শেকৃবি নজরুল হলের ছাত্রলীগ সভাপতি-সেক্রেটারি চাঁদাবাজিতে বহিষ্কার
লেখা ও ছবি : শেকৃবি প্রতিনিধি।
রাজধানী ঢাকার একমাত্র কৃষি শিক্ষা ও গবেষণা উচ্চতম বিশ্ববিদ্যালয়-‘শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’।
এই ক্যাম্পাসের ‘কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল’র শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এস. এম. সজীব হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমানকে সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ শাখা কেন্দ্রীয় কমিটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার, ১১ আগষ্ট, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি এস. এম. মাসুদুর রহমান মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান তাদের আলাদা ফেসবুক পেইজে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি পোস্টও করেছেন।
এই দুই ছাত্র নেতার বিরুদ্ধে হলটির প্রভোষ্ট অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সাংবাদিক সমিতির কাছে হলটির ডাইনিং, ক্যান্টিনগুলোসহ বিভিন্ন জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় অনুষ্ঠান থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ দায়ের করেন।
এরপর অনুসন্ধান শুরু করেন সাংবাদিক ছাত্র, ছাত্রীরা।
তারা প্রমাণ সংগ্রহ করেন ও ২৭ জুলাই একযোগে কটি গণমাধ্যমে এস. এম. সজীব হোসাইন ও আরিফুর রহমানের চাঁদা আদায়ের খবর প্রকাশ করেন।
তবে তারা থামেননি।
উল্টো রেগে ও বদলা নিতে কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের ডাইনিংয়ের স্টাফদের তাদের বিপক্ষে খবর দেওয়ায় হুমকি দিতে শুরু করেন।
তারা তাদের কাছ থেকে কোনো চাঁদা কখনো নেননি-এই স্বাক্ষর ও টিপসই নিয়েছেন।
তারা প্রভোস্ট মহোদয়ের কাছেও ধর্ণা দিয়েছেন।
তিনি কৃষি অনুষদ বিভাগের উদ্ভিদবিজ্ঞানের নামী অধ্যাপক।
ফলে বাধ্য হয়ে তিনি তারা কোনো চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নন বলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানান।
তবে সংবাদকমীরা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে গিয়েছেন।
তাতে ভয় পেয়ে তারা নিজেদের ফেস বুক পোস্টে তাদের সাফাই গান ও প্রভোস্টের পত্র প্রদান করেন।
কেন এই কাজ করেছেন, জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘ওদের পীড়াপীড়িতে পত্রটি দিতে হয়েছে।’
এই নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা তুঙ্গে ওঠে এবং ছাত্রলীগের হল শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যৌথ প্রচেষ্টায়ও শেষ রক্ষা করতে পারেননি।
ফলে ৩ আগস্ট শেরে বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের নিয়মানুসারে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।
তাতে উল্লেখ করা হয়েছে-‘ঐতিহ্যবাহী এবং বাংলাদেশের প্রধান এই ছাত্র সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে কেন আপনারা-‘কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল’র শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এস. এম. সজীব হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, উপযুক্ত জবাব আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে ছাত্রলীগের শাখা দপ্তর সেলে জমা দিতে হবে।’
তবে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
অবশেষে তাদের পদ ও পদবী থেকে বাতিল করে সংগঠন থেকেই বহিষ্কার করা হয়।
এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে সজীব ও আরিফকে ফোন করলে পাওয়া যায়নি।
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্বাবদ্যালয় শাখা সভাপতি এস. এম. মাসুদুর রহমান মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ফোন ধরেননি।
অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
ছবি : নজরুল হল ও দুই ছাত্র নেতা।
ওএফএস।