শুরু হয়েছে আমাদের প্রযুক্তি কনটেস্ট হুয়াওয়ে ‘সিডস ফর দি ফিউচার’
বিশ্বের শীর্ষ বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান চীনের ‘হুয়াওয়ে’ অন্যতম সেরা আইসিটি (ইনফরমেশন অ্যান্ড কম্পিউটার টেকনোলজি) অবকাঠামো ও সেবাদাতা। আমাদের দেশে তাদের মোবাইল বিক্রি ও বুয়েটে আইসিটি অ্যাকাডেমি গড়ে দেওয়া বাদে আরেকটি বিরাট প্রকল্প-‘সিডস ফর দি ফিউচার’।
প্রতিযোগিতাটির এবার শুরু হয়েছে ১৭ এপ্রিল, গতকাল। আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
এই অনুষ্ঠান হয়েছে হোটেল আমারি ঢাকা’র ইডেন গ্রান্ড বলরুম-এ।
মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি বলেছেন, ‘আমাদের বাংলাদেশ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তথ্য প্রযুক্তিখাতে অনেক দূর এগিয়েছে। কটি দেশের অনেকগুলো প্রযুক্তি কাম্পানি আছে, আমাদের দেশে তারা কাজ করছেন। তবে খুব কম প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারাই ব্যবসায়িক তাগাদা থেকে বেরিয়ে এই দেশের কিশোর-তরুণ ছেলে-মেয়েদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে সাহায্য করছেন। হুয়াওয়ে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই আলাদা। তারা আমাদের তরুণদের তাদের সরকারের মতো উন্নত করতে কাজ করে চলেছেন। এজন্য আমি হুয়াওয়েকে ধন্যবাদ দেই।’
মুহিবুল হাসান নওফেল আরো বলেছেন, “প্রযুক্তি ও প্রযুক্তির বাইরের বিষয়ের ছাত্র, ছাত্রীদের সঙ্গে কাজ করেন তারা ‘সিডস ফর দি ফিউচার’-এ। উপকার বহুমুখী হয়। আমাদের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়গুলোর বাইরের ছেলেমেয়েরাও যে দারুণ সব উদ্ভাবনী ভাবনা ও কাজ নিয়ে এগিয়ে আসেন-প্রায়ই দেখি। তারাও পারেন-এ স্বীকৃতির জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে হুয়াওয়ের কাছে ঋণী থাকব। তারাও খেয়াল করেছেন, বিশ্বজুড়ে ছড়ানো নতুন প্রজন্মের প্রাযুক্তিক উদ্যোক্তাদের অনেকেই সমাজবিজ্ঞান বা মানবিক অথবা ব্যবসার ছাত্র, ছাত্রী।”
বিশেষ অতিথি ও অংশগ্রহণকারী অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয় আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (এইউএসটি)’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ফজলে এলাহী বলেছেন, ‘আমি হুয়াওয়ে টেকনোলজিস বাংলাদেশকে ব্যক্তিগতভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই। বিভিন্নভাবে তরুণ-তরুণীদের মেধাবিকাশ ও ক্ষমতায়নের সুযোগ তৈরি করতে তারা কাজ করেন। এ উদ্যোগটি তেমন। প্রগ্রামটি শিক্ষার্থীদের কেবল নিজের সম্ভাবনাগুলো খুঁজে নিতে সাহায্য করবে না, ভবিষ্যত জীবনের উপযুক্ত আইসিটি দক্ষতা এবং গুণাবলীর বিকাশের সঠিক পথে আনতে সাহায্য করবে। তাদের অগ্রগতির জন্য প্রতিযোগিতাটি হয়।'
হুয়াওয়ে (টেকনোলজিস) বাংলাদেশ লিমিটেডের সিইও প্যান জুন ফেং বলেছেন, “আইসিটিতে ছাত্র, ছাত্রীদের আরো আগ্রহী ও দক্ষ করতে; শিল্পখাতটি সম্পর্কে তাদের পূর্ণ ধারণা লাভ করতে সাহায্য করতে ২০১৪ সাল থেকে টানা আট বছর ধরে আমরা ‘সিডস ফর দি ফিউচার’ সারা বিশ্বে আয়োজন করে চলেছি।”
