফল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার অধিকাংশ কৃষক। এ অঞ্চলের নিচু ভূমি খাল-বিল ও জলাবদ্ধ পানিতে পানিফল চাষ করা হয়। এ অঞ্চলের কৃষকরা তাদের পানির নিচে ডুবে থাকা পতিত জমিতে বিকল্প ফসল হিসেবে পানিফল চাষ বেছে নিয়েছেন।
কৃষকরা জানান, পানিফল চাষে সার-কীটনাশকের তেমন প্রয়োজন হয় না। ফলে চাষিদের খরচ কম। পতিত জলাশয়ে চারা রোপণ করে শুধুমাত্র ভালো পরিচর্যায় এর ভালো ফলন পাওয়া যায়। প্রতি বিঘা জমি চাষে ৮-১০ হাজার টাকা খরচ হয়। আর ফল স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে ৩০-৪০ হাজার টাকা। সুতরাং লাভ প্রায় ৭ গুণ।
পাঁচবিবি উপজেলার গতনশহর গ্রামের পানিফল চাষি মেহেদী হাসান বলেন, ‘গত ৪ বছর ধরে পানিফল চাষ করি। এ বছর অন্যের জমি বর্গা নিয়ে ৫ বিঘা জমিতে পানি ফল চাষ করেছি। বিঘা প্রতি পানিফল চাষে ৮-১০ হাজার খরচ হয়। আয় হয় সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে ৩০-৪০ হাজার টাকা লাভ হয়। তবে এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে সহায়তা পেলে আমরা আরও বেশি উৎপাদন করতে পারব এবং বেশি লাভবান হতে পারব।’
একই এলাকার পানিফল চাষি আনিছ মণ্ডল বলেন, মেহেদী হাসানের চাষ করা দেখে আমি গত বছর ১০ কাঠা জমিতে চাষ করা শুরু করেছিলাম। লাভ করেছিলাম ১৫ হাজার টাকা। তাই এবছর আমরা চার ভাই মিলে বাড়ির সামনে পরিত্যক্ত ৩ বিঘা জলাশয়ে পানিফল চাষ করছি। গত বছরের চেয়ে বেশি ফলও হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জয়পুরহাট জেলায় এবার প্রায় ৪ হেক্টর জমিতে পানিফলের চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা কৃষি বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে পানিফল চাষের বিস্তার ঘটাতে। যেকোনো পতিত খাল, পুকুর, ডোবা অথবা জলাশয়ে চাষ করা সম্ভব এই ফল। এর উৎপাদন খরচ অন্য ফসলের তুলনায় তুলনামূলক কম।’
জয়পুরহাট আমদই কলেজের প্রভাষক কৃষিবিদ ওবায়দুল্লাহ মুসা বলেন, পানিফল ফল শরীরের পুষ্টির অভাব দূর করে, ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে করতে সাহায্য করে, রক্ত আমাশা বন্ধ করে, দৈহিক বিশেষ শক্তিবর্ধক, নারীদের মাজুরতার আধিক্যজনিত সমস্যা ঠিক করতে খুবই উপকারী। পানিফলেন উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, ব্যবহার এসবের ওপর ব্যাপক গবেষণার মাধ্যমে এবং সার ব্যবস্থাপনা, বালাই ব্যবস্থাপনার ওপর বিশেষ পরামর্শ ও অনুমোদন করা হলে পানিফল দিয়ে কৃষক ও দেশ অর্থনীতিতে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারব।
এসএন