পাবনায় কাঁচা মরিচের কেজি ২৪০ টাকা
পাবনায় ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে কাঁচা মরিচের বাজার। জেলায় মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। গত একদিনের ব্যবধানে ২০ টাকা বেড়ে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০০ টাকায়। আর সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে হয়েছে প্রতি কেজি ২৪০ টাকা। আবার বাজার ভেদে দামের পার্থক্যও দেখা গেছে।
পাবনার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। বাজারে খুচরায় এক পোয়া কাঁচা মরিচ কিনতে লাগছে ৬০ টাকা। সে হিসাবে কেজিপ্রতি দাম পড়ছে ২৪০ টাকা, কোথাও কোথাও ২০০-২২০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহখানেক আগেও ৮০-১২০ টাকা কেজি ছিল কাঁচা মরিচ। তার আগের সপ্তাহে ছিল ৬০-৮০ টাকা কেজি।
সরেজমিনে জেলার আতাইকুলা, বনগ্রাম, লক্ষ্মীপুর, শিবপুর, ধুলাউড়ি, পাবনা বড়বাজারসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারে মরিচের কেজিপ্রতি দামের ব্যবধান ৪০ টাকা। হঠাৎ করে মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তবে আমদানি কম হওয়া, ডলার সংকটে ভারতীয় মরিচের এলসি বন্ধ থাকায় মরিচের দাম বেড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) পাবনার সবচেয়ে ব্যস্ততম বড়বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজি দরে।
পাবনার বড় বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী মেসার্স রুপালি ফার্মের মালিক মো. লোকমান হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, মূলত চাহিদার তুলনায় আমদানি অনেক কম। মোকাম থেকেই কাঁচা মরিচ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এ জন্য বেশি দামে খুচরা বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে কাঁচা মরিচের উৎপাদন নষ্ট হওয়ায় সরবরাহ কমেছে। পাশাপাশি ডলার সংকটের কারণে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি না হওয়ায় আড়তগুলোতে বেশি দামে মরিচ বিক্রি করছেন কৃষকরা। মাস খানেকের মধ্যে নতুন মরিচ বাজারে উঠলে দাম কমে যাবে।
ধুলাউড়ি বাজারের সবজি বিক্রেতা তপন জানান, তীব্র গরম ও সম্প্রতি দুই-তিন দিনের বৃষ্টির কারণে বাজারে সরবরাহ কমেছে মরিচের। অন্যদিকে মরিচের গাছ বুড়ো হওয়ার কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়তে থাকে। বাজারের যে অবস্থা তাতে সামনের দিকে দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
পাবনা বড়বাজারে কাঁচা মরিচ কিনতে আসা গৃহবধূ আকলীমা খাতুন বিক্রেতাকে এক পোয়া মরিচ দিতে বলেন। এক পোয়া মরিচের দাম ৬০ টাকা চাওয়ায় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় আকলীমা খাতুন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলছে। গত সপ্তাহেও কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ১২০ টাকা, আজ কিনতে হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজি দরে। আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতাদের জন্য খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বাজার নিয়মিত মনিটরিং না হওয়ার কারণেই কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছামতো দাম বৃদ্ধি করছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, জেলার কৃষকরা বন্যার পর লাগানো মরিচ বাজারে বিক্রি শেষ করেছে। আবারও মরিচ চাষ শুরু হয়েছে। বর্তমানে হাইব্রিড মরিচ সারা বছর চাষ করা যায়। ভাদ্র মাস থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত মরিচ লাগানো হয়। চলতি মৌসুমে এ সময়ের মধ্যে আবার আগামজাত চাষ করেছেন বন্যাকবলিতরা। এবার অগ্রহায়ণ মাসেও মরিচ চাষ হচ্ছে। তবে নতুন কাঁচা মরিচ বাজারে উঠলেই দাম কমে যাবে।
এসজি/