প্যান জুন ফেং এরপর বলেছেন, ‘বিশ্বজুড়ে তরুণ-তরুণীদের চিন্তাভাবনার বিকাশ ও তাদের জ্ঞান আহরণকে উন্নত মান প্রদান এবং একটি অভিন্ন প্ল্যাটফম তৈরি করতেই আমাদের প্রতিষ্ঠান নানামুখী প্রগ্রাম বা প্রকল্প পরিচালনা করে চলেছে।’
প্যান জুন ফেং জানিয়েছেন, “সিডস ফর দি ফিউচার’ এমন এক প্রগ্রাম, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা বিশেষজ্ঞদের কাছে সরাসরি তথ্য ও প্রযুক্তি শিল্পের কাজকর্ম জানতে ও শিখতে এবং নিজস্ব দক্ষতা যাচাই করতে পারে। আপনাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে এমন কাজ খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চীনের জনগণও অত্যন্ত আনন্দিত এমন প্রকল্প আপনাদের সামনে আনতে পেরে।”
তিনি হুয়াওয়ে বাংলাদেশ টেকনোলজিসের পক্ষ থেকে উপস্থিত সবাই ও বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
প্রতিযোগিতাটির অন্যতম বিচারক ও অংশগ্রহণকারী রুয়েট (রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আল মামুন জানিয়েছেন, ‘শিক্ষার্থীদের মেধার এমন পরিচর্যা অব্যাহত রাখা খুব জরুরী। হুয়াওয়ে টেকনোলজিস তাদের নানাভাবে এখানে সাহায্য করছেন বলে আমি খুশি হয়েছি।’
উল্লেখ্য, এই মাসের শুরুতেই ‘সিডস ফর দি ফিউচার, ২০২২’র অনলাইনে নিবন্ধন শুরু হয়েছে। নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে রোড শোও করেছেন তারা। এই বিশ্ববিদ্যালগুলো এবারের প্রতিযোগিতাতে অংশ নিচ্ছে। রুয়েট, আহছানউল্লাহ বাদে আছে-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট (বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চুয়েট (চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়), কুয়েট (খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়), আইইউটি (ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে এবারের প্রতিযোগী নয়টি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি যোদ্ধারা।
তাদের ফাইনালে বিজয়ীরা অন্যান্য দেশগুলোর চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতাতে অংশ নেবেন। প্রতিযোগিতার নিয়মে এই অংশের মতো সেখানেও প্রযুক্তিগত বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
হুয়াওয়ে বাংলাদেশের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য জেসন লি জং শেং বলেছেন, ‘বাংলাদেশে ভালো ও উন্নতমানের আইসিটি ইকো-সিস্টেম গড়ে দিতে ও ডিজিটাল রূপান্তরের সুফল লাভ করতে সাহায্য করে চলেছে হুয়াওয়ে (টেকনোলজিস) বাংলাদেশ লিমিটেড।’
তিনি জানিয়েছেন, ২০০৮ সালে থাইল্যান্ডে প্রথম বৈশ্বিক ‘সিডস ফর দি ফিউচার’ শুরু করেছেন তারা।
হুয়াওয়ের ১২ বছরে প্রকল্পটি সারাবিশ্বের মোট ১শ ৩৭টি দেশে নানাভাবে তাদের সাহায্যে বাস্তবায়ন করেছে। ৫শর বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ হাজারের বেশি ছাত্র, ছাত্রী এই উদ্যোগে উপকারভোগী।
ছবি : ১. বক্তব্য রাখছেন মুহিবুল হাসান নওফেল।
২. গেল বারের সেরারা।
ওএস।